![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবিতা লিখা,যদিও মান এর দিক থেকে কোন নাম্বাবা পাওয়ারর যোগ্যাতা রাখেনা।ভাল লাগে তাই লিখি।
১৪ এপ্রিল।রাত ১২ টা ৭ মিনিট।
আবিদ এর ফোনে একটা কল আসে।রিসিভ করার পর ই ওপাস থেকে ভেসে আসে শুভ নববর্ষ......আবিদ খেয়াল ই করেনি কখন ১২ তা বেজে গেছে।ফোন টা সুন্দরি করেছিলো।আবিদ ওকে আদর করে সুন্দরি বলে ডাকে।
দেড় বছরের সম্পর্ক ওদের।কিন্তু ইদানিং সম্পর্কটা কেমন যেন হয়ে গেছে।আগের মতো তেমন কথা হয়না ওদের।কেমন যেন একটা দেয়াল এসে ওদের মাঝে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে।সেটা আবিদ ও বুজতে পারে।শুধু একটা জিনিস বুঝতে পারেনা আবিদ,সুন্দরি কেন মাঝে মাঝে ওর সাথে এমন করে।যেটা আগে কখনো হতনা।আবিদের শুধু একটাই প্রশ্ন,যা কিছু হোক সেটা ওদের ভালোবাসার মধ্যে প্রভাব ফেলবে কেনো?আবিদ তো সুন্দরি কে কম ভালোবাসে না।এটা নিয়ে ওকে অনেক বার প্রশ্ন করেছে আবিদ কিন্তু কোন উত্তর মেলেনি আজো।
সেটা নিয়েই ভাবছিলো আবিদ,হঠাত ফোন আসাতে বাস্তবে ফিরে এলো আবিদ।কন্ঠ টা শুনার পর আবিদ ও উইশ করলো।কথা হলো অনেকক্ষন,আবিদ শুধু একটা কথা শুনার জন্যই অপেক্ষা করছিলো যে কখন সুন্দরি বলবে “অনেক দিন তোমার সাথে দেখা হয়না কাল আসতে পারবা তুমি?চলোনা কাল দেখা করি,তুমি কাল সকালে আসো,পাঞ্জাবি পরে এসো।সারাদিন ঘুরবো,পরে তুমি রাতে চলে যেও......”
কিন্তু আশা টা আশায় থেকে গেলো।এক সময় প্রতিদিনের ঘুমিয়ে পরলো সুন্দরি।আবিদ ও ঘুমিয়ে পরছিলো।মাঝরাতে কি যেন একটা স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেংগে গেলো আবিদের।অনেক চেষ্টা করেও আর ঘুমাতে পারলোনা।মাথার ভিতরে শুধু একটা বিষয় ই বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে।কেনো এমন হলো?একটু নিজের মতো করে ভালোইতো বেসেছিলো,একটা স্বপ্ন দেখেছিলো,এটাই কি দোষ আবিদের?
তারপর ও সুন্দরি কে পাগলের মতো ভালোবাসে আবিদ।কিছু মানুষ থাকে পৃথিবীতে যারা কোন কারন ছাড়াই তার ভালোবাসার মানুষ কে নিজের থেকে ও বেশী ভালোবেসে ফেলে।তার মাঝে কিছু সৌভাগ্য মানুষ ভালোবেসে তার ভালোবাসা কে নিজের মতো করে ফিরে পায়,আর কিছু দুর্ভাগা মানুষ নিজের থেকে ও বেশী ভালোবেসে তার ভালোবাসাকে হারিয়ে ফেলে।
এসব ভাবতে ভাবতে দু চোখ দিয়ে অশ্রু বেয়ে পরছিলো আবিদের।ক্ষানিক পরেই মুয়াজ্জিনের আযানের সুর ভেসে এলো আবিদের কানে।চোখ মুছে অযু করার জন্য উঠলো।নামায পড়ে দু হাত তুলে দুয়া করতে গিয়ে অঝোর ধারায় কান্না ভেংগে পরলো আবিদ।মা বাবা ফ্যামিলীর জন্য দুয়া করার পর শুধু একটা দুয়াই করছিলো আবিদ... “ হে আল্লাহ সুন্দরী কে ভালো রেখো,ও যেখানেই থাকুক,যেন ভালো থাকে”
সারাদিন কাউকে উইশ করেনি আবিদ।কিছু ফ্রেন্ড টেক্সট করেছিলো।শুধু তার রিপ্লাই দিয়েছে।সারাদিন একা রুমেই কাটিয়েছে।ছোট ভাই টা ওর ফ্রেন্ডসদের সাথে ঘুরতে গেছে।আব্বু আম্মু আর ছোট বোন টাও আব্বুর এক অফিসিয়াল ফাংশনে গেছে।
আবিদের মতো কিছু মানুষ থাকে পৃথিবী তে যাদের জীবনে কোন নববর্ষ থাকেনা।থাকেনা কোন ভ্যালেন্টাইনস ডে।তারা শুধু একের পর এক ট্রেজেডি ফেস করার অপেক্ষায় থাকে।এতে করে পরবর্তিতে তারা এতটাই মানুষিকভাবে আঘাতগ্রস্থ হয় যে সেখান থেকে ফিরে আসাটা অসম্ভব হয়ে পরে।
আবিদ এখনো আশায় থাকে হয়তো একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।কিন্তু অজানার পথের অপেক্ষায় থাকাটা অনেক কষ্টের,জানেনা কতদিন এই কষ্টের বোঝাটা বয়ে বেড়াতে হবে আবিদের।
তারপর ও আবিদ স্বপ্ন দেখে।একটা সুখের স্বপ্নের।
রাত ১টা ৭ মিনিট।
গত দুই দিন ধরেই মন খারাপ আবিদের।কোন খবর নেই সুন্দরীর।চুপচাপ কম্পিউটারের সামনে বসে আনমনে পিছনের
কিছু সৃতির কথা ভাবছে আবিদ।হটাৎ কি মনে করে ফেসবুকে ধুকে আবিদ,আর সাথে সাথেই একটা এস এম এস পায়,ক্লিক করে দেখে সুন্দরীর এস এম এস।কিছু কথা লিখা,কিন্তু শেষ লাইন টা পড়ে মাথা এলোমেলো হয়ে যায় আবিদের...
