![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধারণ মানুষ
আমরা করলে বেদাত আর তোমরা করলে ইসলাম??!!!!
Celebration of Saudi Arabia 2017 National Day
ভিডিওঃ১। Click This Link
Grucci at Saudi Arabia National Day 2014
ভিডিওঃ২। https://www.youtube.com/watch?v=dcJZbMs12VY
এক দঙ্গল খ্রিস্টান,নাসারাদের ভাড়া করে (টাকা আছে,রুচি নেই) জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন, বিরাট স্ক্রিনে বাদশার ছবি, আতশ বাজি ফোটানো, এগুলো জায়েজ। আমাদের বিজয় দিবসে বা জাতীয় উৎসব গুলোতে আমরা নিজেরাই সাজাই আর শুনি দুই ঈদ ছাড়া আর কোণ দিন উৎসব হিসাবে পালন করাই জায়েজ না। আতশবাজি হিন্দুরা পোড়ায় দীপাবলিতে সুতরাং হারাম হারাম।
“দউফ” ছাড়া আর কিছু বাজিয়ে গান করা যাবে না।জাকির নায়েকের বয়ান।
ভিডিওঃ৩। https://www.youtube.com/watch?v=FFMDT41BHmg
কিন্তু শুধু সাউদিরা ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করতে পারবে।সাথে নাচ ও।
ভিডিওঃ৪। https://www.youtube.com/watch?v=KwjagSW4ijA
জাকির নায়েক এখন সাউদি তে আছেন। আশা করি উনি সাউদিদের হেদায়েত দান করবেন এই ব্যপারে।
বন্দুক নিয়েও আঞ্চলিক অনুষ্ঠানে নাচা নাচি, অবশেষে পশ্চাৎদেশ শহীদ।
ভিডিওঃ৫। https://www.youtube.com/watch?v=EUsxG1ZOb2Q
কোণ মুসলমান আল্লাহ ছাড়া কারও সামনে মাথা নত করবে না। সুতরাং এত দিন ধরে গুরু জনদের পায়ে নাত দিয়ে যে সালাম করতাম?? বেদাত বেদাত। কিন্তু সাউদিরা ওদের বাদশাহর হাতে হামি খেয়ে মাথা কোমর পর্যন্ত নুয়াতে পারবে।
সৌদি আরবের জাতীয় পতাকা ১৯৭৩ সালের ১৫ মার্চ হতে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদেরও পরে। এটিতে সবুজ বর্ণের মধ্যে সাদা থুলুথ ধাঁচের অক্ষর রীতিতে আরবি ভাষায় “কলেমা তাইয়্যেবাহ্” (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্) এবং একটি তরবারি প্রদর্শিত হয়েছে।
"আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নাই, মুহাম্মাদ (সাঃ) তাঁর প্রেরিত রাসুল।"
তরবারিটি “ইবন্ সউদ” এর আরব জয়কে নির্দেশ করছে
https://bn.wikipedia.org/…/সà§à¦¦à%A…
আবার কিছু জায়গায় বলা আছে তরবারীটি ন্যয় বিচারের প্রতিক হিসাবে দেয়া হয়েছে।
https://en.wikipedia.org/wiki/Flag_of_Saudi_Arabia…
আসলে এই ডিজাইন নিয়েও কাহিনির শেষ নাই। এখানেও যে কোণ ব্যপারে অহেতুক ইসলাম টানার বদ অভ্যাস। পতাকার মধ্যে ডাইরেক্ট কালিমা তায়িবা। এবার সেই পতাকা নিয়ে যখন জন গন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে লাফা লাফি, কুদা কুদি শুরু করলো, গালে একে অলিম্পিকে দেশ কে সমর্থন করতে লাগলো, তখন হুজুরদের টনক নড়লো।এতো কালিমাকে অসস্মান করা।সুতরাং, লাফা লাফি করার জন্য আরেকটা ভার্শন বানিয়ে বসলো। কি অবস্থা। অফিসিয়াল এক কপি, লাফা লাফির জন্য “সিভিলিয়ান কপি”। আরও অনেক কাহিনি আছে পতাকা নিয়ে। নিজেরাই পড়ে নিন, আমি অন্য দিকে আগাই।
https://www.crwflags.com/fotw/flags/sa_hist.html#two
https://www.crwflags.com/fotw/flags/sa.html#coa
বিশ্ব মুসলিমের ধর্ম ইসলামের কালিমা সাথে “তরবারির” মত অস্ত্র, একটি দেশের পতাকায় দেয়াটা কতটা ইসলামিক? শুধু মাত্র মক্কা মদিনা তাদের দখলে আছে বলে??!!
