![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
্মুক্ত চিন্তা হয়ে উঠতে পারে দেশ বদলের হাতিয়ার.................................।
‘….লেকচার ব্রেকের সময় বৈইশাখীতে খেতে যাই। আমি বিল দেবার আগেই একজন লোক হাসিমুখে বিল দিয়ে চুপচাপ চলে যায়। এই লোকটা আমার দুর্বলতাটুকু জানে। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক সেকেন্ড সময় না দেওয়া ভদ্রলোকের নাম আলমগীর ইসলাম। বাংলাদেশের আগামী প্রজন্মের একজন সর্বশ্রেষ্ট ডাক্তারের নাম আলমগীর ইসলাম।
মানুষ আমি হয়তো কিঞ্চিত চিনতে পারি। তার কাছের মানুষরা আমার চাইতেও বেশী চেনে তাকে। লিস্টে কেউ থাকলে প্রতিপক্ষ হয়ে কমেন্ট করতে পারবেন?
আমি নিশ্চিত...তার বিপরীতে একটা শব্দ লেখার ক্ষমতাও নাই অনেকের।
চেতনা আর ধর্মের দুনিয়ায় আলমগীর ইসলাম আমার একটা চেতনার নাম, আমার ধর্মের নাম।
আজ তাকে টাকার জন্য মানুষের কাছে হাত পেতে বেড়াতে হচ্ছে। ছোট ভাই-বোন, সিনিয়র ডাক্তারদের সামনে দাঁড়িয়ে কি সুন্দর হাসিহাসি মুখ করে, চেহারায় দারিদ্রতার ছাপ বানিয়ে বুঝিয়ে দিতে হচ্ছে,
‘আমার বাবা বাচবে না। আপনারা কি কয়েকটা টাকা হেল্প করতে পারবেন?’
কি হতাশা! কি চরম হতাশা!! কি কষ্টের কথা!!!
বাড়ীর একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবা বিশাল রোগ নিয়ে কার্ডিওলজীতে শুয়ে আছে। হাটা-চলা সম্পুর্ন নিষিদ্ধ। হার্টের ভালব নষ্ট হয়ে গেছে। রিপ্লেসমেন্ট দ্রুত না করতে পারলে ভদ্রলোক একমাত্র স্বপ্নবাজ ছেলেকে ছেড়ে চলে যাবেন।
আলমগীরের বাবাকে নিয়ে আমার ব্যক্তিগত সুখস্মৃতি আছে।
একবার ছুটিতে আলমগীরের বাসায় বেড়াতে গেলাম। ছোট্ট মাটির একটা ঘর। পাশে আরেকটা ছাউনী দিয়ে ঘেরা ঘরের মত অদ্ভুত খুপরী। খুপরীতে আলমগীরের স্বামী পরিত্যাক্তা ফুপু থাকে।
একজন ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী আর স্বামী পরিত্যাক্তা ছোটোবোনকে নিয়ে ভদ্রলোকের সংসার।
সংসার চালান কি দিয়ে?
মাছের ব্যবসা করেন। দুইটা লম্বা কলা পাতায় মাত্র দেড় হাজার টাকা মুলধন নিয়ে মাছ বিছিয়ে রাখেন। দেড় হাজার টাকা মুলধনের এই ভদ্রলোক আলমগীরের মতো মহান ছেলের জন্ম দিয়েছে। আমার মতো আবেগহীন, বন্ধনহীন ছেলেকে কান্নায় ভাসিয়ে দেবার মতো মহান ফেরেশতা তৈরী করেছে।
একদিন বৃষ্টির দিনে তার বাবা মাছ বিক্রী করছিলেন। ক্রেতা নেই। মাছ না বিক্রি হলে সংরক্ষন করার মতো বরফ নেই। বৃষ্টির বিকেলে আলমগীরের সাথে আমি তাদের বাড়িতে গেলাম। ভদ্রলোক খবর পেয়ে গেলেন। মাছগুলো তুলে ছুটে আসলেন। যে জিনিসটা আমি কোনদিন দেখিনি সেই জিনিসটা ঘটল। ছেলের মাথায় চুমু খেলেন। বাবা-ছেলে একজন আরেকজনের পেটে গুঁতোগুঁতি খেলছে। মজা করছে। আমার দেখা পৃথিবীর সেরা একটি মুহুর্ত!
