নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি রক্ত বন্যা দেখিনি কোথাও,\nদেখেছি চোখের কান্না।\nসে অশ্রু ফোটায় ম্লান হয়েছে\nহীরা, মতি, মণি, পান্না।

মোঃ জাবেদ ভুঁইয়া

আমি রক্ত বন্যা দেখিনি কোথাও, দেখেছি চোখের কান্না। সে অশ্রু ফোটায় ম্লান হয়েছে হীরা, মতি, মণি, পান্না।

মোঃ জাবেদ ভুঁইয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপ্সরা: দুর্গের দরজা (পর্বঃ ০২)

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:৫৩


তিন
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তন্ময়ের সাথে অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটতে শুরু করলো। রুম জুরে কেউ নেই, অথচ তন্ময়ের মনে হতে লাগলো কেউ যেন তার পায়ের কাছে বসে আছে। অদ্ভুত একটা অসস্তি কাজ করতে লাগল ওর মাঝে। মনে হচ্ছে কেউ যেন ওকে সারাক্ষণ নজরদারির মধ্যে রেখেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটলো গতকাল রাতে। মাঝরাতের দিকে তার মনে হল কেউ যেন তাকে ডাকছে। কানের কাছ থেকে। ফিসফিস করে।ঘুম ভেঙ্গে গেল ওর। ঘরজুরে আবছা আবছা অন্ধকার। বাইরের আলো মোটা পর্দা ভেদ করার অক্লান্ত পরিশ্রম চালিয়ে যেন বারবার ব্যর্থ হচ্ছিল। সেই আবছা আলো আর অন্ধকারে মাঝে তন্ময়ের চোখ গেল বাইরের পর্দার দিকে। ওর মনে হলো , পর্দার ওপাশটায় কেউ যেন দাড়িয়ে আছে। সোজা ওর দিকে তাকিয়ে। বাইরের আলোয় ছায়া ছায়া অবয়বটা ও স্পষ্ট দেখতে পেল। ভয়ঙ্কর ব্যাপার হচ্ছে ছায়াটাকে তন্ময় চিনতে পারলো। গোলগাল গড়নের মুটকো ছায়া মূর্তিটা আতিক না হয়ে যায়না। ছায়া মূর্তিটা হাত নেড়ে হাত নেড়ে ওকে কিছু একটার দিকে ইঙ্গিত করছিল। তন্ময় ভালো করে লক্ষ করতেই দেখতে পেল ব্যাপারটা। সেই সিম্বলটা আতিকের হাতে। পর্দার ফাক গলিয়ে সিম্বল থেকে অদ্ভুত একটা আলো ঠিকরে পড়ছিল তন্ময়ের চোখে। একপলকের জন্য তন্ময়ের মনে হলো ও জন্য সেই কুয়াশার রাজ্যে ভাসছে। সেই রহস্যময় দরজা যেন খোলে যাওয়ার অপেক্ষায় ওর দিকে তাকিয়ে। আর দরজার ওপাশের জগত থেকে থেকে যেন কোন এক অদ্ভুত অজানা রহস্য তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। আর কি এক অপেক্ষা, অজ্ঞাত নির্বাসনের যেন সমাপ্তি ঘটতে চলেছে। কিন্তু শুধু অই এক মুহূর্তের জন্যই। তার পরেই সব মিলিয়ে গেল।

নিভে গেল ঠিকরানো আলো, আতিকের ছায়াটাও আর দেখা গেলনা। তন্ময় ওর হাতে একটা ধাতব বস্তুর অস্তিত্য অনুভব করলো। চোখের কাছে নিয়ে এলো হাতটা। সহসা ও নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারলো না যেন। বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখলো। হাতে চিমটি কেটে দেখলো স্বপ্ন কিনা। আর তারপরে ও নিশ্চিত হল যা দেখছে তা আসলেই সত্যি। সেই ধনুকের মতো দেখতে জিনিসটাতে পেচানো তীরগুলো যেন আগুনের ফুলকির মতো জ্বলছিল।



সকাল বেলা তন্ময় ঘুম থেকে উঠে দেখে তিতলি এসে হাজির। তার হাতে একটা ঢাউস সাইজের বই। হাসপাতালে এসে রোগী দেখার চেয়ে তিতলির ঢের বেশি মনযোগ বইয়ে দেখা গেল।
তন্ময় নড়েচরে উঠতেই তিতলি বলল, তোমার জন্য ভয়ানক একটা তথ্য আছে। দাঁড়াও এই চ্যাপ্টারটা শেষ করে নেই।

