![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
্মুক্ত চিন্তা হয়ে উঠতে পারে দেশ বদলের হাতিয়ার.................................।
‘গাহি সাম্যের গান
সাম্যের চেয়ে নাহি কিছু মহীয়ান’
রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য সংস্কৃতির প্রতি অতিদুর্বলতা থাকলেও বাংলা সাহিত্যের আরেক পুরোধা কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য সংস্কৃতিকেই আমার কাছে বড় পাথেয় মনে হয়।পরাজয়ের শৃংখল ভেঙ্গে প্রতিটি যুগের তারুন্যের এগিয়ে চলার উদ্যাম প্রেরনাই যেন যুগিয়ে চলেছে নজরুল।৫২,৭১ এর অপুর্ব অর্জনের স্মৃতি প্রতি মুহুর্তেই যেন সাম্যের বাধনে বাধা পরিপক্ক এক অসাম্প্রদায়িক মেলবন্ধন মনে করিয়ে দেয়।সাম্যের বাধনে বাধা অপুর্ব এই জাতির সাম্যের বানী আজ যেন নিরবে কাদে।গনতান্ত্রিক ধারা প্রারম্ভের পর আমরা তখন দুটি গোত্রে বিভক্ত হয়ে যাই।যেটি সীমাবদ্ধ ছিল দল বা প্রতীকে।গনতন্ত্রের এই সামান্য বয়সে এসে সাম্প্রতিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আমরা আবার দুটি গোত্রে বিভক্ত হয়েছি।যেটি শুধু দল প্রতীকে সীমাবদ্ধ নয় এ বিভেদর বড় উপকরন হল ধর্ম/ইসলাম।শহর বন্দর গ্রামে গঞ্জে মহল্লায় পক্ষে বিপক্ষের মহাজনেরাও যেন সবার মাঝে এই বিভেদের আগুনে তেল ঢেলে আরো তীব্র করে বেড়াচ্ছেন।খেটে খাওয়া সর্বস্তরের সাধারন জনগনও তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে চলেছেন।ইসলামকে যাতাকলে পিষে ধ্বংস করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পক্ষে বিপক্ষের।আর সহিংসতায় সাধারন জনগনের পাশাপাশি ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে ভিন্ন ধর্মাবলাম্বীদেরও।ভেবেছিলাম ৫২,৭১ -এর মত সাম্যের তীব্র বাধনে বেধে অসাম্প্রদায়িক সুতোয় গেথে বুঝি ২০১৩-তে স্বাধীনতার অস্তমিত সূর্যের উদয় হতে চলেছে, আমরা নতুন এক সুন্দর বাংলাদেশের জন্ম দিতে চলেছি।সময়ের পরিবর্তন আমাদের যেন দ্বিধান্বিতই করে চলেছে।ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপর হামলা দেখে মনে হচ্ছে তাদেরকে জোর করে ধর্ম ত্যাগে বাধ্য করা হবে নতুবা দেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে।হয় ইসলাম গ্রহন কর না হয় দেশ ছাড়ো!মাতৃভুমির মায়া ছেড়ে অন্যসকলের মত সেসময় দলবেধে যাননি।বিশ্বাস রেখেছহেন,আস্থা রেখেছহেন জন্মভুমির প্রতি।আর এখন অনেকে এখন চোখের জলে আফসোস করছেন আর মনে মনে বিড় বিড় করে বলছেন-‘বড় ভুল হয়ে গেছে সেসময়-ই বোধ হয় চলে যাওয়া ভাল ছিলো’।অথচ সেদিন ৫২,৭১-এ ধর্ম জাতি ভুলে সবাই ভাতৃত্বের বাধনে একাত্ন হয়েব দেশের স্মমান রক্ষার্থে লড়েছেন।কিন্তু ২০১৩ তে এ যেন আরেক অহিংস আন্দোলনেরে-ই পরিস্ফুটিত চেহারা। মহাত্না গান্ধী-র বড় অভাব বোধ করছি।লজ্জা হচ্ছে!বড় লজ্জা হচ্ছে!অপমানিত বোধ করছি!চরম অপমানিত বোধ করছি!প্রতিবেশী হয়ে একই ভুমিতে তোমাদের সাথে পালিত হয়ে তোমাদের আস্থা আর বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে না পেরে আমরা লজ্জিত এবং অপমানিত।
