![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
https://www.facebook.com/RajshahirAmm
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য শাকসবজি ও ফলমূলের উপর নির্ভর করে। এ দেশে সারাবছরই বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি ও ফলের চাষ করা হয়। গাজর বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় শীতকালীন সবজি। এর ইংরেজি নাম Carrot ও বৈজ্ঞানিক নাম Daucus carota. আমাদের দেশের প্রায় সব জায়গায় গাজর চাষ করা হয়।
একটি বড় আকারের গাজরে আপনি ২২ ক্যালরি...শক্তি পাবেন।
কী আছে গাজরে
প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে আছে_
প্রোটিন-১.০ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন-১৮৯০ মিলিগ্রাম, বি১-.০৪ মিলিগ্রাম, বি২-.০২ মিলিগ্রাম, শক্তি-৮৪ মিলিগ্রাম, থায়ামিন-০.৪ মিলিগ্রাম, ফলিক এসিড-১৪ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন সি-৯ মিলিগ্রাম। এ ছাড়া সামান্য পরিমাণ লৌহ থাকে।
বলা হয়ে থাকে ক্যান্সার প্রতিরোধে এর জুড়ি মেলা ভার৷ চমত্কার রং ও বাহারি স্বাদের জন্য গাজর শুধু সবজি হিসাবেই নয়, সালাদের উপকরণ ও জুস তৈরিতে এর রয়েছে বহুমুখি ব্যবহার৷ ফলে দিন দিন এর কদর বেড়েই চলেছে৷ বসে নেই উত্পাদন পর্যায়ের খামারি থেকে পুষ্টি বিজ্ঞানীরাও৷ চলছে মানগত উত্কর্ষতা বাড়ানোর নানা গবেষণা৷ তারই মধ্যে আশার বাণী শুনিয়েছেন একদল মার্কিন বিজ্ঞানী৷ তাদের দাবি, তারা সম্প্রতি এমনই এক ধরনের গাজর উদ্ভাবন করেছেন- সাধারণ জাতের গাজরের চেয়ে এতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ৪১ ভাগ বেশি৷ তাদের ভাষায়, উদ্ভাবিত গাজর নিয়মিত খেলে হাড় ও অস্থি হবে ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ- মজবুত৷ ফলে হাড় ভঙ্গুর হবার ঝুঁকি কমেবে ৷
টেক্সাসের বেলর কলেজ অব মেডিসিনের একদল গবেষক বেশ কিছুদিন যাবত্ গাজর নিয়ে পরীৰা-নিরীৰা চালিয়ে আসছিলেন৷ তাদের মতে, শরীরের জন্য প্রতিদিন দরকার ১ হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম৷ আর এর প্রাথমিক উত্স হচ্ছে- দুগ্ধ জাতীয় খাদ্য৷ অথচ এতে অনেক সময় কারো কারো শরীরে দেখা দেয় এলার্জি, তাই ক্যালসিয়ামের বিকল্প উত্স হতে পারে গাজর৷ তারা জিন প্রকৌশলের সাহায্যে যে গাজর উত্পাদনে সৰম হয়েছে তা এৰেত্রে জাদুর মতো কাজ দেবে৷ সাধারণ গাজরের তুলনায় এটি বহুলাংশে কার্যকর৷ তাই তারা এর নাম দিয়েছে ‘সুপারক্যারট’ বা সুপার গাজর৷
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য প্রফেসর কেনডাল হার্চি বলেন, পরিবেশ নিয়ন্ত্রণাধীন রেখে এবং অতিসতর্ক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সুপারক্যারট বা সুপার গাজর উত্পাদন করা হয়েছে৷ তবে তার ভাষায়, এ জাতীয় গাজর ব্যাপকভিত্তিক বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিক উত্পাদনের আগে আরো নিবিড় গবেষণা হওয়া দরকার৷ উলেস্নখ্য, গাজর নিয়ে গবেষণা এটি প্রথম নয়৷ এমনকি জিন প্রেকৌশলও এর আগে হয়েছে৷ জানা যায়, গাজর উত্পাদনে জিন প্রকৌশলগত