নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বর্তমানে পদ্মা অয়েল কোম্পানীতে কর্মরত আছি । কিন্তু ব্যবসায়ীক ভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ইচ্ছা ও প্রচেষ্টা রয়েছে।উদ্দেগ্যতা জন্য আমি তৈরি কিন্তু ব্যবসায় কেমন জানি গোছানো না ! \n\nসামাজিক ভাবে সংগঠনিক ভাবে মানুষের কাছে পৌছানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি। রাজনৈতিকভাবে স

জহির আববাস কাদেরী

আলহামদুল্লীহ

জহির আববাস কাদেরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

“আরা কিছু ন পায়” (আমরা কিছু পায়নি)

২২ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:২২


বন্দর কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন বিভাগে কর্মচারী নিয়োগে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিল, যা চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ও বিভাগীয় প্রার্থীদের জন্য খুবই দুঃখজনক ও বৈষম্যমূলক। বছরের পর বছর ধরে চট্টগ্রামের বিভাগীয় প্রার্থীদের চাকুরী থেকে বঞ্চিত করার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের উপর।

চট্টগ্রাম বন্দরে কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ। চট্টগ্রামের প্রার্থীদের বাদ দিয়ে ১২১ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়ার কথা প্রকাশ করা হলে ক্ষোভ প্রকাশ আসতে থাকে বিভিন্ন মহল হতে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ কয়েক দফা বন্দর ভবনের মূল ফটকে মানববন্ধন এবং গত ৩০শে সেপ্টম্বর, ২০২০, বুধবার বিকেলে নগরের দারুল ফজল মার্কেটে সংগঠনের কার্যালয় চত্বরে একটি পথ মিছিল করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় মহানগর ছাত্রলীগের কর্মকান্ড ইতোমধ্যে ঝিমিয়ে পড়েছে। মহানগরে কয়েকজন নেতাদের সাথে কথা বলা জানা যায়, বন্দর বিষয়ে এই মূহুর্তে তাদের কোন প্রকার কর্মসূচী নেই, ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরবর্তী নির্দেশনা প্রদান করলে এই আন্দোলন বেগমান করা হবে। আন্দোলনের অচলাবস্থা শুধুমাত্র মহানগর ছাত্রলীগে নয়, চট্টগ্রামের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদেরও কোন কার্যকর কর্মসূচী পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

বহুকাল পূর্ব হতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চট্টগ্রাম বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু চট্টগ্রাম বরাবরই পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে চট্টগ্রাম বন্দরসহ বহু সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অবদান অনস্বীকার্য।

চট্টগ্রামের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবহেলা না থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর অধীনস্থ অনেক বিভাগের আন্তরিকতার অভাবের কারণে চট্টগ্রামের উন্নয়ন সাধিত হয়নি। রাজধানি ঢাকার পর গুরুত্বপূর্ণ স্থান চট্রগ্রাম। কিন্তু সে অনুযায়ী চট্টগ্রামে উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়নের অনেকগুলি ন্যায্য দাবীর মধ্যে কোনোটাই পূরণ হয়নি। যেখানে ঢাকা জেলার এডিপি বরাদ্দের ২১ দশমিক ২১ শতাংশ সেখানে চট্টগ্রামের জন্য ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। অথচ চট্টগ্রাম থেকে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড)। যা দেশের মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রার এক তৃতীয়াংশ।দেশের মোট রাজস্ব আয়ের শতকরা ৬০ ভাগ আসে চট্টগ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে। এক নজরে চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক গুরুত্ব:
চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানী : দেশের মোট রপ্তানী বাণিজ্যের শতকরা ৭৫ ভাগ
চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানী : দেশের মোট আমদানি বাণিজ্যের শতকরা ৮০ ভাগ
রাজস্ব আয়ে ভূমিকা : মোট রাজস্ব আয়ের ৬০ ভাগের বেশী
জিডিপি-তে অবদান : ১২%



ভ্যাট কমিশনারেট, আয়কর বিভাগ এবং বন্ড কাস্টমস থেকে এই পরিমাণ রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা হওয়ার কথা। প্রত্যক্ষ বা সরাসরি রাজস্ব খাতের বাইরেও পরোক্ষ রাজস্ব অর্থাৎ চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর, নৌপরিবহন খাত, ভূমি খাতসহ সরকারি বিভিন্ন খাত থেকে আরো বিপুল রাজস্ব জমা হয় চট্টগ্রাম থেকে। সেখানে চট্টগ্রামকে বঞ্ছিত করে অন্য জেলার ঊন্নয়ন সর্ব্বোচ্ছ করা কতটা যৌক্তিক!

