![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধারণ মানুষ
বাংলাদেশে নাস্তিকতার বিরুদ্ধে প্রথম রাজ পথে আন্দোলন বা প্রতিবাদ শুরু হয় ১৯৭৪ সালে।৭০ দশকের একজন বাংলাদেশী বাঙালী কবি, লেখক ও সাংবাদিক, দাউদ হায়দারের কবিতা, “কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়”, ১৯৭৪ সালের ২৪ই ফেব্রুয়ারি ‘দৈনিক সংবাদ’ পত্রিকায় ছাপানো হলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়।কবিতা টি তে, মুহাম্মদ (সাঃ), যিশু, বুদ্ধ এবং কৃষ্ণ কে নিয়ে কটু ভাবে কাব্যিক মন্তব্য ছিল(এখনকার নাস্তিকদের মত অশালীন ভাষা প্রয়োগ ছিল না)। স্বাধীনতার পর পর মৌলবাদী দলগুলো খুব বেশি শক্তিশালী ছিল না তার পরেও তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার দাউদ হায়দারকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়।কবিতাটি প্রকাশের জন্যে “দৈনিক সংবাদ” ক্ষমা চায়। এবং কবিতাটি যারা ছাপিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও অঙ্গিকার করে।যদিও ৯ই মার্চ দৈনিক সংবাদে কবি কবিতাটির জন্যে ক্ষমা চেয়ে বলেন,
“কারো ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেওয়া আমার ইচ্ছা ছিল না। আল্লাহ রসুল ও অন্য ধর্মের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল।” তিনি আরো বলেন, কবিতাটি তিনি তার কোন কাব্য গ্রন্থে যুক্ত করবেন না।
তবুও ১২ই মার্চে বায়তুল মোকারমে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংবাদ পত্রিকার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। এবং ২৪শে ফেব্রুয়ারির পত্রিকা বাজেয়াপ্ত করার জন্যে সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়। এর পর পত্রিকার কয়েকটি কপিতে অগ্নি সংযোগ করে, একটি মিছিল সংবাদ অফিসের সম্মুখে বিক্ষোভ করে ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। বাংলাদেশ সীরাত মজলিস, বাংলাদেশ সাবান শ্রমিক ইউনিয়ন তীব্র নিন্দা জানায়।
কবি ডালিম হোসেন এক বিবৃতিতে বলেন-আমি ব্যক্তিগতভাবে নবী মুহাম্মদের ভক্ত। অপর দুইজন ব্যক্তির আমার কাছে পরম শ্রদ্ধেয়। বিক্ষুব্ধ দেশবাসীর কাছে আমার আরজ, যে অপরাধ করিয়েছে, সে নিজে অপরাধ স্বীকারপূর্বক ক্ষমাপ্রার্থনা করেছে-এর চেয়ে বড় প্রতিকার ও প্রতিশোধ আর কিছুই হতে পারে না। ক্ষমা ও সহৃদরতা ছাড়া এখন আর কিছুই তার প্রাপ্য নয়। মহানবীর জীবনকালে যদি এ-ঘটনা ঘটত তা হলে অপরাধী যে শুধু ক্ষমা পেত তা নয়, তার প্রিয় ভক্তদের মধ্যে স্থান লাভেও বাধা থাকতো না।(নাস্তিক ভাইয়েরা কোট করবেন না প্লিজ, কিছু বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া নবি (সাঃ) অনেককেই ক্ষমা করেছিলেন,সেই বিতর্কে এখন যেতে চাইছি না) আমাদের স্মরণ করতে হবে, মহানবীর সেই প্রিয়তম অনুচর ও সহচরদের কথা-যারা প্রথম জীবনে শুধু তার মতের বিরুদ্ধচারী ছিলেন না, প্রাণের বৈরীও ছিলেন।দাউদ হায়দার অল্প বয়স্ক। এখনো ছাত্র, তাই তার মুক্তি ও পুনর্বাসনের আবেদন জানাচ্ছি।
আর সমীরণ সাহিত্য চক্রের বক্তব্য ছিল- কলমের আঘাত কলম দ্বারা প্রতিরোধ করাই উত্তম।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কবিতাটিকে অশালীন হিসেবে চিহ্নিত করে ঐতিহাসিক বটতলায় প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সভায় দাউদ হায়দারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করা হয়। এছাড়া নাস্তিকতার প্রচার বন্ধের জন্যে বিশেষ পদক্ষেপের আহবান জানানো হয়। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ মুজিব সরকার তখন চায়নি আন্তর্জাতিকভাবে মুসলিম সরকারদের সাহায্য হারাতে। কবিকে নিরাপত্তামূলক কাস্টডিতে নেয়া হয়। ১৯৭৪ এর ২০ মে সন্ধ্যায় তাঁকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং ২১শে মে সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটা রেগুলার ফ্লাইটে করে তাকে কলকাতায় পাঠানো হয়। ওই ফ্লাইটে তিনি ছাড়া আর কোনো যাত্রী ছিল না।