সাউদির জাতীয় সংগীত=
গরিমা ও আধিপত্যর দিকে এসো
আসমানের সৃষ্টিকর্তাকে প্রশংসা করো
এবং সবুজ পতাকা ছড়িয়ে দাও
আলোর প্রতীক বহনের মাধ্যমে,
"আল্লাহ মহান!", পুনরাবৃত্তি করে
হে আমার দেশ!
আমার দেশ, জিন্দা থাকো, মুসলমানদের ফখর হয়ে
রাজা দীর্ঘজীবি হউক তার দেশ ও পতাকার রক্ষার্থে!
আলোর প্রতিক বহন??!!!!!
আমরা তো মোমবাতি জ্বালালেই বেদাত হয়।
আচ্ছা যা হোক, ওদের জাতীয় সংগীত অফিসিয়ালি নেয়া হয় ১৯৫০ সালে। কথা ছাড়া। ১৯৮৪ সালে কথা লিখেন ইব্রাহীম খাফাজি এবং সুর করেন একজন মিশরীয় আব্দুর রাহমান আল-খাতেব। এর একটি ইন্সট্রুমেন্টাল ভার্সন আছে যা রয়্যাল স্যলুট বা সালাম আল- মালাকি নামেও ডাকা হয় এবং তাদের একটি জাতীয় অনুষ্ঠানও এই নামে আছে যাতে ইনস্টুমেন্টাল ভার্সনটি বাজিয়ে রাজ পরিবারের সিনিয়র মেম্বারদের সম্মান জানানো হয়। আমরা “সালাইমালাইকা” বাজিয়ে মৃত দের সম্মান দেখাতে পারবে আমরা ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রভাত ফেরী তে গেলে বিদাত হয়!!!!
https://en.wikipedia.org/wi…/National_Anthem_of_Saudi_Arabia
অবশ্য ওদের দেশ, ওদের জাতীয় সংগীত, ওদের পতাকা, ওরা যেমনে ইচ্ছা তেমনে করবে আমার কি? অবশ্যই আমার কিছু যায় আসে না। কিন্তু সমস্যাটা বাধে তখনই যখন ওদের অর্থে, ওদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলাদেশে একটা শ্রেণী গড়ে ওঠে যারা সৌদি বলতে অজ্ঞান। শুধু অজ্ঞান হয়ে থাকলেও হত যদি না প্রতিনিয়ত পথে ঘাটে মাঠে ময়দানে, টিভিতে, ইন্টারনেটে এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না, এটা বিদাত, ওটা শিরক………… ইত্যাদি চীৎকারগুলা না করতো এবং সাউদিদেরকে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্বদাণকারী, আমাদের চেয়ে উন্নত মুসলমান মনে না করতো। যদি না ওদের তেলের টাকা রাজাকার পুনর্বাসনে ব্যবহৃত হত। আমার কথা না, অধ্যাপক গোলাম আজম এর আত্বজিবনি,“জীবনে যা দেখলাম”- ৪র্থ খন্ড” পৃষ্ঠা-১৭। গোলাম আজম স্বাধীনতার পর পর পাকিস্তান থেকে সৌদি আরব যান হ্বজ্জ এবং আরব মুসলিমদের সহানুভূতি পেতে। সেই সময় স্বাধীন বাংলাদেশে উনার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছিলো। সেই ধারাবাহিকতায় তিনি বাদশা ইবনে সউদের মন্ত্রীসভার বেসামরিক বিমান চলা চল মন্ত্রী “শায়েখ আহমদ সালাহ জামজুমের” সাথে দেখা করেন। বিদায় কালে মাননীয় মন্ত্রী আবেক আপ্লুত হয়ে, “বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের জন্য আমি সামান্য কিছু আল্লাহর ওয়াস্তে দিতে চাই”(তার জিবনিতে হুবহু এভাবেই লিখা আছে) বলে দুই হাজার রিয়ালের একটি খাম গোলাম আজমের হাতে তুলে দেন।এ ধরনের “আল্লাহর ওয়াস্তে” দাণের আরও অনেক বর্ননা তার বইতে উল্লিখিত আছে। নির্দিস্ট করে সে সব কথা নিয়ে না হয় পরবর্তি লিখায় আলোচনা করা যাবে, আপাতত ওদের “প্রভু” সৌদি আরবের রাষ্ট্র ব্যবস্থার সাথে আল্লাহর কুরান ও রাসুলের হাদিস কতটা মিলে তাই দেখা যাক।
