নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনো মোর মেঘের সংগে!

জিন্নুরাইন

আমি গান লিখি আপনার সুখে তুমি কেন আসি দাঁড়াও সুমুখে?

জিন্নুরাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বার্লিন থেকে ফিরে (১)

০১ লা মে, ২০১৬ রাত ২:১৩


ভূমিকাঃ
২০১৪ সালে জার্মানীর রাজধানী বার্লিনে বাংলাদেশ ফোরাম, জার্মানী আয়োজিত ৫ম আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে ফেরার পর "বার্লিন থেকে ফিরে” শিরোনামে একটি রচনা লিখেছিলাম। এবছর অর্থাৎ ২০১৬ সালের ১৪ ও ১৫ই এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক সম্মেলন। বাংলাদেশ ফোরাম, জার্মানী বাংলাদেশ বিষয়ে জার্মান ভিত্তিক একটি উকালতি ও লবি প্রতিষ্ঠান। প্রতি দুই বছর অন্তর এই সংস্থা এ ধরনের সম্মেলনের আয়োজন করে থাকে। প্রতিবারের মত বাংলাদেশ ফোরামের সম্মানিত সদস্য বন্ধুবর সাকী আগেভাগেই আমাকে নিমন্ত্রণ পাঠিয়ে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার আহবান জানান। বন্ধু সাকী জার্মানীতে বাস করেন তিন দশকেরও অধিক সময় থেকে। বাংলাদেশের সাথে তার আত্নিক সম্পর্ক থেকেই বিভিন্নভাবে তিনি বাংলাদেশের সুখে, দুখে, আনন্দ আর বেদনায় নিজেকে আপন মহিমায় জড়িয়ে ধরেন। সেই ভালবাসার একটি প্রকাশ হচ্ছে বাংলাদেশ ফোরামের সাথে তার সংযুক্তি।
গেলবারের সম্মেলন ছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যা (প্রব্লেম) ভিত্তিক কিন্তু এবারের সম্মেলন ছিল ব্যাতিক্রমি ও বিভিন্ন কারনে বৈশিষ্টপূর্ন। প্রথমতঃ এই সম্মেলনের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল দ্বন্দ্ব ও সংঘাত (কনফ্লিক্ট) নিয়ে শিক্ষামূলক, পান্ডিত্যপূর্ণ ও সারগর্ভ আলোচনা। দ্বিতীয়তঃ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের সমাধানকৃত দ্বন্দ্ব সমূহ চিহ্নিত করে সেই সকল দ্বন্দ্বের সাথে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের সামঞ্জস্যতা খুঁজে নিয়ে সমাধান বের করার প্রয়াস গ্রহণ করা। তৃতীয়তঃ বাংলাদেশ থেকে যারা এসেছিলেন তারা সবাই সেখানে সামাজিক আন্দোলনের পুরোধা। প্রতিনিয়তঃ তারা সমস্যা ও দ্বন্দ্বের মধ্যে বসবাস করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নির্দ্ধীধায় আপন আপন অবস্থান থেকে সাম্য, ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হয়েছেন। সেই কারণে আমার কাছে এরা সবাই নমস্য। আমি তাদের কাছে অনেকখানি কৃতজ্ঞ। কেননা আমি দীর্ঘদিন থেকে প্রবাসে বসবাস করছি। প্রবাসে থেকে দেশের জন্য ভালবাসা জন্মায় অনেকখানি কিন্তু প্রবাসে আমরা দ্বন্দ্ব আর সংঘাতের মধ্যে বসবাস করিনা। দ্বন্দ্ব আর সংঘাতের মধ্যে বসবাস করে সেটা সমাধানের প্রচেষ্ঠা আর প্রবাসে থেকে দীর্ঘ বুলি আওড়ানের মধ্যে তফাত অনেক। সেই হিসাবে তারা সবাই আমার থেকে এগিয়ে আছেন অনেকখানি।