“আমাকে ভুলে গিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করো”
সাথে সাথে কিছু রিপ্লাই পাঠায় আবিদ।কিন্তু পর মূহুর্তে যে রিপ্লাই টা আসে,তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না...
“আমি ভালোবাসিনা তোমায়”
বাকরুদ্ধ হয়ে যায় আবিদ।আর কোন রিপ্লাই দেওয়ার শক্তি থাকেনা ,মনে হতে থাকে হাতের আংগুল গুলো যেন অবস হয়ে গিয়েছে।এমন একটা সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে সেট কল্পনা ও করেনি আবিদ।দেড় বছরের একটা সম্পর্ক যে এভাবে দেড় মিনিটের মাঝে ইতি ঘটতে পারে ভাবতেই পারছেনা।একাউন্ট টা লগ আউট করে বাসা থেকে বেড়িয়ে পরে।নির্জন রাস্তায় একাকি হাটতে থাকে।ফ্লাসব্যাকে ফিরে যায় সেই প্রথম দিনের একটা মূহুর্তে।
“চুপচাপ নদীর পাড়ে বসে আছে সুন্দরী আর আবিদ।একটু পরেই আবিদ কে রওনা দিতে হবে।কিন্তু দুজনের কেউ ই কাউকে যেন যেতে দিতে রাজি নয়।একটা বিষয় নিয়ে কথা বলছে দুজন।আবিদের কথা গুলো শুনে আনমনে ভাবছে সুন্দরী।অনেকক্ষণ চুপ থাকার পর সুন্দরী বললো কোন চিন্তা করো না,আমি তো তোমার সাথে আছি।তুমি তোমার টার্গেটে এগিয়ে যাও,আমি সারা জীবন তোমার পাশে থাকবো।“
রাস্তার কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দে বাস্তবে ফিরে আসে আবিদ।দেখে হাটতে হাটতে বেশ দূরে চলে এসেছে।সামনে একটা উচু জায়গায় বসে আবিদ,কিছুতেই যেন বিষয়টা মেনে নিতে পারছেনা।এত আশা,এত স্বপ্ন যেন মুহুর্তেই ধুলোয় মিশে গেলো।নিজের সবকিছু দিয়ে ভালোবেসেছিলো ওকে।কি করেনি ওর জন্য।অন্য দশটা ছেলের মতো বিষয়টা সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেনা,নিজের দু হাতের দাগ গুলোর দিকে তাকিয়ে আর কিছু ভাবতে পারেনা আবিদ,হাউমাউ করে কান্না করতে থাকে আবিদ।এভাবে কতক্ষন কেটে গেছে বলতে পারবেনা, হটাৎ কারো ডাকে পিছনে ফিরে তাকায়,দেখে দুজন পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে।
এত রাতে কি করছেন এখানে?
(চোখ মুছে) না,এমনিতেই বসে আছি...
কি কোন সমস্যা?
না না কোন সমস্যা না,বাসায় ভালো লাগছিলো না,ভাবলাম বাইরে থেকে একটু হেটে আসি।
বাসা কথায় আপনার?
এইতো সামনেই...
যান যান বাসায় যান,জানেন না দেশের পরিস্থিতি ভালো না,এতো রাতে বাইরে থাকবেন না,যান বাসায় যান।
জি আচ্ছা...
আর কোন কথা না বলে বাসার পথ ধরে আবিদ।চোখ দিয়ে আবারো অশ্রু ঝরতে থাকে আবিদের।হটাৎ বুকের বাম পাশটা চিলিক দিয়ে উঠে।ব্যাথায় কুকড়ে যায় আবিদের মুখ।ডান হিয়ে ব্যাথার জায়গাটা চেপে ধরে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে পানি খেয়েই বিছানায় এলিয়ে পরে আবিদ।এক অব্যাক্ত নীল কষ্টে বিবর্ণ হয়ে যায় আবিদের মুখ।একটা গানের কথা খুব মনে পরছে এখন...
সব কিছু বদলে গেলো,
এক রাতের নিমিষে,
তুমি হারিয়ে যাবে,
ভাবিনি আগে,
আজ তোমায় হারিয়ে,
একা এই রাতে,
ভাবনাতে তোমাকে,
রেখেছি এই বুকে,
ভাবি তুমি আসবে ফিরে,
ধরবে হাতগুলো,
বলবে তুমি কেঁদোনা,
ফিরে এসেছি এই দেখো,,,,,,,
©somewhere in net ltd.