![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক -
বাম বুকে গুলিটা লাগলো । রিসাত তার দুই হাত দিয়ে ক্ষতস্থান চেপে ধরলো । তার সারা শরীর কুঁকড়ে আসছিল । আস্তে আস্তে বসে পড়লেন তিনি । হঠাৎ করে তার ঠোঁটের এক পাশে কিঞ্চিত হাসি দেখা গেলো । তা উক্ত জায়গায় উপস্থিত কারোরই চোখ ফাঁকি দিলো না । যেন সবাইকে দেখানোর জন্যই । রশিদ সাহেবের বুকের উপরে চাপানো পাথরটা সরে গেলো যেন আর মাথার উপরে থাকা পাহাড়টা যেন হঠাৎ করেই গলে পড়ে গেলো । শুধু তার নয় উক্ত এলাকার সবার মনে যেন আজ একটি শান্তির হাওয়া বয়ে গেলো ।
দুই -
পুরো নাম মোহাম্মাদ রিসাত উদ্দিন । গনিতের উপর পড়াশোনা শেষ করে একটি প্রাইভেট স্কুলে শিক্ষকতা করেন । একা থাকেন কাটাসুরের একটি বাড়ির এক তলায় এক রুমের বাসায় ।
স্কুলের ক্লাস শুরু হয় সকাল আঁটটায় । রিসাত বের হয় সাড়ে সাতটায় । হেঁটে হেঁটে যান । স্কুল লালমাটিয়ায় ।
নতুন নিয়োগ হওয়ায় এখন শুধু সিক্স , সেভেন আর ক্লাস এইটের গণিত ক্লাস নেন । পরবর্তীতে নাইন টেনের ক্লাস নিতে পারবেন বলে তাকে বলা হয়েছে ।
স্কুলে প্রত্যেক স্যারের একটা নাম দেয় ছাত্ররা । তারও একটা নাম আছে । তাকে ছাত্ররা ' সিদে ' নামে ডাকে । তার চরিত্র ' সাদাসিধে ' এই জন্য প্রথম অক্ষর আর শেষের অক্ষর নিয়ে শর্টকার্টে তাকে ' সিধে ' ডাকে । বিষয়টা রিসাত জানে । তবুও না জানার ভান করে থাকে । কারণ নামটা তার ভালো লেগেছে । অন্যান্য স্যারদের নাম বড়ই ভয়াবহ ।
তিন -
একদিন ছুটির দিন বাসায় বসে পেপার পড়ছিলেন । পাশের বাসার দুলাল সাহেব রুমে আসলো ।
'' রিসাত সাহেব কি ব্যস্ত নাকি ? ''
'' না । পেপার পড়ছিলাম আর কি । ''
'' তা একটু সাহায্য করতে পারবেন ? ''
'' কেমন সাহায্য বলেন ? পারলে করে দেই । ''
'' তেমন কিছু না । কিছু মুরগি কিনে এনেছি । বুয়াটা আজকে আসে নি এখনও তো দুপুরে রাঁধবে । এখন একটা একটু জবাই করতে হবে । গিন্নি আবার রক্ত ভয় পায় । না হলে আপনাকে বিরক্ত করতে আসতাম না । ''
'' বাজার থেকে কেটে আনলেই পারতেন । ''
'' ওরা কীভাবে না কীভাবে কাটে । মনের ভিতর খুত খুত থেকেই যায় । এই জন্য বাসায় করি । কি পারবেন ? ''
'' চলেন । ''
'' ধন্যবাদ । ''
মুরগি ধরার দায়িত্ব পড়লো রিসাত সাহেবের উপর । দুলাল সাহেব যখন ছুরি মুরগির গলার উপর দিয়ে চালিয়ে দিলেন । তখন মুরগির গলা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হতে লাগলো । সাথে ছিল একটি ঘ্রাণ ।
রিসাত সাহেব রক্তের প্রবাহ দেখতে থাকলেন । আর এমন একটা ঘ্রাণ তিনি নাকে পেলেন যেটি এর আগে কোনদিন তিনি পান নি ।
ঐ ঘটনার পর তিনি প্রায়ই টাওন হলের বাজারে যেতেন যেখানে মুরগি , হাঁস জবাই করা হয় । ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হওয়া দেখতেন । আর সেই ঘ্রাণ নিতেন ।
এক পর্যায়ে এটি নেশা হয়ে গেলো । এই রকম দৃশ্য না দেখলে আর ঐ ঘ্রাণ না নিলে তিনি স্বাভাবিক থাকতে পারতেন না ।
আর একটা জিনিসের নেশা এক পর্যায়ে তার তেজ হারায় ।
রিসাত সাহেবের আর ঐ দৃশ্য আর ঐ ঘ্রাণে এক পর্যায়ে পুষালো না ।