ওদের ধারনা ওরাই সঠিক, ওরাই প্রকৃত মুসলমান। আমরা এতদিন যা করতাম সব বিদাত। হিন্দু সংস্কৃতি। সৌদি আরবই একমাত্র ইসলামকে ধরে রেখেছে, ইসলামী মতে দেশ শাসন করছে। সৌদি আরবের সংবিধান পবিত্র কুরআন এবং মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা) এর সুন্নাহ। সে জায়গায় আমাদের সংবিধান মানব রচিত।
ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার উদাহরণ হিসাবে, বাংলাদেশকে ইসলামী শাসন ব্যবস্থার আওতায় আনার পক্ষপাতি যারা তাদেরও প্রথম এবং সবচেয়ে প্রিয় এই যুক্তি। তারা পারলে আমরা ও পারবো।
কিন্তু কুয়েতে ইরাকি আগ্রাসন ও প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের পর বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ একটি রাজকীয় ফরমান জারি করেন, যা ১৯৯২ সালের ৩১ জানুয়ারিতে সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত হয়। উক্ত ফরমান অনুসারে পরবর্তীতে মৌলিক আইন প্রণয়ন করা হয়। কি এই মৌলিক আইন?
মৌলিক আইন হলো নয় অধ্যায় এবং তিরাশি অনুচ্ছেদ বিশিষ্ট সংবিধানের মতো একটি দলিল।
https://www.constituteproject.org/con…/Saudi_Arabia_2005.pdf
(যারা বাংলাদেশের সংবিধানের বিসমিল্লাহ নিয়ে অতি মাত্রায় আবেগি তাদের সৌদি দুতাবাসের সামনে আন্দোলনে বসা উচিৎ।)
এর প্রথম অধ্যায়ে বর্ণিত আছে, আল্লাহর কিতাব এবং নবীর সুন্নাহ হলো দেশের সংবিধান। আরবি রাষ্ট্র ভাষা এবং রিয়াদ দেশের রাজধানী।
অধ্যায় ২: রাজতন্ত্র
৭ম অনুচ্ছেদে রাজার অধিকার বর্ণিত আছে।
আল্লাহর কিতাব কুরআনে আর নবির সুন্নাহ তথা সমগ্র হাদিস গ্রন্থে “রাজ তন্ত্রের” পক্ষে একটি বানিও নেই।ইসলাম রাজতন্ত্র কখনই সমর্থন করে না।এটা ও আমার কথা নয়।মওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রহিম “আল-কুরানে রাষ্ট্র ও সরকার” বইয়ের পৃষ্ঠা ৪৭। বিভিন্ন ধরনের সরকার পদ্ধতি অধ্যায়ের ১ম বিষয় “রাজ তন্ত্র”। পড়ে দেখতে পারেন। মওলানা আব্দুর রহিম ১৯৪৫ সালে জামাত ই ইসলামী তে যোগ দাণ করেন। ১৯৫৫ সালে পুর্ব পাকিস্তান জামতের আমির হন, ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত আমির থাকেন। এরপর তিনি জামাত ই ইসলাম ছেড়ে ১৯৭৬ সালে গঠন করেন আই ডি এল “ইসলামী ডেমক্রেটিক লীগ”। তিনি মারা যাওয়ার কিছু দিন আগে গঠন করে যান “ইসলামী ঐক্য আন্দোলন”।