বৃহত্তর চট্টগ্রাম এর উন্নয়নে সরকারী উদাসীনতা ও অবহেলা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তার কয়েকটি দুঃখজনক উদাহরণ হল স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও কোনো মহাপরিকল্পনা এখনো গ্রহণ করা হয়নি। ফলে অপরিকল্পিত নগরায়ন এর ফলে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানি হচ্ছে চট্টগ্রাম, অথছ এখনো বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামে স্থানান্তরিত হয়নি, প্রতিষ্ঠা হয়নি হাইকোর্ট বেঞ্চ ও কোন বিশেষায়িত হৃদরোগ হাসপাতাল। চট্টগ্রামের প্রাণের দাবী চট্টগ্রামের আদি নামে একখানা "ইসলামাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়", বিভাগীয় শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় নাট্যশালা, বাংলা একাডেমি, জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি, প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তৈরী হয়নি কোনো ইনডোর স্টেডিয়াম, দশহাজার দর্শক ধারণ স্বক্ষমতা বিশিষ্ট আধুনিক মুক্তমঞ্চ, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত আন্তর্জাতীক মানের বীচপার্ক ও এম্ফীথিয়েটার নির্মাণের কথা ছিল। পরিকল্পনা ছিল (Amphitheater) পতেঙ্গা থেকে ভাটিয়ারী পর্যন্ত মেরীন ড্রাইভ নির্মাণ, চট্টগ্রামের ঐতিহ্য সংরক্ষনে আধুনিক তথ্য সম্বলিত যাদুঘর, জীববৈচিত্রে ভরপুর সুবিশাল চিড়িয়াখানা, ডি,সি,হীলে নির্মাণের কথা ছিলো কালচার্ল পার্ক, সিনেমা প্যালেসের মোড় থেকে রাইফেল ক্লাব পর্যন্ত বিশ্বমানের সাংস্কৃতিক জোন গড়ে তোলা। যেখানে থাকবে জাতীয় নাট্যশালা, আর্টগ্যালারী, সিনেপ্লেক্স সহ অন্যান্য আয়োজন। তবে ফায়ার ব্রিগেড, শহীদ মীনার ও মসজিদ কমপ্লেক্স অন্যত্র স্থানান্তরিত করতে হবে। শহরে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন স্পট নাই। আশির দশকে পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, কাপ্তাই, খাগড়াছড়ি সহ পার্বত্যাঞ্চলের যাবতীয় পর্যটন এবং দর্শনীয় স্থানগুলির পরিকল্পিত উন্নয়নের প্রস্তাবনা গ্রহণ করা হয়েছিলো। পার্বত্য অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য কৃষি মন্ত্রনালয়, যে সমস্ত পাহাড় অনাবাদি পড়ে আছে, তাতে চা এবং মধ্যপ্রাচ্যের উন্নত প্রজাতের খেজুর চাষের প্রস্তাব করা হয়েছিলো। তাছাড়া ষ্ট্রবেরী, নাশপাতি, মুসাম্বী, আপেল, কমলা আঙ্গুর সহ উন্নত মানের ফলজ চাষের উপযুক্ত ভূমি এই পাহাড়ী এলাকা। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অবিমৃষ্যকারিতার জন্য ও পর্যটন মন্ত্রনালয়টি বিমানের সাথে যুক্ত হওয়াতে দুর্নীতি ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আন্তরিক উদ্যোগ গ্রহণ করলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম পর্যটন শিল্পে বিশ্বের অন্যতম প্রধান আকর্ষন হয়ে উঠতে পারে। বাঁশখালি, পার্কি ও পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন অপরিহার্য। পৃথীবির দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার এর রক্ষনাবেক্ষন এবং সৌন্দর্যবর্ধন একটি জাতীয় দাবী। চট্রগ্রামকে বাদ দিয়ে জাতীয উন্নয়ন কখনও সম্ভব না।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে আঞ্চলিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার কোনো সুযোগ নেই, চট্টগ্রামের উন্নয়ন মানে সারা দেশের উন্নয়ন। তাই দেশের উন্নয়ন মডেল তৈরি করলে চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করেই সেই মডেল তৈরি হতে হবে। তবে এ জন্য যেসব আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে তা অপসারণ করাটা অত্যন্ত জরুরি। তার চেয়ে জরুরি আমাদের সংসদ সদস্য, মন্ত্রীগন নিজ দায়িত্বের বাহিরে চট্টগ্রামকে আলাদাভাবে নজরে আনতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন, কিন্তু আমলাতান্ত্রিক নানাবিধ জটিলতার কারণে তা অনেক ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ বাধা অপসারণে রাজনৈতিক ভিন্নতাকে কাটিয়ে উঠতে হবে। চট্টগ্রামকে শুধু একটা জেলা হিসেবে সংকীর্ণভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। চট্টগ্রামের উন্নয়ন না হলে প্রধানমন্ত্রী যে রূপকল্প হাতে নিয়েছেন তা বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স এর একজন গবেষক মামুননাহ জুবায়েদ বলছিলেন গবেষণা করার সময় তারা দেখেছেন এক্ষেত্রে পরিকল্পনা এবং সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।

