![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি রক্ত বন্যা দেখিনি কোথাও, দেখেছি চোখের কান্না। সে অশ্রু ফোটায় ম্লান হয়েছে হীরা, মতি, মণি, পান্না।
পাঁচ
সিম্বলটার দিকে ভালো করে তাকালো তন্ময়। সেই স্বপ্নে দেখা সিম্বলের মতো। সেই রকম গোল চাকতিতে ধনুকের মতো বাঁকা একটা দণ্ডে কয়েটা তীরের ফলা পেঁচানো। এদিক ওদিক পাল্টেও কোন বিশেষত্ব পেলনা সিম্বটার। কেবল একটা খটকা রয়েই গেল। ধনুকে পেঁচানো তীরের মধ্যে কি কোন বিশেষ অর্থ লুকিয়ে আছে? কি সে অর্থ?
আর তার সাথে আতিক, আর শৈশব থেকে তাড়া করে ফেরা অদ্ভুত সে নূপুরের শব্দ, অতি পরিচিত সে স্বপ্নের সংযোগ কোথায়?
ভেবে কোন কূল কি কূলের ছায়া পর্যন্ত পেলনা তন্ময়। অদ্ভুত একটা রহস্যের জালে নিজের অজান্তেই জড়িয়ে পড়েছে সে। এত সহজে কি তার থেকে নিস্তার মিলবে তার?
কোঠার ঘরে অবধি পৌঁছানোর মত সুস্থতা সে মামার কাছে প্রমাণ করতে পারেনি।
অজ্ঞত্যা মামার বাসায় তাকে উঠতেই হল। উত্তরায় মামার বিশাল ফ্ল্যাট। তার থেকে একটা রুমে ঠাই হল ওর। খাওয়া দাওয়া আসছে না চাইতেই। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মামীর বাড়াবাড়ি ধরনের শ্রুশ্রুষা। তন্ময় সিম্বলটা নিয়ে যে একমনে একটু চিন্তা করবে তার জো নেই।
দুপুর নাগাদ তিতলি এলো একটা ভয়ানক খবর নিয়ে। আতিককে কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা। ধান মণ্ডিতে কয়েকজন ফ্রেন্ডদের সাথে একটা মেসে থাকতো সে।
তিতলি জানালো ঘটনা পরশু দিনের। ভার্সিটির নাম করে বেড়িয়ে রীতিমত গায়েব হয়ে গেছে যেন কোথায়। আতিকের পরিবারের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি, সুতরাং বন্ধুরাই যথা সম্ভব খোঁজ খবর নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। খবরটা দিয়েই বেড়িয়ে যাচ্ছিল তিতলি। রুমের দরজার কাছে গিয়ে ঘুরে তাকাল। অদ্ভুত একটা দৃষ্টিতে তাকালো তন্ময়ের দিকে। তারপর জিজ্ঞেস করলো, আচ্ছা, সে সিম্বল টা কি তোমার কাছে?
প্রশ্নটা শুনেই চমকে উঠলো তন্ময়। তবে কোনভাবে তিতলি সেদিন রাতে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে গেছে? নাকি দেখে ফেলেছে কোনভাবে। আপাতত সিম্বলটা আছে তন্ময় এর প্যান্টের পকেটে। আর তন্ময় বুক পর্যন্ত সেঁধিয়ে আছে কম্বলের নিচে। সুতরাং এই চিন্তা বাদ।
একটু গাবরে গেলেও, দ্রুত সামলে নিল নিজেকে। তারপর যতটা সম্ভব স্বাভাবিক ভাবে বলল,
ঃ কেন! তোর কাছে এমন মনে হল কেন?
দরজার কোন ঘেসে দাঁড়িয়ে ছিল তিতলি। বলল, এমনি করলাম আরকি। না থাকলে ভালো। তবে থাকলে...
