![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাঁয় বন্ধু! আমি হাসিখুশি একজন তরুণ। হাসতে ও হাসাতে ভালোবাসি। লেখতে ভালোবাসি। ভালোবাসি মানুষের সেবা করতে।
ঘটনা-১
অনেক দিন পর বাসায় এসেই শম্পা দেখল- ফ্রিজ খোলা। খাবার-দাবার সব নিচে পড়ে আছে। অনেক খাবার সাবাড়ও হয়ে গেছে। গালে হাত দিয়ে শম্পা ভাবতে লাগল- বাসায় কি চোর এসেছে। না তো, সব জিনিস তো ঠিকই আছে। জায়গামতোই আছে। চোর আসলে তো সব জিনিস ঠিক থাকার কথা না। তাহলে ফ্রিজ খুলল কে?
বাসায় তো কোন মানুষ ও ঢুকতে পারবেনা। বাসার চাবি তো কারো কাছে নেই। তাহলে খাবার খেল কে?
কোন প্রশ্নের-ই- উত্তর মিললনা। ঘটনার নেপথ্যে কে বা কারা আছে, কাউকে খুঁজে পাওয়া গেলনা। কারো হদিস ও মিললনা।
এবার শম্পার মনে পুরো দমে ভূতের ভয় ঢুকে গেল। ফ্রিজ খুলে শুধু মাত্র খাবার খাওয়ার কাজ একমাত্র ভূত-ই- করতে পারে।
ভূতের ভয় নিয়েই সে সেই বাসায় জীবন-যাপন করতে লাগল।
এরপর দু-এক দিন পর পর এ ঘটনা ঘটতে লাগল। শম্পার মনের ভয় বেড়ে গেল। না ভূতটা বেড়ে গেছে। যে কোন উপায়ে তাঁকে তাঁড়াতে হবে। এরপর এ হুজুর ও কবিরাজ, দোয়া, তাবীজ, বাসা বন্দ করা সহ কত কিছুইনা করা হল। কিন্তু কোন ভাবেই ভূত দূর হচ্ছেনা।
অস্থির শম্পা। কি যে করা যায়...
ঘটনা-২
কয়েক দিন পর। বাসায় কেউ নেই। শম্পা তাই মনের সুখে ঘুমাচ্ছিল। হঠাৎ কোন এক আওয়াজে শম্পার ঘুম ভেঙ্গে গেল। চোখ খুলতেই সে দেখল, বানরটা তাঁর দিকে তাঁকিয়ে হাসছে। কি করবে বুঝতে পারছিলনা শম্পা। প্রচন্ড ভয়ে তাই সে চিৎকার করে কান্না শুরু করে দিল। শম্পা যত জোড়ে কান্না করে, বাঁনর তত বেশী হাঁসে, আরো বেশী তাঁর কাছে আসে।
সে যে দৌড়ে পালাবে, তার ও রাস্তা নেই। বেড রুমের দরজার ঠিক মাঝে যে বাঁনরটা বসে আছে। ভয়ে শরীর কাঁপছে, তাই মোবাইলটাও সে টিপতে পারছে না। সময় যত যাচ্ছে, বানর ততো কাছে আসছে। শম্পার শরীরও ভয়ে নীল হয়ে যাচ্ছে।
এক পর্যায়ে শম্পা জানালা দিয়ে চিৎকার শুরু করল- ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে। তাই মুখ থেকে কোন আওয়াজ -ই- বের হচ্ছিলনা। সে শুধু বলছিল- বা.. বা.. বান...র, বা.. বা.. বান..র। পথচারীরা কিছুই বুঝতে পারছিলনা। শুধু একজন নারীর বা..নর, বা..নর আর্তচিৎকার শুনছিল। শম্পার চিৎকার বেড়ে গেলে পথচারী ও বিল্ডিংয়ের সব মানুষ মিলে তাঁর বাসায় এসে দরজা ধাক্কানো শুরম্ন করল। কিন্তু দরজা খুলবে কে?
এক পর্যায়ে তাঁর স্বামীকে ফোন দেয়া হলে তিনি আসলেন, ততোক্ষণে শম্পা ভয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। দরজা ভেঙ্গে বাসায় ঢুকলেন। সবাই দেখলেন যে, বানরটা বেশ ভাব নিয়েই ফ্রিজের খাবার খাচ্ছে। অনেক মানুষ দেখে বানর মহাশয় প্রথমে একটু ক্ষেপেই গেলেন। কিন্তু শক্তিতে এত মানুষের সাথে পেরে উঠবেনা বুঝতে পেরে, জান যাওয়ার আগেই সবাইকে ভেংচি কেটে বারান্দা দিয়ে আস্তে লাফিয়ে সম্মানের সাথে পলায়ন করলেন।
এবার শুরু হল শম্পার শশ্রুষা। তাঁর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে, কেউ কেউ আফসোস করে বলছিলেন- আহা! ভয়ে মেয়েটা কি মারাই গেল নাকি!
যাক তারপর তাকেঁ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। সেখান থেকে তার সুস্থ হয়ে ফেরা।
এবং বুঝতে পারা যে, ফ্রিজের খাবার ভূত নয়, বানর -ই - খেত এতদিন।
এ ঘটনা মনে পড়লে শম্পা ও বিল্ডিংয়ের সব মানুষ আজও হাসে।
আসলেই অদ্ভূত এক ঘটনা!
©somewhere in net ltd.