ক্ষমা চাইবার ভাষা ও যেন আমাদের নেই।বিভেদের বেড়াজালে পড়ে নিজেই যেন দিশেহারা হয়ে পড়েছি।দু,পাশেই ইসলাম রক্ষার কথা বলা হচ্ছে;ভেবেই পাইনা কারা সত্যিকারের কথা বলছে/কোন দিকে হেলে কোন বিপদে পড়ি!আহা!আজকাল নাকি চাঁদেও মানুষের চেহারা ভেসে উঠে! আবার তা মসজিদে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে।সাধারন মানুষের সাড়া দেখে তাদের ধর্মভীরুতা আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ-ই করে চলেছে। ইসলাম বিপথগামিতার রক্ষাকবজ।ইসলাম কখনো মানুষকে বিপদগামী হতে শেখায়না।মসজিদের ইমাম ওলামারা এসব গুজব সম্পর্কে কান না দিতে এবং ইসলামেরব অপপ্রচারে সতর্ক করে দিয়ে জনগনকে সাবধান করে দিতে পারতেন।ইসলামের মহাত্তকে তাদের কাছে আরো বাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে পারতেন।কিন্তু এসবের অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। ইসলাম ইসলাম বলে গলা ফাটিয়ে ইসলাম রক্ষার নামে যে সহিংসতায় আমরা জড়াচ্ছি তাতে মনে হচ্ছে ইসলামের প্রচারের চেয়ে অপপ্রচারই বেশি হচ্ছে।
বিংশ শতাব্দীর এ যুগে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় তথ্য প্রযুক্তির নানা মাধ্যম সম্পর্কে এতদিন কারো অজানা থাকার কথা নয়।বিশেষ করে ফেসবুক এবং ব্লগ সম্পর্কে।আজ শাহবাগের আন্দোলন শুরু হবার পর থেকে দেখা গেল মানুষ যেন নতুন করে ব্লগ সম্পর্কে পরিচিত হয়েছে।আর সাধারন জনসাধারন যারা তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ তাদের কাছে ব্লগের ব্যাখ্যা অন্যরকম।বিশেষ করে রাজিব হত্যার পর থেকে সমাজের আনাচে কানাচে ব্লগ এমনভাবে পরিচিত হয়েছে যে, ব্লগার নাম শুনলেই তারা মনে করে নাস্তিক।নাস্তিক মানে ব্লগার,ব্লগার মানে নাস্তিক।হায়রে! অভাগা মুর্খের দল!অবশ্য দোষটা তাদের নয়, যারা তাদের শিখিয়েছেন তাদের।আমাদের ইমাম সমাজর অনেককেও এখন দেখা যাচ্ছে এমন ব্যাখ্যা দিতে।ব্লগ হচ্ছে মত প্রকাশের এক স্বাধীন মাধ্যম।এখানে সবার মতাদর্শ এক হবেনা এটাই স্বাভাবিক,একেক জনের মতাদর্শ একেক রকম।আর ধর্মের বিশ্বাস একান্তই ব্যক্তিগত।কেউ যদি কোন ধর্ম নিয়ে কোনরূপ কটুক্তি করে অথবা অন্য ধর্মকে কোন ভাবে আঘাতের চেষ্টা করে,জনমনে বিভ্রান্তির চেষ্টা করে তবে তা হবে খুবই নিন্দনীয় ব্যাপার এবং যা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।সেক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।তবে কোনভাবেই সংঘাতের পথ অবলম্বন করা উচিত হবে না।ব্লগে সব বয়সের সব শ্রেনী পেশার মানুষের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন ক্রমেই বেড়ে চলেছে।আজকে যারা এই বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তাদের রোষানলে কিন্তু বিদ্ধ হচ্ছে আপনার সন্তানের মত অনেক ছোট ছোট সন্তান;যারা কিছুদিন বাদেই যখন তথ্য প্রযুক্তির সাথে পরিচিত হবে তখন তাদের ভুল ভেঙ্গে যাবে এবং ভুল শেখানোর জন্য আপনাদের চরমভাবে ধিক্কার দিবে,ঘৃনা নিক্ষেপ করবে অঝোর ধারায়।আর সমাজের জনসাধরনের মুর্খতার সুযোগ নিয়েও যারা খেলছেন তারাও কিন্তু জবাবদিহিতার বাইরে নন।আজকে না হোক পরকালে সৃষ্টিকর্তার দরবারে জবাবদিহি করতে হবে।দয়া করে ইসলাম নিয়ে ছেলে খেলা খেলবেন না।ইসলাম কোন খেলার উপকরন নয়।সমাজে,দেশে শান্তি শৃংখলা ফিরিয়ে আনার মধ্য দিয়ে ইসলামের সম্মান রক্ষা করুন।ইসলাম নিয়ে খেলতে গিয়ে ইরাক,আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান আজ হুমকির মুখে।