তন্ময় বলল, দাঁড়াতে পারবনা পায়ে এখনও ভয়ানক ব্যথা।

ওর রসিকথা তিতলির কান অবধি পৌঁছল কিনা, বুঝা গেলনা। তিতলির মুখে কোন ভাবান্তর নেই, ও তেমনি মাথা ঝুকিয়ে বইয়ের পাতায় মনযোগ দিয়ে পড়তে লাগল।

এই ফাঁকে তন্ময় সিম্বলটা তার বালিশের নিচে লুকিয়ে ফেলল। ব্যপারটা তিতলিকে না জানানোই শ্রেয় মনে হল ওর। আর বলেও লাভ নেই। এই মেয়ের অলৌকিক কোন কিছুতে বিশ্বাস নেই।

টানা আধ ঘণ্টা পর তিতলি মুখ ফেরাল বই থেকে। ব্যাগ থেকে মার্কার বের করে বইয়ের একটা অংশ মার্ক করলো। তারপর এগিয়ে দিল তন্ময়ের দিকে।
মুখে বলল, পড়ে দেখ। বলেছিলাম না তোমার অই স্বপ্নের কোন ভিত্তি নেই! এই দেখ এইটা একটা গল্পের অংশ।
তন্ময় উবু হয়ে বইটা হাতে নিল। মোটা কাগজে বাঁধানো একটা তামার লিপি দিয়ে ছাপানো পুরনো আমলের বই। মার্ক করা পাতায় আঙ্গুল চেপে প্রথম পাতায় বইয়ের নামটা দেখল ও। বড় করে লেখা অপ্সরা। এক রঙা প্রচ্ছদে আবছা একটা নারীর অবয়ব শৈল্পিক মুন্সিয়ানায় অসাধারনভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রথম পাতা উল্টাতেই ওর চোখ পড়ল বইয়ের প্রকাশ সালের দিকে, ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দ। তার নিচে মূল্য লেখা, ১১ টাকা মাত্র।
আশ্চর্য জনক ব্যাপার হচ্ছে বইয়ের কোথাও লেখক কিংবা প্রকাশক কারো নামই পাওয়া গেলনা।
সেই আমলে অবশ্য বিতর্ক হতে পারে এমন অনেক বইয়ে লেখকের নাম গোপন রেখে বই প্রকাশ করা হতো। কিন্তু এ ধরনের উপন্যাসে কেন লেখকের নাম গোপন করা হবে?

তবে কি এই বইয়ে এমন কোন কিছু আছে যা অই সময়ে বিতর্ক সৃষ্টি করার মতো ছিল?

তন্ময় তিতলির মার্ক করা পাতাটা খোলল। উপরে তাম্র ছাপের ফাটা ফাটা হরফে বড় করে লেখা, একবিংশ পরিচ্ছেদ। তার নিছে বেশ রসিয়ে সাধু ভাষায় একটা ঘটনার বর্ণনা দেয়া। লেখকের নিজের ভাষায় নিচে তুলে ধরলাম,

বৈকাল বেলা পর্যন্ত মাধবী পিতার বাড়ি যাওয়ার লাগিয়া গো ধরিয়া রহিল। অজ্ঞতা মতিলাল তাহার বাঁধানো খাতাটা রাখিয়া মাধবীকে স্টেশন অবধি আগাইয়া দিতে গেল। গরুর গাড়িতে স্টেশন অবধি গিয়া রেলে তাহকে তুলিয়া দিতেই রাত্রি প্রায় নয়টা বাজিয়া গেল। পাড়া গাঁয়ের জন্য ঢের রাত্রি। বৃষ্টি বাদলার দিন, গমগম করিয়া বার দুই বজ্রপাত ঘটিল নিকটে কোঁথাও। গারোয়ান ব্যাটা আর ফিরিতে রাজি হইলনা। সে তাহার গরুর গাড়ি নিয়া স্টেশনে রাত্রি যাপন করিতে চলিয়া গেল।
বলিয়া গেল, বাবু, রাস্তা ভালোনা। আজ রাত্তিরটা এখানেই কাটাইয়া লন। সকালে আপানাকে পৌঁছে দেব।

মতিলালের থাকিয়া যাইবার জো ছিলনা। বাড়ি ফিরিয়া তাহার প্রায় সমাপ্ত উপন্যাসখানা খানা সমাপ্ত করিতে হইবে। প্রকাশকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নেওয়া হইয়াছে। দিন কয়েক আগে প্রকাশক চিঠি মারফত তাগাদা দিয়া পাঠাইয়াছেন, অতি শিগ্রয় যেন তাহাকে উপন্যাসখানা সমাপ্ত করিয়া ডাক যোগে পাঠাইয়া দেওয়া হয়।

