নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রকৃত সত্যের দিকে আমাদের ছুটতে হবে..

রাশিদুল ইসলাম লাবলু

প্রকৃত সত্যকে উপলদ্ধি করতে হবে খোলা মন নিয়ে।

রাশিদুল ইসলাম লাবলু › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল কোরআনের বৈজ্ঞানিক ব্যক্ষা-সুরা রুম আয়াত 25

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:১১



“তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে, তাঁরই নির্দেশে আসমান ও যমীন স্থিতিশীল থাকে “

প্রিয় পাঠক আয়াতটি গভীর ভাবে লক্ষ্য করুন আয়াতটিতে আসমান ও জমিনের স্থিতিশীলতার কথা বলছে। দুইটি বিসয় একই অথাৎ এমন কোন প্রক্রিয়া যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্থিতীশীল রাখা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় জমিন আথাৎ পৃথিবী এবং মহাকাশ উভয়েই স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েচে। তাহলে কি সেই স্থিতিশীলতা? এ প্রশ্নের উত্তরে আমরা বলতে পারি পৃথিবীর স্থিতিশীলতা পৃথিবীর মধ্যাকর্ষন শক্তি এবং পৃথিবীর চৌম্বকশক্তির সক্ষমতা। জিওলজিস্ট গন একটি গবেষনায় প্রমান করেছেন যে পৃথিবীর অভ্যন্তরে রয়েছে অত্যধিক ভারী বস্তুতে পরিপূর্ন নিকেল, লৌহ আর অনেক ধরনের যৌগিক ওজনদার বস্তু। যা মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারন। আকর্ষণ বল অতীব শক্তিশালী হবার অন্যতম কারন হলো পৃথীবির আভ্যন্তরীক বস্তুগুলো ওজন। ওজন যত ভারী হবে আর্কষন ক্ষমতা ততোধিক শক্তিশালী ও প্রবলতর হবে। ওজন যত কম হবে আকর্সন তত কম হবে।আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তিতে অনুমিত যে পৃথিবীর অভ্যন্তরস্থ কঠিন পর্দাথ ডিপেন্ড করে পৃথিবীর আয়তনের উপর। প্ৃথিবীর চুম্বকত্ব যেমন সঠিক এবং যথাযথ ঠিক তেমনি পৃথিবীর সঠিক আয়তনই পৃথিবীর সঠিক মধ্যাকর্ষন সৃষ্টি করেছে। আমেরিকান ভূতত্ত্ববিদ ফ্রাংক প্রেস এবং সিলভার তাদের গবেষনার মাধ্যমে প্রাপ্ত ডাটার উপর ভিত্তি করে বলেন “পৃথিবীর আয়তন একে জীবনধারনের উপযোগী করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যদি পৃথিবীর আয়তন কিছুটা কম হতো তবে এটি এর বর্তমান বাযূমন্ডল ধরে রাখতে পারত না। কারন এর অভিকর্ষীয় শক্তি গ্যাস সমূহকে ধরে রাখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট হতো না। আবার যদি এর ভর কিছুটা বেশি হতো তবে এর শক্তিশালী অভিকর্ষীয় আকর্ষন শক্তির দ্বারা এটি বেশি পরিমান গ্যাস (ক্ষতিকর গ্যাস সমূহ) বায়ুমন্ডলে ধারণ করত। পৃথিবীর আকৃতি এবং অভ্যন্তরের পদার্থ সমহের উপরও প্রাণীকুলের অস্তিত্ব নির্ভরশীল। এইগুলো যদি এক বিন্দু এদিক ওদিক হতো তাহলে কোনভাবেই এ পৃথিবীতেই প্রানিকুলের আবির্ভাব ঘটতো না। আর পৃথিবীর এই আকর্ষন শক্তির যথাযথ অনুপাতের কারনে পৃথিবীর বুকে আমাদের প্রাণি জগত টিকে আছে এবং বায়ুমন্ডলের এই জটিল কম্পোজিশনটাও এই পৃথিবীর চুম্বকত্ব শক্তির কারনে।” যার অর্থ দাড়ায় পৃথিবীর আয়তন বেশি হলে মধ্যাকর্ষন শক্তি বেশি হতো অতি চাপে বায়ুমন্ডল সহ সব কিছু সঠিক ভাবে বেড়ে উঠতে পারতো না আবার মধ্যাকর্ষন শক্তি কম হলে বায়ুমন্ডল হারিয়ে যেতো আমাদের মধ্যাকর্ষন শক্তি তা ধরে রাখতে পারতো ন।