তার প্রকাশিত একটি মাত্র কবিতার কারনে তিনি আজ পর্যন্ত দেশে আসার অনুমতি পাননি।তৎকালীন সময়ে আরও যারা ছিলেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন,আহমদ শরীফ (১৯২১–১৯৯৯) ভাষাবিদ।তিনি জন্মসূত্রে মুসলমান হলেও স্বঘোষিত নাস্তিক। এবং খোন্দকার আশরাফ হোসেন (১৯৫০–২০১৩) তিনি কবি এবং সাহিত্য সমালোচক এবং ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী মতবাদের ছিলেন।
৭০ এর দশকে নাস্তিকতা বিরধিতার আন্দলনে আন্দলন কারীরা যা চেয়েছিলেন, কবি দাউদ হায়দারের দেশ ত্যগে তা পূরণ হয়।
৮০ এর দশকে যাদের জন্ম অর্থাৎ আমাদের প্রজন্মের চোখে, আনুমানিক ১৯৯৩ থেকে বাংলাদেশে নাস্তিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা আন্দোলন শুরু হয়। ধরা যায় ১৯৯৩ থেকে যারা নাস্তিকতা বা প্রথা বিরুধি লেখা লিখি করতেন তাদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদে যারা ধার্মিক তারা প্রতিবাদ শুরু করে।অর্থাৎ ১৯৭৩ থেকে ১৯৯৩। প্রতিবাদটা হওয়ার কথা “ধার্মিক” বনাম “নাস্তিক” , কিন্তু দুখ্য জনক এবং অদ্ভৎ ভাবে আমাদের দেশে প্রতিবাদ হয় “নাস্তিক” বনাম “মুসলিম”।একজন মুসলিম হিসাবে আমি বলতে পারি “আমরা”। তাহলে আমরা প্রতিবাদ বা নাস্তিকতার বিরুদ্ধে আমাদের কর্মকান্ড শুরু করি ১৯৯৩ সাল থেকে ।বিশ বছর পর আবার নাস্তিকতার বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা আমরা অনুভব করি।
একজন মুসলমান হিসবে আমরা অবশ্যই চাইতে পারি না আমাদের পরবর্তি প্রজন্ম নাস্তিক হোক। তাই নাস্তিকতা রোধে আমরা বিভিন্ন কর্মকান্ড হাতে নেই। কর্মকান্ড গুলো কি কি,
১। মিছিল করে নাস্তিক লেখকদের লিখার প্রতিবাদ জানাই।
২। নাস্তিকতামূলক বই গুলো নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবী জানাই।
৩। নাস্তিকদের দেশ থেকে বহিষ্কারের দাবী জানাই।
৪। বিভিন্ন ধর্মিয় মাহফিলে নাস্তিকদের হত্যা করার ইসলামী বিধান জারির দাবী জানাই।
ইত্যাদি ইত্যাদি।
তখন নাস্তিক বলতেই বোঝাত তসলিমা নাসরিন, হুমায়ুন আজাদ এবং তাদের কিছু আগে আরজ আলী মাতুব্বর। এদের অনেকের বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৩ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর তসলিমা নাসরিনের মৃত্যুর জন্য ফতোয়া জারী করা হয় এবং ১৯৯৪ সালে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করতে বাধ্য হন।
আমাদের প্রথম তিনটা কর্মকান্ডই সফল হয়। বাকি থাকে নাস্তিক হত্যার বিধান জারি। সরকারীভাবে এই বিধান জারি করা না গেলে বেসরকারি ভাবে দ্বায়িত্ব কাধে তুলে নেয় হরকাত-উল-জিহাদ-আল-ইসলাম এবং জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (বা সংক্ষেপে জেএমবি)।
তারা পর্যায়ক্রমে ১৯৯৯ সালের ১৮ই জানুয়ারী শামসুর রাহমান এবং ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ ফেব্রুয়ারি হুমায়ুন আজাদকে হত্যার চেষ্টা চালায়।
জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (বা সংক্ষেপে জেএমবি) নামক ইসলামি জঙ্গি সংগঠনের একজন শীর্ষনেতা “শায়খ আব্দুর রহমান” পরবর্তিতে হুমায়ুন আজাদ এবং একইসাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম ইউনুসকে হত্যার নির্দেশ দেবার কথা স্বীকার করে।
মুফতি হান্নানের সাক্ষাতকারটি দেখুন,
https://youtu.be/W8Rd74vuoFI