বাংলাদেশের বিভিন্ন জঙ্গি ঘাটি বা জঙ্গি ট্রেনিং সেন্টার গুলো থেকে দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যে সমস্ত বই উদ্ধার করেন সেগুলোর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ছিল উনার লিখা বই গুলো। বিশেষ করে উনার রচিত “গনতন্ত্র নয় পুর্নাংগ বিপ্লব” এবং “রাজনীতি নয় জিহাদই কাম্য”। এসব বই শিবিরের ওয়েব সাইটে এখনো আপলোড করা আছে। যে কেউ দেখতে পারেন।অথবা সার্চ দিলেও বিভিন্ন জ্বিহাদী লিঙ্কে পাওয়া যায়। রসুনের কোয়ার একটা নির্দিস্ট অঙ্গের গোঁড়া যে সব একসাথে এটা আমাদের অনেকে বুঝতেই পারছেন না, “যারা বুঝেও বুঝে না” তাদের কারনে।
সুতরাং যে রাজতন্ত্র ইসলাম সমর্থনই করে না সেই পদ্ধতি অনুসরণ ইসলামের নামে করা-
ভন্ডামির চরম উদাহরণ আর কি হতে পারে?
আর যে পাত্রে খাচ্ছে সে পাত্রের তলা ছেদা করা তথ্যগুলো, জামাতি ইসলামী বা শিবিরের উর্বর মস্তিস্ক থেকেই বের হবে। আমাদের উচিৎ শুধু তাদের তথ্য সমগ্র ওদের মত শ্রেণীবদ্ধ ভাবে না পড়ে নিজেদের মত করে ছাকনি দিয়ে ছাকা।
যাক,তো সাউদির এই মৌলিক আইনে এমন অনেক বৈশিষ্ট রয়েছে, যেগুলোকে অন্যান্য দেশে সংবিধান বলা হয়ে থাকে।যেমন "সরকার পদ্ধতি", "অধিকার”, “কর্তব্য" ইত্যাদি। অর্থাৎ প্রাথমিক ভাবে এবং কাগজে কলমে কুরআন ও রাসুলের সুন্নাহকে সংবিধান বললেও পরে না পেরে অন্যান্য দেশের মত পুর্নাংগ সংবিধান না বানালেও তারই আদলে একটা কিছু বানিয়ে নিল। আসলে এটাই স্বাভাবিক। কুরআন বা রাসুলের সুন্নাত থেকে আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার সব উপাদান বা সমস্যা সমাধানের বিশদ পাওয়া সম্ভবই নয়।
এটাও তারা স্বীকার করে এবং পরবর্তি যুক্তি আসে একারনেই “শুরা কাউন্সিল” গঠিত হয়েছে।
৮ম অনুচ্ছেদে আছে “বিচার”, “পরামর্শ” এবং সমতা “শারিয়া” অনুসারে কার্যকর হবে।
বাদশাহ আব্দুল আজিজ ১৯২৩ সালে “শুরা কাউন্সিল” প্রতিষ্ঠার নির্দেস দেন। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার কাঠামো কেমন হবে তার পক্ষে দ্বিতীয় যুক্তি। তাদের মতে, “ইসলামে শুরা মানে হোল আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যমতে পৌছা।এটি কোণ রাজনৈতিক মতবাদ নয়। বরং মুসলিম সমাজের একটি নিতিমালা, সুতরাং বিশ্বের সকল মুসলমানকে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে…...।।” গাল ভরা কথা গুলো শুনতে খুব ভালই লাগে, কিন্তু বাস্তবে ফলপ্রসু হয় না। সাউদির শুরা কাউন্সিলের সদস্য প্রথমে ছিলেন আট জন, তার পর হন ১৩ জন, সব শেষে হয় ২৫ জন। প্রথম প্রথম শুরা অধিবেশন বসতো প্রতি দিন, তার পর সপ্তাহে এক দিন, শেষ অধিবেশন বসে ১৯২৮ সালে। তার পর ১৯৭৭ সাল নাগাত তাদের বসাই বাতিল হয়ে গেল।