বাংলাদেশ ফোরাম জার্মানীঃ
জার্মান ভিত্তিক ৮ টি বেসরকারি সংগঠন ও চারজন সদস্য নিয়ে বাংলাদেশ ফোরাম জার্মানী গঠিত, সংগঠনসমূহ হচ্ছেঃ ১। এমনেস্টি ইন্টার্নেশনাল, জার্মানী শাখা; ২। ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশ, লোয়ার সেক্সনী; ৩। বাংলাদেশ স্টাডি এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার; ৪। ব্রেড ফর দা ওয়ার্ল্ড- প্রটেস্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট সেন্টার; ৫। নেটয পার্টনারশীপ ফর ডেভেলপমেন্ট এন্ড জাস্টিস; ৬। পার্টনারশীপ শান্তি বাংলাদেশ; ৭। স্বদেশীয়ান ফোরাম বার্লিন; ৮। মাটি, সেলফ ডিফাইন্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ।
ব্যাক্তিসমূহ হচ্ছেন ১। ডঃ পেটরা ডানেকার; ২। ডঃ ঈভা গারহার্য; ৩। ডঃ মার্টিন পিটার হাউস্ট; ৪। সাকী চৌধুরী

পশ্চিমা অংশগ্রহণকারীরা ছিলেনঃ
১। স্যু উইলিয়ামস, দীর্ঘদিন দ্বন্দ্ব রূপান্তর (কনফ্লিক্ট ট্রান্সফরমেশন) ও উন্নয়ন বিষয়ে, মধ্যস্থতাকারী ও প্রশিক্ষক হিসাবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি একজন স্বাধীন আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্ব রূপান্তর (CONFLICT TRANSFORMATION) উপদেষ্টা। তিনি ১৯৮৮ সাল পর্য্যন্ত যুক্তরাজ্যের দ্বন্দ্ব বিষয়ক সংস্থা "রেস্পন্ডিং টু কনফ্লিক্ট" ও পরবর্তীতে আলসটার বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি বিষয়ক কেন্দ্র "ইনিশিয়েটিভ ফর কনফ্লিক্ট রিজলিউশন (ইনকোর)" এর পরিচালক ছিলেন। তিনি কম্বোডিয়া, গুয়াতেমালা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, কঙ্গো ও কেনিয়ার দ্বন্দ্ব নিরসন বিষয়ে বিভিন্ন গ্রুপের উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছেন।
২। থর্নস্টন ফ্রেই, ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্রেটিক দল (সি ডি ইউ) থেকে নির্বাচিত জার্মানীর সংসদের একজন সম্মানিত সদস্য। তিনি জার্মান সংসদের ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য এবং দ্বন্দ্ব ও নেটওয়ার্ক একশন বিষয়ক "সিভিল ক্রাইসিস প্রিভেনশন" উপকমিটির মুখ্য বক্তা।
৩। ফ্রেডারিক মাডুরাউড, বাংলাদেশে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের উপপ্রধান ও রাজনৈতিক উপদেষ্টা।
৪। গেরহার্ড আলমার, জার্মান কূটনীতিক, পররাষ্ট্র বিষয়ক শাখার প্রথম কাউন্সিলর। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বৈদেশিক বিভাগের প্রাক্তন প্রধান।
৫। ডেইট্রিক এনড্রিয়াস, প্রটেস্ট্যান্ট ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস ব্রেড ফর দা ওয়ার্ল্ড এর নাগরিক দ্বন্দ্ব নিরসন নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ।
৬। বিরগিট ফেলেইসেন, নেপাল ডায়ালগ ফোরামের কো-অর্ডিনেটর। শান্তি ও দ্বন্দ্ব নিরসনে এশিয়া বিষয়ক মধ্যস্থতাকারী।
৭। ক্লডিয়া ফ্র্যাংক, ব্রেড ফর দা ওয়ার্ল্ড, বার্লিন শাখার দায়িত্বশীল ও দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ।
৮। উলফগ্যাং হ্যানরিখ, দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তি (কনফিক্ট ট্রান্সফরম্যাশন) বিষয়ক উপদেষ্টা।
৯। ক্রিস্টিন কোগেল,
১০। রচেল ইয়সিপ মরডেনো, নির্বাহী কর্মকর্তা বালায় মিন্দানাও ফাউন্ডেশন( বি এম এফ আই), একটি মিন্দানাও ফিলিপিন ভিত্তিক বেসরকারি দ্বন্দ্ব নিরসন সংস্থা।
১১। স্টেফান ফ্রাউইন, সদ্য প্রাক্তন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ডেলিগেশন প্রধান

বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য যারা অংশগ্রহণ করেছেনঃ
১। মেঘনা গুহঠাকুরতা, নির্বাহী কর্মকর্তা “রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশ”। প্রাক্তন অধ্যাপিকা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
২। সারা হোসেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মানবাধিকার বিষয়ক আইন আইনজ্ঞ। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সদস্য। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর দা লিগ্যাল প্রটেকশন অফ হিউম্যান রাইটস (ইন্টেরিটস), যুক্তরাষ্ট্র থেকে আন্তর্জাতিক মহিলা সাহসী পুরষ্কার প্রাপ্ত হয়েছেন।
৩। সাইয়েদ বদরুল আহসান, দৈনিক অবজার্ভার পত্রিকার উপ-সম্পাদক ও বিডি নিউজ-২৪ অনলাইন পত্রিকার একজন কলামিস্ট। ইউল্যাব ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির খন্ডকালীন শিক্ষক।
৪। জাহিদ আহমেদ চৌধুরী, পিস এন্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজ বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক।
৫। মৃণাল কান্তি ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিনিধি। মানবাধিকার ও শান্তি প্রক্রিয়ায় আদিবাসীদের পক্ষের মুখ্য ব্যাক্তি। মালেয়া ফাউন্ডেশনের প্রধান।
৬। নবকুমার রাহা, নির্বাহী কর্মকর্তা "গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট” নোয়াখালী।
৭। শারমীন ইসলাম, নেটয বাংলাদেশের নির্বাহী কর্মকর্তা
৮। আইনুন নাহার, অধ্যাপিকা নৃতত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ
৯। রওশন জাহান মণি, এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এন্ড ডেভেলপমেন্ট নামক সংস্থার উপনির্বাহী কর্মকর্তা

এমনেস্টি ইন্টার্ন্যাশনালের প্রতিনিধি বার্নার্ড, ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশের প্রতিনিধি শরাফ আহমেদ, বাংলাদেশ স্টাডি এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রতিনিধি ডঃ শান্টু, মাটি বাংলাদেশের প্রতিনিধি আসাদ, বার্গভ ফাউন্ডেশনের মীর মোবাশ্বের, বাংলাদেশ ফোরামের কর্মকর্তা ডঃ এডা, ডির্ক, নিকো, ম্যাকস ও নাইল। এছাড়া বেশ কয়েকজনের নাম আমি এই মুহূর্তে মনে করতে পারছিনা।