তিনি এরপর থেকে রাতে বের হয়ে কারওয়ান বাজারে যেতেন । যেখানে শত শত গরু জবাই করা হয় । এতে তিনি শান্তি পেলেন । রক্তের পরিমাণ ঢের বেশি । আর আরেক ধরনের ঘ্রাণ তিনি পেতে লাগলেন । এ যেন আলাদা অনুভূতি ।
এই কারণে তার ক্লাস নেয়ার উপর কোন প্রভাব পড়তে লাগলো না । তিনি স্বাভাবিকভাবেই জীবন যাপন করতে লাগলেন ।
তবে এই নেশাও একদিন উবে গেলো । আরও নতুন কিছুর সন্ধানে মন ও শরীর উভয়ই আনচান হয়ে উঠলো ।
চার -
খবরের কাগজ সকাল সাতটার দিকে দিয়ে যায় । চা খেতে খেতে খবরের কাগজের উপর চোখ বুলাতে থাকেন ।
সেদিন খবরের কাগজের প্রথম পাতায় একটি লাশের ছবি দেখলেন । ছবিটা দেখে একটি চিন্তা তার মাথায় খেলো গেলো । চিন্তাটা আসতেই তিনি ঘাবড়ে গেলেন । চা পুরো না খেয়ে পেপার না গুছিয়ে কোন রকম দরজা তালা দিয়ে তিনি বের হয়ে গেলেন স্কুলের জন্য ।
এই দিন তিনি ঠিক মতো ক্লাস নিতে পারলেন না । স্কুলের হেডমাষ্টার রতন সাহেব তাকে বললেন ,'' ছুটি তো নেন না একদিনও । টানা ক্লাস করাতে করাতে ক্লান্ত হয়ে গেছেন । এইবার একেবারে সাতদিনের ছুটি নেন । ''
রিসাত সাহেবও সাই দিলেন । এরপর ছুটি চেয়েএকটি দরখাস্ত লিখে দিলেন । আর সাথে সাথেই অনুমদিত হয়ে গেলো ।
বাসায় এসে গোসল আর খাওয়া দাওয়া সেরে তিনি চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়লেন । কিন্তু সকালের সেই চিন্তাটা তার মাথায় এসে ঘোরা ঘুরি করতে লাগলো । ভয় আর সেই কাজ করার প্রতি এক দ্বিমুখী আকর্ষণ অনুভব করলেন । প্রতিটাই প্রচুর প্রবল ।
এই অবস্থা আর সহ্য করা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না । তিনি আবার গোসল করার জন্য বাথরুমে গেলেন । অনেকক্ষণ ধরে গোসল করলেন । এই চিন্তা থেকে কিন্তু তিনি মুক্তি পান নি ।
ক্লান্ত হয়ে এক পর্যায়ে ভেজা শরীর নিয়েই বিছানায় তিনি শুয়ে পড়লেন । ঘুম ভাঙল রাত এগারোটার দিকে । আবার সেই চিন্তা ।
'' এখন মানুষের গলা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হওয়ার দৃশ্য দেখার পালা । সেই রক্তের ঘ্রাণ দেয়ার পালা । ''
এই চিন্তা থেকে একটুর জন্য হলেও মুক্তির জন্য তিনি ব্লেড দিয়ে নিজের আঙ্গুলের উপর কেটে ফেললেন , সেই ঘ্রাণ নিয়ে মাথাকে ঠান্ডা করার জন্য । অল্প সময়ের রসদ জোগাল সেটি । কারণ পরিমাণ কম ।
শরীর আর মানতে চাইল না । পশুর মতো আচরণ শুরু করলো । একটি ছুরি পাঞ্জাবির পকেটে গুঁজে দরজা বন্ধ করে রওনা হলেন ।
রাস্তায় রাস্তায় হাটতে লাগলেন । তার খোঁজ একজন মানুষ শুধু আর আশে পাশে কিছুই থাকবে না । কিন্তু যে জায়গায় কোন গাড়ি নেই সেই জায়গায় কোন মানুষই নেই আবার যে জায়গায় আছে দুটোই আছে । মিলছে না ।
হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলেন রাত একটা বাজে । দূরে একজনকে দেখতে পেলেন তখন তিনি । শরীর যেন অনেকদিন ধরে খুদার্ত । এমন আচরণ করে উঠলো ।
আশে পাশে তেমন কিছুই নেই । এই রকম সুযোগ আর হয়তো পাওয়া যাবে না ।
মানুষটা কাছে আসার পড়ে বুঝা গেলো লোকটা বেশ বয়স্কই । এতো রাতে রাস্তায় কি করছে ?