কি যেন একটা বলতে গিয়ে থেমে গেল । তারপর হুট করে প্রসঙ্গ পালটে বলল,
ঃ আচ্ছা আসি। ক্লাস আছে।
কিছু বুঝে উঠার আগেই ধুপধাপ করে ঝড়ের বেগে ছুটে বেড়িয়ে গেল তিতলি।
তিতলির ব্যাপারটা তেমন পাত্তা দিলনা তন্ময়। ও ভাবতে বসলো আতিকের ব্যাপারটা নিয়ে।
খবরটা খটকা আরো বাড়ালেও,রাতে যে আতিকই ওকে কোন এক এক অদ্ভুত উপায়ে সিম্বলটা দিয়ে গেছে সে ব্যাপারে তন্ময় পুরো পুরি নিশ্চিত হয়ে গেল। তবে ওর অন্তধার্ন রহস্যের ব্যাপারটা বুঝে এলোনা। জট পাকিয়ে যাচ্ছে সব কিছু। খোলতে হলে চার দেয়ালের বাইরে বেরোতে হবে। কথা বলতে হবে অনেকের সাথে। আতিক কে খোঁজার একটা প্রয়াসও চালাতে হবে। কিন্তু এগুলোর কোনটায় আপাতত ওর আয়ত্তের মধ্যে নেই। সুতরাং ও ঘরে বসেই দুর্বোধ্য কাজটায় হাত দিল।
আশেপাশে নোট করার মতো কোন খাতা নেই। মামীকে ডাকলে পাওয়া যাবে, কিন্তু সে জন্য একগাধা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সুতরাং স্মৃতির উপর ভরসা করেই কাজ শুরু করতে হল ওর।
প্রথম কাজ, দ্রুত ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলোকে একটা সারিতে সাজানো। প্রথমে তিতলির কাছ থেকে আতিকের কাছে এই ধরনের একটা সিম্বল আছে এইটা জানতে পারা। এবং যেই তিতলির কাছ থেকে ও এই তথ্যটা পেল ঠিক তখন থেকেই আতিক ওকে এড়িয়ে চলতে শুরু করলো। ল্যাব থেকে রীতিমত গায়েব হয়ে যাওয়া, সিঁড়ির অদ্ভুত ঘটনা আর তার পর আবার হাসপাতালে ওর কাছে সিম্বলটা রেখে যাওয়া। আর এর পর একেবারেই গায়েব হয়ে যাওয়া।
এখানে কয়েকটা প্রশ্ন কাজ করে,
১। আতিক কিভাবে জানলো তিতলি ওকে সিম্বল এর ব্যাপারে বলছে।
২। আর যদি জেনেই থাকে, তাহলে কেন ঠিক এর পর থেকেই নিজেকে তন্ময় এর কাছ থেকে হাইড করে নিল। এমন না যে সিম্বলটা আতিকের কাছে খুব গোপনীয় ব্যাপার ছিল। সেটা হলে সে ওটাকে চাবির রিং এর মধ্যে ঝুলিয়ে রাখতো না।
৩। যাহোক, ধরা যাক বিষয়টা তন্ময়ের জন্য কেবল গোপনীয় ছিল। তন্ময় এ বিষয়ে জেনে যাওয়াটা আতিকের কাছে কোন বিপদ মনে হয় আর তাই সে নিজেকে তন্ময় থেকে লুকিয়ে রাখে। কিন্তু হাসপাতালে ঠিক আতিকের মত কেউ এসে (কিংবা আতিক ই) অলৌকিক ভাবে ওর কাছে সিম্বলটা রেখে যাওয়ার সাথে আবার উপরের যুক্তি খাটেনা। সে যদি ওটা লুকোতেই চায় তবে আবার কেন স্বেচ্ছায় এসে দিয়ে গেল?
প্রশ্নটার সামনে এসে থমকে গেল তন্ময়। আতিকের ঘটনা এতোটুকু পর্যন্তই স্থির রাখলো। এবার আশা যাক সেই অদ্ভুত নূপুরের শব্দ আর গোলাপি পায়ের ব্যাপারে। একদম ছোটকাল থেকেই যখন মোল্লা বাড়ির ভাঙ্গা মসজিদের পাড়ে যেত তখন নূপুরের শব্দটা সে শুনতে পেত। কিন্তু সেটা ছিল অনেকটা অস্পষ্ট। কিন্তু গ্রাম ছেড়ে ঢাকা আসার পর থেকেই নূপুরের শব্দ ক্রমশ স্পষ্ট হতে লাগলো, তাড়া করে ফিরতে লাগলো একটা অদ্ভুত দরজার স্বপ্ন, আর স্বপ্নে দেখা একটা সিম্বল।