তিনি বলেনঃ "কোন একটা সরকার বা সরকার প্রধান যে এলাকাতে থাকেন বা মন্ত্রী থাকেন সে এলাকাকে প্রাধান্য দেন এটা একটা বাস্তবতা। তবে সেই প্রাধান্য দেয়ার পরিমাণটা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন আছে। প্রাধান্য থাকতে পারে কিন্তু সেটা যেন চোখে পড়ার মত না হয় কারণ তারা সারা দেশের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করেন, সারা দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করা উচিত। তবে বিগত বছরগুলো পর্যালোচনা করে এটা একটা ট্রেন্ড হিসেবে দেখা গেছে।"

সর্বোপরি আমাদের চট্টগ্রামের বিভাগের যে সব সন্তান দেশের বিভিন স্থানে প্রতিষ্ঠিত ও সুপরিচিত ,তাদের কাছে আমাদের থাকবে কিছুক্ষণের জন্য একটু চট্টগ্রামের নিজস্ব উন্নয়নের জন্য চিন্তা করবেন। সে সাথে চট্টগ্রাম স্থায়ী ,অস্থায়ী বাসিন্দারা একতাবদ্ধ হয়ে আমাদের চট্টগ্রামের প্রকৃত উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে ।

চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন বিভাগে কর্মচারী নিয়োগে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। যা চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ও বিভাগীয় প্রার্থীদের জন্য খুবই দুঃখজনক ও বৈষম্যমূলক। বছরের পর বছর ধরে চট্টগ্রামের বিভাগীয় প্রার্থীদের চাকুরী থেকে বঞ্চিত করার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরে কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ। চট্টগ্রামের প্রার্থীদের বাদ দিয়ে ১২১ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়ার কথা প্রকাশ করা হলে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিভিন্ন মহল। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ কয়েক দফা বন্দর ভবনের মূল ফটকে মানববন্ধন এবং গত ৩০শে সেপ্টম্বর, ২০২০, বুধবার বিকেলে নগরের দারুল ফজল মার্কেটে সংগঠনের কার্যালয় চত্বরে একটি পথ মিছিল করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় মহানগর ছাত্রলীগের কর্মকান্ড ইতোমধ্যে ঝিমিয়ে পড়েছে। মহানগরে কয়েকজন নেতাদের সাথে কথা বলা জানা যায়, বন্দর বিষয়ে এই মূহুর্তে তাদের কোন প্রকার কর্মসূচী নেই, ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরবর্তী নির্দেশনা প্রদান করলে এই আন্দোলন বেগমান করা হবে। আন্দোলনের অচলাবস্থা শুধুমাত্র মহানগর ছাত্রলীগে নয়, চট্টগ্রামের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদেরও কোন কার্যকর কর্মসূচী পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

বহুকাল পূর্ব হতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চট্টগ্রাম বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু চট্টগ্রাম বরাবরই পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে চট্টগ্রাম বন্দরসহ বহু সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অবদান অনস্বীকার্য।