আমরা যত মাটির নিচে নামছি ওজন তত বাড়ছে, বিজ্ঞানীগন পৃথিবীর গভীরে এক ধরনের ভারী তরল পদার্থ পেয়েছেন যা সেখানে অবিরত পাক খেয়ে স্থান পরিবর্তন করে চলছে। অভ্যন্তরে তার এই চলাচলটা একটা পথে পরিণত হয়েছে, যাকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় বলা হয় Magnetic running root অথবা চুম্বকপথ ।পৃথিবীর অভ্যন্তরস্থ ভাগ চুম্বক ক্ষেত্র তৈরীতে গুরুত্বর্র্পূণ ভূমীকা রাখে। এই চুম্বক ক্ষেত্রটি পৃথিবীর কেন্দ্রের চুম্বকীয় ধাতু লোহা নিকেল দ্বারা সৃষ্টি হয়। এই Iron Core টির দুটি অংশ আছে Outer Core এবং Inner Core । ইনার কোর কঠিন পর্দাথ দ্বারা তৈরী এবং Outer Core তরল পদার্থ। এ দুটি লেয়ার পরস্পর বিপরীত দিকে ঘুরতে থাকে এবং তাদের এই ঘুর্ননের কারনে ভূচুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরী হয়। The Van Allan Belt নামক এই প্রানীকূল রক্ষাকারী বুহ্যটি পৃথিবী হতে ১০০০ কি:মি: পর্যন্ত বিস্তুত যা এই চুম্বকীয় ক্ষেত্র বায়ুমন্ডলের স্তরকে ধরে রাখে এবং মহাজাগতিক কসমিক রেডিয়েশন হতে পৃথিবীকে প্রাণীকুল এবং বৃক্ষজগতকে রক্ষা করে। পৃথিবীর অভ্যন্তরস্থ ভাগ সুষম তাপীয় ইঞ্জিন ব্যবস্থা Radioactivity দ্বারা পরিচালিত। লক্ষ্য করুন এখানে রয়েছে পরিকল্পিত একটি হিসাব। যদি এই তাপীয় ব্যবস্থা কিছুটা ধীর গতিতে চলতো তবে কোনভাবেই Inner Core সৃষ্টি হতো না। আর যদি এই তাপীয় ব্যবস্থা কিছুটা দ্রুতগতিতে হতো তবে এই পৃথিবীতে প্রতিদিন ভূমীকম্প ও অগ্নুপাত হতো। এবং প্রতিদিনের ভূমীকম্পের ফলে পৃথিবীতে প্রাণীকুলের টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠতো। প্রাণীকূলের বিনাশ ঘটতো।পৃথিবীর আয়তন ও পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ড এর চুম্বকত্ব শক্তি যদি যথাযথ ও পরিমাপকৃত না হতো তবে কি আমরা মানুষেরা স্বাচ্ছন্দ্যময় ভাবে পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারতাম। পৃথিবীর মধ্যাকর্ষন শক্তি যদি নির্ধারিত ধ্রুবকের চেয়ে ০.১% বেশি হতো তবে অত্যাধিক মধ্যাকর্ষন এর চাপের কারনে পৃথিবীর বুকে কোন ভাবেই বায়ুমন্ডল সৃষ্টি হওয়া সম্ভব হতো না আবার যদি পৃথিবীর মধ্যাকর্ষন শক্তি যদি নির্ধারিত ধ্রুবকের চেয়ে ০.১% কম হতো তবে পৃথিবীকে ঘিরে বায়ুমন্ডলের বলয় তৈরী না হয়ে বরং তা মহাশুন্যে উড়ে হারিয়ে যেতো। ফলে বায়য়ুমন্ডলের এই অভাবে পৃথিবীর বুকে কখনই ঘটতো না কার্বন ভিত্তিক নান্দনিক প্রাণের মহাযাত্রা। শুধুমাত্র যথাযথ মধ্যাকর্ষন শক্তির কারনে প্রকৃতি নির্মান করতে পেরেছি বার্যমন্ডলের এমন একটি মহান কম্পোজিশন সাজানো প্যাটান ।