অজ্ঞতা মতিলাল কে পদব্রজেই রওয়ানা হইতে হইল। স্টেশন হইতে বাহির হইয়া খানিকটা পথ যাইতেই একটা ফাকা মাঠ পরে। তাহার পাশ দিয়া মূল সড়ক। সড়ক দিয়া ঘুরিয়া না গিয়া মতিলাল ভাবিল মাঠের মধ্য দিয়া সোজা চলিয়া যাইবে। মাঠে নামিতেই আকাশ আবারো গর্জিয়া উঠিল। যেন মতিলাল কে সতর্ক করিয়া দিয়া বলিল, সাবধান, এই পথে বিপদ!
মতিলাল যখন ঠিক মাঠের মাঝখানে ঠিক তখন চারিপাশ অন্ধকার করিয়া শুরু হইল ঝর। শো শো করিয়া বাতাস ছুটিতে লাগিল। বাতাসের গর্জনে কানে তালা লাগিবার জোগার। অবস্থা অধিক খারাপের হেতু গম গম করিয়া বৃষ্টি নামিল। এক পশলা বৃষ্টিতে কাক ভেজা হইয়া মতিলাল যখন কি করিবে কই যাইবে ভাবিয়া অন্ত দেখিল না, ঠিক তখন তাহার মনে হইল এই ভয়ানক বাতাস আর বৃষ্টির শব্দকে উপেক্ষা করিয়া কোথা হইতে যেন এক জোড়া নূপুরের ঝংকার কানে আসিয়া বারি মারিতেছে। অদ্ভুত মায়াবী সে ঝংকারে মতিলাল একেবারে মজিয়া গেল। তার মনে হইল এই ভয়ংকর আবহাওয়া কোথায় যেন মিলাইয়া গিয়াছে। সে নূপুরের শব্দে আগাইয়া চলিল।



এতটুকু পড়ে তন্ময় থামল। বাকি অংশটা পোকায় খাওয়া। তিতলি বিজ্ঞ বিজ্ঞ মুখ করে বসেছিল এতক্ষণ। এবার মুখ খোলল,
এই নূপুরের শব্দের গপ্প খালি এই বই নয় আরো অসংখ্য ভূতের গল্পের বইয়ে পাবে তুমি।
ঃ এর দ্বারা কি প্রমাণ হয়?
তন্ময় প্রশ্ন ছুরলো।
ঃ তোমার অই স্বপ্ন একটা মামুলি স্বপ্ন , একটু পর পর নূপুরের শব্দ পাওয়া একটা বিভ্রান্তি। সব মস্তিস্কের কল্পনা।
তিতলি তার যুক্তিতে অনড় থাকতে নানা যুক্তি দাড় করাতে লাগলো।আর এদিকে তন্ময়ের চিন্তা অন্যদিকে। কয়েকটা জিনিস তন্ময়ের মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগলো। প্রথমত অদ্ভুত একটা বই। মামুলি একটা ভৌতিক উপন্যাসে কোথাও লেখকের নাম নেই কেন? মতিলালের ঘটনার সাথে অদ্ভুত একটা মিল আছে ঠিক, কিন্তু বইয়ের পাতাটা ঠিক সেই জায়গা থেকে পোকায় খেয়েছে যতটুক পর্যন্ত তন্ময়ের জীবনে ঘটেছে। এটা কি কাকতালীয় নাকি অন্য কোন রহস্য আছে এর মধ্যে। পুরো বইটা পড়তে তীব্র কৌতূহল বোধ করল তন্ময়।