কারন ১৯৫৩ সালে মন্ত্রী পরিষদ গঠন করা হয়েছিল।
https://www.saudiembassy.net/council-ministers-system-0
বাদশাহ আবদুল আজিজ আল সৌদ মন্ত্রী পরিষদের প্রধানমন্ত্রী এবং “ক্রাউন প্রিন্স” ১ম ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার।মন্ত্রী পরিষদ অর্থনিতি, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, শিক্ষ্যাব্যবস্থা, বহি সংযোগ এসব ব্যপারে সিদ্ধান্ত নিতে বাদশাহকে সাহায্য করে। কিছু কিছু ব্যপারে এই মন্ত্রী পরিষদ ভোটাধিক্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত দেয়ার অধিকার রাখে।আমাদের সংসদে যেমন মন্ত্রী পরিষদের সর্বসম্মতিক্রমে কোণ বিল পাশ হয়। পালের প্রথম গাধা পানি ঘোলা করেই খায় আর পরবর্তি গাধা গুলো সেই ঘোলা পানিকেই পানি মনে করে খায়।
২০১২ সাল নাগাদ প্রধান মন্ত্রী সহ মোট ৩৩ জন মন্ত্রী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান এবং এখনও নতুন নতুন মন্ত্রনালয়ের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
অবশ্য পরবর্তিতে শুরা কাউন্সিল আবার ১৯৯৭ সালে শুরু হয়ে এখনও চালু আছে। কিন্তু পরিবর্তন এসেছে অনেক। পরে আসছি।
একদিকে “শুরা কাউন্সিল” আরেক দিকে “মন্ত্রী পরিষদ” উপরে “বাদশাহ”। দুই ক্ষেত্রের সদস্য নির্বাচন করবেন বাদশাহ, যে কোণ বিষয়ে সবাই মতামত বা প্রস্তাব বাদশার নিকট পেশ করবেন, সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন না। বাদশাহ সিদ্ধান্ত দিবেন। মানে বাদশাহ “সকল ক্ষমতার উত্স”।আমাদের সংবিধানে যেন কারা 'সকল ক্ষমতার উত্স'????শিরক শিরক...।
এটা আসলে কোণ তান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা বোঝা মুশকিল।
সৌদি প্রভুভক্তরা আবার এই জগাখিচুড়ী ব্যবস্থার ব্যখ্যাও দিয়ে ফেলেন চোখের পলকে।
সবার অংশ গ্রহণ ও সর্বচ্চ মান বজায় রাখার দিকে বাদশাহ যে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন এটাই তার প্রমান এবং এটাই হওয়া উচিৎ ইসলামী মতে শাসন। সবাই কে নিয়ে সবার মতামত বিচার করতে হবে।
ভালো তো, তা আমাদের সংসদে, দেশের প্রত্যেক অঞ্চল থেকে আসা সাংসদরা কার ঘোড়ার ঘাস কাটেন??!!!! (আপাতত রাষ্ট্র ব্যবস্থার তুলনা করছি তাই সাংসদদের বা সিস্টেমের কারও ব্যক্তিগত দুর্নিতি বা নৈতিক অবক্ষয় যা বিশ্বের সব দেশেই কম বেশি আছে, তাকে এক পাশে রেখে চিন্তা করুন।)