বিষয়টা এতটুকু পর্যন্ত স্বাভাবিকই ছিল। এর পরেই হুট করে একদিন বাস্তবে সে নূপুরের শব্দ সৃষ্টির উৎস সে জোড়া গোলাপি পদ্ম চরণ দেখতে পেল। আর এখানে একটা অদ্ভুত ব্যাপারে মিল পাওয়া গেল। সেটা হচ্ছে তন্ময় সিম্বলের বাস্তব অস্তিত্য জানার পরেই সে গোলাপি চরণ প্রথমবারের মত দৃশ্যমান হলো। সুতরাং এখানে অই সিম্বলটার সাথে সুক্ষ একটা সম্পর্ক যে আছে তা অন্তত স্পষ্ট।
তাছাড়া হাসপাতালে একা থাকাকালীন যেন কিছু একটার অস্তিত্য অনুভব করছিলো ও। সে ব্যাপারটাও বেশ গুরুত্ব সহকারেই নিতে হয়।
অদ্ভুত একটা বন্ধ দরজা। তন্ময় স্বপ্নের সাথে বাস্তবতা মেলনোর চেষ্টা করে। দরজার মধ্যে স্পষ্ট একটা সিম্বল আকা। ধনুকের মত বাঁকা একটা দন্ডে তীরের ফলার মত কিছু পেঁচানো একটা অদ্ভুত চাকতি। একটা চিন্তা মাথায় আসতেই কপাল কুচকে যায় তন্ময়ের। সিম্বলটা ঠিক দরজায় ছিলনা। ওটা ছিল দরজার পাশে একটা ফলকে। আর প্রত্যেকটা তীরের ফলা মুখ গুলো বাঁদিকে ঘুরানো ছিল। দ্রুত নিজের কাছে থাকা সিম্বলটা বের করে আনে ও। আর সেটার দিকে তাকিয়ে ভয়ংকর ভাবে চমকে উঠে। এর তীরের ফলাগুলো ঠিক ওই সিম্বলটার উল্টো। এর ফলাগুলা ডান দিকে পেঁচানো। সিম্বলটার উপরে ঠিক উল্টো আরেকটা সিম্বল কল্পনা করে ও। এক একটা তীরের ফলার মাথা অদ্ভুত ভাবে আরেকটার সাথে সেটে যায়। পেঁচানো তীর গুলো মিলে তিনটে তারকা চিহ্নের মতো তৈরি করে। দুইটা সিম্বল পরস্পর ম্যাচ করে একটার সাথে আরেকটা লেগে যায়। তারমানে ব্যাপারটা অনেকটা তালার মতো। যেমন তালাতে চাবি ম্যাচ করলেই তালা ওপেন হয়।
তবে কি এই সিম্বলটা সে অদ্ভুত দরজা খোলার চাবি? চঞ্চল হয়ে উঠে তন্ময়। অদ্ভুত একটা কৌতুহল গ্রাস করে ওকে। মনে এখুনি পৌছে যাক সে অদ্ভুত দরজার কাছে। আর সিম্বলে এই সিম্বল বসিয়ে খোলে ফেলে সে রহস্যের দরজা।
কিন্তু কিভাবে? চাবি থাকলে কি হবে? সে দরজার অস্তিত্য তো এখনও ওর কাছে কাল্পনিক, এখনও কেবল ওটা একটা স্বপ্ন। একটা অদ্ভুত কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়।
ঃ কিরে, এখন কি অবস্থা তোর?
তন্ময়ের চিন্তায় ছেঁদ পড়লো মামার কথায়।
মামা যে কখন রুমে ঢুকেছে, চিন্তায় সেটা খেয়ালই করেনি ও।
তন্ময় উত্তর দেয়ার আগেই মামা বললেন, তোর জন্য একটা গুড নিউজ আছে!
তন্ময় অবাক হয়ে বলল, কি?
মামা একটা পুরনো বই এগিয়ে দিলেন ওর দিকে।
ঃ তুই যে বইটা পড়ছিলি সেটার অক্ষত কপি!
তন্ময় অবাক হয়ে বলল, কোথায় পেলে এটা?
- ব্যাপারটা অনেকটা কাকতালীয়ই বলা যায়। একটা প্রয়োজনিয় কাগজ খোঁজতে গিয়ে পুরনো লাগেজ খোলতে হয়েছিল। কাগজ খোঁজতে গিয়ে গুটি কয়েক পুরনো বই বেড়িয়ে এলো। তার মধ্যে দেখি এই বইটাও আছে।
_ অবাক ব্যাপার!