তিতলি তখনো একটানা কি কি যেন বলেই চলছিল। তন্ময় তাকে থামাল।

বলল, বইটা রেখে যা। পড়ে দেখি পুরোটা।



পুরো দিনটা তন্ময় বই পড়ে কাটাল। কিন্তু নতুন কোন তথ্য মিললনা। কিন্তু একটা চিন্তা আরো জট পাকিয়ে বসল মাথায়। পঁচিশ টা অধ্যায় আছে বইয়ে। প্রথম দিকে মতিলালের নানা সুখ দুঃখের গল্প। আর পাঁচটা বাংলা উপন্যাসের মত। তার মধ্যে একুশতম অধ্যায়ে গিয়েই কেবল ওরকম নূপুরের শব্দের গল্পের আবির্ভাব। তার মধ্যে আবার এই অধ্যায়েরই কেবল বাকিটা পোকায় কাটা। অন্য কোথাও পোকায় খাওয়ায় ছাপও চোখে এলোনা।
আর সবচেয়ে অদ্ভুত তথ্য হচ্ছে এই একুশ অধ্যায়ের পর থেকে আর কোথাও নূপুরের শব্দ কিংবা এধরনের কোন ঘটনার উল্লেখ্য মাত্র নেই। বাইশ তম অধ্যায় থেকে আবার কাহিনী এমনভাবে এগিয়েছে যে, একুশ তম অধ্যায় বাদ দিলেও উপন্যাসের কাহিনী বুঝতে বিন্দুমাত্র অসঙ্গতি লাগবেনা পাঠকদের।
সন্ধ্যায় নার্স জানাল, কাল নাগাদ হাসপাতাল থেকে মুক্তি মেলার সম্ভাবনা আছে ওর। গ্রামের বাড়িতে এই এক্সিডেন্টের বিষয়ে কাওকে জানানো হয়নি। এখানের সবকিছু সামলেছেন মোক্তার মামা। তন্ময়ের মায়ের দূরসম্পর্কের ভাই। বড় হয়েছেন তন্ময়দের বাড়িতেই। তার এসে এখন কাপড়ের ব্যাবসা দিয়ে বসেছেন। প্রথম দিকে অবশ্য লস যাচ্ছিল মামার ব্যাবসা। কিন্তু মামা হাল ছাড়লেন না। টানা লেগে রইলেন। এর ওর কাছ থেকে হাত পেতে টাকা এনে ব্যবসায় খাটালেন। বছর ঘুরতেই মামার দিনও ঘুরলো। এরপর ধীরে ধীরে গায়ে কোট চড়ল, চোখে পাওয়ারের চশমা। সেই মামুলি কাপড়ের ব্যবসা রুপ নিল নামীদামী ফ্যাশন হাউজে। এখানে পাঠককে মোক্তার মামা সম্পর্কে একা তথ্য দেয়া দরকার। এই মোক্তার মামা একসময় ভয়ানক বই পাগল লোক ছিলেন। তন্ময়দের গ্রামের বাড়িতে যে ঢাউস সাইজের আলমারিতে শত শত বই রাখা তার প্রায় সব কটায় মামার কেনা।

রাতে মামা দেখতে এলেন।
তন্ময় তখনও বইটা নিয়েই পড়েছিল। প্রথমবার পড়ার পর কোন তথ্য চোখ এড়িয়ে গেল কিনা, কোথাও সেই সিম্বলের কোন উল্লেখ্য আছে কিনা ইত্যাদি ছিল দ্বিতীয় বার খুটিয়ে পড়ার উদ্দেশ্য।

বই পড়তে দেখে মামা বললেন,
কিরে নভেল নিয়ে পড়েছিস নাকি?

তারপর হাত বাড়িয়ে বললেন, দেখি কি বই? বেশ পুরনো মনে হচ্ছে দেখে?
বইটা হাতে নিয়ে মামা বেশ কিছুখন খুটিয়ে দেখে বললেন, পড় বইটা বেশ ভালোই। আমি পড়েছিলাম ১৯৭৩ দিকে মনে হয়। লেখকের নাম বোধহয় চন্দন কৃষ্ণলাল ছিল। রোমান্টিক ধাঁচের ছিল বইটা।
তন্ময় মামাকে একুশতম অধ্যায়টা দেখালো। মামা এই অধ্যায় ছিল কি ছিলনা সেটা মনে করতে পারলেন না। তবে মামা এটা নিশ্চিত করলেন যে বইটা রোম্যান্টিক ধাঁচেরই ছিল এবং সম্ভবত বইয়ে এধরনের কোন ভৌতিক ঘটনা ছিলনা।
১৯৭৩ এ পড়ে থাকলে মাঝখানে অনেক বড় একটা গ্যাপ, সুতরাং মামার ‘সম্ভবত’ কথার উপর ভরসা করা গেলনা।





