নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Criticism is our fundamental right. The revolution will come only from our pen #save constitution

Titanic

এক সময় আমরা সবাই মানুষ ছিলাম।হঠাৎ করে তখন এক ভণ্ডু খোদার আবিষ্কার হল।শুরু হয়ে গেলে ধর্মের/খোদার দলের দালালী(মানুষের মধ্যে মারামারি হানাহানি)ভণ্ডু খোদার এক বিশেষ দালাল হল ইসলামধর্মের নবী মুহাম্মদ।ধর্মিয় বই নাকি আসমান থেকে এসেছ,আরে বোকার দল তাহলে তদের মালিককে বল আমাকে একটি আইটির বিশেষ বই দিতে।আমি আইটির ব্যবহার ও উন্নত মান দিয়ে তোদের খোদা হওয়ার দাবী করব।তোমরা বল কোরান,বাইবেল, গীতা আরও কত্তকিছু উপর হতে এসেছে।তোমরা কি দেখনা এখন মানুষ উপর(চন্দ্র,মংগল ইত্যাদিতে ভ্রমণ করছে)চোখ খুল মানুষ, চোখ খুল।

Titanic › বিস্তারিত পোস্টঃ

সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:০৮



অর্গানাইজড রিলিজিয়নের মতো উগ্র জাতীয়তাবাদও প্রচন্ড ভয়ঙ্কর। যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নিই যে, অধিকাংশ মানুষই আর প্রচলিত ধর্মে বিশ্বাসী থাকলো না (বর্তমান পৃথিবীতে ২০ থেকে ৩০ ভাগ মানুষ নাকি আর কোনো প্রচলিত ধর্মে বিশ্বাসী নয়), তবুও কি পৃথিবী থেকে হিংসার উন্মত্ততা থামবে?

ইতিহাস থেকে যতটুকু জানা যায় যে, প্রবল জাতীয়তাবাদ এবং আধিপত্যবাদের কারণে এ পৃথিবীতে যতো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, ধর্মীয় হিংস্রতার কারণে ততো হারায়নি। একমাত্র প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে কোটি কোটি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তার পেছনের কারণ উগ্র জাতীয়তাবাদ ও প্রবল আধিপত্যবাদ।

তাই ব’লে ধর্মীয় বিভেদের কারণে যে কম মানুষ মরেছে সেটা কিন্তু নয়। ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ ধর্মীয় সম্প্রসারণবাদের বলী হয়েছে সবচেয়ে বেশী। ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগ কিংবা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে এই বাংলাদেশেরই লাখ-লাখ মানুষ ধর্মীয় বিভাজনের জন্য প্রাণ হারিয়েছেন। সে ক্ষতচিহ্ন এখনও বাংলার অসংখ্য মানুষ বহে বেড়াচ্ছে।

অতি সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে এক উগ্র শ্বেতাংগ জাতীয়তাবাদী পবিত্র মসজিদে নামাজরত নিরীহ মানুষকে যে ভাবে হত্যা করেছে, তার নিন্দে ও ঘৃণা জানানোর ভাষা নেই। সারা পৃথিবী এ হত্যাকান্ডের ভয়াবহতায় শিউরে উঠেছে। ঠিক এ রকম কান্ডজ্ঞানহীন হত্যাকান্ড এ বিশ্ব প্রত্যক্ষ করছে যুগ যুগ ধরে। পেছনের কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্মান্ধতা কিংবা উগ্র জাতীয়তাবাদ।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার এক শ্বেতাংগ উগ্র জাতীয়তাবাদী ইউরোপে পাঁচ বছর আগে ঘটে যাওয়া এক হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ হিসেবেই এই বর্বরতা চালিয়েছে। অথচ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে যাঁরা হত্যাকান্ডের শিকার হলেন তাঁরা হয়ত ইউরোপের সে ঘটনার কথা জানেনই না। এভাবেই হয়ত উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়। পৃথিবীও অবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করে উগ্র ধর্মান্ধতা এবং উগ্র জাতীয়তাবাদের উন্মত্ততা।