পাশের বাড়ীর একজন লোক মাছ কিনতে আসল। ভদ্রলোক মুখ বাকিয়ে হাসি দিলেন। একটা মাছ বিক্রি হলো না। সবগুলো মাছ কেটে রান্না করা হলো।
প্রচন্ড লজ্জা আর হতাশা নিয়ে দুই দিন আমি এই মাছগুলো গিলতে থাকলাম। কি অসাধারন মানুষ! কি গভীর ভালোবাসা তার মনে! এই ‘মন’টায় আক্রান্ত হলো। মনের ভালব নষ্ট হলো, রক্ত প্রবাহিত পারছে না, হার্ট পচে যেতে শুরু করল(হার্ট এটাক)।
আমার জানামতে জীবিত অবস্থায় একমাত্র মৃত্যু যন্ত্রনা বোঝা যায়, হার্ট এটাকের ব্যথা থেকে। এই লোক মৃত্যুযন্ত্রনা ভোগ করছেন।
মুলধন হারিয়ে একটা ফেরেসতা নিয়ে রংপুর মেডিকেলের কার্ডিওলজী ওয়ার্ডে বসে আছেন। খানিকটা বিস্মিত। একমাত্র ছেলেকে ছেড়ে যেতে হচ্ছে। তিনি কাঁদছেন না। খানিকটা বিভ্রান্ত! আর কিছুদিন কি থাকা যেত না! নিজের নয়, ছেলেটার সুখ কি দেখে যাওয়া হবে না?
চার লক্ষাধিক টাকায় ভালব রিপ্লেসমেন্ট আর খরচের স্বপ্ন তিনি কোনদিন দেখেন নি।
কয়েকদিন থেকে...
আমি পশুর মতো নিঃশব্দে কার্ডিওলজী ওয়ার্ডে ঘোরাঘুরি করছি। ভদ্রলোকের সামনে যেতে পারছি না। দূর থেকে তাকাচ্ছি আর চোখ সরিয়ে নিচ্ছি। মহাকালের অসীম শুন্যতায় ভদ্রলোকের যাত্রা শুরু হবে কিছুদিনের মাঝেই। তার মৃত্যুভিতিহীন চোখ আমাকে বিভ্রান্ত করছে।
আমি আজ পথে নামলাম। আলমগীরের হাতে হাত রেখে সমগ্র ভার্চুয়াল জগতে জানা-নাজানা, ধার্মিক-অধার্মিক-মুচি-ডোম,মানুষ-অমানুষ সবার সামনে দাঁড়িয়ে মুখে হাসিহাসি ভাব ধরে রেখে বলব,
‘আমার বাবা মরে যাচ্ছে। কেউ কি তাকে বাচানোর জন্য একটু সাহায্য করবেন?’
আপনার একার দেওয়া পঞ্চাশ-একশ টাকায় হয়ত কাজ হবে না। তবুও দিন না। একটু চেষ্টা করুন। প্লিজ, ভাই!
