![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিঙ্কনের গেটিসবার্গ বক্তৃতা এবং বাংলাদেশ ও আমেরিকার ইতিহাসের দুটি মুহূর্ত
১৮৬৩ সালের পেন্সিল্ভিনিয়া প্রদেশের গেটিসবার্গ ময়দানে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন এক আশ্চর্য বক্তৃতা দিয়েছিলেন।আমেরিকার স্বাধীনতা অর্জনের ৮৭ বছর পর মাত্র ২ মিনিটের এই প্রজ্ঞাপূর্ণ বক্তৃতায় আমাদের জন্য শিক্ষণীয় রয়েছে অনেক কিছুই। বক্তৃতাটির প্রথম বাক্যেই তিনি স্মরণ করেন আমেরিকার স্থপতিদের(founding fathers) এবং যে মুলনীতি ও আদর্শের উপর ভিত্তি করে আমেরিকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা ঘোষনা করেন দৃপ্ত কণ্ঠে । আমাদের বাংলাদেশের সাথে আমেরিকার মিল হল দু’দেশেরই “স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র” আছে। আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র রচিত হয়েছিল ১৭৭৬ সালে। স্বাধীনতা,সাম্য ও সবার জন্য সুখের(liberty, equality and the pursuit of happiness) প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছিল ঘোষণাটিতে । স্বাধীনতা অর্জনের ৮৭ বছর পর আব্রাহাম লিঙ্কন এই মূলনীতিগুলো বাস্তবায়নের ‘অসমাপ্ত কাজ’কে (Unfinished task)সম্পন্ন করার কথা বলেছিলেন তার সামনে উপবিষ্ট শ্রোতাদের । তার বক্ত্রতার সবচেয়ে র্যােডিকাল দিকটি হল, আমেরিকার সংবিধান প্রণয়নের মুহূর্তকে (১৭৮৭) কিংবা আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জর্জ ওয়াশিংটনের নির্বাচনের কালকে (১৭৮৯) তিনি সত্যিকার আমেরিকার ‘প্রারম্ভ বিন্দু’ মনে করেন নি। গৃহযুদ্ধে লিপ্ত দুইপক্ষ—আমেরিকার দক্ষিনাঞ্চলের কনফেডারেট কিংবা উত্তরাঞ্চলের ইউনিয়ন ফোর্স—উভয়েই “ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র”কে বিবেচনা করত পবিত্র সনদ হিসেবে । খুব সংক্ষেপে কিন্তু অসামান্য প্রাজ্ঞতায় সকল আমেরিকানদের এই ঐকমত্যের জায়গা থেকেই তিনি নতুন রাষ্ট্র গড়ার প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যক্ত করেন । আমেরিকার সংবিধান নয় , আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রই হবে নতুন আমেরিকার যাত্রাপথের সূচনাবিন্দু ।
১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল তারিখের মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র নাকি ১৯৭২ সালের ৪ঠা নভেম্বরের সংবিধান –কোনটি নতুন বাংলাদেশের সুচনাবিন্দু হবে? বাংলাদেশের জনগণের সম্মিলিত আকাঙ্খা, স্বপ্ন ও প্রচেষ্টা দ্বারাই নির্মিত হবে এ প্রশ্নের উত্তর ।
“বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিতকরণআর্থে সার্বভৌম গ্ণপ্রজাতন্ত্র রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করলাম……”( ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল তারিখের মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র থেকে নেয়া)
“ আমরা অঙ্গীকার করছি যে , যে সব মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মিক্তি সংগ্রামে আত্ননিয়গ ও বীর শহীদদের প্রাণ উৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল- -জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ,গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সে সব আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হবে” ( ৭২ এর সংবিধানের এবং ২০১১ সালের ১৫ তম সংশোধনীর প্রস্তাবনা অংশ থেকে গৃহীত) ।
©somewhere in net ltd.