নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুক্ত চিন্তা হতে পারে দেশ বদলের হাতিয়ার......

...............................................................................................................................................................।

মোঃজাহিদুল হাসান (রাশেদ)

্মুক্ত চিন্তা হয়ে উঠতে পারে দেশ বদলের হাতিয়ার.................................।

মোঃজাহিদুল হাসান (রাশেদ) › বিস্তারিত পোস্টঃ

আর কত দেখতে হবে মৃত্য এমন???

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:৫৯

সাভার যেন আজ মৃত্যুকূপে পরিনত হয়েছে।এই তো কিছুদিন আগেও এই সাভারেরই আশুলিয়াতে ঘটেছিল এক ভয়াবহ দূর্ঘটনা।অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেল কত শ্রমিকের জীবন।কী লিখবো বুঝতে পারছিনা!আমাদের অভিমান,অভিব্যক্তি সব কিছুই যেন ব্যার্থ আর্তনাদে পরিনত হচ্ছে।তা না হলে সেদিনের পরও কেন হুশ হল না প্রশাসনের?কেন মানবীয় প্রেম জন্ম নিল না লোভী,পাষন্ড গার্মেন্টস মালিকদের?কোন ফল দেখছিনা;তবুও মনে আরোপিত বিশ্বাস আর আশার উপর আবারো আস্থা রেখে আবারো লিখতে বসেছি।লেখকদের নাকি কখনো নিরাশ হতে নেই!কেননা তারা নিরাশ হলে পাঠকজন যে আশা হারিয়ে আরো নিরাশ হয়ে পড়বে।যাই হোক সেদিনের ব্যার্থ আর্তনাদ-ই যেন আজ আবারো করতে হচ্ছে।আজ আবার এই সাভারেই ঘটল আরেকটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা।এবার ভবন ধসে মৃত্যু।কিন্তু দুটি দুর্ঘটনার মাঝে একটা জায়গায় বেশ মিল রয়েছে;তা হল দু-ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগী সংখ্যা একই।আবারো সেই অভাগা গার্মেন্টস শ্রমিকদের সাথেই পরিচয় ঘটল মৃত্যু দূতের।তবে এটি বড় কমপ্লেক্স হওয়ায় গার্মেন্টস কর্মীদের পাশাপাশি সংখ্যায় কম হলেও এখানে বিদ্যমান অফিস আদালতের এবং দোকানপাটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও তাদের সাথী হতে হল।মৃত্যু সংখ্যার সঠিক তথ্য না পাওয়া পেলেও ইতিমধ্যে প্রায় ‘শ’ পেরিয়ে গেছে বা এর কাছাকাছি অবস্থান করছে।তবে যে পরিমান শ্রমিক কর্মরত ছিল সে হিসেব করলে মৃত্যু সংখ্যা যে অনায়াসে ‘শ’ পেরিয়ে যাবে তা সকলেরই অনুমেয়।