[একই রকমনুভুতি সাত মাস আগে আমিও পেয়েছিলাম। আমার বাবার হার্টের ৭৫% পঁচে গেছে( M.I) সেবার]
বিকাশঃ 01751 18 94 19 ( Alamgir Islam, 40th batch, Rrangpur Medical College)
বিকাশঃ 01737 68 15 33 (Razib Hossain sarkar, 40th batch, Rangpu Medical college)
বিকাশ: 01745 285 876 (shamim safari, 40th Rangpur Medical)
ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাঙ্কিংঃ 01780 940 480 03 ( mahamudul rahman Hridoy)
ডাচ-বাংলা ব্যাংকঃ 162.101.119465 (Anik Islam, 40 batch, Rangpur Medical College)
ইসলামী ব্যাংকঃ SMSA: 743 (Alamgir Islam)
(বিঃদ্রঃ টাকা পাঠানোর পুর্বে দয়া করে আপনাদের পার্সোনাল বিকাশ/ঠিকানা সম্ভব হলে পাঠিয়ে দিবেন ইনবক্সে। এই টাকা পরিশোধ করা হবে ধীরে ধীরে।
ভালব রিপ্লেসমেন্ট করতে আড়াই লক্ষাধিক এবং ট্রান্সফার, হাসপাতাল খরচ, ঔষুধ, আনুষাঙ্গিক নিয়ে চার লক্ষ্যের অনুমান করা হয়েছে )’
………………………………..
রাজীব ভাইয়ের ফেসবুকের স্টাট্যাসে দেয়া মানবিকতার আবেদনের এই প্রথম ধাপটি আরো বিস্তারিত ছিল,কিছুটা সংক্ষেপ করে তুলে ধরলাম।মানবিকতায় সাড়া দিতে তারুন্যকে কোরআন,গীতা,মন্দির,মসজিদ,কোনরূপ ধর্মের দোহাইয়ের প্রয়োজন পড়েনা।তারুন্য সবসময় মুখিয়ে থাকে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য,মানবিকতায় হাত বাড়াতে তারুন্যের দল কখনো অপারগতা প্রকাশ করেনা।
আলমগীরের বাবাকে বাচানোর আন্দোলনে ফেসবুকে ইভেন্ট খোলা হয়েছে।আপনিও যোগ দিতে পারেন-
‘একজন বাবাঃ মাঝে মাঝে সবার বাবা হয়ে উঠে...মনে হয় নিজেও তার সন্তান হয়ে যাই!’লিংকঃ
Click This Link
যুদ্ধের সর্বশেষ আপডেট জানতে পারেন এখান থেকে,ইচ্ছে করলে ডু মারতে পারেন এই আইডিতেও,-
https://www.facebook.com/razibhossainsarkar
এখানেও আপনি সর্বশেষ আপডেট পাবেন।ইনিই সেই লোক যিনি সামনের সারিতে থেকে এই যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।এই সাহসী পদক্ষেপকে সকলে সাধুবাদ জানাই।এগিয়ে আসি মানবতার তরে।সকলের তরে সকলে আমরা,প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।যার যার জায়গা থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী সবাই এগিয়ে আসি,আর হয়ে উঠি এক অভূতপুর্ব গল্পের অংশ
এখন পর্যন্ত অনেক সাড়া এসেছে কিন্তু কাংখিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি,আরো অনেক টাকার প্রয়োজন।এইমাত্র রাজীব ভাইয়ের স্ট্যাটাস থেকে জানতে পেরেছি-আজ রাতেই উনাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হবে।রক্তের প্রয়োজন হতে পারে ‘এবি পজেটিভ’।
প্রতিমূহুর্তেই ফেসবুকে যুদ্ধের আপডেট জানিয়ে দিচ্ছেন সবাইকে।এই তো একটু আগে দেখা উনার স্ট্যাটাসটি হুবুহ তুলে ধরছি-
‘আমরা সফল হচ্ছি...
বাবার চিকিৎসার বিশাল সংগ্রহের পথে অর্ধেক পথ অতিক্রম করে ফেললাম আমরা।
১৭ ফেব্রুয়ারীঃ ২১০০০ (একুশ হাজার টাকা)
১৮ ফেব্রুয়ারীঃ ১৩৫১৫০ (এক লক্ষ পয়ত্রিশ হাজার একশ পঞ্চাশ টাকা)...