চট্টগ্রামের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবহেলা না থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর অধীনস্থ অনেক বিভাগের আন্তরিকতার অভাবের কারণে চট্টগ্রামের উন্নয়ন সাধিত হয়নি। রাজধানি ঢাকার পর গুরুত্বপূর্ণ স্থান চট্রগ্রাম। কিন্তু সে অনুযায়ী চট্টগ্রামে উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়নের অনেকগুলি ন্যায্য দাবীর মধ্যে কোনোটাই পূরণ হয়নি। যেখানে ঢাকা জেলার এডিপি বরাদ্দের ২১ দশমিক ২১ শতাংশ সেখানে চট্টগ্রামের জন্য ১০ দশমিক ৮ শতাংশ। অথচ চট্টগ্রাম থেকে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড)। যা দেশের মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রার এক তৃতীয়াংশ।দেশের মোট রাজস্ব আয়ের শতকরা ৬০ ভাগ আসে চট্টগ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে। এক নজরে চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক গুরুত্ব:
চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানী : দেশের মোট রপ্তানী বাণিজ্যের শতকরা ৭৫ ভাগ
চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানী : দেশের মোট আমদানি বাণিজ্যের শতকরা ৮০ ভাগ
রাজস্ব আয়ে ভূমিকা : মোট রাজস্ব আয়ের ৬০ ভাগের বেশী
জিডিপি-তে অবদান : ১২%



ভ্যাট কমিশনারেট, আয়কর বিভাগ এবং বন্ড কাস্টমস থেকে এই পরিমাণ রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা হওয়ার কথা। প্রত্যক্ষ বা সরাসরি রাজস্ব খাতের বাইরেও পরোক্ষ রাজস্ব অর্থাৎ চট্টগ্রাম বন্দর, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর, নৌপরিবহন খাত, ভূমি খাতসহ সরকারি বিভিন্ন খাত থেকে আরো বিপুল রাজস্ব জমা হয় চট্টগ্রাম থেকে। সেখানে চট্টগ্রামকে বঞ্ছিত করে অন্য জেলার ঊন্নয়ন সর্ব্বোচ্ছ করা কতটা যৌক্তিক!