আজ যেকোন শিশু পাকিস্তানে জন্ম নেয়াকে অভিশাপ মনে করে।তাদের অব্যহত বোমাবাজি আর সন্ত্রাসী হামলার কারনে সারাবিশ্ব ইসলামকে ভালো চোখে দেখছেনা।এসব কারনেই তারা ইসলামকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্নক সিনেমা তৈরীর সাহস পাচ্ছে।যে ছেলে মনে করে পাকিস্তানে জন্ম নেয়া অভিশাপ, দয়া করে দেশটাকে সেসব দেশের কাতারে ফেলে ইসলাম আর খাটো করবেননা এবং দেশের সম্মান ক্ষুন্ন করবেন না।সমাজে সকল ধর্মের মানুষের শান্তিপুর্ন অবস্থানের মাধ্যমে বিশ্বে নজির সৃষ্টি করুন।কারো উপাসনালয় ভেঙ্গে ফেলা ইসলাম কখোনই সমর্থন করেনা।
অযথা অহেতুক কারনে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে,দেশে সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করছে; আসুন, তাদের থেকে নিজেদের বিরত রাখি। দেশে সংঘাত সৃষ্টির পথ পরিহার করি।ইসলামের অপপ্রচারে কান না দিয়ে নিজের বিবেককে জাগ্রত করুন।নিজেই বিচার বিশ্লষন করে ন্যুনতম বিবেককে খাটিয়ে ইসলামের মর্যাদা এবং দেশের সম্মান ও শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার চেষ্টা করুন।সম্ভব হলে বিভ্রান্তির কবল থেকে পরিবার পরিজন আত্নীয়স্বজনদের দূরে থাকবার পরামর্শ দিন।আর আজকের ২০১৩ সালে এসে যদি কোন তরুন নিজেকে কোন দলের অধিভুক্ত মনে করে বিভেদের জাল তৈরী করে কিংবা ইসলামের অনুসারি মনে করে কোন ফতোয়ায় দেবার চেষ্টা করে এবং তারই বন্ধুবান্ধবদের আবেগের বেড়াজালে আটকিয়ে সংঘাতের নতুন পথের সন্ধান দেয় তবে,তাদের উদ্দেশ্য আমার কিছু বলার নেই।কেননা আমি মনে করি এ প্রজন্মের ছেলেমেয়ে জেনেশুনে নিজেদের বিবেক বিসর্জন দিতে পারেনা,কোন কুসংস্কারে বিশ্বাস করতে পারে না,কোন পক্ষপাতিত্বের কবলে পড়ে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারেনা,সংঘাতের পথে চলতে পারেনা।আমি বিশ্বাস করি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত এ প্রজন্ম সবসময় দেশের সঙ্গে, ন্যায়ের সঙ্গে থাকবে।এ প্রজন্ম কস্মিনকালেও যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিবেনা।এ প্রজন্ম নতুন যুদ্ধ জয়ের গল্প লিখবে।এ প্রজন্মের সকল তরুন-তরুনীর মুখ আর বুক একসাথে কেবল সাম্যের গানই গাইছে। ক্ষুধা দারিদ্র্য,অশিক্ষার কবল থেকে দেশকে মুক্তি দিতে এ প্রজন্মই সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখবে।সব দুর্গমতা ভেঙ্গে ফেলার সাহস এই প্রজন্মের আছে।কিছুদিন আগে এক দৈনিক পত্রিকায় কলামিস্ট শ্রদ্ধেয় এ বি এম মুসার এক লেখায় তিনি লিখেছেন-বঙ্গবন্ধু নাকি বলতেন,বাংলাদেশ একটি আগ্নেয়গিরির দেশ,যেকোন সময় এর লাভার উদগীরন ঘটতে পারে,৫২ আর ৭১ দুই বার সবাই এই উদগিরন দেখেছে।সেই কথাটি টেনে এনে শ্রদ্ধেয় লেখক লিখেছেন ২০১৩-তে এসে আবার সেই উদগীরন দেখা দিয়েছে।আমার কাছেও তাই মনে হয়েছে।সকল অশুভ শক্তিকে ইঙ্গিত করে বলতে চাই জনসাধারনকে যতই বোকা বানানোর চেষ্টা করেন না কেন কিংবা এ প্রজন্ম থেকে ফায়দা লুটানোর চেষ্টা করেন না কেন, এ প্রজন্ম ক্ষমা করবে না।এ প্রজন্ম কাউকে ছাড়বেনা।এ প্রজন্মের চোখে যে নতুন স্বাপ্নিক সুন্দর বাংলাদেশের চেহারা জ্বলজ্বল করছে তার বাস্তবিক রুপ এ প্রজন্ম দেখাবেই।
©somewhere in net ltd.