![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তুমি অমানবিকতার আগুনে মনুষ্যত্বের রুটি ছ্যাঁকে খাও
ডাইরীর পাতা উল্টিয়ে অতীতের ভ্রমন করা জায়গা দেখছিলাম। তের বছর আগে দেখা একটা জায়গায় চোখটা এসে আটকে গেল।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসে হোসেন মিয়ার ময়না দ্বীপের কথা নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন? আশি বছর আগে যে ময়না দ্বীপের কথা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের বলে গেছেন এখনো সেটা বাংলাদেশের বুকে রয়ে গেছে। তবে এটা একটু ভিন্ন নামে- “ ডালচর”।ডালচর সম্পর্কে সোজা ভাষায় বলতে গেলে হাতিয়ার উত্তর পশ্চিম সীমানা থেকে এবং মেঘনা নদীর মূল গভীরতা থাকে পাঁচ কিঃমিঃ দুরে হাতিয়া মনপুরার ঠিক মাঝখানে জেগে উঠা সুন্দর একটা চর বা ছোট দ্বীপ।একজন ডালচর বাসীকে জিজ্ঞাস করেছিলাম এই চর সম্পর্কে তিনি জানালেন আগে এখানে কোন চর ছিল না , এটার এক পাশ টা মনপুরার সাথে লাগানো ছিল নদী ভাংতে ভাংতে মনপুরা ডালচর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আর হাতিয়ার পাশে জেগেছে চর।পচিশ শত একর জায়গা জুরে ডালচর।মালিক কালাম চোধুরী (নামটা সম্ভবত এ রকম) এরশাদের শাষনামলে কি ভাবে যেন জায়গা পেয়েছে তারাও বলতে পারে না । মাত্র ৪০ থেকে ৫০ টা পরিবারকে সেখানে রেখেছে তাদের জমি দেওয়ার আশা দিয়ে। কয়েক যুগ ধরে তাদের শুধু আশায় দিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু কোন জমি তাদের দিচ্ছেন না। সারা বছর জমিতে তারা কষ্ট করে, রোদে পুড়ে, সাপ পোকার কামর খেয়ে ফসল ফলায় আর বছর শেষে মালিক এসে ফসলের সিংহ ভাগ নিয়ে যায়।আমি যত টুকু শুনে ছিলাম-মালিক থাকে আমেরিকাতে।ওখানে উনার পরিবারের সবাই থাকেন।সবাই বিদেশেই লেখা পড়া করেন। শুধু মালিক প্রতি বছর শেষের দিকে এসে ধান, গরু মহিষের হিসাব নিয়ে যায়।তার সম্পদের আয়ের সিংহ ভাগও নিয়ে যায়।
এখানের বাসিন্দাদের জংগল কেটে পরিষ্কার করে তার পর চাষ করতে হয়।বর্ষা কালে জোয়ারে দ্বীপটা পানিতে ডুবে থাকে।উচু অংশে তখন তারা মাচা তুলে বসবাস করে।গ্রীষ্মে করুন দৃশ্য দেখা যায়। চরে পানি থাকেনা পুরো চরে হাতে গনা কয়েকটা নলকুপ আছে।
বাধ্য হয়ে নদীর পানি পিটকারি দিয়ে খাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা । দ্বীপের এক তৃতীয় অংশে ম্যানগ্রোভ বন।বনে বানর ,সাপ, কুমির সব কিছুর সাথে যুদ্ধ করে উনারা কয়েক টুকরা জমির আশায় বছরের পর বছর পরে আছে।তাদের নিজের জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । মাথা গোজার ঠাই না থাকায় এই সুযোগে ভুস্বামীরা তাদেরকে ব্যাবহার করে আসছে। হোসেন মিয়ার ময়না দ্বীপে হোসেন মিয়া নিজেই খাদ্য সাপ্লাই দিত কিন্তু এখানে তাদের খাবার নিজেদের সংগ্রহ করতে হয়।আমি শুনে ছিলাম তাদের এখান থেকে প্রতি দিন মনপুরাতে এক বার নৌকা আসতো এবং যেত।সেই নৌকায় তারা মনপুরা থেকে বাজার করে আনতো।তখন তাদের আসতে যেতে ৬০ টাকা নৌকা ভাড়া দিতে হত।তাদের মত মানুষ গুলোর কাছে ৬০ টাকা অনেক বেশি। জলদস্যু বা ডাকাতের আক্রমনে আগে অনেকে খুন হত। ডাকাত তাদের গরু মহিষ ছিনিয়ে নিয়ে যেত।জলদস্যুদের আখড়া হিসাবে ব্যবহার হয় এ দ্বীপটা।এখানে প্রতিটা মানুষের প্রান হাতে নিয়ে থাকতে হয়। জীবন এখানে নির্জীব,নিরানন্দ।
হাতিয়া থেকে একটা নৌকা এসে তাদের গাভীর দহনকৃত দুধ নিয়ে যেত এবং তারাই মাঝে মাঝে তাদের জন্যে খাদ্য নিয়ে আসতো।মনপুর বাসী যেখানে সব সুযোগ সুবিধা পায় সেখানে তাদের কোন কিছুই নেই ।নাগরিক অধিকার পাওয়ার মাঝে শুধু একটা অধিকারই তাদের আছে- ভোট দেওয়ার অধিকার। ভোটের দিন নৌকায় করে হাতিয়ায় আসে ভোট দিতে।ভোট শেষে আবার নৌকায় করে চলে যায়। এমনি করে কাটছে ডালচরের জনগনের দিন কাল।এক কথায় বলতে গেলে পৃথিবীর সমস্ত মানবতা যেন এই ময়না দ্বীপ তথা ডালচরে এসে থমকে গেছে।
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:০৪
জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: জ্বি, বড়ই মর্মান্তিক।
২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:১৫
বিজন রয় বলেছেন: কঠিন।
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩১
জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্যে।আসলেই তাদের জীবনটা বড়ই কঠিন।
৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৪২
পুলহ বলেছেন: সচেতনতামূলক পোস্টের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ...