এই যে এতজন নিরীহ লোকের প্রানহানি ঘটল,এর জন্য কি তারা নিজেরাই দায়ী?তাদের মৃত্যুর জন্য তারাই দায়ী??যদি তা না-ই হয় তবে, এত লোকের মৃত্যুর দায়ভার কার?? কে নিবে???তারা নিরীহ বলে তাদের প্রানের কোন দাম নেই?এক লাখ/বিশ হাজার টাকা দিলে কি কোন মায়ের সন্তান হারাবার জ্বালা মিটে যাবে?মিটে যাবে কোন স্ত্রীর স্বামী হারাবার বেদনা?যে মেয়েটি এতদিন সংসারের ঘানি টেনে আসছিল,যার টাকায় মাস শেষে বাবা মায়ের মুখে হাসি ফুটত,আজ সেই মেয়েটির শুন্যতা কি এক লাখ/বিশ হাজার টাকা ভরিয়ে দিবে?হয়ত কয়েক মাস সংসার নিয়ে তাদের ভাবতে হবে না কিন্তু বাকি জীবনের ব্যবস্থা কী হবে?কপালে লাল টিপ আর রঙ্গিন বেনারসী শাড়ি পড়ে বধু সাজার স্বপ্ন কি স্বপ্নই থেকে যাবে রুপালী’দের।স্বজন হারানোর বেদনাকে এক লাখ/বিশ হাজার টাকায় চাপা রাখার বৃথা চেষ্টার এই ধারা কি চলতেই থাকবে?আগামীর খোদেজা আর রুপালী’র মত মেয়েদের স্বপ্ন আর বেচে থাকার সংগ্রামের পথকে সুগম করার কোন পরিকল্পনা বা পদক্ষেপ কি তারা এখনো নিবেন না?বেচে থাকার অনুকুল পরিবেশ পাওয়ার অধিকার কি তাদের নেই?দিন-রাত যাদের খাটিয়ে,যাদের ঘাম ঝরা শ্রমে যারা ভুরি ভুরি টাকা আয় করেন,নিজেদের ভান্ডার সমৃদ্ধ করেন,তাদের জন্য তো আপনাদের সবচেয়ে বেশি মায়া হওয়া উচিত,নায্য পরিশ্রমের মুল্য না দেয়ার বিষয়টি না হয় বাদ-ই দিলাম কিন্তু তাদের নিরাপত্তায় এত অবহেলা কেন???প্রানের নিরাপত্তাটুকু পাওয়ার অধিকারও তাদের নেই?

কোন দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর আমাদের টনক নড়ে।ধরা পড়ে ঘটনা ঘটার কারন।মিডিয়া গুলোতে ঢালাওভাবে প্রচার করা হয় ঘটনার নৈপথ্যের কারন গুলো।কিন্তু,তখন কি লাভ?যা ঘটার তা তো ঘটেই গেল।চোর পালানোর পর বুদ্ধি উদয়ের মত।অথচ এর আগে সারা বছর এসব নিয়ে তাদের কোন মাতামাতি নেই।বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো দূর্বল দিক এবং অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার বেহাল দশা নিয়ে কোন রিপোর্ট তেমন দেখা যায় না।সরকারি-বেসরকারি কন্সট্রাকশন কাজগুলোতে স্বচ্ছতার অভাব, অবহেলা আর অদক্ষতা নিয়েও তেমন জোরালো রিপোর্ট চোখে পড়েনা।এসব বিষয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জোরালো ভুমিকা না থাকার কারনে বিষয়টি সরকারকে তেমন নাড়া দেয় না।আর যে কারনে সেগুলো বরাবরের মত দৃষ্টির অগোচরেই থেকে যায় এবং একটা ভয়াভহ দুর্ঘটনা ঘটার মধ্য দিয়ে সবার সামনে প্রকাশ পায়।মিডিয়ার সংশ্লিষ্টরা এখন হয়ত আমার উপর রেগে গেছেন;তারা হয়ত আমাকে দোষারোপ করছেন।মনে মনে বলছেন এসব বিষয় নিয়ে তাদের অতীতের প্রকাশিত রিপোর্ট গুলো আমার এবং সরকারের চোখে পড়ে নাই?যদি পড়ে থাকে তাহলে তো সরকারকে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখিনি?হ্যা,আপনাদের ধারনাও ঠিক।আর আমি মোটেও আপনাদের কাধে এসব দুর্ঘটনার দায়ভার চাপাচ্ছি না।আমাদের সরকার নিয়ে খুব বেশী বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।প্রতিদিন মারার পরও একশ্রেনীর ছাত্ররা পরদিনও পড়া না শিখেই স্কুলে যায়,অর্থাত তাদের কাছে শাস্তি বিনোদনের মতই মনে হয়। তখন শিক্ষকরা মজা করে প্রায় ওদের বলে ‘তোদের এত মারার পরও শিক্ষা হয়না,তোদের চামড়া বোধহয় গন্ডারের চামড়ার মত’।আমাদের সরকারে অবস্থা এখন অনেকটা গন্ডারের মত।চোখে আঙ্গুল দিয়ে সমস্যার দৃষ্টিপাত করলেও তাদের টনক নড়তে চায়না।এসব তাদের সয়ে গেছে।বিভিন্ন জরুরী বিষয়গুলো নিয়ে মিডিয়ার রিপোর্ট তাদের কাছে বিনোদনই মনে হয়।তবুও যখন কোন বিষয় নিয়ে মিডিয়ায় বেশ জোরালো ভাবে তুলে ধরা হয় তখন গন্ডারও কিছুটা ব্যাথা পেতে বাধ্য,তাদের ইমেজ রক্ষার্থে তারা অবশ্যই বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখবে এবং সমাধানে এগিয়ে আসবে।