১৯ ফেব্রুয়ারীঃ ৯০৮৮৯ (নব্বই হাজার আটশত উননব্বই টাকা)
মোটঃ ২,৪৭০৩৯ (দুই লক্ষ সাত চল্লিশ হাজার উনচল্লিশ টাকা)
আপনারা দেশ-বিদেশ থেকে আমাদের পাশে দাড়িয়েছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে দক্ষ সেনাপতিও একা কিছুই করতে পারবে না, যদি দক্ষ সৈন্যদল না থাকে। এরাই আসল যোদ্ধা!
আমরা সবাই একসাথে দাড়িয়েছি যুদ্ধক্ষেত্রে।
প্রমান করতে পেরেছি 'অনলাইন সোস্যাল মিডিয়া' মিথ্যা নয়। এখানে আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ায় সত্যিকারের মানুষগুলো। এরা শুধুই মানুষের কথা ভাবে। সুযোগের অভাবে কিছু করতে পারছে না। আজ মানুষ হিসাবে নিজেকে মহাসৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে!
চার লাখ টাকার জন্য লড়াইয়ে নামা সহজ ছিল না। অনেকেই মুখ বাকিয়ে বলেছে,
'ফেসবুক-ব্লগে লাভ নাই। রাস্তায় নামো। বাক্স নিয়া ঘুর।'
আজ তাদের কিছু বলার নাই। মানুষ পারে না এমন কোন কাজ পৃথিবীতে নেই। সৃষ্টিকর্তা তাদের সেই ক্ষমতাটা দিয়েই পাঠিয়েছেন। সুযোগে শুধু নিজেকে উজাড় করে মেলে দেওয়া...
আমরা আলো হয়ে, বাতাস হয়ে মানুষের জানালা গলে ঢুকে যাব। মানুষের দরকার মানবতার আলো আর সহানুভুতির বাতাস!
হাতে হাতে বাক্স নিয়ে দূর চট্টগ্রামে ঘুরছে একটি দল। শিক্ষিত যুবকগুলো পাবলিক প্লেস আর কিন্ডার গার্ডেনে ঘুরে বেড়িয়েছে আজ পুরো দিন। Athena Admission Aid-University Admission Coaching নিজেদের সব কাজ ফেলে রেখে এই মহান কাজটি করছে।
ছোট্ট ছোট্ট দেব শিশুরা টিফিনের পাঁচ টাকা-দশ টাকা দিয়েছে হাসিমুখে। কেউ কেউ বলেছে,
'ভাইয়া, কালকেও আসবেন। আব্বুকে বলে টিফিন পাঁচ টাকা বেশী করে নিয়ে আসব।''
সবাইকে দেখে আমরা চমকে যাচ্ছি!
আমাদের এখনো বিশাল পথ বাকী আছে। এভাবে পাশে থাকলে আমরা সফল করবই!
[অনেকেই চান না নিজেদের প্রকাশ করতে। তবুও, অনুমতি নিয়ে কিছু লোকের কথা প্রকাশ করতে চাই। মানুষের মাঝে স্বদিচ্ছা জাগাতে তাদের ফ্রন্ট লাইনে আসতে হবে।
মানবতা যখন আড়ালে পড়ে, ধুলো মুছে তাকে সামনে আনতেই হয়। এটায় মানবতার একমাত্র শর্ত। আরেকজনের মানবতা জাগাতে তাদের সময় হয়েছে সামনে আসার]’
…………
আর কিছু বলার বোধহয় প্রয়োজন পড়েনা।ইন্টারনেটের এই যুগে ফেসবুকের পরে তরুনদের কাছে সবচেয়ে পরিচিত ব্লগ।তারুন্যে যেখানে গর্জে উঠে,সেখানে সব ভয় তুচ্ছ।তারুন্যের অভিধানে ‘পরাজয়’ কোন শব্দ নেই।আর মানবিকতার কাছে তরুনরা হেরে যাবে এ কখনোই কাম্য নয়,প্রত্যাশিত নয়।
©somewhere in net ltd.