সৌদি আরবের কালো সোনার বাতাস বেদুঈনের শানিত শরীরে, মেদ জমাতে শুরু করে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর থেকেই।সেই টাকা আসার আগে আধুনিক শিক্ষা বা রাষ্ট্র পরিচালনা করার মত কোণ শিক্ষা তাদের ছিল না। এখানে মুসলিম বিজ্ঞানী বা চিন্তাবিদ বলতে আমরা এখনো যাদের নাম সম্মানের সাথে স্বরন করি তাদের জ্ঞানের বা গুনের সাথে আজকের এই আধুনিক সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতাদের একই সাথে মিলিয়ে দেখলে হবে না। উনাদের প্রজ্ঞার ছিটে ফোটাও এদের ছিল না। শিক্ষিত বলতে তাদের ছিল স্রেফ আব্দুল ওহাবের অনুসারী, এক দল কট্টর কাঠ মুল্লাহর ইসলামী শিক্ষা। তাদের নিয়েই বাদশাহ শুরা কাউন্সিল বানিয়ে জাকিয়ে বসলেন। ফলা ফল? আমাদের দেশে ইদানিং কালে “বাহাসের” নামে যা হয় তা। আধুনিক রাষ্ট্রের আদলে মন্ত্রী পরিষদ গঠন করার কারন “শুরা কাউন্সিলের” দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতা।যদিও শুরা কাউন্সিলের দাবী অনুসারে তারা খুবই সফলতার সাথে খালিদ বিন আবদুল আজিজ এর সময় কাল পর্যন্ত দেশ পরিচালনা করে এবং প্রায় ৯৩৪৯ টি সিদ্ধান্ত যা ৬২২২বারের বৈঠকে তারা প্রসব করতে সক্ষম হয়।
https://www.shura.gov.sa/…/…/ShuraEn/internet/Historical+BG/
সৌদি আরবে তুলনা মূলক যোগ্য শাসক যদি বলা যায় তাহলে একজনকেই বলতে হয়, বাদশাহ ফয়সাল। বাদশাহ ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ ১৯৬৪ থেকে ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত দায়িত্বপালন করেছেন। বাদশাহ হিসেবে তিনি দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং আধুনিকীকরণ ও সংস্কারে সফল হন। তিনি ছিলেন রাজকীয় বংশে সবচেয়ে শিক্ষিত। যার ফলে সংস্কার ও আধুনিকীকরণকারী হিসেবে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হন। রক্ষণশীল মহলের অসন্তুষ্টি সত্ত্বেও তিনি নারীশিক্ষার বিস্তার ঘটান। সমস্যা সৃষ্টি না হওয়ার জন্য তিনি ধর্মীয় নেতাদের মাধ্যমে নারী শিক্ষার কারিকুলাম লিপিবদ্ধ ও তদারক করান। এই নীতি তার মৃত্যুর অনেক পর পর্যন্ত টিকে ছিল। আজকের সৌদি আরবের শিক্ষিতের হার ৮০% হওয়ার পেছনে বাদশাহ ফয়সালের কিছু সিদ্ধান্ত মুল ভুমিকা পালন করে।
তাদের মুলশক্তি শুরা কাউন্সিল বা শারিয়া আইন বা ইসলাম নয়। মুল শক্তি তেল। তেলের টাকা তাদের অভাব পূরণ করে জীবন যাত্রার মান বাড়িয়ে তুলে অল্প সময়েই। সরা সরি উটের পাছা থেকে উঠে মার্সিডিসের সিটে বসার মত অবস্থা। এ হেন শক্তি শালী অর্থ কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় তাদের জন্য কোণ ব্যপার না এক পাল অ-উৎপাদনশীল, অকর্মন্য মুল্লাহ গুষ্টিকে লালন পালন করা। বিশেস করে যখন তারা নারীদের ব্যপারে কঠোর কঠোর আইন ইসলামের নামে বহাল করতে পারদর্শি।কিন্তু আমাদের মত দেশের জন্য সেটা বোঝা। আমাদের সলিমুদ্দিন ,কলিমুদ্দিনরা হঠাৎ পটল তুললে তাদের বিবি করিমন বা, রহিমনকে এক পাল সন্তানের অন্ন জোগাতে কর্ম করতেই হবে। সুতরাং তাদের এই জগাখিচুড়ি ব্যবস্থা ইসলামের নামে আমাদের দেশে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