অথচ এ দু’ধরণের উগ্রতাই মানব সভ্যতার জন্য এক বিরাট অভিশাপ ছাড়া আর কিছু নয়। উগ্র জাতীয়তাবাদ একটি জাতিগোষ্ঠীকে অন্যদের বিনাশ এবং নিজেদের আধিপত্যের অজুহাতে একীভূত করে, উগ্র ও উন্মত্ত করে। প্রবল ধর্মান্ধতাও তেমনি একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীকে নানাভাবে উত্তেজিত ক’রে হিংসায় উদ্বুদ্ধ করে।

প্রায় সব প্রচলিত ধর্মেই শান্তি ও মানবতার কথা বলা হয়েছে। যদিও কোনো ধর্মের অতীত ইতিহাসই সে স্বাক্ষ্য দেয় না। প্রচলিত প্রায় সকল ধর্মই শক্তি এবং প্রতিশোধ স্পৃহা দিয়েই প্রচার ও প্রসার লাভ করেছে। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গোষ্ঠী কিংবা ব্যক্তির নিজস্ব স্বার্থ উদ্ধারের কাজে ধর্ম ব্যবহ্নত হয়েছে।

এক ধর্মবিশ্বাসীদের দ্বারা অন্য ধর্মবিশ্বাসীদের নিঃশেষ করার সে ইতিহাসবর্ণিত কাজটি এখনও চলছে। হয়ত চলবেও ততোদিন, যতোদিন ধর্মকে গোষ্ঠীবদ্ধতা থেকে মুক্ত ক’রে একান্ত ব্যক্তিগত বিশ্বাস কিংবা অবিশ্বাসের স্তরে নামিয়ে আনা সম্ভবপর না-হবে।

তাহ’লে এই হিংসার উন্মত্ততা থেকে মুক্তির উপায় কী? সত্যি কথা বললে, হিংসার উন্মত্ততা ও বিভাজনের হানাহানি থেকে মুক্তির আপাতত কোনো সহজ পথ নেই। তবুও মানুষের শুভবু্দ্ধির উপর ভরসা রাখতেই হবে।

আগামীদিনে আইনের শাসন যতো প্রতিষ্ঠা পাবে; মুক্তবুদ্ধি ও বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞানচর্চা যতো বাড়বে; মানুষের মধ্যে যতো শাশ্বত মানবিক মূল্যবো্ধের চর্চা, লালন ও উন্মেষ ঘটবে; মানুষের মধ্যে উগ্র ধর্মান্ধতা ও উগ্র জাতীয়তাবাদের প্রভাব যতো কমবে; পারস্পারিক বিভেদের দেয়াল ততোই ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। একদিন হয়ত বিভেদের দেয়ালটাই উঠে যাবে। সেদিন মানুষ মানুষকে কোনো বিশেষ ধর্ম-গোত্র-বর্ণের আবরণে নয়,শুধু মানুষ হিসেবেই দেখবে।

কয়েক শত বছর আগে বাংলার মধ্যযুগের এক কবি বড়ু চন্ডীদাস বলে গেছেন, “সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই”। এই বাংলারই আরেক কবি শেখ ফজলুল করিম মাত্র একশ’ বছর আগে কী সহজ কথায় বলেছেন,
“কোথায় স্বর্গ?
কোথায় নরক?
কে বলে তা বহুদূর?
মানুষের মাঝেই স্বর্গ-নরক
মানুষেতে সুরাসুর”।

বিশ্বময় মানবিক মূল্যবোধ স্থান-কাল-পাত্রভেদে সব সময়ের জন্য জেগে উঠুক। ধর্মান্ধতা এবং উগ্র জাতীয়তাবাদ ছাপিয়ে মানুষ, শুধুই মানুষ বড় হয়ে দেখা দিক – এ প্রত্যাশা সকলের।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.