চার
শুধু মানুষই নয় প্রকৃতিও মাঝে মাঝে উল্টা পাল্টা কাজ করে বসে। এই যেমন এই শীতের রাতে হুরমুর করে বৃষ্টি নেমেছে। একেবারে ঢল বৃষ্টি। নিপুদের বাড়ির নিচে একটা টিনের একচালা ঘর বেঁধে থাকে দারোয়ান মামা, পরিবার নিয়ে। বৃষ্টি নামলেই নিপু জানালা খোলে দেয়। টিনের চালে পড়া বৃষ্টির শব্দ শুনে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে। মোনাপুকে দুপুর থেকে পাওয়া যাচ্ছেনা। বাবা খোঁজতে বেরিয়েছেন। পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছে। মা ঘরে ছটফট করছেন আর একটু পর জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ পড়ছেন। এমনকি বাড়ির কাজের বুয়া পর্যন্ত দু বার হাউমাউ করে কেঁদে উঠতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত চুপ করে গেল।
কেবল চিন্তামুক্ত দেখা গেল নিপুকে। কাল রাতের স্বপ্নের অর্থ সে ধরতে পেরেছে। মোনাপু এখন কোথায় আছে সেটাও ও জানে।
বৃষ্টি থামল দশটা নাগাদ। বাবা ফিরলেন এগারোটায়। বাবাকে একা ফিরতে দেখেই মা ভয়ানকভাবে কান্না কাটি শুরু করলেন। নিপুর কয়েকবার ইচ্ছে হল সত্যি কথাটা মাকে জানাতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চেপে গেল। মোনাপুর জগতের সাথে অদ্ভুতভাবে জড়িয়ে গেছে ও। যে জগতে মোনাপুর এতদিন বিচরণ ছিল তার সাথে গতকাল থেকে পরিচয় হলো নিপুর। এখন অজানা কিছু একটার অপেক্ষা। সেটা কি মোনাপু ওকে বলেনি। কিন্তু জানাবে শিগ্রয়। ততদিন পর্যন্ত মুখে কুলুপ এটে বসে থাকা ছাড়া কোন উপায় নেই। নিপুর গায়ে এখন আর জ্বর নেই। তাও সে ঘর অন্ধকার করে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শোয়ে রইল। বৃষ্টি থেমে যেতে এখন বেশ শীত শীত করতে শুরু করছে। মনে হচ্ছে ছোট্ট একটা ছুটি কাটিয়ে শীত তার নিজ আসনে ফিরে আসতে শুরু করেছে। মায়ের কান্না কাটি কিছুটা কমেছে। বাবা নানাভাবে মাকে শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছেন।
জায়গায় জায়গায় মাইকিং করা হয়েছে, জিডি করা হয়েছে পুলিশে। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি বেরোবে আগামীকাল। কাজ না হলে পোস্টার ছাপিয়ে বিলি করা হবে জায়গায় জায়গায়।

রাত বাড়তে লাগলো। নিপুর মনে হল আশেপাশে কোথাও ব্যাঙ ডাকছে। খিক খিক করে পাশের বাসা থেকে যেন হাসির শব্দ ভেসে এলো হঠাত। কাজের বুয়া এসে এসে দুবার কাদো কদো গলায় ডেকে গেছে, আফা খাইয়া লন! আল্লার রহমতে দেখবেন রাত পোহাইলেই মোনা আফারে পাওয়া যাইব।
মা ঘুমোতেই বাবা এলেন। মাথায় হাত বুলিয়ে কিছুখন বসে থেকে উঠে গেলেন। নিপুর মনে হলো বাবার শান্তনার ভাষা ফুরিয়ে গেছে।