ভিডিও টিতে শামসুর রাহমান হত্যার সিদ্ধান্তের কারন তিনি বলেন, শামসুর রহমান “আযানকে বেশ্যার ডাকের সাথে তুলনা করেছেন”। বাংলাদেশের নাস্তিকদের লিস্টি তে শামসুর রহমান আছেন বিভিন্ন ব্লগে বা ফেসবুক পোস্টে। সবখানেই তিনি নাস্তিক তার কারন হিসাবে দেখানো হয় এই কারন টি। অথচ তিনি কোথায় বা কোণ কবিতায় এটা বলেছেন তা আজও খুজে পেলাম না। কেউ পেলে আমাকে একটু জানাবেন প্লিজ। অনেকে বলেন “এই মাতোয়ালা রাইত”- কবিতায় তিনি লাইন টি বসিয়েছেন। কিন্তু আমি পাইনি। যখন তাকে(মুফতি হান্নানকে) প্রশ্ন করা হোল “শামসুর রাহমান” কোণ বই উনি (মুফতি হান্নান) পড়েছেন কিনা, তিনি বললেন, ব্যক্তি গত ভাবে তিনি পড়ে দেখেন নি নেতারা বলেছেন তিনি বিশ্বাস করেছেন।এখানে তিনটি বিষয় চলে আসে,
এক।। শামসুর রহমান আসলেই এরকম বলেছেন কিনা। আমার জানা মতে বলেন নি।
দুই।। ধরে নিলাম শামসুর রাহমান নাস্তিক ছিলেন, কিন্তু নাস্তিক হলেই তাকে খুন করার অধিকার ইসলাম দেয় কিনা। অনেক আলেমের মতে দেয় না আবার অনেকে বলেন দেয়। এব্যপারে বিশদ আলোচনা আবশ্যক। তাই স্যর হাসান মাহমুদের একটি লিখার লিঙ্ক দিলাম, যা অনেক কিছু বুঝতে সাহায্য করবে বলে আমার বিশ্বাস।
http://www.shariakibole.com/মà§à¦°à…/
তিন।। যা আসলেই ভয়ংকর। আমাদের সমাজে মুফতি হান্নানদের মত এমন এক অস্ত্র তৈরি করা আছে যা কোণ যুক্তি তর্কে গিয়ে যাচাই বাছাই করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব না করে একশনে বিশ্বাসী। শুধু একবার এদের নেতাদের দ্বারা জানালেই হবে অমুক নাস্তিক,তমুক মুরতাদ ওদের হত্যা কর।
উনারা হত্যা করবেন। এত সুন্দর এবং ভয়ংকর একটিভ অস্ত্র, দুষিত রাজনীতিবিদরা বা পলিটিক্যল ইসলামিরা, যার যার সুবিধা অনুযায়ী ব্যবহার করবে না কেন!! সবাই ব্যবহার করেছে বা করছে। এ এক ভয়ানক ফ্রাঙ্কেসটাইন যাকে পরে আর কেউ সামলাতে পারে নি। এখনো পুরাপুরি পারছে না। একটু চিন্তা করুন, একজন মানুষ তার কোণ লিখাতেই আজান কে বেশ্যার হাসির সাথে তুলনা করেন নি। তার পরও কত সহজে আমরা সবাই ধরে নিলাম তিনি করেছেন সুতরাং তাকে হত্যা জায়েজ হয়ে গেছে এবং কিছু মানুষ তার বাসায় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে তাকে মারতে। চিলে কান নিয়েছে শুনে কানের পেছনে ছোটার সেই গল্প টার চরম বাস্তব উদাহরণ আর কি হতে পারে!!!!
তারা ব্যর্থ হয়। ব্যর্থ হলেও আমরা সাধারণ মুসলমানরা এবং ধর্মিয় মাহফিলের বিভিন্ন আলেম বক্তারা তাদের এই হত্যা চেষ্টাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন জানাই।এবং পরবর্তিতে জার্মানিতে হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুতে আমরা হাফ ছেড়ে বাচি। যাক নাস্তিকতার হাত থেকে বাংলাদেশ বাচল। কিন্তু আসলেই কি তাই ?
তাহলে ২০০৪ সাল থেকে ২০১৩ সাল, ৯ বছরের মাথায় আবার হত্যার চেষ্টা কেন করতে হোল।?
পর্যায়ক্রমে,
আসিফ মহিউদ্দীন---- ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারী== আহত
আহমেদ রাজিব হায়দার(থাবা বাবা) ------২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই ফেব্রুয়ারি== নিহত
অভিজিৎ রায়-----২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি== নিহত
ওয়াশিকুর রহমান----- ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ== নিহত
অনন্ত বিজয় দাস-----২০১৫ সালের ১২ মে== নিহত
নীলয় চ্যাটার্জী---- ২০১৫ সালের ৭ আগষ্ট== নিহত
