![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রকৃত সত্যকে উপলদ্ধি করতে হবে খোলা মন নিয়ে।
এখন প্রশ্ন হল এই প্রতিলিপি তৈরীকরণ ক্ষমতা ভারী অনুর মধ্যে কিভাবে এলো? আমরা এর ব্যাক্ষা কিভাবে পেতে পারি? আমি আমার পূর্বের পর্বে এ ব্যাপারে প্রশ্ন উঠিয়ে ছিলাম। জীববিজ্ঞানী রাসেল স্পষ্ট ভাষায় বলছে প্রথমে কোষ মৃত ছিলো পরে তাতে প্রান সংযোজন হয়েছে। বিজ্ঞানীরা উপলব্ধি করলেন ‘প্রাণ’ শক্তিটি কোন কোন পদার্থের সম্মিলিত রাসায়নিক ক্রিয়ায় উদ্ভূত একটি অভিনব শক্তি । আসলেও কি প্রাণ শক্তিটি পৃথিবীতে উদ্ভব নাকি মহাকাশ থেকে আসা কোন এক উপাদান পৃথিবীর উদ্ভাবিত কোষে সংযোজিত হয়ে প্রাণ সৃষ্টি করে? নাকি পৃথিবীর আদি অবস্থায় তাপ, আলো, বায়ুচাপ, জলবায়ুর উপাদান ইত্যাদির পরিমাণ প্রাণ সৃষ্টির অনুকূল ছিল বলে তখন প্রাণের উদ্ভব সম্ভব হয়েছিল? জীববিজ্ঞানীদের এজাতীয় মন্তব্য বা প্রতিটি তত্ত্ব মেনে নিলেও কিছু কিছু বিষয়বস্তু আমাদের প্রশ্নের সম্মুখিন করে তোলে! প্রথম প্রশ্নটি হলো একটি জীবনকে সম্ভব করার জন্য জীন এবং ডিএনএর যে রহস্যময় কারুকাজ তা কি করে সম্ভব এই প্রশ্ন করেছিলেন বিশিষ্ট নাস্তিক বিজ্ঞানি ফ্লিও। তিনি বলেন “আমি মনে করি ডিএনএ তে বিদ্যমান এই বহুমাত্রিক মৌলিক উপাদানকে একটি সুবিন্যস্ত পরিসরে সাজানোর পিছনে অবশ্যই একজন বুদ্ধিমান সত্ত্বার অস্তিত্ব রয়েছে। এ বহুমাত্রিক জটিল বিন্যাস আমাকে এ সিদ্ধান্তে উপনীত করেছে যে, অবশ্যই তা এক বুদ্ধিমান সত্ত্বার কাজ”। আবার বিশিষ্ট বিজ্ঞানবাদী স্টিফেন সি মেয়ার ঠিক একই ভাষায় কথা বলছেন। তিনি বলেন “জীববিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে মহাবিশ্বটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে, ডিএনএতে উপস্থিত প্রচুর পরিমাণে জিনগত তথ্য অবশ্যই জীবনকে সম্ভব করার জন্য উত্থিত হয়েছিল। স্টিফেন সি মায়ারের কথা আমাদের বুঝতে শেখায় যে এত জটিল ডিএনএর প্রোগ্রামিং কিভাবে আপনা আপনি সম্ভব হলো? একটি কোষকে সৃষ্টি করার জন্য প্রাণ স্থাপিত করার জন্য এত জটিল প্রোগ্রামিং কি করে আপনা আপনি ঘটলো? যেখানে মাইক্রোসফ্ট এর প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বলেছেন আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে সেরা সফটওয়্যারটির প্রোগ্রামিং এর চেয়ে ডিএনএর প্রোগ্রামিং অনেকগুন উন্নত। তাহলে এই উন্নত প্রোগ্রামিং কি আপনা আপনি ঘটতে পারে? আদৌ কি সম্ভব? জীববিজ্ঞানী মাইকেল ডেল্টন আমাদের আরো অবাক করা তথ্য দেয়। তিনি বলেন “প্রাণ কোষের অলৌকিক ঘটনা আমাদের গ্রহে প্রাণের আবির্ভাবের অনেক আগে থেকেই, সমস্ত জীবনের এই মৌলিক এককের জন্য প্রকৃতির নিয়মের সূক্ষ্ম ফিটনেসে,প্রকৃতির ক্রমানুসারে,কার্বন-ভিত্তিক কোষের নকশার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। পৃথিবী কোষের মূল পারমাণবিক