মাঝ রাত পেরিয়ে গেল। নিপু তেমনি চোখ খোলে পড়ে রইল। চারদিকে যখন সবকিছু নিরব হয়ে এলো। ডাকতে ডাকতে ক্লান্ত হয়ে বিশ্রামে গেলো ব্যাঙের দল, ঠিক তখন যেন নিপুর অপেক্ষার অবসান ঘটল। প্রথমে ফিসফিস শব্দ ভেসে এলো। তারপর ক্রমশ স্পষ্ট হলো কন্ঠটা। নিপু ডুকরে উঠলো, মোনাপু!!!
ফিসফিস করে বাতাসে ভেসে উত্তর এলো, কিরে খুব মন খারাপ লাগছে?
নিপুর গলা অবধি এসে কথা আটকে গেল। সে চুপ করে রইল।
আবারো সেই ফিসফিসে কথা ভেসে এলো, রাগ করিস নারে বোন। শিগ্রয় তোকেও নিয়ে আসব এখানে। তবে তার আগে তোকে কিছু কাজ করতে হবে।
নিপু কান্না ধামাচাপা দিয়ে বলল, কি?
ওদিক থেকে কিছুখন কোন সারা পাওয়া গেলনা। তারপর মনে হল তিন চারজন মানুষ যেন ফিসফিসিয়ে কি নিয়ে আলোচনা করছে। কোন এক অদ্ভুত ভাষায় কথা বলছে ওরা। নিপু কান পেতে থাকলো বাতাসে। শুধু সেই ফিসফিসানিই কানে এলো ওর। এক চুলও বুঝতে পারলোনা সে আলোচনার। দুর্বোধ্য ভাষা সে ভাষার অদ্ভুত সংলাপ যেন তাকে মোহিত করে রাখল খানিকটা সময়। মনে হল আগে কোথাও শুনেছে,খুব পরিচিত ঠেকছে কিন্তু মনে পড়ছে না। অদ্ভুত একটা অনুভূতি। কিছু একটা যেন মনে আসতে আসতে হঠাত করে মিলিয়ে যাচ্ছে। গুঞ্জন শেষ হল একটু পরেই। আবারো মোনাপুর কন্ঠ ভেসে এলো বাতাসে ভেসে। ফিসফিসিয়ে মোনাপু বলল, সেটা তুই কালকের মধ্যে এমনি এমনি জানতে পেরে যাবি। কিন্তু চারদিকে যা ঘটবে তার মধ্যে কোন অদ্ভুত কিছু দেখলে ভয় পাবিনা, কাওকে কিছু জানাবিওনা।
নিপু কিছু বলতে যাচ্ছিল। তার আগেই আবারো ভেসে এলো মোনাপুর কন্ঠ, গেলাম রে নিপু। এখানে অনেক কাজ।পরে কথা হবে।
কিছু বুঝে উঠার আগেই সেই ফিসফিসানি একেবারেই বন্ধ হয়ে গেল। নিপু বার কয়েক ফিস ফিস করে ডাকল, মোনাপু! মোনাপু!!!
কোন সাড়া পাওয়া গেলোনা। একটা মুহূর্ত পেরোল। আর তার পরেই অদ্ভুত একটা অনুভূতি হতে লাগলো নিপুর। ক্রমাগত যেন পুরো ঘরটা দোলতে লাগল। একবার ভাবল, ভূমিকম্প হচ্ছে নাকি? বিছানার পাশে রাখা টেবিলে পানির গ্লাস রাখা ছিলো। সেটা উল্টে পড়ার কথা এই দোলনে। কিন্তু সেটা এক জায়গায় স্থির। তারমনে এই ভূমিকম্পটা কেবল নিপু একাই টের পাচ্ছে। ভয়ানক রকম মাথা ঘুরতে শুরু করলো ওর, মনে হল বমি আসছে। বিছানা থেকে উঠতে চেষ্টা করলো। পারলোনা। হাতের একটা আঙুল পর্যন্ত নাড়ানো গেলোনা। বাধ্য হয়ে দাঁত চেপে বিছানার সাথে চেপে রইল ও। প্রচণ্ড বেগে চারদিক দোলতে লাগলো। মনে হলো তাকে যেন কোন দুষ্ট খেলার সাথী ড্রামের মধ্যে পুরে ক্রমাগত সেটাকে ঘুরিয়ে পৈশাচিক একটা খেলায় মেতে উঠেছে। তার তার আকুতি, আর্তনাদ সে ড্রাম গরিয়ে চলার গরগরগর শব্দের মাঝে যেন মিলিয়ে যাচ্ছে। একবার তার মনে হল এ বুঝি মৃত্যু, আবার মনে হল এ বুঝি কোন অদ্ভুত স্বপ্ন। স্বপ্ন ভঙ্গের প্রত্যাশায় থেকেও যখন তাণ্ডব চলতেই লাগলো তখন নিপুর মনে হল, এ মৃত্যু ,স্বপ্ন বা অন্য জগতের কিছু নয়। এ এক অদ্ভুত সত্যি, এ এক কঠিন বাস্তবতা।
ঠিক কতক্ষন এই তাণ্ডব চলল ঠিক মনে নেই নিপুর, কিন্তু ওর যখন মনে হতে লাগলো যে এই ভয়ঙ্কর সময় পেরোবি কি? অবসান ঘটবে কি এই অবস্থার? নাকি চলবে অনন্ত সময় ধরে! ঠিক তখন ধীরে ধীরে কমে এলো ঝাকুনিটা। মাথার চুল টেনে চীৎকার করে উঠলো নিপু। অদ্ভুত একটা হিংস্রতা যেন চেপে ধরলো ওকে। মনে হল সামনে যা পায় তাই যেন ছুড়ে ফেলে দেয়।