“অভিজিৎ রায়”,“অনন্ত বিজয় দাস” এবং “নীলয় চ্যাটার্জী” তিন জনই হিন্দু ধর্মালম্বি ছিলেন। একজন হিন্দু যদি তার ধর্ম বিশ্বাস ত্যাগ করে নাস্তিক হয় তাহলে আমরা অর্থাৎ মুসলমানদের সমস্যা হওয়ার কথা না। তার পরও আমরা তাদের হত্যা করলাম। অনেকে বলেন নাস্তিকতার আড়ালে সবাই ইসলাম বিদ্বেষী। কিন্তু এই চার জন অন্তত শুধু মাত্র ইসলাম বিদ্বেষী ছিলেন না। বিশেষ করে “নিলয় চ্যাটার্জির” লিখা “বৌদ্ধ শাস্ত্রে পুরুষতন্ত্র” সিরিজটি পড়ার আগে আমি জানতাম না আপাত দৃষ্টি তে নিরীহ দেখালেও বৌদ্ধ ধর্মে নারীদের নিয়ে কুৎসিত কিছু ব্যপার আছে। ইসলাম সম্পর্কে এরা যা লিখেছেন এর চেয়ে ঢের বেশি লিখেছেন তাদের নিজেদের ধর্মের বিরুদ্ধে।
সাথে নতুন করে যারা ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে তারাও নাস্তিক এবং মুরতাদ ঘোষিত হয়ে হামলার শিকার হলেন,
১। ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক “রেজাউল করিম সিদ্দিক” == নিহত== খুনের দায় স্বীকার করে আইএসআইএল।
২। ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল জুলহাজ মান্নান এবং তার বন্ধু তনয় মজুমদার===নিহত== এই হত্যার দায় স্বীকার === আইএসআইএল
৩।২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শফিউল ইসলাম(বাউল মতবাদের অনুসারী ছিলেন)=== নিহত==দায় স্বীকার ==='আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২'।
৪।২০১৫ সালের ৩১ শে অক্টোবর জাগৃতি প্রকাশনীর কর্ণাধার ৪৩ বছর বয়সী ফয়সাল আরেফিন দীপন == নিহত।
৬। ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র== নাজিমুদ্দিন সামাদ== নিহত==দায় স্বিকার== আনসার আল ইসলাম
৭।২০১৫ এর ৩১ অক্টোবর ৪৩ বছর বয়সী শুদ্ধস্বর প্রকাশনার মালিক আহমেদ রশীদ চৌধুরী (টুটুল) (নাস্তিক লেখকদের বই প্রকাশ করার জন্য এবং তার ধর্মনিরপেক্ষতা) ==আনসার-আল-ইসলাম এর দায় স্বীকার করে।
অর্থাৎ ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল। তিন বছর।
একই স্টাইলে হামলায় আরও অনেককে আহত বা নিহত করা হয়েছে। তাদের হিসাব বাদ দিলাম।
এবার প্রথম নয় বছরের প্রেক্ষাপটে কি দেখা যায়। নাস্তিকতার পক্ষে প্রত্যক্ষ বা পরক্ষভাবে লেখা লেখি করতেন হাতে গোনা কয়েকজন। পরবর্তি তিন বছর আক্রমণ বা হত্যার হিসাবে দেখা যায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কয়েকগুন।
এখন ২০১৮ সাল।
ফেসবুক বা ব্লগে আমরা যে পরিসংখ্যান পাই তা কয়েক গুনের চেয়ে অনেক বেশি।
তাহলে আমরা যে পদ্ধতি নাস্তিকতা রোধে প্রাথমিক ভাবে ব্যবহার করেছি তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না।
গোদের ওপর বিষ ফোড়ার মত মেটামরফাসিস হয়ে, “মুফাসসির ইসলাম” হলেন “সংশয় বাদী” আর “মুফতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ” হলেন “কট্টর নারিবদী নাস্তিক”। এবং প্রচন্ড পরিমাণ একটিভ।
আমরা তাদের বিরুদ্ধে কি করছি?
==>> তাদের মতবাদের পক্ষের কিছু মানুষকে সাথে সন্দেহবশত অনেককেই আচমকা খুন করছি। খুনের খবর বের হচ্ছে, নতুন প্রজন্ম যারা ইসলাম সম্পর্কে ভালো বা খারাপ কোনটাই জানতো না তারা খুনের খবর পড়ে তাদের নাম গুগলে সার্চ দিয়ে সহজেই পৌঁছে যাচ্ছে তাদের ব্লগে বা অনলাইন সাইটে বা ফেসবুক একাউন্টে। যেহেতু তাদের রক্তাত্য লাশের আর ভয়াবহ খুনের ছবি সহ বর্ননা ছাপা হচ্ছে, সহজেই তাদের প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি তৈরি হচ্ছে নতুন প্রজন্মের যা সেই ব্লগের সত্য মিথ্যা সব তথ্য যাচাই বাছাই বা বুঝার ক্ষমতা নির্জিব করে রাখছে। মোহ মুগ্ধের মত প্রজন্ম সেগুলকেই অন্তরে ভরে নিচ্ছে।
যেখানে কুরআন টাইম লাইন অনুসারে পড়ে, বুঝতে তিন থেকে চার বছর লেগে যাবে, নব্য নাস্তিকেরা অবলিলায় বলে দিচ্ছে, “আমি কুরআন টাইম লাইন অনুসারে পড়েছি, সুতরাং আমার সাথে লাগতে আইসেন না।”