সুদিন আসুক ডালচরবাসীর জীবনে, মঙ্গল তাদের স্পর্শ করুক- এ ছাড়া আর কি ই বা বলার আছে।
ভালো থাকবেন
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৭:০৩
জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: ধন্যবাদ তাদের শুভকামনার জন্য।
৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:৪২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ডালচরবাসীরা মুক্তি পাক ভূমিদশ্যুর হাত থেকে।।
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৭:০৫
জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: আমন্ত্রন রইল তাদের জীবনটা একবার দেখে আশার জন্য।
৫| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:৩৫
কবি হাফেজ আহমেদ বলেছেন: ভীষন কষ্টকর এই বাস।
৬| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:০২
জেন রসি বলেছেন: মৌলিক অধিকার এখানে শুধুই তত্ত্ব।
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:২৪
জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: 'মৌলিক অধিকার এখানে শুধুই তত্ত্ব' - সুন্দর বলেছেন।
৭| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৮
মুসাফির নামা বলেছেন: ডালচরই ময়নার চর প্রথ্বম শুনলাম। আর ভোট কি হয় দেশে,আপনার কি মনে হয়?
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১১
জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: না, আসলে আমি ময়না দ্বীপের সাথে ডালচরকে তুলনা করছি মাত্র। হ্যা, আমারও মনে হয় দেশে ভোট হয় কি না সন্দেহ আছে।@ মুসাফির নামা
৮| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৫
মুসাফির নামা বলেছেন: এবার ঠিক আছে।
৯| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৩৮
শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: প্রশাসন কি করে
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৪৮
জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: ওখানে কোন প্রশাসন নেই।যেখানে নগরেই থাকে না সেখানে তো একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ! তার উপরে যত দৈন্য অবস্থা।কয়েকজন বনরক্ষী থাকতে পারে।
১০| ০১ লা মে, ২০১৬ সকাল ৮:৪৭
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: ভূমিদস্যুদের হাত থেকে রেহাই পাক ডালচর বাসীরা।
কৃর্তপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি
ধন্যবাদ বিষয়টি নজরে আনার জন্য।
০১ লা মে, ২০১৬ রাত ৯:২৬
জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: অভিনন্দন আপনাকে এই শুভ কামনার জন্য
১১| ০২ রা মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৩
জহিরুল ইসলাম (রেহান) বলেছেন: দারুন হয়েছে.........
আমি এখানে নতুন ....
আমি আপনার সাথে আছি,,আশা করি আপনিও আমার সাথে থাকবেন....
১২| ২২ শে মে, ২০১৬ সকাল ৭:৫৬
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: খুব ভাল লাগল লিখাটি । ভুমিদস্যদের পালনকর্তা ও লালন কর্তাদের ( উল্লেখ্য ভুমি ও জলদস্যুদের লালন পালন কর্তা হিসাবে রাজনৈতিক নেতা জাতীয় কিছু বিচিত্র প্রাণী, আইন আদালতের সংম্লিল্ট সকল প্রকার ব্যক্তিবর্গ যারা ভুমি সংক্রানত কোন মামলা পাইলে তা ফয়সালা করতে চৌদ্দপুরুষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান এবং এধরণের দস্যুদেরকে সহায়তা করেন সর্বোতভাবে ) স্বরূপ ও মুখোখকে কিছুটা যে তুলে ধরেছেন সে আরো অনেক ভাল লাগল ।
যাহোক অতি মুল্যবান এ লিখাটির জন্য থাকল অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা ।
২২ শে মে, ২০১৬ সকাল ৮:৩৭
জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্যে
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৪
মশার কয়েল বলেছেন: মর্মান্তিক