সব পিষে এক করে ফেলে একসাথে। অদ্ভুত একটা কি যেন তাকে তাড়া করে ফেরে। সে সেটাকে খোঁজে পেতে চায়, গলা টিপে ধরতে চায় সে অদ্ভুত কিছুর। কিন্তু কোথায় সে, কোথায় সে যাকে আঘাতের নেশায় নিপু এই মাঝ রাত্তিরে হিংস্রতার চরম সীমায় পৌঁছেছে?
রাতে এত কান্ড ঘটার পরও নিপুর ঘুম ভাঙল একবারে সকাল সকাল। সূর্য কেবল উকি দিয়ে গিয়ে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে। ঘরের পুবকোনায় বড় আলমারিটার পাশে একটা বড় দেয়াল ঘড়ি ছিল। মান্ধাতার আমলের হলেও এখনও বেশ ভালোই চলছে। ঘড়িতে এখন সময় সাতটা বিশ। বিছানা ছেড়ে নেমে পড়লো ও। ঘরময় ছড়ানো ছিটানো আসভাব দেখে চমকে উঠলোনা। গতকাল রাতের তাণ্ডবের কথা মনে আছে এখনও। তবে খুব একটা পরিষ্কার নয়, কেমন যেন ঝাপসা ঝাপসা। মোনাপুর সাথে কথোপকথন, অদ্ভুত কিছু একটার ইঙ্গিত, মায়ের কান্না, বুয়ার ভাত খেতে ডাকার কথা, বাবার নিঃশব্দ শান্তনার হাত বুলানো আর ভয়ানক সে তাণ্ডব সব যে গুলিয়ে একটা স্বপ্নের মতো মনে হতে লাগলো।
সাবধানে পুরো রুমটা গোছগাছ করে নিল নিপু। তারপর দরজা খোলে বাইরে বেরোল। ডাইনিং টেবিল অবধি পৌঁছালে রান্না ঘর চোখে পড়ে। বুয়া ভাত চড়িয়ে দিয়ে একপাশে বসে তরকারী কুটছে। পুরো বাড়িটা জুড়ে অদ্ভুত একটা থমথমে পরিবেশ। নিপু এগিয়ে গিয়ে মায়ের ঘরে উঁকি দিল। মা বিছানায় শোয়ে। ঘুমিয়ে আছে নাকি জেগে তা বুঝা গেলনা। ও এগিয়ে গিয়ে দাড়ালো বেলকনিতে। কুয়াশার আস্তরণ ভেদ করে এক চিলতে রোদ এসে পড়েছে এখানে। নিপু রোদের মধ্যে দাড়ালো গিয়ে। হালকা গরম রোদ এসে গায়ে পড়েছে। অদ্ভুত রকম ভালো লাগছে এখন। কিছুদিন আগেও এই ছোট বেলকনিটাতে মোড়া পেতে বসত দুবোন। মোনাপুর হাতে থাকতো ইউনিভার্সিটির বই। আর নিপু বসে রাজ্যের যত প্রশ্ন জুড়ে দিত। মূলত মোনাপুকে বিরুক্ত করাই নিপুর উদ্দেশ্য থাকত। খাপছাড়া সেসব প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মোনপু খুব সহজেই ওর উদ্দেশ্য বুঝে যেতেন, কিন্তু কখনই বিরুক্ত না হয়ে একের পর এক উত্তর দিয়ে যেতেন বইয়ে চোখ রেখেই।
যতখন পর্যন্ত না মা খাবারের জন্য ডাকতেন ততক্ষন পর্যন্ত এভাবে একপেশে আড্ডা চলতো মোনাদির সাথে ওর। অবশ্য তাতে যে মোনাদির পরোক্ষ একটা সায় ছিল সেটা নিপু আন্দাজ করতে পারতো।
কাকা পক্ষী ডাকার আগে বাবা বেড়িয়ে গিয়েছিলেন নিপুদির খোঁজে। সেসব জায়গায় রাতে যেতে পারেননি সেসব জায়গা চষে ফেললেন। পুলিশ স্টেশনে খোঁজ নিলেন। তারপর পত্রিকা হাতে বাড়ি ফিরলেন দশটা নাগাদ।
নিপু দরজা খোলে দিতেই বললেন, দেখতো ছবিটাতে মোনাকে চেনা যাচ্ছে কিনা? রঙিন বলে দিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত সাদাকালো ছাপলো!
ও হাত বাড়িয়ে পত্রিকাটা নিল। তৃতীয় পেজে, বিজ্ঞপ্তির পাতায় একটা বড় করে ছাপা “বিদেশী পাত্রের জন্য পাত্রী চাই” এর নিচে ছোট করে একটা ঘোলাটে ছবি সহ মোনাপুর “নিখোঁজ সংবাদ”টা বেরিয়েছে।
ছবিটা দেখে আসলেই মোনাপুকে চেনার উপায় নেই। কিন্তু বাবাকে বলল, ঠিক আছে!