বৃহত্তর চট্টগ্রাম এর উন্নয়নে সরকারী উদাসীনতা ও অবহেলা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তার কয়েকটি দুঃখজনক উদাহরণ হল স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও কোনো মহাপরিকল্পনা এখনো গ্রহণ করা হয়নি। ফলে অপরিকল্পিত নগরায়ন এর ফলে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানি হচ্ছে চট্টগ্রাম, অথছ এখনো বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামে স্থানান্তরিত হয়নি, প্রতিষ্ঠা হয়নি হাইকোর্ট বেঞ্চ ও কোন বিশেষায়িত হৃদরোগ হাসপাতাল। চট্টগ্রামের প্রাণের দাবী চট্টগ্রামের আদি নামে একখানা "ইসলামাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়", বিভাগীয় শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় নাট্যশালা, বাংলা একাডেমি, জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি, প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তৈরী হয়নি কোনো ইনডোর স্টেডিয়াম, দশহাজার দর্শক ধারণ স্বক্ষমতা বিশিষ্ট আধুনিক মুক্তমঞ্চ, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত আন্তর্জাতীক মানের বীচপার্ক ও এম্ফীথিয়েটার নির্মাণের কথা ছিল। পরিকল্পনা ছিল (Amphitheater) পতেঙ্গা থেকে ভাটিয়ারী পর্যন্ত মেরীন ড্রাইভ নির্মাণ, চট্টগ্রামের ঐতিহ্য সংরক্ষনে আধুনিক তথ্য সম্বলিত যাদুঘর, জীববৈচিত্রে ভরপুর সুবিশাল চিড়িয়াখানা, ডি,সি,হীলে নির্মাণের কথা ছিলো কালচার্ল পার্ক, সিনেমা প্যালেসের মোড় থেকে রাইফেল ক্লাব পর্যন্ত বিশ্বমানের সাংস্কৃতিক জোন গড়ে তোলা। যেখানে থাকবে জাতীয় নাট্যশালা, আর্টগ্যালারী, সিনেপ্লেক্স সহ অন্যান্য আয়োজন। তবে ফায়ার ব্রিগেড, শহীদ মীনার ও মসজিদ কমপ্লেক্স অন্যত্র স্থানান্তরিত করতে হবে। শহরে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন স্পট নাই। আশির দশকে পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, কাপ্তাই, খাগড়াছড়ি সহ পার্বত্যাঞ্চলের যাবতীয় পর্যটন এবং দর্শনীয় স্থানগুলির পরিকল্পিত উন্নয়নের প্রস্তাবনা গ্রহণ করা হয়েছিলো। পার্বত্য অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য কৃষি মন্ত্রনালয়, যে সমস্ত পাহাড় অনাবাদি পড়ে আছে, তাতে চা এবং মধ্যপ্রাচ্যের উন্নত প্রজাতের খেজুর চাষের প্রস্তাব করা হয়েছিলো। তাছাড়া ষ্ট্রবেরী, নাশপাতি, মুসাম্বী, আপেল, কমলা আঙ্গুর সহ উন্নত মানের ফলজ চাষের উপযুক্ত ভূমি এই পাহাড়ী এলাকা। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অবিমৃষ্যকারিতার জন্য ও পর্যটন মন্ত্রনালয়টি বিমানের সাথে যুক্ত হওয়াতে দুর্নীতি ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আন্তরিক উদ্যোগ গ্রহণ করলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম পর্যটন শিল্পে বিশ্বের অন্যতম প্রধান আকর্ষন হয়ে উঠতে পারে। বাঁশখালি, পার্কি ও পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন অপরিহার্য। পৃথীবির দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার এর রক্ষনাবেক্ষন এবং সৌন্দর্যবর্ধন একটি জাতীয় দাবী। চট্রগ্রামকে বাদ দিয়ে জাতীয উন্নয়ন কখনও সম্ভব না।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে আঞ্চলিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার কোনো সুযোগ নেই, চট্টগ্রামের উন্নয়ন মানে সারা দেশের উন্নয়ন। তাই দেশের উন্নয়ন মডেল তৈরি করলে চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করেই সেই মডেল তৈরি হতে হবে। তবে এ জন্য যেসব আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে তা অপসারণ করাটা অত্যন্ত জরুরি। তার চেয়ে জরুরি আমাদের সংসদ সদস্য, মন্ত্রীগন নিজ দায়িত্বের বাহিরে চট্টগ্রামকে আলাদাভাবে নজরে আনতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন, কিন্তু আমলাতান্ত্রিক নানাবিধ জটিলতার কারণে তা অনেক ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ বাধা অপসারণে রাজনৈতিক ভিন্নতাকে কাটিয়ে উঠতে হবে। চট্টগ্রামকে শুধু একটা জেলা হিসেবে সংকীর্ণভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। চট্টগ্রামের উন্নয়ন না হলে প্রধানমন্ত্রী যে রূপকল্প হাতে নিয়েছেন তা বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স এর একজন গবেষক মামুননাহ জুবায়েদ বলছিলেন গবেষণা করার সময় তারা দেখেছেন এক্ষেত্রে পরিকল্পনা এবং সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।

তিনি বলেনঃ "কোন একটা সরকার বা সরকার প্রধান যে এলাকাতে থাকেন বা মন্ত্রী থাকেন সে এলাকাকে প্রাধান্য দেন এটা একটা বাস্তবতা। তবে সেই প্রাধান্য দেয়ার পরিমাণটা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন আছে। প্রাধান্য থাকতে পারে কিন্তু সেটা যেন চোখে পড়ার মত না হয় কারণ তারা সারা দেশের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করেন, সারা দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করা উচিত। তবে বিগত বছরগুলো পর্যালোচনা করে এটা একটা ট্রেন্ড হিসেবে দেখা গেছে।"

সর্বোপরি আমাদের চট্টগ্রামের বিভাগের যে সব সন্তান দেশের বিভিন স্থানে প্রতিষ্ঠিত ও সুপরিচিত ,তাদের কাছে আমাদের থাকবে কিছুক্ষণের জন্য একটু চট্টগ্রামের নিজস্ব উন্নয়নের জন্য চিন্তা করবেন। সে সাথে চট্টগ্রাম স্থায়ী ,অস্থায়ী বাসিন্দারা একতাবদ্ধ হয়ে আমাদের চট্টগ্রামের প্রকৃত উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: অনিয়ম সমস্ত বাংলাদেশে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.