যে অশ্রদ্ধা আর আক্রমনাত্বক আচরণ নিয়ে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিলাম সেই একই আচরণ তারা আমাদের সাথে এখন করছে।এতে নাস্তিকদের দোষটা কোথায়? শুরু আমরা করেছিলাম। ১৯৯৩ সাল থেকে যত জন নাস্তিক আমরা মেরেছি বা দেশ থেকে ভাগিয়েছি তার তুলনায় নাস্তিকদের হাতে আমাদের কেউ মরেছে বা আহত হয়েছে বা করার চেষ্টা করা হয়েছে এমন একটা ঘটনাও কিন্তু ঘটেনি।
==>> প্রথম সারির নাস্তিক রা এমন কি নিহত “অভিজিৎ” সহ অনেকেই চেয়েছিলেন এমন একটা প্লাট-ফর্ম বা পরিবেশ তৈরি হোক যেখানে নাস্তিক আস্তিক তথা সব মতবাদের মানুষ তাদের নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে সভ্য ও শান্তি পুর্নভাবে (তথাকথিত মেঠো মুল্লাহদের বাহাস এর মত নয়) বিতর্ক বা মতামত আদান প্রদান করতে পারবে।আমরা তাদের “প্লাট ফর্ম” সহ তাদেরকে পরো পারে পাঠিয়ে দিলাম। এখন তাদের উত্তরসুরীদেরই আমরা বলছি-- “এসো আলোচনা করি। ডিবেট করি।” এবং তাদের কাছ থেকে আমরা ভালো ব্যবহার আশা করছি!! যা করা উচিৎ ছিল ১৯৭৩ সালে,দাউদ হায়দারের সময়, সমীরণ সাহিত্য চক্রের বক্তব্য ছিল- কলমের আঘাত কলম দ্বারা প্রতিরোধ করাই উত্তম।
রাসুল (সাঃ) হাদিস আমাদের সেই পথের নির্দেশ ই কিন্তু দেয়,
সহিহ বুখারি (তাওহিদ)
অধ্যায় ৬৪/ মাগাযি(যুদ্ধ)
হাদিস নাম্বারঃ ৪১২৪
ইব্রাহিম ইবনু তাহ মান (রহঃ).....................বারাআ ইবনু “আযিব (রাঃ) থেকে অধিক বর্ননা করে বলেছেন, নবি (সাঃ) বানু কুরাইযার সঙ্গে যুদ্ধের দিন হাসসান ইবনু সাবিত (রাঃ) কে বলেছিলেন (কবিতা আবৃতি করে) মুশরিকদের দোষ ত্রুটি তুলে ধর। এ ব্যপারে জিবরীল (আঃ) তোমার সঙ্গি। (আধুনিক প্রকাশনী ৩৮১৭, ইসলামিক ফাউনডেশনঃ ৩৮২০)
হাসসান ইবনু সাবিত (রাঃ) কে রাসুল (সাঃ) এর কবি বা ইসলামের কবি বলা হত। কারন কাফির কবিরা যেমন আল্লাহ্র রাসুল ও ইসলামের বিরুদ্ধে কুথসা ও বদনাম করতো তেমনি তিনিও কাফিরদেরকে কবিতা ও সাহিত্যের মাধ্যমে তার জবাব দিতেন। (সহিহ)
এখানে বুঝা যাচ্ছে কাফিররা যে কবিতা ও সাহিত্যকে ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিল, এর জবাবে রাসুল (সাঃ)ও কবিতা এবং সাহিত্যকে কাফিরদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিলেন।
আমরা তখন তা করিনি।আমরা এখন করার চেষ্টা করছি।ফেস বুকে তৈরি হওয়া অনেক গ্রূপ সেই প্লাট ফর্ম ই তৈরির চেষ্টা করছে । দেরিতে হলেও শুরু হয়েছে এটা ভালো।অনেকে ভিডিও কলে লাইভ বিতর্ক করছেন। এক্ষেত্রে “এম কে হাসান” ভাই প্রশংসনীয় উল্লেখ যোগ্য ভুমিকা পালন করছেন। “রুহুল আমিন সিরাজি” ভাই নতুন(ভিডিও বিতর্ক) শুরু করেছেন। তার উথসাহ প্রশংসনীয়।বিভিন্ন বই লিখা হচ্ছে , যেমন আরিফ আজাদের “প্যরাডক্সিক্যল সাজিদ”, যার লেখনী আসলেই উন্নত মানের, যদিও কিছু কিছু যুক্তি একটু পুরনো এবং আমার কাছে যুক্তি সঙ্গত মনে হয় নি। (অবশ্য এটা আমার ব্যক্তিগত বিচার)। উনি, নাস্তিকদের প্রতি প্রচলিত আক্রম্নাত্বক এবং অবজ্ঞা সুচক ভাষা ত্যগ করে তাদের যুক্তি গুলো খন্ডাবার চেষ্টা করেছেন এবং কিছু অংশে সফল ও হয়েছেন । এই নতুন ধারা টা চমৎকার। উনার পরবর্তি বই বেরিয়েছে “আরজ আলী মাতুব্বর সমীপে”, যাতে তিনি আরজ আলীর বিভিন্ন যুক্তির পাল্টা যুক্তি দেখিয়েছেন। আরজ আলী মাতুব্বরের বই গুলো বেরিয়েছিল ১৯৭৩ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে । আমি নিজে তা পড়ি ১৯৯৭ সালে, পড়ে অবশ্য কিছু দিন ডাঙ্গায় তোলা মাছের মত খাবি খাই। ১৯৮৮ সাল থেকে ২০১৭, অর্থাৎ ২৯ বছরে আমরা আরজ আলী মাতুব্বরকে গালা গালি করেছি, অবজ্ঞা করেছি, তাকে গেঁয়ো মুর্খ বলে অপমান করেছি, কিন্তু তার যুক্তি গুলো খন্ডাবার চেষ্টা করিনি । দেশের এত এত ইসলামী চিন্তাবিদ, মাদ্রাসা ছাত্র, স্কলার, মুফতি, শায়েখ, পীর ২৯ বছরে তার যুক্তি গুলো যুক্তি সঙ্গত ভাবে খণ্ডন করে একটা পুর্নাংগ বই লিখতে পারলেন না!!!!!!!!!...২৯ বছর পর সেই চেষ্টা এটা প্রমান করার জন্য যথেষ্ট যে আমাদের নাস্তিকতা বিরুধি কর্মকান্ডে ভুল ছিল।