কি দরকার শুধু শুধু আরো চিন্তা বাড়িয়ে। নিপু তো জানেই মোনাপু কোথায় আছে। আর যেখানে আছে সেখানে ভালোই আছে!!

নিপুর ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই সাড়ে এগারোটা নাগাদ বেড়িয়ে পড়লো ও। তার আগে ডাইনিং এ বসে নাস্তা করলো। মায়ের ঘরে আবার উঁকি দিয়েছিল একাবার। বাবা বললেন, তোর মাকে ডাক্তার ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে।
বেরোনোর সময় বুয়া দরজা অবধি পোঁছে দিয়ে শুকনো মুখে বলল, আফা রোডঘাট দেইখ্যা যাইয়েন! সবরে ফিরা আইসেন।

রাস্তায় বেড়িয়েই অদ্ভুত একটা অনুভূতি অনুভব করতে লাগলো নিপু। শূন্য থেকে যেন কেউ বারবার ওর কানে ফিসফিস করে ঘোষণা দিতে লাগলো। আজকে কিছু একটা ঘটবে। রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা বেড়ালটা কেমন অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকাল আজ। বিদ্যুতের তারে বসা সারি সারি কাক যেন অবাক হয়ে কেবল ওর দিকেই তাকিয়ে রইল। যেন ওকে নজরদারির কাজ দিয়েছে কেউ ওদের। আর সেই কালো পেটমোটা বেড়ালটা যেন ওকে দেখার জন্যই দাঁড়িয়ে ছিল এখানে। দেখতে পেয়ে যেন সস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। তারপর শরীর ঝারা দিয়ে একলাফে ছুটে পালাল যেন কোথায়।গলি পেরিয়ে বড় রাস্তায় উঠল নিপু। রাস্তার একরাশ ভীরের মধ্যে ওর নিজেকে সহসা আলাদা মনে হতে থাকলো। মনে হল হাটছে না, উড়ে বেড়াচ্ছে কোন মেঘের ভেলা চেপে। গলি পথটা পার করে মহাসড়কের পাশে যে বাস স্টপের কাছে টিকেটের জন্য মস্ত একটা লাইন লেগেছে। সেখানে আসতেই অদ্ভুত একটা ঘটনা ঘটলো। নিপু প্রথমে শুনলো যেন তার নাম ধরে ডাকছে। অদ্ভুত একটা ভাঙ্গা ভাঙ্গা কন্ঠ। মেয়েলি ঢঙ্গে, নিপু… ও নিপু…
নিপু হকচকিয়ে আশপাশে তাকাল। কোথাও কিছু দেখতে পেলনা। রাস্তা জুড়ে মানুষের হুল্লোর নেমেছে। চারপাশের চীৎকার চ্যাঁচামেচির মাঝে নিপু আবারো স্পষ্ট কন্ঠটা শুনলো, নিপু… ও নিপু… উপরে তাকাও… উপরে…

উপরে তাকিয়েই ও হকচকিয়ে গেল। স্টপের পাশে একটা মস্ত কড়ই গাছ ছিল সেটার মগডালে পা ঝুলিয়ে বসে আছে একটা বানর সদৃশ প্রাণী। গা ভর্তি লোম, বেটে প্রানীটার মুখটা দেখতে আবার গাধার মুখের মত। দেখেই ভয়ানক হাসি পেলো নিপুর। হাসতে গিয়েও থেমে গেলো ও। এই মুহূর্তে ভিড়ের মধ্যে দাড়িয়ে কড়ই গাছের দিকে তাকিয়ে হাসতে দেখলে লোকে আর যাই হোক ওকে সুস্থ মানুষ ভাববেনা।

নিপুকে চুপ থাকতে দেখে সেই গাধামুখো বানরটা আবার কথা বলে উঠল, বাড়ি গিয়ে তোমার ব্যাগ খোল। একটা জিনিস পাবে। সাবধানে রেখ। পরে কাজে লাগবে।
নিপু ঘাড় নেড়ে শব্দ না করে ঠোট নাড়িয়ে বলল, ঠিক আছে। তারপর একটু যেই পলক ফেলছে অমনি দেখে গাছটা একেবারেই খালি। গাধা মুখো বানরের আর হদিস পেলোনা ও।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: অপ্সরা মানে কি?
আপনি বলুন?
আমি কিন্তু জানি।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১৬

মোঃ জাবেদ ভুঁইয়া বলেছেন: অপ্সরা হলো হিন্দু এবং বৌদ্ধ পুরাণ অনুসারে মেঘ এবং জল থেকে উদ্ভুদ্ধ নারী আত্মা।
বিস্তারিত উইকিপিডিয়ায় দেখুনঃ Click This Link

২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:২২

পলাতক মুর্গ বলেছেন: গল্প চমৎকার, উপন্যাস হিসাবে ছাপানোর মত। তবে কিছু বানান ঠিক করতে হবে। মোনাপু কে এক যায়গায় মোনাদি বলছেন, যে কোন একটা বলতে হবে।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২২

মোঃ জাবেদ ভুঁইয়া বলেছেন: ওকে ভাই, খেয়াল করিনি :) আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.