![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দৃশ্যপট -১
সন ১৯৭১, ২২ শে ডিসেম্বর
আহত, ক্লান্ত অথচ বুকে এক নতুন পতাকা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ থেকে সাহেব আলী যখন বাড়িতে আসল, তার মা, বাবা ছোট ভাই আর প্রিয়তমা সহর্ধমীনি সাথে স্বাধীন দেশে বুক ভরে তাজা বাতাসের নিশ্বা:স নেবে বলে...বাড়ীতে এসে তার হাত পা সব কেমন ঠান্ডা হয়ে গেল যখন সে জানেত পারলো তার বাবাকে জবাই করে, মাকে গুলি করে আর প্রিয়তমাকে রেপ করে এমনকি সবেমাত্র হাইস্কুল এ পড়ুয়া তার ছোট ভাইকে গুলি করে পাকিস্তান হানাদার বাহীনিরা নির্মম ভাবে হত্যা করেছে, তার মাথাটা কেমন জানি ভারী ভারী লাগছে.....সে নিজের বাড়ীর উঠানে পড়ের গেল.....
চোখ খুলতে শুনে পেল কে যেন বলছে...সাহেব মিয়া যুদ্ধ কইরা কি পাইলা...সব তো হারাইলা....সাহেব চুপ করে কি যেন ভাবলো.. বলল.. চাচা সব হারিয়ে একটা স্বাধীন দেশ তো পেলাম.....আগামীরা অবশ্যই এ স্বাধীনতা কে রক্ষা করবে..আর বাংলাদেশকে সত্যিকারের সোনার বাংলা বানাবে ! এ স্বপ্ন শুধু সাহেব আলীর একার না যার ৯ মাস কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে..সব ত্যাগ করে ..সবাইকে হারিয়ে এ দেশকে স্বাধীন করল..সবার..!!
আজ ৪২ বছর পর আমরা কি সত্যি স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে পেরেছি????..
দৃশ্যপট-২
সন-২০১৫
মরিয়মের বাপ..দিন মজুর..ঢাকা শহরে উত্তরার আশুলিয়া বেড়িবাদের আগে একটা বস্তিতে ৩ মেয়ে আর এক ছেলে নিয়া থাকে..মরিয়ম তার বড় মেয়ে, এই মেয়ে তার খুব আদরের...আজ বেশকিছু দিন হরতাল অবরোধের কারনে মরিয়ম এর বাপের হাতে কোন কাজ নাই...তার বউ উত্তরার এক বাসায় কাজ করে বলে কোন রকম চলে যাচ্ছে।...
মরিয়মের মা জয়নাব যে বাসায় কাজ করে সে বাসার সাহেবর এর বোন ধানমন্ডিতে থাকে..বেশ কিছু ধরে তাদের বাসার কাজের লোক নাই তাই সাহেব কইল...তোর একটা মেয়ে আছে না উকে ধানমন্ডিতে পাঠিয়ে দে ..বাসায় তো বসে থাকে কাজ ও করা হবে আর কিছু টাকা ও আসবে মন্দ কি.... রাতে জয়নাব বলল ওগো কালকে মরিয়ম কে এই ঠিকানায় দিয় আস...আমার সাহেবের বোন খুব ভাল..ভাল টাকা দিবে...মরিয়মের বাপের মনটা খচখচ করতে লাগলো কিন্তু কি করবে সে ও তো বেকার..বাধ্য হয়ে রাজি হলো..
পরদিন সকাল বেলা..উত্তরা আবদুল্লাহ পুর থেকে ৩ নম্বর বাস এ উঠলো....মরিয়মের বাসে চরতে খুব ভাল লাগে...জানালা দিয়া উচু উচু দালান যখন দেখে নিমিষে পিছে ফেলে আসছে তখন তার মনে হয় সে আকাশে ভাসছে..চোখ বন্ধ করে সে ভাবে সে পাখি..... বাস টা যখন কাওরান বাজার আসলেনা..হঠাত করে পচন্ড বিস্ফরোনে সব অন্ধকার লাগতে লাগলো... মরিয়ম ..ও মরিয়ম কই রে তুই ..কোথায়..তুই ..মরিয়মের বাপ কোন রকম গাড়ি থেকে বের হয়ে মরিয়ম কে চিতকার করে ডাকতে লাগল... হঠাত সে জ্ঞান হারালো..চোখ যখন খুলল সে নিজেক হাসপাতালে দেখল...জ্ঞান ফিরে সে মরিয়মকে খুজতে লাগল পাগলের মত করে.... আর মরিয়ম...বাস থেকে বের হতে না পাড়ায় সমস্তু দেহ পুরে তার করুন মৃত্যু ঘটে।
মরিয়মের মৃত্যূতে কারো কিছু হয় না..না সরকারের কিছু না বিরোধীদের..
আজ ৪২ বছর পর আমরা কি সত্যি স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে পেরেছি????.. না আমার মনে হয় না..বুকে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চিতকার করে বলতে ইচ্ছে করে........ স্বাধীনতা তোমাকে অর্জন তো করা হলো কিন্তু এই ৪২ বছরে তোমারে রক্ষা বোধহয় কেউ করেত পারলাম না...তুমি ক্ষমা কর আমায় হে বাংলা...
ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.