উল্টো আমরা তাদের বই নিষিদ্ধ করিয়েছি, যা তাদের বই গুলোর পক্ষে বিজ্ঞাপনের কাজ করেছে। কারন যতগুলো বই প্রাথমিক পর্যায়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো সেগুলোর বেশিরভাগই আবার হাইকোর্টের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে ফেলে, আর নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি স্বাভাবিক একটা আগ্রহ থাকে সবারই, বিশেষ করে যুব সমাজের। সেই আগ্রহ বই গুলোর বিক্রি বাড়াতেই সাহায্য করে। আমরা নিজেদের অজান্তেই নাস্তিকতার আগুনেই ঘি ঢেলেছি।
==>> লিখা লিখির মাধ্যমে নাস্তিকতার বিরুদ্ধে কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ার পর ভালোর সাথে কিছু মন্দ ব্যপার ও যুক্ত হয়েছে। ইসলাম সম্পর্কে ভালো রকম ধারনা নাই এমন অনেকেই স্রেফ ইমানি জোশে নাস্তিকদের সাথে বিতর্ক করতে এগিয়ে আসছেন এবং সেই বিতর্কের ভিডিও এডিট করে নিজের ঢোল নিজেই পেটাচ্ছেন। তেমনি একজন হচ্ছেন “মনজুরুল ইসলাম”। যিনি “মুফাসসির ইসলামের” সাথে ভিডিও কলে বিতর্ক করতে আসেন। বিতর্ক টি রাত ১০ টার পর( সঠিক সময় টা মনে নেই) কোণ এক সময় শুরু হয়। শেষ করার সাথে সাথে মুফাসসির ইসলাম তার ইউ টিউব চ্যনেলে ৭৫ মিনিটের ভিডিও টি আপ লোড করেন। কিন্তু মনজুর তার ফেস বুক পেজে পোস্ট দেন, “অবশেষে “ধড়া” পড়লো নাস্তিক মুফা। রাত পোহালেই ভিডিও প্রকাশ করা হবে।” (অতি অদ্ভত কারনে এই ব্যক্তি “র” কে কেন জানি “ড়” লিখেন)।
তার চ্যনেল "MANZOOR's Investigation"
৭৫ মিনিটের বিতর্কে ইসলাম শ্রেস্ট ধর্ম সেটা উনি অন্যান্য ধর্মের কিতাব গুলো থেকে প্রমান করার চেস্টা করেন। উনি যে পয়েন্ট গুলো বলেন সেগুলোর সব গুলোই জাকির নায়েক তার বিভিন্ন স্পিচে কোট করেছেন। জাকির নায়েকের প্রশ্ন উত্তরের স্পিচ গুলোকে বিতর্ক বলা যায় না। কারন সেগুলোতে উনি স্রেফ উনাকে যে প্রশ্ন টা করা হয় তার উত্তর দেন এবং সময় সংক্ষেপের কারনে তা খুব একটা বিশদ হয় না। উনাকে একটা প্রশ্ন করা হোল, উনি সেটার উত্তর দিলেন, সেই উত্তরের প্রেক্ষিতে আরো কয়েকটি প্রশ্ন আসতে পারে, সেগুলো প্রশ্ন কর্তা করার সুযোগ বা সময় পান না। তাই শুধু মাত্র উনার লেকচার শুনেই নাস্তিকদের সাথে বিতর্ক করতে যাওয়ার আগে খুব ভালো ভাবে উনার এই উত্তরের পরে আর কি কি প্রশ্ন আসতে পারে এবং সেগুলোর সম্ভাব্য ব্যখ্যা কি হতে পারে সেগুলো একটু বিশ্লেষণ করে “হোম ওয়ার্ক” করে নেয়া উচিৎ। মনজুর সেটা করেন নি। এমন কি উনি মুফাসসির ইসলাম সম্পর্কে ন্যুন তম ধারনা নেয়ার ও চেষ্টা না করে বিতর্ক করতে চলে আসেন। যার সুযোগ মুফাসসির ইসলাম পুরা পুরি ব্যবহার করেন। পরদিন মনজুর তার এডিট করা বিতর্কের মুল ভিডিওর সাথে নিজের সাফাই গাওয়া ভিডিওটি প্রকাশ করেন এবং দাবী করেন উনি দাত ভাঙ্গা জবাব দিয়েছেন। অনেক মুসলমান ব্যক্তি কমেন্টে তার সমালোচনা করেন সুযোগ পাওয়ার পরও তার জ্ঞানের স্বল্পতার কারনে মুফাসসির ইসলামকে প্রাধান্য বিস্তার করা থেকে আটকাতে পারেন নি বলে। এবং সাথে এটা ও অনুরধ করেন এই ভাবে বিতর্ক করতে যাওয়াটা ইসলামের জন্য অপমান জনক। অবশ্য অনেকে আবার তার প্রশংসা ও করেন। মনজুর প্রশংসার জবাবে ধন্যবাদ দেন সমালোচনা গুলো এড়িয়ে যান।
মনজুর বিতর্কের এক পর্যায়ে জানান তিনি অনেক যায়গায় বিতর্ক করেছেন এবং আজ পর্যন্ত সব নাস্তিক তার যুক্তির সামনে টিকতে না পেরে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। কোথায় বিতর্ক গুলো করা হয়েছে এর জবাবে বলেন,
ফেইস বুকের বিভিন্ন গ্রুপে।
লাইভ?
