নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুকানাও ৫ কেজি, ভিজলেও ৫ কেজি !

মামার আস্তানায় কুশিক্ষা ছাড়া কিছুই নাই !

জাতির মামা

কোন কাম কাজ নাই তাই শুধু মানুষের সমালোচনা করি।

জাতির মামা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আশ্রয়হীন - - ১ম পর্ব

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৭

বিকেলের সোনালী রোদ মলিন হতে চলেছে। প্রকৃতিকে সন্ধ্যা হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কিছুক্ষন পরেই আলো মিলিয়ে যাবে অন্ধকারের আবহে।

এখন চল, উঠি বলেই জনির দিকে হাত বাড়িয়ে দিল শিমুল।

শিমুল দাঁড়িয়ে গেলেও জনির কোন সাড়া পেল না। কিছুটা ধমকের সুরে জনিকে বলল -

কিরে ভাই উঠ তো, এতো টেনশনের কিছুই নাই, যা সমস্যা তার কিছু না কিছু সমাধান অবশ্যই আছে আর যেটার কোন সমাধান নাই সেটা আসলে কোন সমস্যাই না। সুতরাং এখন বাসায় চল, আমি আম্মুর সাথে কথা বলেছি। আগামিকাল একটা কিছু করতে পারব আশা করি।

জনি হতাশ ভঙ্গিমায় উঠে দাড়িয়ে বলল ঠিক আছে চল।



শিমুল চা দোকানের বিল মিটিয়ে জনির হাত ধরে হাটা শুরু করল। এরই ফাকে জনির হাতে কিছু টাকা সবার অলক্ষে গুজে দিলে জনি খুব লজ্জিত ভাবে শিমুলের দিকে তাকিয়ে ছিল কিন্তু কিছুই বলেনি।



রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের গেট পেরিয়ে যেতেই শিমুল বিদায় নিল। ফুটপাত ধরে হাটতে হাটতে কল্যানপুরে বাসার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে জনি। ঢাকা শহরে সন্ধ্যা নেমে আসতে শুরু করেছে, ইতিমধ্যে সোডিয়াম বাতি জলতে শুরু করে দিয়েছে সাথে সাথে আশ-পাশের শপিং মল ও দোকান গুলিতেও আলো জলছে।



জনি বাসায় পৌছে প্রথমেই রান্না ঘরের জিনিস পত্র দেখল। শিমুলের দেয়া পাচশত টাকার দুটি নোট নিয়ে বেরিয়ে এল বাসার নিচে। রাস্তার পাশে সব্জির দোকানি মাছ বিক্রেতা সবই আছে, এখানের জিনিস পত্রের মান খারাপ হওয়ার কারনে বাজারের থেকে তুলনা মুলক কিছুটা কম দামে সবকিছু পাওয়া যায়। দুই আটি কলমি শাক এবং কিছু সব্জি সাথে পাঁচ কেজি চাল কিনে বাসায় ফিরল জনি। কলিং বেলে টিপ দিতেই জনির মা চোখ মুছতে মুছতে এমন ভাবে দরজা খুলে দিল যাতে জনি বুঝতে না পারে যে কিছুক্ষন আগেও মায়ের চোখ থেকে অঝর ধারায় অশ্রু ঝরেছে।



জনির বাজারের ব্যাগের দিকে ওর মা হাত বাড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল,

এত কিছু কি এনেছিস?

এত কিছু কোথায় দেখলা মা, সামান্য কিছু বাজার করলাম।

এই কথা শুনে আবার কান্না শুরু করতে গিয়েও জনির ক্লান্ত চেহারায় চোখ পড়তেই থেমে গেলেন আসমা।

গত দুই দিন ধরে জনি জনির মা আসমা বেগম ও জনির ছোট ভাই রনি প্রায় অভুক্ত, একবেলার বেশি চুলা জ্বালাতে পারেনি আসমা। ঘরে টাকা নেই, বাজার নেই তাই খাওয়া ও নেই।



আজ একুশ দিন হল জনির বাবা সাইদুর রহমান জেলে আছেন। একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে উচ্চ পদের কর্মকর্তা ছিলেন, অর্থ আত্তসাৎ এর দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন। মামলা এতই জটিল হয়েছে যে কোন উকিলই ভরশা দিতে পারেনি যে সাইদকে খুব দ্রুত জামিনে বের করা সম্ভব। মালিক পক্ষ চাইছেন সাইদের অনেক বড় সাজা হোক যাতে করে ভবিষ্যতে কেউ কোনরকম দুর্নীতি করার সাহস করতে না পারে।

আসমা পরপর চারদিন মালিকের সাথে দেখা করেছেন সাইদের অর্থ আত্তসাৎ মামলার ব্যাপারে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছেন, প্রতিষ্ঠানের মালিক সাইদের ব্যাপারে কোন ধরনের করুনা বা সুপারিশ করতে রাজি নয় । তার একটাই কথা অন্যায় করেছে তাই উপযুক্ত শাস্তি তাকে পেতেই হবে।



রাতে ভাত খাওয়ার সময় জনি ওর মাকে শিমুলের কথা জানালো, শিমুলের ছোট মামা একজন মন্ত্রির পি এস। শিমুলের মামার ওপর অনেকটা ভরসা করা যেতে পারে। সরকার দলীয় মন্ত্রির পি এস মানে অনেক ক্ষমতার অধিকারী।

আসমা একটু যেন সস্তি পেল, সহাস্যে জনিকে জিজ্ঞাসা করলো- মন্ত্রির পি এস হলে তো সে খুব সহজেই তোর বাবাকে ছাড়িয়ে আনতে পারবে তাই না?

জনি হাসি মুখে বলল, মা তুমি জানো না যারা সরকার দলীয় লোক তারা দিনকে রাত এবং রাত কে দিন বানিয়ে দিতে পারে!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.