![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অতিসাধারণদের একজন...মনে লুকানো সাধারণ কিছু কথা বলতে এসেছি। বিশাল বিশাল ব্লগ লেখার ক্ষমতা বা যোগ্যতা কোনটাই আমার নেই। রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্ম ইত্যাদি কঠিন কঠিন বিষয় নিয়ে আলোচনায় দয়া করে আমাকে কেউ টানবেন না :)
মেয়েদের নাকি গয়নার খুব শখ। সবার বেলায় মনে হয় কথাটা সত্যি না। কিন্তু আমার বেলায় অনেকটাই সত্যি। আংটি, নেকলেসের প্রতি আমার খুব একটা আগ্রহ না থাকলেও কানের দুল আমার ভীষণ প্রিয়। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কানে দুল না থাকলে আমার চলেই না! হাতে থাকে ঘড়ি, তার সাথে অন্য হাতে চুড়ি বা ব্রেসলেট। সাজতে ভীষণ মন চাইলেও আলসেমি করে তেমন সাজা হয় না। সাজ বলতে এই - ঘড়ি, চুড়ি, কানের দুল, আর কপালে টিপ। সাথে সময় পেলে চোখে কাজল আর ঠোঁটে একটুখানি লিপস্টিক। এখন অবশ্য কেউ বলতে পারেন, সাজের আর বাকি রইলো কি?? আমি বলবো তাহলে আপনি জানেনই না অন্য বেশিরভাগ মেয়ে আরও কতরকম সাজে, যে সাজের ধৈর্য আমার কোনদিন হবে বলে মনে হয় না!
গয়নার মধ্যে আরেকটা জিনিস আমার ভীষণ প্রিয়, যার প্রতি ছোটবেলা থেকেই আমার মাঝে এক ধরনের আকর্ষণ কাজ করে এসেছে, সেটা হলো নুপূর, রূপার নুপূর। নার্সারিতে না কেজিতে থাকতে একটা ছড়া পড়েছিলাম -
“তুলা থেকে সুতা হয়
সুতা থেকে নূপুর
রূপার নূপুর পায়ে দিয়ে
নাচে ঝুমুর ঝুমুর।”
----------- এই অতি সাধারণ ছড়াটা মনে থাকার একমাত্র কারণ আমার নূপুর-প্রীতি!
ছোটবেলায় আপ্পির (বড় আপু) ভীষণ সুন্দর এক জোড়া রূপার নূপুর থেকেই ‘নূপুর’ নামক জিনিসটার সাথে আমার প্রথম পরিচয়। ওই নূপুর অনেকগুলো ঘুঙুর দিয়ে সাজানো ছিলো, এখনকার নূপুরের মতো হালকাপাতলা না। আমার জন্মের আগে তোলা ছবিতে ছাড়া ওগুলো কখনো আপ্পিকে পরতে দেখি নি। আমিই পরতাম যখন তখন। সবসময় পরতে মন চাইলেও পারতাম না। কারণ নূপুরটা সারাক্ষণ রুনুঝুনু শব্দ করতো। আর আপ্পি শব্দ খুব একটা পছন্দ করে না। তাই শত ইচ্ছা থাকলেও নূপুর পায়ে না পরে হাতে নিয়ে বসে থাকতাম। মাঝে মাঝে সুযোগ পেলে পরে নাচতাম, দৌড়াতাম। সে এক অন্যরকম সুখ। অনেকটা যেন নিষিদ্ধ মাদক গ্রহণের আনন্দের মতো।
তখন থেকে এখন পর্যন্ত ‘নূপুর’ শব্দটা শুনলেই আমার চোখে সেই নূপুরজোড়ার ছবিই ভেসে ওঠে। ঠিক তখনই নিজের পা দুটো কেমন খালি খালি লাগে। মনে একটা অভাব অনুভব করি। Desire বা ‘আকাঙ্ক্ষা’ বলতে যা বোঝায়, নূপুর নিয়ে আমার মনে সেটাই কাজ করে। তাও যে সে নূপুর না, রূপার নূপুর। তাই প্রায়ই এক পায়ে পায়েল পরে বের হলেও রূপার নূপুরের সাধটা পূরণ হয় না।