প্রিয় পাঠক এবার আসুন, আল কোরআনের আয়াতের স্থিতিশীলতা সম্পর্কে কি আমি আপনাদের বোঝাতে পারলাম? পৃথিবীর স্থিতিশীলতা বা মধ্যাকর্ষনের বিষয়টি বুঝতে পারলাম কিন্তু এবার আলোচনা করবো আকাশের স্থিতিশীলতা নিয়ে। কারন আল কোরআনের আয়াত অনুসারে পৃথিবী ও আসমান একই প্রক্রিয়ার স্থিতিশীল এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি।তাহলে প্রথমেই প্রশ্ন আসমান কি? এ বিষয়টি বুঝতে গেলে আল কোরআনের একটি আয়াত নিয়ে আলোচনা করতে হবে। "তারা কী দেখেনা তাদের উপরের আকাশের দিকে, কিভাবে আমি তা সৃষ্টি করেছি ও তাকে সজ্জিত করেছি, এবং এতে কোনো ফাটল নেই"-আল কোরআন। এখানে আকাশকে একের পর এক সজ্জিত করার কথা বলা হচ্ছে। আমরা দুনিয়ার বা পৃথিবীর চুম্বকীয় শক্তির প্রভাবে বায়ুমন্ডলের স্তরটির ফাটল বা ছিদ্রের কথা যেমন বোঝানো হচ্ছে । যদি কোন ভাবেই পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ফাটল বা ছিদ্র থাকতো তাহলে গ্রীণ হাউজ এফেক্টের দ্বারা মহাবিশ্বের আল্ট্রাভায়োলেট রে গামা রে প্রবেশ করে মুহুত্বের মধ্যে পৃথিবীর প্রাণীজগত বিনষ্ট করে দিতো। আসমানের ক্ষেত্রেও ঠিক একই প্রক্রিয়া বলতে আসলে কি বোঝানো হচ্ছে? আসমান ও কি চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা প্রভাবিত? অথবা আসমানেরও কি বলয় আছে যা দ্বারা প্রা্ণীজগতের অস্তিত্ব নিভর্রশীল? আসলে বিষয়টি ঠিক তাই।প্রতিটি আসমান তার নিজস্ব চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা প্রভাবিত।এবং প্রতিটি আসমানেরও বলয় আছে যা ডার্ক মেটার বা এজাতীয় বিষয়ব্স্তু দিয়ে এই বলয় সৃষ্ট।এ সকল বিষয় জানতে গেলে আগে জানতে হবে আসমান কি? তুর্কী মহাকাশবিজ্ঞানী ড. হালুক নুর আসমান সম্পর্কে একটি ধারনা আমাদের দিয়েছে।তার বক্তব্য অনুসারে মহাকাশের একের পর এক ধারাবাহিক স্তর গুলোই হলো আসলে আসমান।আল কোরআন ঠিক অনুরুপ বক্তব্যই দিচ্ছে। আলকোরআন বলে-তারা কী দেখেনা তাদের উপরের আকাশের দিকে, কিভাবে আমি তা সৃষ্টি করেছি ও তাকে সজ্জিত করেছি। মহাকাশবিজ্ঞানী ড. হালুক নুর বাকি সমগ্র মহাবিশ্বকে ৭টি স্তর বা অংশে বিভক্ত করেছেন। তার ধারনামতে-ভুমন্ডলের উপরিভাগ বা বায়ুমন্ডল থেকে শুরু করে সৌরজগতের ওল্ট ক্লাউট পর্যন্ত ১ম আসমানের সীমা রেখা।