প্রক্রিয়া সর্বপ্রথম প্রয়োগ করেন ডাচ্ গবেষকরা৷ সময়টা সপ্তদশ শতাব্দী৷ ডাচ্দের জাতীয় পতাকার বেগুনি অংশের প্রতিফলন ঘটানোর উদ্দেশ্যে এতে যোগ করা হয় জিনেটিক উপাদান৷ ফলে তাদের উদ্ভাবিত গাজর ধারণ করে পার্পল বা বেগুনিবর্ণ৷ এরপর কয়েকদফা জিনেটিক গবেষণা ও তা প্রয়োগ হলেও রং বদলানো হয়নি৷ বিজ্ঞানীদের মতে, গাজর ও ব্রকলি নামে এক জাতীয় ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সালফোরাফেন নামক একটি রসায়ন- যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে৷ গবেষকদের ভাষায়, সুপারক্যারট বা সুপার গাজর খেলে রাতারাতি স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে- এমনটি নয়৷ মূলতঃ ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে এ জাতীয় গাজর গুরম্নত্বপূর্ণ বিকল্প হিসেবে কাজ করবে৷
বিশেষ করে যাদের হাড় ও অস্থি দুর্বল তাদের জন্য এটি আশীর্বাদ৷ গাজরের ওপর কাজ করে কামিয়াব হওয়ার পর এবার চলছে ব্রকলিতে বাড়তি ক্যালসিয়াম ধারণের উপায় নিয়ে গবেষণা৷ তাতে সফল হলে এৰেত্রে আরো উজ্জ্বল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়ে যাবে৷ সে সুযোগের অপেৰায়ই আছি আমরা৷
গাজর হাঁপানির ঝুঁকি কমায়।
বাংলাদেশ সহ বিশ্বের নানা দেশে নানা প্রকার দূষনজনিত কারণ এবং খাদ্যদ্রব্যে ঔষধের প্রতিক্রিয়ার কারণে দিন দিন হাঁপানি রোগীর সংখ্যা আশংকা জনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে খবরে প্রকাশ। কিন্তু স্থাস্থ্য বিশেজ্ঞরা গবেষণায় দেখেছে যে, যে সব মহিলারা প্রচুর পরিমানে গাজর খান,তারা অপেক্ষাকৃত কম হাঁপানিতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। গবেষণায় জানা গেছে প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্কদের হাঁপানি থেকে গাজর রক্ষাকারীর ভূমিকা সুস্পষ্ট । গবেষণায় দেখা গেছে, শাকসবজির অ্যান্টিএক্সিডেন্ট শ্বাসনালি রক্ষার ভূমিকা রাখে। গাজর, টমেটোর রস ও পাতাকপিতে ক্যারোটিনয়েড নাম একটি উপাদান থাকে যা কি না পরবর্তীতে ভিটামিন-এ’তে পরিবর্তিত হয়। ভিটামিন-এ অন্য অনেক কাজের সঙ্গে সঙ্গে দেহের রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং শ্বাসনালীর আবরণ কলাকে সুসংহত করে। বিশেষজ্ঞের অভিমত, একজন মানুষের সুস্থতার জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ ধরনের শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া উচিত এবং সেই সঙ্গে প্রত্যেকের জানা জরুরি যে, তার জন্য কোন শাকসবজি বা ফলমূল বেশি উপকারী বা কোনটি বাদ পড়লে তাকে ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হবে। সর্বোচ্চ তাজা সবুজ শাকসবজি ভক্ষণকারীরাই সর্বনিম্ন হারে হাঁপানিতে ভোগে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, পারিবারিক রোগ, পরিবেশ, শরীরের এলার্জেনের মাত্রা এসব কিছুও হাঁপানি সংক্রমণে ভূমিকা পালন করে বিধায় শুধু ভিটামিন বা শাকসবজির একক ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রে হাঁপানি প্রতিরোধে কাজে নাও আসতে পারে।
©somewhere in net ltd.