নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গল্প ছাড়া আর কিছু না

বলতে চাই না। লিখতে চাই।

রাগিব নিযাম

আমি সাদাসিধে, সাধারণ টাইপের মানুষের দলে। তবে রাজনৈতিক অপরিপক্ক্বতা আমার অপছন্দ।

রাগিব নিযাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প-রশ্মিমানব [বাংলাদেশের অতিমানবেরা-শেষ পর্ব]

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:০৮

"লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান" গমগমে ভারী গলায় ঢাকা চীন মৈত্রী সম্মেলনে জানান দিচ্ছে কেউ একজন, "আজ আপনাদের সামনে উপস্থিত রয়েছেন কয়েকজন বিশ্বসেরা জাদুকর। ইতিমধ্যে দুতিনজন এসে তাদের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। এখন আমাদের দেখাবেন আমাদেরই দেশের কৃতী জাদুকর তানজিম রহমান।"



মুহুর্মুহু করতালিতে ফেটে পড়লো গোটা হল।



হঠাৎ হল অন্ধকার হয়ে গেলো। জুতোর আওয়াজ হচ্ছে। ভারী বুটের আওয়াজে সবাই চুপ হয়ে গেলো। হঠাৎ একজায়গায় ফোকাস আলো পড়লো। দেখা গেলো কেউ ওখানে ভাসছে। আবারও করতালি। ভেসে ভেসে উড়ে উড়ে এসে নামলেন তানজিম।



"আমার মতো কারও উড়ার ইচ্ছা আছে?" উৎসুক চোখে তাকালেন দর্শকের দিকে।



এক সেকেন্ড পরে ফেটে পড়লো কিছু তরুণী।



আমি!

আমি!



এক মেয়ের দিকে তাকিয়ে আঙুল তুললো তানজীম। উঠে এলো মেয়েটি।



"চোখ বন্ধ করুন।"



আস্তে আস্তে মেয়েটি ভেসে উঠলো। তরুণীদের ভেতর কেউ কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়লো। মেয়েটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হলো। একটা বাউ করলেন তানজীম।



হঠাৎ পেছন থেকে তার ম্যানেজার ডাক দিলো।



"কি সমস্যা?!" বিরক্তির চোখে তানজীম তাকালো তার দিকে।

-ভাবী স্কুল থেকে ড্রাইভ করার পথে বাচ্চা সহ গাড়ীতে অ্যাকসিডেন্ট করেছেন।



উপস্থাপকের সাথে কথা বললেন তানজিম।



"দুঃখিত সুধীবৃন্দ, একটা দুঃসংবাদের কারণে তানজিমকে এখনই বিদায় নিতে হচ্ছে..."



ঢিব ঢিব ঢিব ঢিব।



-বাবা রশ্মি।

-বলো আম্মু।

-নিশাত এসেছে।

-তাই?

-এই তো। তোমার হসপিটালে ভর্তির কথা শুনে দৌড়ে চলে এসেছি। একটা মিষ্টি মেয়ে একগুচ্ছ ফুলের তোড়া নিয়ে এসেছে।



রশ্মি ক্যান্সার আক্রান্ত একজন ভার্সিটির স্টুডেন্ট। ফাইনাল ইয়ারে। আর নিশাত ফার্স্ট সেমিস্টারে। আগে পাড়ায় থাকতো। রশ্মি এই মেয়েকে যতোটুকু পছন্দ করে তার থেকে রশ্মির মা বেশি। তবে নিশাতও কম না। তবে একজন আরেকজনকে প্রমিজ করেছে একজন আরেকজনকে ভালোবাসবে বিয়ের পর। রশ্মি জবে ঢুকলেই বিয়ের কথা শুরু হবে।



-এই যে সরেন সরেন। রোগীকে ওটিতে নিতে হবে। ওয়ার্ড বয় নিতে এলো।

-মা একদম চিন্তা কোরোনা আমি ফিরবো। একদম সুস্থ হয়ে।



মা নীরবে কাঁদছেন। পিতৃহারা একমাত্র ছেলে। কি না কি হয়। "উফফ মা কাঁদবেন না তো।" বলে চোখ মুছ দেয় নিশাত।



-ডক্টর প্লীজ সেভ দেম। ওরা আমার প্রাণ।

-চেষ্টা তো চলছে। আইসিউতে আছে দুজন দেখেন না?

-প্লীজ ডক্টর! কেঁদে-ঘেমে-নেয়ে একহারা অবস্থা।

-ডক্টর দু নম্বর তিন নম্বর দুজনই কেমন যেনো করছে।

-কি?! এইমাত্র না ঔষধ দিয়ে এলাম?



ফ্যাকাসে হয়ে গেছে জাদুকরের চেহারা। এ যে তার স্ত্রী-সন্তানই। ছুটে গেলো এক নিমিষে।



টিটিটিটিটিটি। সমান তালে বীপসটা শুরু হলো তার স্ত্রীর হার্টবিট রিডারে। হঠাৎ দেখা গেলো প্লেইন হয়ে গেছে রিডিংটা। সবার মুখ কালো হয়ে গেলো। এর ঠিক দু মিনিট পর বাচ্চাটা মারা গেলো। পুরো ইউনিট স্তদ্ধ হয়ে গেছ।



"নায়লা, তন্ময় তোমরা কথা বলো আব্বু আব্বু" পাগল হয়ে যাচ্ছে তানজিম। হঠাৎ চুপ হয়ে গেলো সে। আধা মিনিট পর কেবিন থেকে বেরিয়ে পড়লো।



ওটি থেকে বেরিয়ে ডক্টর হাসিমুখে তাকালেন রশ্মির মা ও নিশাতের মুখে।



"অপারেশন সাকসেসফুল" খুশী ছড়িয়ে পড়লো আত্নীয়দের ভেতর।



এক সপ্তাহ পর। কেমোথেরাপি দিচ্ছে রশ্মি। ভয় হচ্ছে নিশাতের। হঠাৎ ভেতরে চিৎকার চেঁচামেচি শোনা গেলো।



-আরে লেভেল কমান। এই লেভেলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হবে।

-কি কমাবো? অলরেডি কমানো আছে দেখেন না?



হঠাৎ বার্স্ট করলো মেশিনটা। উঠে পড়েছে রশ্মি ওটার ভেতর থেকে। ডাক্তার ছুটে পালালো। কিন্তু একি। সামনে আরেক জন। তার দিকে ধেয়ে আসছে।



বুউউম! তুবড়ে গেলো। একটা নার্স মারা পড়লো। "উপস স্যরি" বললো তানজিম, জাদুকর পাগল হয়ে গেছে। কেবিনে ঢুকেই ডাক্তার থরথর করে কাঁপা শুরু করলো। কাঁধে হাত দিলো কেউ একজন।

-ভয় পাবেন না।

-এব এব এব বাবা তুমি?



মানুষটার শরীরে লাল আভা জ্বলজ্বল করছে। দুহাতে গোলার মতো কি যেনো।



-এই কে তুমি? এখানে কি? পাগলা জাদুকর তানজিম কেবিনে ঢুকেই অদ্ভুত এই দৃশ্য দেখতে পেলো।

-আমি...রশ্মি...রশ্মিমানব

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.