না,কমেন্টে। কমেন্টে লিখে যা করা হয় তাকে অন্তত “বিতর্ক” কি আসলেই বলা যায়? কিছু কিছু গ্রুপে এই চর্চা টি করা হয়। এডমিন ঘোষণা করেন, আজ এতটা বাজে বিতর্ক শুরু হবে, বিষয় “ইসলাম শ্রেস্ট ধর্ম”। পক্ষে বলবেন অমুক (মুমিন মুসলিম তথা আস্তিক) বিপক্ষে বলবেন তমুক (নাস্তিক)। একবার এমন একটা কমেন্ট বিতর্ক দেখলাম, শুরু হওয়ার কথা নয় টায়। নয়টা থেকেই বিভিন্ন মুমিন ভাইয়ের কমেন্ট শুরু। তার মাঝেই হঠাৎ পক্ষের বিতর্কিক অর্থাৎ আমার মুমিন ভাই বিশাল এক কমেণ্ট পোস্ট করলেন। কমেন্টের শেষে সিদ্ধান্ত, “সুতরাং ইসলাম ই একমাত্র শ্রেস্ট ধর্ম”। সাথে সাথে দর্শক মুমিন ভাইদের কমেন্ট “জাজাকাল্লাহ”, “মাশাল্লহা”, “”নাস্তিকে কই”, “পলাইসে” ইত্যাদি ইত্যাদি। যারা নিয়মিত বিতর্ক করেন বা দেখেন তারা অবশ্যই জানেন বিতর্কে বিপক্ষ বক্তাই আগে শুরু করে। এই প্রাথমিক ব্যপারটাও কি গ্রুপ এড মিন রা জানেন না!!!!!!
এর পর নাস্তিক ভাইয়ের কমেন্ট, স্বাভাবিক ভাবেই তেমন একটা বিশদে তিনি যেতে পারেন নি, কারন যে যুক্তি গুলো আমার মুমিন ভাই দিয়েছেন সেগুলো খন্ডাতে বিশদ বর্ননা প্রয়োজন যা কমেন্টের মত স্বল্প পরিসরে কক্ষনো সম্ভব নয়। তার স্বল্প প্রতিউত্তরের জবাবে আমার মুমিন ভাই এবার তিনটা সম আয়তনের বিশাল বিশাল “কমেন্ট” নিক্ষেপ করলেন (যেগুলো দেখলেই বোঝা যায় আগে থেকেই লিখে রাখা, তাছাড়া এত দ্রুত এত বড় লিখা লেখাটা সম্ভব নয়)। যার শেষের টি পোস্টের ফাকে কিঞ্চিত সময় পেয়ে আরও দুজন মুমিন ভাই “জাজাকাল্লাহ” ও “মাশাল্লাহ” পাঠিয়ে দিলেন। আমি আর অবলোকন করার কারন খুজে পেলাম না। পরদিন সেই গ্রুপে এডমিনের পোস্ট, “গতকাল অমুক নাস্তিক তমুক মুমিন ভাইয়ের সাথে তর্কে না পেরে পালিয়েছে। এভাবেই ভিতু নাস্তিকদের বিরুদ্ধে ইসলামের বিজয় হবেই ইনশাল্লাহ।”
আমি ছোট্ট করে একটা কমেন্ট দিয়েছিলাম, “ভাই যা হয়েছে সেটা তো টাইপিং স্পিডের প্রতিযোগিতা, বিতর্ক কি বলা যায়?!!” কয়েক মুমিন ভাই আমাকেও নাস্তিক মুরতাদ সাথে কিছু কুথসিত গালি গালাজ প্রসব করলেন। আমি সেই গ্রুপ ত্যগ করলাম।
মনজুর ও তেমনি, এক পর্যায়ে বলে ফেলেন, এটি তার প্রথম ভিডিও বিতর্ক এর আগে তিনি সব সময় লিখেই বিতর্ক করেছেন। “বিতর্ক” যাকে বলা হয় একধরনের “বাক শিল্প”। সেই বাক শিল্প লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ কিভাবে করা যায়??!!! এ যেন “ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাঁটিয়া চলিল।”
==>>অনেক মুমিন ভাই নাস্তিকতার বিরুদ্ধে বলতে যেয়ে সরাসরি অন্যান্য ধর্ম গ্রন্থের বিভিন্ন কুথসিত দিক বা সরাসরি তাদের উপাস্য দের নিয়ে ব্যংগ বিদ্রুপ করেন। বিশেষ করে হিন্দু ধর্ম। এর কারন হিসাবে তারা বলেন,ছুপা হিন্দু রা নাস্তিক পরিচয়ে ইসলামের বিপক্ষে বলছে। হ্যা অনেকে আছেন এমন। কিন্তু সেটা প্রধান সারি নয়। নাস্তিকতার ভিতের ওপর দাড়িয়ে তারা সেটা করছে। সুতরাং আমরা যদি নাস্তিকতার প্রাধান্য কমাতে পারি ছুপা রা আপনা আপনি সরে যাবে। সেদিকে না গিয়ে আমরা হিন্দু ধর্মালম্বিদের সরাসরি আক্রমণ করছি। তাদের ধর্ম গ্রন্থের বিভিন্ন ব্যপার নিয়ে আলোচনা করা পর্যন্ত তাও কিছুটা ঠিক আছে, কিন্তু পার্স্ববর্তি দেশের কিছু কট্টর হিন্দু উগ্রপন্থী দ্বারা সেই দেশেরই কিছু মুসলমানদের দৈহিক ভাবে নির্যাতনের ভিডিও, সাথে হিংসাত্বক বানী সহ পোস্ট করাটা আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে ফেলতে পারে সহজেই।