এত ঘটনা ঘটার পরও,এত প্রান ঝরে পড়ার পরও বিষয়টি তাদের ভাবাচ্ছেনা?সরকারের উচিত পোশাক কারখানাগুলোতে মনিটরং-য়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা জোরদারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা ও পদক্ষেপ নেয়া।মানলাম তারা নিরীহ বিধায় তাদের প্রানের মুল্য আপনাদের কাছে নিতান্ত,কিন্তু একটা সময় পর নির্বাচন সময়ে এরাই আপনাদের কাছে মুল্যবান হয়ে উঠবে,অন্তত সে সময়ের কথা মনে করেও কি তাদের নিয়ে ভাবা যায় না?প্রতিবার ভয়াবহ দূর্ঘটনা ঘটার পরও দোষীরা পার পেয়ে যায়।হয়না দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েই থাকতো তাহলে দূর্ঘটনার আগাম সংকেত পাওয়ার পরও ঝুকি নিয়ে শ্রমিকদের কাজে বাধ্য করতে কোন ভাবেই সাহস পেত না।আজকের এই ঘটনাটি ঘটেছে শুধুমাত্র অবহেলার কারনে।এর সাথে জড়িতদের অবশ্যই অবশ্যই এবং অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

এত মানুষ মারা যাচ্ছে,সড়ক দুর্ঘটনায়,আগুন লেগে,নৌকা কিংবা লঞ্চ ডুবিতে যে দুর্ঘটনা গুলো একটু সচেতন হলেই এড়ানো যায়,বেচে যায় অনেক প্রান।আমরা কি পারিনা সব কিছুর পাশাপাশি নিজেদের প্রানের কথা ভেবে একটূ সচেতন হতে?

মৃত্য মিছিল দেখতে দেখতে হৃদয়টাও যেন ক্রমান্বয়ে পাষান হয়ে যাচ্ছে,এত মৃতদেহ চোখের সামনে দ্রুত হামাগুড়ি খায় হৃদয়ের শোকাবহ আবরন যেন লেগেই আছে।

মৃত্যুর মিছিলে আর কতজন যোগ হবে কে জানে!কিন্তু সবসময় কি এতসব অনাকাংখিত মৃত্যুর বলি সাধারন জনগনকেই হতে হবে?রাস্তায় বের হলে ককটেল আর সড়ক দূর্ঘটনার ভয়;বাসা,অফিস,আদালত,কলকারখানায়ও এখন ঝুকির বাইরে নয়।মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন খুব করে ঘুরপাক খাচ্ছে ‘আচ্ছা,আমরা কোথায় নিরাপদ??কিংবা আর কত দেখতে হবে মৃত্যু এমন? মৃত্য সাথী করেই যেন আমাদের ভোর হয়!এতসব অবহেলা,অযত্ন,অদক্ষতা আর অব্যবস্থাপনার অবসান হয়ে কবে যে নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারবো সে উত্তর বোধহয় আমার মত সবার কাছেই অজানা…।





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.