![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুব সাধারনভাবে কাটছিল রাতটা। এখন বাজে রাত ১টা। সেই রাত ১০ টার পর থেকে আছি কমলাপুর রেল-ইস্টেশনে। এই নিয়ে এই জনবহুল রেলস্টেশনে দ্বিতীয়বার আসলাম।
কারণ অবশ্য আমার আম্মা ঢাকা আসছে। এজন্য অনিদ্রা বসে থাকা। ভাবছিলাম অন্যভাবে একটু নিজেকে ব্যস্ত রাখা যায় কিনা। যেই ভাবনা সেই কাজ।
একটু এদিক ওদিক করলাম। একটু অদূরে চোখ পড়লো কিছু ভিনদেশী ভদ্রলোকের দিকে। আমার আবার একটু কৌতূহল বেশি।
গেলাম এগিয়ে।
দেখি ৫-৬ জন খুব স্মার্ট যুবক। আমি যেতেই কাছে ডেকে বসিয়ে নিল। দেশ কি জিজ্ঞাসালাম। (তাদের সাথে সকল কথোপকথন ইংরেজিতে)
তাদের মধ্যে ৩ জনের দেশ সৌদি-আরব এবং বাকি ৩ জনের তেহরান (ইরান)। সবাই আমাদের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
খুব ভাল লাগলো আলাপ করে। কিসের জন্য এখানে জিজ্ঞাসা করলাম।
বললো বিশ্ব-ইজতেমা শেষ করছি, এখন দ্বীনেকে জানার জন্য যাচ্ছি বাংলার কিছু গ্রামে। খুব ভালো লাগলো শুনে।
তখন হঠাৎ মাথায় প্রশ্ন জাগলো, রাসুলের দেশ থেকে কেন দ্বীনকে জানার জন্য-প্রচারের জন্য এই দেশ তারা পছন্দ করলো।
তখন তারা বললো আরে ভাই দ্বীনকে জানতে হলে মানুষের কাছে যেতে হয়। মানুষ, দেশ না জানলে কি দ্বীন জানা যায়।
আসলে খুব ভালো লাগলো এই ভিনদেশী যুবকদের কথা শুনে।
আমার ধর্ম নিয়ে অঘাত মুলক প্রশ্ন সহ অনেক প্রশ্ন করলাম তাদের। তারা কোন বিরক্ত হল না। সত্যি এমন মানুষ পাইলে দ্বীনকে ভুলে থাকা কঠিন। সারাটা ক্ষণ মুখে হাসি ভরা।
আরব্য রজনীআরব্য রজনী
তারা আমার কাছে জানতে চাইলো আমি এখানে কেন আছি, কি করবো? বললাম।
আমি যে এত দ্রুত তাদের বন্ধু হয়ে যাবো ভাবি নি।
আমার দেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে, বললাম খুব ভালো যে আছে আমার দেশ তা না। তবে আমরা সামান্যতে সুখ খুঁজে নিই।
যাইহোক আমার আম্মা যে ট্রেনে ছিল সে ট্রেন চলে আসবে কিছুক্ষণের মধ্যে মাইকে বলতে শুনলাম।
তারা অবশ্য এই ট্রেনেই খুলনা যাবে।
তাদের বন্ধু সুলভ আচরণ সত্যিই আমাকে খুব টানছিল।
অনেকবার ইচ্ছা করেছি দ্বীনকে জানতে কিছুদিন দ্বীনের মধ্যে থাকবো। এই ভিনদেশী যুবকদের দেখে আরও মনটা আকুল-পাকুল করে উঠলো।
কিন্তু আজকে আমার আম্মাকে বাসাই না রেখে আমি যেতে পারবো না, না হলে সত্যিই আমি মিস করতাম না এই সুবর্ণ সুযোগ, অন্য মানুষকে জানার, অন্য দেশকে জানার, দ্বীনকে জানার।
আপনার আম্মাকে আমাদের সালাম দিবেন, এই বলে যুবক গুলো ট্রেনে উঠে যেতে লাগলো। আমিও বিদায় দিলাম। (কারণ সবাই ব্যস্ত)
আমার আম্মা এসে গেছে।
হঠাৎ মনে হল কি আরেকবার দেখা করে আসি। আম্মাকে বসতে বলে দিলাম এক দৌড়।
দূর থেকে দেখি ট্রেন ছেড়ে দিছে। তাদের একজন দরজা দিয়ে মিচকি হেসে বললো, বন্ধু আল্লাহ চাইলে আবার দেখা হবে।
আমিও ফিরলাম।
ঠিক এই ২-৩ ঘণ্টায় আমিই ভুলে গেছিলাম আমি কোথায় বসে ছিলাম এই দেশে নাকি অন্য কোথাও।
এযেন এক নতুন আরব্য রজনী।
মিস করবো বন্ধু তোদের অনেক। স্মৃতি রেখে গেলি এই বুকের ঠিক বা পাশে
© ইমরান তপু সরদার
(১৪-০১-২০১৫ ইং, ভোর ৪ টা)
©somewhere in net ltd.