নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাদব সূত্রধর

যাদব সূত্রধর › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয়তমা মোর,

০৪ ঠা জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮



——প্রিয়তমা মোর,



আজ যখন তোমাকে পাঠাবো বলে লিখতে বসেছি চিঠি



ভাবে মন, ১৬টি বছর কেমন চলেগেলো হাঁটিহাঁটি।



পেছন ফিরে তাকিয়ে যখন দেখি তোমার মুখোছবি



কী-দেবো বর্ণনা বলো, আমি নইতো কবিতার কবি।



যেথায় তোমার ছবি ওঠে ভাসিয়া সেথায় নয়ন রাখি



আলতা রাঙা পদখানা তোমার চলিতে ফিরিতে দেখি।



যেন, আমার শয়নকক্ষে আসিছে কোন লক্ষ্মী



দেখেনি কেউ, কোন’জন, দেখেনি কাকপক্ষী।



নূপুরের ঝন্ ঝন্ তালের মাত্রায় এসেছে নতুন সূর



গভীর স্বপনে শুনিয়া মগ্ন, চলেগেলো ভর-দূপুর।



চিঠি হয়নি তবু লেখা, কলম রাখিলাম বালিশেরই তলায়



সাদাকাগজ দিয়ে নৌকা বানিয়ে ছেরে-দিলাম জল-নালায়।



নৌকা ভাসিয়া চলিলো, লেখা শুধু —“প্রিয়তমা মোর”



আজো খুঁজে পেলামনা আমি আমার, হারানো সেই সূর।



গোধূলি লগনে সাজের বেলায়, সবাই ফিরিছে নিজ ঘরে



বালিশ তুলিতে কলম দেখিয়া আবার, তোমাকে মনে পরে।



কলম কাগজ হাতে নিলাম আবারো লিখিবো তোমায় চিঠি



অন্ধকার ঘর, মোম দেই জ্বালি, আলো তাই মিটিমিটি।



কি লিখবো, পাইনি ভেবে, চলে যাচ্ছে কতো ক্ষন



নীরব বেদনার বিষম আগুনে জ্বলছে আমার মন।



তুমি আজ অন্যের ঘরে হাসিছো সখা নিয়ে



এ-তুমি পারলে কীকরে! আমায় কথা দিয়ে।



সেদিন আমায় দূরে ঠেলে দেবার জিজ্ঞাসি সেই কারন



কথা তুমি বলোনি আর, আমায় বলতে করলে বারণ।



নিজ-মনে করি প্রশ্ন, কিন্তু আমাতে কিছু নাহি পাই



বিধাতার উপর সব দায়িত্ব ছেরেদিলাম আমি তাই।



কার চোখে চোখ রাখিয়া তুমি, গিয়েছিলে আমায় ভুলে



আজো আমি জানতে পারিনি, কি ছিলো তার মূলে।



ষোল বছর পর এই চিঠি পড়ে, মনে পরবে-কিগো আমায়?



এক যুগ চার বছর আগে, ভাল-বেসেছিলো কেউ তোমায়।



সেদিন সুখের আশায় কতো স্বপন দেখেছিলাম নয়নে



ভাবিনি এইভাবে সারাটা জীবন কাটাতে হবে তুমিহীনে।



হৃদয় ছিরে কাগজ বানিয়েছি, চোখের জলে কলমের কালি



ঝরে পরা ফুল তুলছি দু’হাতে, ব্যর্থ আমি এক মালী।



ঝরা এই ফুলের মতো আমার ভাগ্য গিয়েছিলো ঝরে



মুকুলের সদ্য ফোটা ফুলগুলো ঝরলো, কালবৈশাখীর ঝড়ে।



ফুলের সুবাস কপালে ছিলোনা তাই কালবৈশাখী এলো



নিমিষের এক ঝড়ে আমার সব, করলো এলোমেলো।



সঙ্গের বন্ধুকে বিশ্বাস করিয়া বলেছিলাম মনের কথা



আজ এতোবছর পর সন্ধেহ হইলো, কারন হইতে পারে সেথা।



শোনো প্রিয়তমা মোর, আজি ষোল বছরের জমানো ব্যথা



আকুল মনে আজ অপেক্ষা করি, জানিতে তোমার কথা।



দুঃখ তোমার ঘুচিয়াছে ওগো, চাই সুখের কথা শুনিতে



সকল দুঃখ আমার যেন হয়, চাই তোমায় সুখী দেখিতে।



একদিন হাতে ধরি বলেছিলেম তোমায়, তোমার জীবনে ভরা সুখ



তুমিও বলেছিলে আমায়, সারাজীবন যেন দেখি, তোমার হাসিমাখা এই মুখ।



শত দুঃখেও তাই হাসিগো প্রিয়ে, তোমার কথার মূল্য দিতে



বিধাতা দেখুক তোমার মুখের বচন, না-যায় বিপরীতে।



সেদিন ছিলো অমাবস্যা রাত, চাঁদ ছিলোনা জেগে



অজানা কী কারণে হঠাৎ মন গিয়েছিলো রেগে।



তখনি দেখিলাম আঁধার রাতে কে আসিছে আমায় খুঁজে



আসিয়া বলিলো “খারাপ খবর তাই আসিলাম আমি নিজে”।



তোমার বিবাহের খবর শুনিয়া মোর, আকাশ ভাঙ্গিলো মাথায়!



বিশ্বাস সেদিন করিতে পারিনি আমি, পড়শির সেই কথায়।



খালবিল শস্য ঠেলিয়া ছুটে আসি, শরীরে লেগেছিলো বেশ কাদা



দূর থেকে দেখি ততক্ষণে তুমি, পরেছো সাতপাকে বাঁধা।



সানাইয়ের সূর বাজে, কতো আনন্দ’যে আজ তোমার!



কপালে লাল সিঁদুরের ফোটা, গলায় সীতাহার।



আলতা রঙে রাঙ্গিলো চরণ দু’খানী, নূপুর ঝন্ ঝন্ বাজে



কাজল-কালো নয়ন দু’টি তোমার, সেজেছো রাধার সাজে।



দুঃখে হৃদয় ফেটেযায় আমার, পারিনি কাউকে বলিতে



কাঁদিতে কাঁদিতে লুটায়ে আমি গরাগরি করি মাটিতে।



কেটেগেলো ষোলটি বছর, আর হয়নি দু’জনে দেখা



মেনে নিয়েছি, এই আমার কপাল, বিধাতার হাতে লেখা।



প্রিয়তমা মোর, পরিশেষে তোমায় কি লিখিবো ভেবে নাহি পাই



সুখে থেকো এই প্রার্থনাই শুধু, আমি বিধাতার কাছে জানাই।



আমি আছি কেমন তা, তোমার জানিবার প্রয়োজন নহে



স্ত্রী,কন্যা আর পুত্র সন্তান নিয়ে, বেঁচে আছি মোর গৃহে।



এবার আমার বিদায়ের সময়, লিখেদিলাম কিছু স্মৃতি



দূর থেকে তোমায় শুভকামনা জানিয়ে এখানেই দিলাম ইতি।।



২৫/০৫/২০১৩

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৫৩

মায়াবী ছায়া বলেছেন: বাহ্....দারুন লিখেছেন ।
ভালো থাকুন ।।

০৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১০:২২

যাদব সূত্রধর বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা।
ভাল থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.