এরপর রিসাত সাহেব চিন্তা করলেন তাতে তার কি ? তাকে আগে তার শরীর ঠাণ্ডা করতে হবে ।
রিসাত সাহেব দৌড়ে গিয়ে ধাক্কা দিয়ে লোকটাকে ফেলে দিলেন । শক্ত করে বাম হাত দিয়ে মুখটা চেপে ধরলেন আর ডান হাত দিয়ে ডান পকেটের ছুরিটা বের করে গলার উপর চালিয়ে দিলেন । ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হতে লাগলো । তিনি রক্ত দেখতে থাকলেন । কি সুন্দর রক্ত । কি তার ঘ্রাণ ।
অপূর্ব । অপূর্ব । এর থেকে সুন্দর আর কি হতে পারে ?
তার শরীর ঠাণ্ডা হল । নিজের শরীরের নিয়ন্ত্রণ যেন বুঝে পেলেন । এরপর তিনি দেখতে পেলেন সেই লোকটি আর কেউ নন তার স্কুলের হেডমাস্টার রতন সাহেব । .................................................
[ ইংশাল্লাহ বাকিটুকু পরবর্তীতে দেয়া হবে ]
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৩
জাবের তুহিন বলেছেন: চোখ গেলে দিবো কিন্তু ।
২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৪৭
মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্ বলেছেন: খাইছে!!!! বিদ্রোহী ভৃগু কার পাল্লায় পড়লো!!! উনার চোখ শ্যাষ!!! আমি সময় থাকতে পালাই...!!!!!!!!
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫৪
জাবের তুহিন বলেছেন: ধরছি । এইবার আপনার পালা ।
৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৯
শীলা শিপা বলেছেন: পরের পর্ব আছে?? আর পড়ব না। এমনেই ভয় পেয়ে গেলাম। সাধারন মানুষের অসাধারন হত্যাকান্ড!!
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০০
জাবের তুহিন বলেছেন: ভয় পাওয়া ভালো । আমি ভয় পেলে ভালো হবে । মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে দুনিয়াটা দেখার ইচ্ছা আছে ।
তবে দোয়া করার দরকার নাই ।
৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৭
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: লেখক বলেছেন: ধরছি । এইবার আপনার পালা ।
খাইচে লেখক দেখি লুল
আমাগো চোখ নিয়া টানাটানি.. কিন্তু শিলাশীপা রে কিসুই কয় না
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৮
জাবের তুহিন বলেছেন: কম্পিউটারে যতক্ষণ ছিলাম উত্তর দিছি । আপা আমার অনুপস্থিতির ফায়দা লুটছে ।
আর সিরিয়াস গল্পে এইগুলো কি ধরনের কমেন্ট ।
বি সিরিয়াস ।
৫| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৪০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: লেখক বলেছেন: কম্পিউটারে যতক্ষণ ছিলাম উত্তর দিছি । আপা আমার অনুপস্থিতির ফায়দা লুটছে ।
আর সিরিয়াস গল্পে এইগুলো কি ধরনের কমেন্ট ।
বি সিরিয়াস ।
ভাই দেখি কিস্সু বোঝে না!
ভয় কাটাইতে কত কথা বলা লাগে
যে রকম ভয় পাওয়া দিতাছেন
হু..
নেন এইবার সিরিয়াস হইলাম...
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৪
জাবের তুহিন বলেছেন: সিরিয়াসনেসের কোন লক্ষনই তো আপনার মধ্যে নাই । ফুটেন ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সব্বোনাশ!!!!!!!!!!!!!!!!

কি ভয়াবহ গপ্প!!!!!
তারপরও আবার পরবর্তী আছে।!!! সেরেছে