আপ্পি নূপুরের শব্দ খুব একটা পছন্দ না করলেও আমি বহুবার চাওয়ার পরও আমাকে ওই নূপুরজোড়ার মালিকানা দেয় নি সে। সেই অপ্রাপ্তির বেদনা মনে এখনো রয়ে গেছে। আরও বড় কষ্ট হলো, রূপার নূপুরের প্রতি আমার এহেন দুর্বলতা দেখেও আমার বাবা-মা কেউই তখন থেকে এখন পর্যন্ত আমাকে একটা জোড়া রূপার নূপুর বানিয়ে দেয়ার প্রয়োজন মনে করেন নি! বরং আমার বোনকে এক জোড়া স্বর্ণের নূপুর উপহার দেয়া হয়েছিলো (অবশ্য নূপুরজোড়া খুবই সাধারণ ধরনের ছিলো এবং আমাকে সেই সাথে একটি স্বর্ণের চেইন গিফ্ট করেছিলো আম্মু। তবে আমার তো চেইনের শখ নেই; আমার সাধ ছিলো সামান্য একজোড়া নূপুরের। তাও স্বর্ণেরও না, রূপার)। তাই এখনো আমার সেই চাহিদাটা অপূর্ণই রয়ে গেলো।
টাকা জমাতে পারলে হয় তো নিজেই রূপার নূপুর বানাতে পারবো নিজের জন্য। ব্যাপারটা খুব কঠিন না। কিন্তু উপহার পেলে যে সুখটা পেতাম সেটা তো আর পাওয়া হবে না। বাবা দিলো না, মা দিলো না, বোনও দিলো না। আর আত্মীয়রা কেউ দেয়ার তো কোন সম্ভাবনাই নেই। এখন আর একজন শুধু বাকি এমন কিছু দেয়ার মতো। সে যদি কখনো দেয় তাহলে সে দিন আমার অপূর্ণ বাসনাটা পূর্ণ হবে। যদি আমার মৃত্যুসজ্যাতেও এনে বলে, “নাও, তোমার জন্য একজোড়া রূপার নূপুর এনেছি”, তখনও মনে হয় আমি কিছুক্ষণের জন্য হলেও মৃত্যুযন্ত্রণা ভুলে নূপুরের দিকে তাকাবো। আর যদি না দেয়............. মানুষের জীবনে তো কতই অপূর্ণতা, না পাওয়ার কষ্ট থাকে।আমারও না হয় ছোট্ট এই অপূর্ণতাটুকু রইলো।
০১ লা জুন, ২০১৫ সকাল ৯:০৬
ঝড়-বৃষ্টি বলেছেন: হুম, ঠিক কথা!
২| ৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮
কালের সময় বলেছেন: একজনের সাথে নুপুরের জন্য আমার প্রেমের সম্পর্ক নষ্ট হয়েগেছে । আপনার লেখায়
সে কথাটি মনে পড়ে গেল ।
০১ লা জুন, ২০১৫ সকাল ৯:০৯
ঝড়-বৃষ্টি বলেছেন: যদি দুঃখজনক কোন স্মৃতি মনে করিয়ে থাকি তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
৩| ০১ লা জুন, ২০১৫ ভোর ৬:৩২
বটের ফল বলেছেন: কিছু অপূর্ণতা সবার জীবনেই থেকে যায় সবসময়। আর এ কারনেই জীবন এত মধুর।
অপূর্ণতা পূর্ণ হোক, এই কামনা। +++++
০১ লা জুন, ২০১৫ সকাল ৯:১০
ঝড়-বৃষ্টি বলেছেন: অনে...ক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:৪৬
মীর সজিব বলেছেন: হুম নুপুর আসক্ত