ভারতে মুসলমানদের অবস্থান কেমন সে বিচার করতে গেলে একটা ব্যপার বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাওয়া উচিৎ। ভারতের মত হিন্দু সংখ্যা গরিষ্ট দেশে জাকির নায়েকের স্পিচ গুলোতে অনেক হিন্দু ধর্মের লোকদের ইসলাম গ্রহণ করতে দেখা যায়। একটু চিন্তা করুন, বাংলাদেশে একজন খ্রিস্টান পাদ্রি বা কোণ হিন্দু ব্রাম্মন যদি এই ধরনের কোণ প্রগ্রাম করা শুরু করেন এবং টাকা পয়সার লোভ দেখিয়ে হোক বা বুজিয়ে ভাজিয়ে হোক কিছু মুসলমানকে যদি খ্রিস্টান বা হিন্দু বানিয়ে ফেলেন তাহলে? “হেফাজতে ইসলাম” কি সেই প্রোগ্রাম আস্ত রাখবে? তাদের মেরেই ফেলবে।হেফাজত না মারলেও জঙ্গি রা মারবেই। সেই তুলনায় জাকির নায়েক অনেক দিন যাবত উনার দাও্যাতি কর্মকাণ্ড কিন্তু চালিয়ে যেতে পেরেছিলেন ভারতের মত হিন্দু সংখ্যা গরিস্ট রাষ্ট্রে । তাই কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা নিয়ে সামগ্রিক অবস্থা বিচার করাটা ঠিক হবে না।বাংলাদেশে হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে হামলা যদি কোণ সংখ্যা লঘিস্ট হিন্দু জঙ্গি গোষ্ঠী করতো, তাহলে আমরা কি চুপ থাকতাম? তেমনি হিন্দু সংখ্যা গরিষ্ট দেশ ভারতে সংখ্যা লঘিস্ট মুসলিম জঙ্গি দের দ্বারা সংগঠিত এত গুলো হামলার পর ও কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটবে না বা সেই দেশের উগ্র হিন্দুবাদি গোষ্ঠী তার সুযোগ নিবে না সেটা কিভাবে আসা করা যায়? মুসলমান হিসাবে এই ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ অবশ্যই আমরা করবো, কিন্তু আক্রমনাত্বক ভাবে করাটা আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক শান্তি বিনষ্ট করবে।
তাছাড়া এ ধরনের ঘটনা গুলো যত প্রচারিত হয় সেই তুলনায় সাম্য বাদের ঘটনা গুলো তেমন একটা গুরুত্ব সহকারে প্রচার করা হয় না। যেমনঃ আসামের সেই ইমাম যার ছেলে কে হিন্দু উগ্রবাদিরা নির্সংস ভাবে হত্যা করার পরও লাশ কবর দিয়েই তিনি বেরিয়ে পড়েছিলেন গ্রামে গ্রামে ঘুরে সবাই কে শান্ত করার জন্য যাতে কেউ প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে কোণ পদক্ষেপ না নেন।
https://www.youtube.com/watch?v=xB5UcUeBUHQ&t=111s
আমেরিকা প্রবাসী সেই ইন্দনেশিয়ান মুসলিম পিতা যার ছেলেকে এক নিগ্র খুন করার পরও, খুনিকে মাফ করে দিয়ে বলতে পেরেছিলেন, এই শিক্ষা তিনি ইসলাম থেকে পেয়েছেন।
https://www.youtube.com/watch?v=rS1rFr9KOAc
https://www.youtube.com/watch?v=viEF_ycHgWI
একটা ব্যপার আমরা ভুলে যাই, নাস্তিক আস্তিক সবারই অধিকার আছে নিজের দেশে বাস করার। একজন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বা আদিবাসী ধর্মালম্বি মানুষ যদি বাংলাদেশে বাস করতে পারে তাহলে একজন নাস্তিক কেন পারবে না? নাস্তিক রা কি আমাদের দেশের জন্য আসলেই এতটা ক্ষতিকর??!!
আমরা কেন স্লোগান তুলছি “কুকুর বেড়াল মেরো না, নাস্তিক পেলে ছেড়ো না”, আর নাস্তিক রা পেশি শক্তিতে না পেরে যখন আমাদের নবি রাসুল,ইশ্বর,যিশু,বুদ্ধ দের গালাগালি করছে তখন আমরা তাদের বলছি ভদ্র ভাষা ব্যবহার করতে??!!!
আর তাছাড়া কারা মারছে নাস্তিকদের??
জঙ্গিরা।
যাদের ব্যপারে সবাই কি একমত নয় যে ওরা দেশের জন্য, ইসলামের জন্য ওরা ক্ষতিকর!!!!!!!!!!!!!!
প্রিয় মুমিন ভাইয়েরা একটু চিন্তা করে দেখুন।
দাউদ হায়দার মাফ চেয়েছিলেন, আমরা তাকে মাফ করিনি। দেশে আসতে দিচ্ছি না। এখনকার নাস্তিকরা কিন্তু মাফ চাওয়ার ধারে কাছেও যাচ্ছেন না। সমস্যার সমাধান কিন্তু হয় নি। সমস্যা আরও বেড়েছে।
©somewhere in net ltd.