-এক সময় যে আমার বইয়ের রোগ ছিল সেটা তো জানিস ই। বাড়ি থেকে বের হলে গাদা গাদা বই নিয়ে নিতাম সাথে। তেমনই হয়তো ঢুকিয়েছিলাম। এর পর বহুদিন কেটে গেল। ব্যবসা করতে গিয়ে বই পড়া বিসর্জন দিলাম। বই লাগেজেই রয়ে গেল।
মামার কি কি একটা কাজ ছিল। সুতরাং একটু পরেই চলে গেলেন। তন্ময় ব্যস্ত হয়ে পড়লো বই নিয়ে। সবার আগে ও খোলল, একুশ তম অধ্যায়। গোগ্রাসে পড়লো পুরোটা। আর তার পরেই বিস্ময়ে হ্যা হয়ে গেল ওর মুখ।
অদ্ভুত ব্যাপার! ওই বইয়ের একবিংশ অধ্যায়ের সাথে এটার কোন মিলই নেই। আর ভৌতিক কাহিনীর তো কোন উল্লেখ্য মাত্র নেই। মামার কথায় ঠিক। এইটা কোন ভৌতিক উপন্যাস নয়, এইটা একটা সাধারণ রোম্যান্টিক উপন্যাস মাত্র!
তন্ময় ভেবেছিল বইটা পাওয়াতে হয়তো রহস্য জট কিছুটা হলেও খোলবে। এখন মনে হচ্ছে খোলা তো দূরের কথা এ যে আরো ভয়ানক ভাবে পেঁচিয়ে দিয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে রহস্য ক্রমশ ধোঁয়াশা হচ্ছে। অন্ধকারে যেন আলোর হদিস পাওয়া ভার। রীতিমত অসহায় বোধ করতে শুরু করলো ও।
আর তখনই হঠাৎ করে একটা ভয়ানক কথা মনে এলো ওর। ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলোর সাথে তিতলির কোন সংযোগ নেই তো?
আজকে সিম্বল নিয়ে কি একটা বলতে গিয়েও যেন থেমে গিয়েছিল ও।
তাছাড়া আতিকের কাছে সিম্বল দেখা, তারপর ভুল অধ্যায় আর প্রচ্ছদ সহ একটা বই নিয়ে আসা।
আজকে আতিকের খবর দিয়ে যাওয়া। এগুলো কি সন্দেহ জনক??
নাকি সবটাই কাকতালীয়? হয়তো , তিতলি এসবের কিছুই জানেনা!! আর নয়তো ও এমন কিছু জানে যা তন্ময় জানেনা!
জট আরো বাড়লো। সন্দেহের তালিকায় আপাতত তিতলিকেও রাখল, ও।
বিকেল বেলায় ছাঁদে যাওয়ার প্ল্যান ছিল তন্ময়ের। কিন্তু বিকেল গড়াতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল, টেরই পায়নি। ঘুম ভাঙ্গলো মামীর ডাকে,
- কিরে এই ভর সন্ধ্যায় ঘুমোচ্ছিস কেন?
তন্ময় চোখ মেলে দেখে চারদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে। মামী রুমের লাইট জ্বালিয়ে চলে গেলেন। তন্ময় চোখ কচলে দেয়াল ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে সাড়ে ছটা বাজে। জানালা দিয়ে ভয়ানক ঠাণ্ডা বাতাস আসছিল। কপাট টেনে বন্ধ করে দিল ওটা। আশেপাশে কোথাও কয়েকটা ছেলেমেয়ে সুর করে ছড়া আবৃত্তি করছে। দলবেঁধে এক একটা ছড়া শেষ হতেই খিক খিক করে হেসে উঠছে সবাই। হাসির শব্দ বাতাসে ভেসে আসছে একটু পর। একটু পরেই চুপ করে গেল দলটা। চুপচাপ হয়ে এলো চারদিক। রাস্তায় মাঝে অজ্ঞাত লোকের ছিটেফোঁটা দু একটা কথা ভেসে আছে এখন একটু পর পর। আর এর মধ্যেই তন্ময় প্রথম অদ্ভুত আওয়াজটা পেল।
কেউ ফিস ফিস ওর নাম ধরে ডাকছে। বাতাসে কান পাতলো ও। একবার, দু বার, বারকয়েকবার ভেসে এলো সে। ভেসে ভেসে বাতাসে ভর করে,
- তন্ময়... তন্ময়...
ঘরময় ছড়িয়ে পড়লো সে ফিস ফিস করা শব্দ। হি হি করে এবার ভেসে এলো একটা হাসির শব্দ। তন্ময় কুকরে উঠল ভয়ে। একটা আর্ত চীৎকার যে ভেসে এলো কোত্থেকে। একটা নরম কোমল কন্ঠে যেন কে বারবার কয়েক ডেকে উঠলো ওর নাম ধরে। এ অন্য কণ্ঠ। এটা ভয়ের কণ্ঠ নয়। তন্ময়ের মনে হল এ কণ্ঠ তার চেনা। আগে কোথাও যেন শুনেছে সে।এরপর ধপ করে চারদিকের আলো নিভে গেলো হঠাৎ। তীব্র অন্ধকার গ্রাস করলো ওকে।
ফিস ফিসে শব্দ এবার সে অন্ধকার ভেদ করে একটা খসখসে কন্ঠ ভেসে এলো,
- শীঘ্রয় দেখা হবে... শীঘ্রয়......