উপাদানগুলির বৈশিষ্ট্যগুলির চেয়ে এই ফিটনেসটি আর কোথাও স্পষ্ট নয়। জীবনের প্রতিটি পরমাণু-কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন সহ, সেইসাথে বেশ কিছু ধাতব উপাদান-কোষে অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট, অপরিহার্য ভূমিকা পালন করার জন্য সূক্ষ্মভাবে সাজানো অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলির একটি স্যুট বৈশিষ্ট্যযুক্ত। তদুপরি,এই বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে কিছু বিশেষভাবে আমাদের মতো উন্নত বায়বীয় জীবের কোষে অপরিহার্য ভূমিকার জন্য উপযুক্ত”। সুতরাং এগুলো আপনা আপনি গঠন হয় কি করে? একটি নির্দীষ্ট পরিকল্পনা ব্যতিরেকে কোষের গঠন এবং তার ধারাবাহিক বিবর্তন কিভাবে ঘটতে পারে? আধুনিক বিজ্ঞান আজোবধি এ সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে নাই।
প্রিমর্ডিয়াল সুপ থেকে জীবন সৃষ্টির এই তত্ত্বে আমি গত পর্বে আলোচনা করেছি। কিন্তু আপনা আপনি এই স্যুপ তৈরী হয়ে গেলো আর প্রাণ আবির্ভাব ঘটে গেলো সেটি নিয়েও রয়েছে অসংখ্য অসংগতি, রয়েছে বহু ফাটল, গহ্বর, জোড়াতালি। বিজ্ঞানীরাই ঐ প্রশ্ন তুলেছেন ঐসব অসামঞ্জস্য নিয়ে। কয়েকটি দৃষ্টান্ত দেওয়া হল।অসঙ্গতি-১ঃ পৃথিবীর প্রারম্ভিক পরিমণ্ডলে কি অক্সিজেনের অস্তিত্ব ছিল? যদি আবহমণ্ডলে অক্সিজেন থাকত, তাহলে তৈরী হওয়া সরল যৌগগুলি সংবদ্ধ হয়ে অ্যামাইনো অ্যাসিড তৈরী হওয়া সম্ভব হতো না। আবার পরিমণ্ডলে অক্সিজেনের উপস্থিতি না থাকলে মহাজাগতিক রশ্মি (cosmic rays) বিকীরণের প্রভাবে তৈরী হওয়ার পরই বিশ্লিষ্ট হয়ে যেত অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলি। বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক আবিষ্কার – ৩.৫ বিলিয়ন অর্থাৎ ৩৫০ কোটি বছর পুর্বে লোহাতে অক্সাইড পাওয়া গিয়েছে–অতএব ইতিপূর্বেও পরিবেশ ছিল অক্সিজেন।অসঙ্গতি-২ঃ (জৈব তরলের গঠনঃ) অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলি জলের মধ্যে ছিল, নাকি বাহিরে? পরিমণ্ডলে অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলি গঠিত হওয়ার পর, অনুমান করা হয়েছে যে ঐ অ্যাসিডগুলি কোনোভাবে মহাসাগরের একই স্থানে গিয়ে পড়েছিল – যাতে করে “অর্গানিক স্যুপ” তৈরী হতে পারে। এখন, যদি অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলি জলের মধ্যে থাকে, তাহলে তাঁরা সংবদ্ধ হয়ে প্রোটিনগুলি তৈরী হতে পারবে না, কেননা জল বড় অনুগুলিকে ভেঙ্গে দেয় – তাঁদের সংবদ্ধ হতে দেয় না। আর, অ্যাসিডগুলি যদি জলের বাইরে থাকত, তাহলে মহাজাগতিক রশ্মি-বিকিরণের ফলে তাঁরা মূহূর্তেই বিশ্লিষ্ট হয়ে যেত।সুতরাং জৈব তরলের উদ্ভব হতে পারে না কখনই। “অন্য কথায়”, বিবর্তনবাদী ফ্রান্সিস হিচিং বলেন, “জীবন-উদ্ভবের এই বিবর্তন-ধারায় এমনকি এই প্রথম ও অপেক্ষাকৃত সহজ পর্যায়ের ( অ্যামাইনো অ্যাসিড-যৌগ তৈরী) মধ্য দিয়ে আগ্রসর হওয়ার তত্ত্বগত সুযোগও সম্পূর্ণ ক্ষীণ, শুন্য।