তো সেই শুরা কাউন্সিল বিংশ শতাব্দীতে কি অবস্থায় আছে সেটা একটু দেখে শেষ করি।
২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মেয়াদে নিয়োগকৃত শারিয়া কাউন্সিলের মেম্বাররা পুর্বের মেম্বারদের তুলনায় অনেক দক্ষ।তাদের দক্ষতার ক্ষেত্র ও মাধ্যমটাও ভিন্ন। তাদের মধ্যের অর্ধেক আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী প্রাপ্ত এবং ৭০ ভাগ পি এইচ ডি করা।
১৬% ব্যচেলর ডীগ্রি ধারী
১৩% মাস্টার্স ডিগ্রিধারী
৭০% পি এইচ ডি
১% এম ডি এস
যেসব দেশ থেকে তারা শিক্ষা গ্রহণ করেছেন তাদের তালিকায় আছে,
৪৯% আমেরিকা
২৯% সৌদি আরব
১৬% ইংল্যন্ড
৩% ফ্রান্স
১% জার্মানি
১% মিশর
১% পাকিস্থান
শুরা কাউন্সিল বাদশাহকে দেশ পরিচালনায় উপদেশ বা মতামত দেয়ার কাজ করে। সেই কাজের জন্য বাছাই করা সদস্যদের শিক্ষা গ্রহণ করার প্রধান জায়গাগুলো দেখুন। আমেরিকা,ইংল্যন্ড,ফ্রান্স, জার্মানি। সেখানে নিশ্চয় গোলাম-বাদির মাস্লা, ফিকাহ শাস্ত্র, দাওরা হাদিস বা মুক্সুদুল মুমিনিন পড়ানো হয় না।
বিশ্বাস না করলে ঘুরে আসুন নিচের লিঙ্ক থেকে। শুরা কাউন্সিলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট।সব সদস্যের সিভি দেয়া আছে। আবার ডঃ আবদুল্লাহ আল শেইখ (বর্তমান স্পিকার) উনারটা প্রথমে আছে বলে উনারটা দেখেই ফাল দিয়েন না। বাকি ভাইস স্পিকার, এসিসটেন্ট চেয়ারম্যান আর সেক্রেটারি জেনারেল এই তিন জনের সি ভি দেখুন। তাতেই নতুন প্রজন্মের শুরা কাউন্সিলের সদস্যদের সম্পর্কে ধারনা পাবেন।
https://www.shura.gov.sa/wps/wcm/connect/shuraen/internet/cv
সৌদি মিনিস্টারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, ২০১০ সালের।
https://web.archive.org/…/abo…/Biographies-of-Ministers.aspx
দেশ পরিচালনার প্রয়োজনেই অশিক্ষিত এই ম্রু জাতিকে আজকে ইসলামী শিক্ষার নামে প্রচলিত অকর্মন্য শিক্ষা বাদ দিয়ে উন্নত শিক্ষা গ্রহণ করতেই হচ্ছে। আর আমদের মাঝের কিছু মানুষ তাদেরই “আল্লাহর ওয়াস্তের” দাণ গ্রহণ করে সেই ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের জন্য কায়েমের চেষ্টা করছে!!!!!! তারা শুরুতে অশিক্ষিত, মেধাশুন্য ছিল। ধনী হয়ে তারা মেধার শুন্যতা পুর্ন করছে । আর আমরা শিক্ষিত, মেধা সমৃদ্ধ জাতি, শিশুকালেই আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে মেধাশুন্য করে দেয়া হোল। সেই অপূরণীয় শুন্যতা আমরা এখনো পূরণ করতে পারছি না। করার ইচ্ছাটাও নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
(চলবে)
©somewhere in net ltd.