নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্প ছাড়া আর কিছু না

বলতে চাই না। লিখতে চাই।

রাগিব নিযাম

আমি সাদাসিধে, সাধারণ টাইপের মানুষের দলে। তবে রাজনৈতিক অপরিপক্ক্বতা আমার অপছন্দ।

রাগিব নিযাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প-জুজুমানব [বাংলাদেশের অতিমানবেরা-৩]

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৭:২৪

পূন্যভুমি সিলেট।

এখানে ওখানে জড়িয়ে আছে শত বছরের ইতিহাস। জড়িয়ে থাকে বুজুর্গদের আশীর্বাদ। কেউ হয়তো এরই কারণে আল্লাহর অনুগ্রহে বেঁচে থাকে। হয়তোবা সূর্যটাও চোখ মেলে অশুভ যে কোনো কিছুকে ঠেকাতে। এখানে ওখানে ছড়িয়ে আছে চা বাগান। শ’ওয়ালেস চাবাগানটির কেয়ার টেকার হামিদের ছেলে ঘুরে ঘুরে কলেজে পৌছায় টাইম মতো। আবার বিকেলে ফেরে ঠিক সময়ে।



-এই জামান।

-হ্যাঁ বলো তাজিন ভাইয়া। তাজিন গার্ডেন ম্যানেজারের ছেলে। এক ব্যাচ বড়ো। তবে দুজনেরই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।

-গার্ডেনে কি জানি হচ্ছে শুনেছি।

-হ্যাঁ, আমিও। কি একটা নাকি নিয়ে যায় বাচ্চাদের।

-সতর্ক করা দরকার মানুষ জন কে।

-জুজুকে কখনো থামানো যায় না।

-হেহ। বললেই হলো?



একটু আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়ে হামিদ পুত্র জামান। মনিবের ছেলের এই রহস্যঘেরা দেশের অজানার প্রতি বেশি টান। এই টান যে কোনো সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিপদেও ফেলতে পারে। তবে দেখে শুনে রাখা হচ্ছে বলে তাজিনকে নিয়ে অতো ভাবনা নাই।



সে অনেকদিন পার হওয়ার পর। একদিন হঠাৎ করে বাগানে হইচই পড়ে গেলো। আজ একসাথে তিনটি মহিলা কর্মীর কোল থেকে বাচ্চা গায়েব। তিনটি তিনটি বাচ্চা গায়েব মানে অনেক বড়ো সড়ো ব্যাপার। তাই একটা প্রতিরোধের ব্যাপার স্যাপার থাকতে হবে।



-হামিদ মিয়া... গার্ডেন ম্যানেজার শফিক সাহেব উদ্বিগ্ন আজকের ব্যাপার নিয়ে। এমন চলতে থাকলে গোটা গার্ডেনের সব কর্মী সব কাজই বন্ধ করে দিবে।

-বলেন সাব। হামিদও বেশ চিন্তিত।

-কিছু তো বুঝতেছি না।

-স্যার ফ্লাড লাইটের ব্যবস্থা করা করা যায় না।

-তা যায়। তবে সব সময় কি বিদ্যুৎ কি থাকবে?

-সেটাও কথা।



এদিকে চুপি চুপি শলা পরামর্শ করে তাজিন ও জামান। তাজিন বাগান এলাকার বাচ্চাদের নিয়ে চিন্তিত। তার উপর তাজিনের ছোট বোন মাত্র আড়াই বছরের। এর উপর রাত দিন জুজুর ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকে তার মা।

-জামান আমাদের বয়সের পোলাপান রেডি করা যায় না?

-তা যায়। কিন্তু কেনো তাজিন ভাই?

-আমরা রাতে এলাকা পাহারা দেবো।

-দিয়ে কি লাভ?

-কি লাভ মানে? বাচ্চা গায়েব হয়ে যাচ্ছে আমাদের কি কিছুই করার নাই?

-পারবেন না।

-পারতে হবে। অন্তত একটা বাচ্চা যেনো খোয়া না যায় সেজন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

-আপনি অদ্ভুত। পারেনও।



সে রাতে ঘটা করে মশাল জ্বালানো হলো ফ্লাডলাইটের বিকল্প হিসেবে আর কি!



রাত বাড়ছে। দূরে কোথাও শিয়াল ডেকে উঠলো। একটা দুটা তিনটা।

ঝি ঝি ঝি... ঝিঁঝিঁ পোকার একটানা শব্দে চারপাশ কেমন যেনো মৃত্যুপুরীর ভয়াবহতায় ডুবে আছে। সাত আসমানের উপর থেকে যদি খোদা ইনসাফ করেন তো এই পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াল সুন্দর জায়গাটিতে হয়তো বাচ্চারা প্রশান্তিতে ঘুমাতে পারবে।



ওরা সাতজন সমবয়সীর দল আছে এখানে।

-জামান।

-কিরে মবিন্যা?

-ডর লাগেরে বন্ধু।

-হেহ পাগলা। তোরে কি এক টাকা চাঁদা দিয়া টয়লেট করতে হয় এখনো?