“ এর অর্থ, নোবেলজয়ী জৈবরসায়নবিদ জর্জ ওয়াল্ডের মতে “এটিই হচ্ছে সবচেয়ে অসমাধানযোগ্য সমস্যা, আমাদের – বিবর্তনবাদীদের যার মুখোমুখি হতে হয়”। - দি অরিজিন অফ লাইফ, জর্জ ওয়ার্ল্ড পৃ-৪৯-৫০।অসঙ্গতি-৩ঃ (জৈব তরল বা অর্গ্যানিক স্যুপে কিভাবে গঠিত হল সুনির্দিষ্ট কিছু অ্যামাইনো অ্যাসিড?) প্রায় ১০০ রকমের অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে, এর মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রোটিন অনু তৈরীর জন্য প্রয়োজন ২০ টি বিশেষ অ্যামাইনো অ্যাসিডের। কিভাবে ‘আপনা থেকে’ বাছাই হলো? তাছাড়া অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলির দু’ধরণের গঠন গত আণবিক বিন্যাস রয়েছে। কিছু ‘লেফট-হ্যান্ডেড’, কিছু ‘রাইট-হ্যান্ডেড’। যদি আকস্মিকভাবে তাঁরা সংবদ্ধ হতো, তাহলে উভয় ধরনের অ্যাসিডই সেখানে থাকত। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলি জীবন্ত কোষের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন অনু তৈরী করে, সেগুলি সবই লেফট-হ্যান্ডেড। কিভাবে এটি সম্ভব যে ‘আকস্মিকভাবে’ ‘স্বতঃস্ফূর্তভাবে’ ঠিক নির্দিষ্ট ধরণের, নির্দিষ্ট সংখ্যার এবং নির্দিষ্ট আকৃতির অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলি সমাবিষ্ট হল জৈব তরলে? পদার্থবিদ জে ডি বার্ণাল স্বীকার করেছেন “আমরা কোনদিনই এটির ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম হব না।“ অসঙ্গতি-৪ঃ (কিভাবে ঠিক সুনির্দিষ্টভাবে প্রয়োজনীয় প্রোটিনগুলি গঠিত হল?) জীব-কোষের জন্য যে প্রোটিনগুলি প্রয়োজন, সেগুলি গঠনগতভাবে অত্যান্ত জটিল অনু। ২০টি নির্দিষ্ট লেফট-হ্যান্ডেড অ্যামাইনো অ্যাসিড একটি সুনির্দিষ্ট সিকোয়েন্সে বা বিন্যাসে সংবদ্ধ হলেই কেবল জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন উৎপন্ন হওয়া সম্ভব। আকস্মিকভাবে এটি কিভাবে সম্ভব? এটার তুলনা করা যেতে পারে সাদা ও লাল এই দুটি রঙের ১০০টি বিভিন্ন ধরনের বীন বা ডালের বড়ো এক স্তূপের সংগে। ডাল-দানাগুলি সম্পূর্ণভাবে মিশ্রিত। এখন, আপনি যদি ঐ স্তূপের মধ্য ঐ থেকে একটি বড় হাতা দিয়ে এক-হাতা ডাল-দানা তুলে আনেন, তাহলে সেগুলি কেমন হবে? প্রোটিন তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় মৌল উপাদানগুলির প্রতীক স্বরূপ নির্দিষ্ট ডাল-দানা পেতে হলে, আপনার হাতে উঠে আসতে হবে কেবল লাল রঙের দানা – একটিও থাকবে না সাদা। এছাড়াও এই লাল রঙের মধ্যেও থাকতে হবে ঠিক সুনির্দিষ্ট ২০টি ভিন্ন ধরনের ডাল-দানা এবং এর প্রত্যেকটিকে আবার ঠিক সুনির্দিষ্ট স্থানে বিন্যস্ত, সংহত থাকতে হবে। প্রোটিনের জগতের নিয়ম অনুযায়ী, উপরোক্ত নিয়মের সামান্য হেরফের হলেই এমন ত্রুটিপূর্ণ প্রোটিন উৎপন্ন