ওল্ট ক্লাউট থেকে মিল্কিওয়ে; বা আকাশগঙ্গার চারপাশে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে সেই ক্ষেত্রটির আবরন সীমা পর্যন্ত ২য় আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে। ছায়াপথসমূহের Local Cluster’ মহাকাশীয় ক্ষেত্র ৩য় আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে। ছায়াপথসমূহের সমন্বয়ে গঠিত মহাবিশ্বের কেন্দ্রীয় চৌম্বক ক্ষেত্র ৪র্থ আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে। অতি দূর থেকে আগত আলোকতরঙ্গের উৎসসমূহের প্রতিনিধিত্বকারী মহাজাগতিক বলয় ৫ম আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে। মহাবিশ্বের প্রসারমান ক্ষেত্র ৬ষ্ঠ আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে। মহাবিশ্বের প্রান্তহীন অসীমত্বের নির্দেশক সর্ববহিরস্থ ক্ষেত্র সপ্তম আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে। আসমানের এই স্তরসমূহ অকল্পনীয় স্থান জুড়ে আছে। প্রথম আসমান স্তরের পুরুত্ব আনুমানিক ৬.৫ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার। দ্বিতীয় স্তর তথা আমাদের ছায়াপথের ব্যাস হল ১৩০ হাজার আলোকবর্ষ। তৃতীয় স্তরের বিস্তার ২ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। চতুর্থ স্তরের ব্যাস ১০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। পঞ্চম স্তরটি ১ বিলিয়ন আলোকবর্ষের দূরত্বে। ষষ্ঠ স্তরটি অবস্থিত ২০ বিলিয়ন আলোকবর্ষের দূরত্বে। এ কথা বলা বাহুল্য যে, সপ্তম স্তরটি বিস্তৃত হয়ে আছে অসীম দূরত্ব পর্যন্ত। এই তথ্য উল্লেখের উদ্যেশ্য এটা নয় যে এই ৭টি স্তরই কুরআনে বর্ণিত সাত আসমান বা সপ্তাকাশ এটা প্রমাণ করা। তবে এটা মনে করা যেতে পারে যে মানুষের জ্ঞান এখনো ১ম আসমান অতিক্রম করেনি। সেইহেতু এই তথ্য আমরা সঠিক প্রকাশ করতে পারি না। মহাকাশের কোন কোন অংশ সপ্তাকাশ গঠন করে তা মহান স্রষ্টা আল্লাহই ভালো জানেন। এখানে এই স্তরবিভাগ শুধুমাত্র এটা বোঝানোর জন্য দেখানো হল যে দৃশ্যমান মহাকাশ ও এর বাইরের অংশ বিবেচনা করে সমগ্র মহাকাশকে সহজেই ৭ ভাগে বিভক্ত করা যায় তথা সাত আসমান বা সপ্তাকাশরূপে বিবেচনা করা যায়। কাজেই কুরআনে উল্লেখিত তথ্যকে আধুনিক বিজ্ঞান কিংবা যুক্তি কোনটি দিয়েই ভুল প্রমাণ করা সম্ভব নয়।চৌম্বক ক্ষেত্র দিয়ে পৃতিবীর বা আকাশের স্থিতিশীলতা সৃষ্টির বিষয়টি আল কোরআনে বোঝানো হয়েছে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: কোনো মন্তব্য নেই!!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.