-এই জামান ফাজলামী করিস না তো। এমনিই পরিবেশ ভালো ঠেকতেছে না।

-হুম।



তাজিন আজ ছোট বোনকে বুলি শেখাচ্ছে। মা কিচেনে। বাবা স্টাডিতে।

-বলো হেলিকপ্টার।

-হেলিকক্তার

-ছিঃ এমনে বলে না তো।

-তিহ এন্নে বদেদাতো।

-আবার দুষ্টামি?

-আবাল... ভ্যাঅ্যাঅ্যা



কিছু একটা টের পেয়েছে ছোট্ট তিমা।

-অ্যাই তিমা কি হয়েছে আপুই?

-অ্যাঁ। বুত।

-কোথায় ভূত?

-ঐ...অইতানে...



ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তাকায় জানালার ধারে। ওখানে একটা কি ছিলো যেনো।

এখন চৈত্র। দাবদাহে জীবন অতিষ্ঠ। তাই জানালা কপাট খুলে থাকতে হয়।

-মা। মা। মা কে ডাকে তাজিন।

-কিরে। শান্তিতে থাকতে দিবি না?

-তিমা ভয় পায় তো। আমি নিজে কেমন করে ঠিক থাকি?

-তোর বাবাকে ডাকি দ্বারা।



এমন সময় ভীষণ আওয়াজ করে উঠে ঝোপটা। যেনো দশটা ষাঁড়কে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বাইরে থেকে হই হই করে উঠলো সবাই।

-দাড়া আমি যাই। জামানের অ্যাপ্রোচ।

-দাঁড়া বে আমিও আসতেছি।

ঝোপের সামনে এসে স্থির হয়ে যায় জামান। পেছনের সবাই এখনো দশ পনেরো ফুট দূরে।



বিকৃত ধরনের শব্দ ভেসে আসছে। টর্চ মারতেই স্থির হয়ে গেলো জামান।

চার ফুট মানুষ আকৃতির কিছু একটা ওটা। মুখে রক্ত। হাতে একটা বাচ্চার পা। গোটা গায়ে কাঁটা। মুখটা বানর আর কুমিরের চেহারা মেশালে যেমন হবে তেমন।



হাতে কিছু নেই তাই ওখানে দাঁড়িয়েই আছে। এদিকে জানালা পাশ থেকে তাজিন তাকিয়ে আছে। জামান যে ভিকটিম হতে যাচ্ছে তা টের পেলো। চুপি চুপি শট গান টা নিলো হাতে। দেয়ালে ঝোলানো থেকে।



এক দুই তিন। ঠুশশ...



গুলিটা প্রশস্থ অবস্থায় বুকে ফুটো করলো প্রাণীটার। ভাবান্তর নেই প্রানীটার। লাফ দিয়ে এসে তাজিনের গালে একটা থাবড় বসিয়ে দিলো...



এরপর আর মনে নেই...

সাত দিন পর হুঁশ ফেরে তাজিনের।

-আমি কোথায়?

-আরে নড়বেন না।

-আমার কি হয়েছিলো।

-জুজুতে পেয়েছিলো।

এতোদিন বিশ্বাস করেনি নি। তাই অনেক কষ্ট হচ্ছে।



আজ বাসায় ফেরার পালা। এখনো দেখা যাচ্ছে পাহারা আছে।

যদিও শফিক সাহেব তাঁর স্ত্রীকে ছোট্ট তিমাকে সহ পাঠিয়ে দিয়েছেন অনেক আগেই ধাকায়। তাজিনের জন্য রয়ে গেলেন। ড্রইং রুমে ডিসি সাহেব আছেন কয়জন অফিসার নিয়ে।



রাত বাড়ছে। লোক জন পাহারায়।



ঘো ঘো ঘো। আবার সেই আওয়াজ। কিন্তু হঠাৎ করে তাজিনের কেমন জানি লাগছে। এটা কি জুজুর কারণেই হচ্ছে?



বিবর্ণ সবুজ রং ধারণ করছে শরীর। কেমন জেনো সরীসৃপ আকৃতি তাতে।

-তাজিন ভাইই?

-দরজাটা খুলে দে জামান। ঘোঁত ঘোঁত ঘোঁত।

আওয়াজ শুনে ডিসি, অফিসাররা, শফিক সাহেব, হামিদ ঘরের সামনে চলে এলেন। এসে বিস্ময়আভিভূত হয়ে গেলেন। তাজিনই যে এখন জুজুর মতো আকৃতিতে চলে এসেছে! সাত ফিট ছাড়িয়ে যাচ্ছে!



-আন্সেফ ইউর গান!

-থামেন! তাজিন বিকট গোঙ্গানি দিচ্ছে।

-হোল্ড ফায়ার!

-ডিসি সাহেব থামেন!

-একে গুলি করবো নাকি?

-না এ আমার ছেলে!

-কি নাম তোমার?

-আমি...? সাত ফিটের মানুষের মুখ থেকে বেরিয়ে এলো হাসি... “জুজুমানব!”...

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৩৭

সাবরিনা সিরাজী তিতির বলেছেন: ভালো লাগলো +++++++++++++++++++++

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৭:১৫

রাগিব নিযাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপি :-)

২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৩৭

সাবরিনা সিরাজী তিতির বলেছেন: ভালো লাগলো +++++++++++++++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.