সেই ভয়ার্ত আর্ত চীৎকার, সে করুণ স্বরে ওর নাম ধরে ডাকা, সব কিছু ছাপিয়ে সে খস্খসে ঘর কাপিয়ে হেসে উঠল। আর তারপর হঠাৎ করে মিলিয়ে গেল সব। যেমনি ধপ করে মিলিয়ে গিয়েছিল সব, তেমনি সব কিছু ফিরে এলো। জলে উঠলো আলো। চারদিক আবার স্বাভাবিক হয়ে গেল।
ঢোক গিলতে দেখল গলা একেবারেই শুকিয়ে গেছে। প্রচণ্ড ভয়, উত্তেজনা আর অদ্ভুত একটা অজ্ঞাত পুলকে তন্ময় ধরফর করে কাঁপছিল তখনও।
তন্ময়ের বিছানার পাশে টেবিলে একটা জগে পানি রাখা ছিল। কাঁপা হাতে গ্লাসে পানি ঢেলে গলাটা ভিজিয়ে নিল ও। তারপর একটু স্থির হয়ে পকেট থেকে সিম্বলটা বের করে আনলো। বাতির আলো পড়ে চকচক করে উঠল ওটা। ধনুক দণ্ডের মধ্যে তেমনি পেঁচানো আছে তীরের ফলা গুলো। তিনটা ফলা। স্বপ্নে দেখা সিম্বলের বিপরীত মুখ করে। কি রহস্য জরিয়ে আছে এর মধ্যে? এটাকি মামুলী একটা তামার তৈরি একটা প্রতিক মাত্র? নাকি কোন বিশেষ ক্ষমতা আছে এর মধ্যে!
যেমনটা আগে ভেবেছিল, সেই অজ্ঞাত দরজার চাবি। কিন্তু কিভাবে? যেখানে দরজাটাই অলিক!
দরজা অবধি পৌঁছানোর কোন উপায় কি এর মধ্যে দেয়া আছে? উল্টেপাল্টে সিম্বলটার প্রতিটা ইঞ্চি ভালো করে খেয়াল করলো। কোথাও এমন কিছু চোখে পড়লোনা যার সূত্র সে অদ্ভুত সে দরজা পর্যন্ত পৌঁছাবে!
অগত্যা অনেকটা তিতি বিরক্ত হয়েই সিম্বলটাকে ছুড়ে ফেলল পাশের টেবিলে। আর তখনি ঘটলো একটা অদ্ভুত ঘটনা। তন্ময় অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো সিম্বলটা টেবিলে না পড়ে শুন্যে ঝুলে রয়েছে। ভনভন করে লাটিমের মতো ঘুরতে শুরু করলো ওটা। আর তার চারপাশ ঘিরে ঠিকরে বেরোতে লাগলো অদ্ভুত একটা আলো। ফকফকে সাদা রঙের সে আলোর ঝলকানি ক্রমশ বাড়তেই লাগলো। ধীরে আলোর ঝলকানিটা ছড়িয়ে পড়লো পুরো ঘর জুড়ে, ঘিরে ধরলো ওকে। চোখ সামনে থেকে মুহূর্তেই ঝাপসা হয়ে গেল সব কিছু। একরাশ সাদা আলো ছাড়া এখন আর কিছুই দেখছেনা ও। একটা মুহূর্ত পর ধীরে ধীরে সরে যেতে লাগলো সাদা রঙের আস্তরণটা। চোখের সামনে ভেসে উঠলো অদ্ভুত সেই স্বপ্নে দেখা কুয়াশার জগত। আর তন্ময় নিজেকে আবিষ্কার করলো রহস্যময় সেই দরজাটার সামনে দাঁড়ানো অবস্থায়!
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১২
মোঃ জাবেদ ভুঁইয়া বলেছেন:
২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩৩
পলাতক মুর্গ বলেছেন: ++++++++++++
পড়ে চলছি, দেখা যাক কি হয়।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১১
শাহিন বিন রফিক বলেছেন: এত বড় লেখা কেমতে পড়ুম???