শিরোনামঃ
বাংলাদেশ ফোরাম জার্মানীর প্রতিনিধি ডির্ক স্যামের সূচনা বক্তব্য ও পরিচালনায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল "দ্বন্দ্ব রূপান্তর (কনফ্লিক্ট ট্রান্সফরমেশন)- বাংলাদেশে শান্তি ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ"। আমরা সবাই জানি অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মতো বাংলাদেশ একটি দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ। মানব উন্নয়নের মাপকাঠিতে (হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স) বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অনস্বীকার্য্য। ১৯৮০ সালে যেখানে মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫৩ বছর, তা বেড়ে গিয়ে ২০১১ সালে ৭১ বছরে এসে দাঁড়িয়েছে। ১৯৯১-৯২ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৫৬,৭% তা ক্রমে ক্রমে হ্রাস পেয়ে ২০১০ সালে ৩১,৫% এবং ২০১২ সালের মধ্যে ২৯% নেমে এসেছে। বর্তমানে নমিনাল পার ক্যাপিটা জি ডি পি ১৩১৪ ইউ এস ডলারে উন্নীত হওয়ার কারনে বাংলাদেশ একটি নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের হিসাবে কোন দেশ ১০৪৫ ডলার থেকে ৪১২৫ ডলারের মধ্যে উপার্জন করলে তাকে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ হিসাবে গণ্য করা হবে। বাংলাদেশের জি ডি পি ১৯৯০ সালে ছিল ৩০০ ডলারের কাছাকাছি ২০০২ সালে ছিল ৪০০ ডলারের মত এর পর থেকে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে দেশের জি ডি পি। হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সে (এইচ ডি আই) ১৯৮০ সালে ছিল ০.৩৩৮ যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৪ সালে ০.৫৭ এসে দাঁড়িয়েছে। এই যে উন্নয়নের ইতিবাচক ধারা সেটা কিন্তু শুধুমাত্র বাংলাদেশে অর্জিত হয়নি আরও অনেক দেশের অর্জন আমাদের প্রায় কাছাকাছি যার কারণে বিশ্বের ১৮৮ টি দেশের তারতম্যে আমাদের অবস্থান ১৪৪ অর্থাৎ আমাদের আগে আরও ১৪৩ টি দেশ দাঁড়িয়ে আছে। সেই অর্থে আমাদের অর্জন আরও ভালো হওয়া উচিত ছিল যা আমরা করতে পারিনি।
উদ্দেশ্যঃ
বাংলাদেশ ফোরাম জার্মানীর এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল এই উন্নয়নের ধারাকে আরও বেগবান করার জন্য কি করা উচিত এবং কিভাবে করা যেতে পারে সেটা নির্ধারন করা। আমি আশা করি আমার সাথে অনেকেই একমত হবেন যে, বাংলাদেশে যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত আছে তার বেশিরিভাগ কৃতিত্ব রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা আছেন তাদের উপর বর্তায় না বরং ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যাবসা শিল্পের উন্নয়নের সাথে বেসরকারি সংস্থা সমূহের অবদান অনেকখানি কৃতিত্ব বহন করে। আমার কাছে অনেকখানি মনে হয়েছে যে, সরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ যদি দায়িত্বশীল থেকে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারত তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা আরও অনেক বেশী দ্রুত হতে পারত। তাই ভাল রাষ্ট্র পরিচালনা ও সুশাসন আমাদের উন্নয়নের আবশ্যিক পূর্ব শর্ত, আর এই স্থানটিতে আমাদের দুর্বলতা সীমাহীন। এর সাথে যুক্ত হয়েছে দ্রুত ক্ষয়িষ্ণু আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক সরকারী প্রক্রিয়া থেকে দ্রুত স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যাবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছি আমরা, স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ দ্রুত এক ধরনের পরাধীনতার শৃঙ্ঘলে আবদ্ধ হওয়ার উপাদান সমূহ পরিলক্ষিত হচ্ছে, গুপ্ত হত্যা কিংবা খোলামেলা হত্যা আজ অহরহ সংগঠিত হচ্ছে যার বিচার হচ্ছে না, নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হারাচ্ছে তাদের জীবন ধারণের উপাদান, ধর্মীয় মৌলবাদী শক্তির পদধ্বনির লক্ষণ প্রকাশিত হচ্ছে আর সেই সাথে যুক্ত হচ্ছে সংবাদ জগতের স্বাধীনতার উপর খড়গ হস্ত। দেশে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় হয়েছে। এসব দেখে শুনে যে কোন দায়িত্বশীল মানুষের কাছে মনে হতে পারে দেশ এক দ্বন্দ্ব আর সংঘাতের মধ্যে বাস করছে যা প্রায়শই দেশকে মারাত্নক অস্থিতিশীল করে দিচ্ছে। আর এই দ্বন্দ্ব সংঘাতের মূলে আছে রাষ্ট্র পরিচালনায় রাজনৈতিক শক্তি, ধর্মীয় সম্প্রদায়, পেশী শক্তি আর অর্থ শক্তি সমূহের দ্বান্দিক ও সঙ্ঘাতপূর্ণ অবস্থান।
আমরা এও জানি যে সমগ্র বিশ্ব আজ দ্বন্দ্ব আর সংঘাতের বিচারণ ভূমিতে রূপান্তরিত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে জ্বলছে আগুন আর তার গরম হাওয়ায় উত্তপ্ত হচ্ছে বিশ্ব শক্তি ইউরোপ, আমেরিকা আর রাশিয়া। এই সকল প্রেক্ষাপটে আধুনিক রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলে দ্বন্দ্ব আর সংঘাত নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে আর হচ্ছে। আর তাই সঠিক সময়ে একটি প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান বিষয় নির্ধারন করে শিক্ষামূলক আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টির কৃতিত্ব বাংলাদেশ ফোরাম জার্মানীকে প্রদান করা হলে ভুল হবে বলে আমি মনে করিনা। দ্বন্দ্ব আর সংঘাত নিয়ে তিনটি তত্ত্ব প্রচলিত আছে যার প্রথমটি হচ্ছে দ্বন্দ্ব নিরসন (কনফ্লিক্ট রিজলিউশন), দ্বিতীয়টি হচ্ছে দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনা (কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট) আর তৃতীয়টি হচ্ছে দ্বন্দ্ব রূপান্তর (কনফ্লিক্ট ট্রান্সফরমেশন)।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.