হবে যা কাজ করতে পারবে না। হাতাটি নাড়া চাড়া করলেই আমরা কি উপরোক্ত নির্দিষ্ট সংখ্যক দানার শৃঙ্খলাবদ্ধ বিন্যাস পেয়ে যাব? এ যেন সমুদ্রগর্ভে আকস্মিকভাবে তৈরী হলো মুক্তার মালা বাস্তবে তা কখনই সম্ভব নয়। তেমনি, তাহলে বিজ্ঞানীদের কল্পিত ‘অর্গ্যানিক স্যুপে’ সেটি ঘটা সম্ভব হয়েছিল কিভাবে? আকস্মিকভাবে ঘটনাক্রমে যদি এমনকি একটি সরল অনুকেও অর্গ্যানিক স্যুপে তৈরী হতে হয়, তাহলে অংকের নিয়মে সেই সম্ভাবনা কতটা? বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানীরা স্বীকার করেন যে, সেই সম্ভাবনা হচ্ছে ১০^১১৩ – অর্থাৎ ১- এর পর ১১৩ টি শুন্য দিলে হবে। সেই সংখ্যার ১ ভাগ। কত হাজার হাজার কোটি ভাগের এক ভাগ? ১-এর পর চারলাইন পর পর শূন্য। কল্পনার অতীত, সম্ভাবনাসীমার বাইরে। তুলনীয়ঃ আপনা থেকে উদ্ভব হলো একটি কোয়ার্টজ ঘড়ির।জীব-কোষ তৈরী হতে হলে কিছু প্রোটিন গঠন-কাঠামোগত(স্ট্রকচারাল) উপদান হিসেবে কাজ করে এবং অন্যান্য কিছু প্রোটিন নানা এনজাইম হিসাবে কাজ করে। এনজাইমগুলি কোষের রাসায়নিক বিক্রিয়া ত্বরান্বিত ক্রএ। এনজাইমের এই সহায়তা ছাড়া কোষের উদ্ভব অসম্ভব – কোষের মৃত্যু হত অনিবার্য। এইভাবে প্রোটিন অনুগুলির নানা বিন্যাসে দুভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়াটা যদি আপনা থেকেই ঘটতে হয়, তাহলে তার সম্ভাবনার হার কত? ১০^৪০০০০ অর্থাৎ ১- এর পর ৪০ হাজার শূন্য।গণিতবিদদের মত অনুসারে, যে ঘটনা ঘটার সম্ভাবনার হার ঠিক ১০^৫০- এর ১ ভাগ পেরোলেই তা ঘটার আর কোনো সম্ভাবনা থাকে না। তাহলে ১ – এর পর ১১৩ টি শুন্য ভাগের এক ভাগ? গণিতিক নিয়মে অসম্ভব (‘ম্যাথেম্যাটিক্যাল ইম্পসিবিলিটি’)। বিজ্ঞানীদের হিসেব মতো ব্রহ্মাণ্ডে যত পরমানু আছে, এই সংখ্যা তার চেয়েও বেশি। সুতরাং অর্গানিক স্যুপ তৈরী হয়েছিলো প্রাণ আর্বিভাব হয়েছিলো। কিন্তু এগুলো আপনা আপনি হয় নাই। এগুলো একটি প্রক্রিয়ায় একজন ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনারের তত্ত্বাবধানে এগুলো সৃষ্টি হয়েছিলো।
২| ০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:৩৪
যামিনী সুধা বলেছেন:
পড়ে ভালো লাগলো; আপনি দেশকে গাজা, সুদান ও ইয়েমেনের লেভেলে নিতে চাচ্ছেন?
৩| ০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:৩৮
কামাল১৮ বলেছেন: কোরান প্রথমে মুখস্ত করে রখতো।পরে দেখাগেলো জনে জনে আলাদা ভাবে বলছে।তখন খেজুর পাতায় লিখে রাখার চেষ্টা হয়।কিছু আয়াত ছাগলে খেয়ে ফেলে।তখন ওসমান সংরক্ষণ করেন।
ভূল ভাল সংরক্ষনের কথা বলে ওসমানকে হত্যা করে আবুবকরের ছেলে সহ করেক জন।ছাপা খানা চালু হলে মিশরে ছাপা হয় প্রথম।যেটা এখন আমরা পড়ছি।এটাই বিবর্তন।বিবর্তন মানে পরিবর্তন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:১৭
অপলক বলেছেন: চমৎকার। ভাল লাগছে। এক নি:শ্বাসে পড়ে ফেললাম। আরও চাই...