![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাঁয় বন্ধু! আমি হাসিখুশি একজন তরুণ। হাসতে ও হাসাতে ভালোবাসি। লেখতে ভালোবাসি। ভালোবাসি মানুষের সেবা করতে।
ঘটনা-১
মেয়েটির সাথে ছেলেটির পরিচয় হয় ছাত্র জীবনেই। পরিচয় থেকই প্রেম। দীর্ঘদিন সুন্দরমতো প্রেমও চলছিল। ছেলেটি অনেক ভালো ফলাফল করে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে। পরবর্তীতে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন।
ডক্টরেট ডিগ্রি না থাকলে ভার্সিটিতে প্রমোশন হয়না। তাই ছেলেটি পি, এইচ, ডি করার জন্য দেশের বাইরে চলে যায়।
বিদেশে যাওয়ার আগে মেয়েটিকে ছেলেটি বলে, দেখো- তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি। পি, এইচ, ডি শেষ করে দেশে ফিরেই আমি তোমাকে বিয়ে করব। মেয়েটিও কান্না করে বলে- আমিও তোমার ফেরার অপেক্ষায় থাকলাম।
বিদেশ থেকেই ছেলেটি মেয়েটির সাথে প্রায়ই কথা বলে। খোঁজ খবর নেয়। মেয়েও সুন্দরমতো ছেলের সাথে কথা বার্তা বলে। এভাবেই দিন কাটছিল।
দেখতে দেখতে চার বছর শেষ। ছেলেটির পি, এইচ, ডি ও কমপ্লিট। আর কদিন পরেই সে দেশে ফিরবে। দীর্ঘ দিনের প্রেমিকাকে বিয়ে করবে। কত আনন্দ তাঁর মনে।
সব আনন্দ নিয়েই ছেলেটি দেশে ফিরে। ভার্সিটিতেও ক্লাস নেওয়া শুরু করে। মেয়েটিকে বলে- সবই তো হলো। চলো, এবার আমরা বিয়ে করি। মেয়েটি বলল- দেখো, আমি আসলে একটা কথা গোপন রেখেছিলাম, তোমাকে বলিনি, বাকি এখন বলতে হচ্ছে। সেটা হলো, তুমি বিদেশে থাকা অবস্থায় আমার ভালো একটা বিয়ের প্রস্তাব এসেছিল। তাই দেরী না করে আমি বিয়ে করে ফেলেছি। কথাটা গোপন রাখায় আমি দুঃখিত।
ছেলেটি মেয়েটির মুখে এ কথা শুনে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলনা। কিন্তু যখন বিভিন্নভাবে মেয়েটির কথার বাস্তবতা ও সত্যতা পেল, ছেলেটি তখন মানসিক রোগী হয়ে গেল।
এক পর্যায়ে ছেলেটি সুস্থ হল। এবং দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করল। জীবনে আর কোন মেয়েকে বিশ্বাস করবেনা এবং কোন মেয়ের সাথে কোন রকম সম্পর্কে জড়াবেনা।
চলছে ছেলেটির নিঃসঙ্গ জীবন...। বাড়ছে তাঁর বয়স।
ঘটনা-২
অধ্যাপনা এবং অধ্যয়ন করেই কাটছে লেকচারার এই ছেলেটির জীবন। প্রেমের জীবনে ব্যর্থ হলেও, অধ্যাপনা জগতে সফল এই লেকচারার। প্রেমিকার কাছে পছন্দেও মানুষ হতে না পারলেও,স্টুডেন্দদের কাছে তিনি অত্যন্ত প্রিয় টিচার হিসাবেই গন্য হয়েছেন।
অধ্যাপনা করতে করতে লেকচারার থেকে এক সময় তিনি সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। অধ্যাপনা জীবনে পদোন্নতি হলেও, বাস্তব জীবনে তাঁর কোন পদোন্নতি হয়নি। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে তিনি নিঃসঙ্গ পজিশনে -ই - আছেন।
ইতোমধ্যে ঘটনাক্রমে তাঁর ভার্সিটির তাঁর -ই- ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হয়ে ইঞ্জিয়ারিং শেষ করেছেন টুনি নামের এক তরুণী। যিনি অধ্যাপক সাহেবের বিশ্বাসঘাতক প্রেমিকার চাচাতো বোন।
তরুণীটি চার বছর তাঁর টিচারকে অত্যন্ত ভালো মানুষ হিসেবেই পেয়েছে। তাঁর টিচারের সব বিষয়ও তরুণীটি ভালোভাবেই জানত।
তরুনীটি ভাবল- স্যার এত ভালো মানুষ, অথচ আমার বোনের কারনেই কিনা এত দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছে! যেভাবেই হোক, আমি স্যারকে বিয়ে করব। তাঁকে জীবনে সুখী করব। ভাবনা অনুযায়ী স্যারকে সে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাল। "কিন্তু চুন খেয়ে যার মুখ পুড়ে যায়, সে নাকি দুধ দেখলেও ভয় পায়।" জীবনে এত বড় ধাক্কা খাওয়ায় প্রফেসর সাহেব আর কোন মেয়েকেই বিশ্বাস করেন না। যত ভালো মেয়েই হোক না কেন। তাই তিনি তাঁর ছাত্রীর প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দিলেন।
ছাত্রী নাছোড় বান্দী। তাঁর প্রস্তাব নাকচ করায়, সে পার্লার থেকে বউ সেজে, অভিভাকদের সাথে নিয়ে স্যারের অফিস কক্ষে ঢুকল। ছাত্রীর এ অবস্থা দেখে তো স্যার পুরাই থ। কি করবে বুঝে উঠতে পারছিলেন না।
ছাত্রী বলে উঠল- স্যার আপনাকে বিয়ে করতেই হবে। হয় আমাকে এখন বিয়ে করবেন, নয়তো কবে বিয়ে করবেন, সে প্রতিজ্ঞা সবার সামনে এখন করবেন। স্যার তো পুরাই চুপ। এরকম সিচুইয়্যেসনে কি আর কথা বলা যায়?
ভার্সিটির ইতিহাসে এরকম ঘটনা এই প্রথম। তাই সব টিচার, স্টুডেন্ট ও স্টাফরা এসেছেন, সবাই বলছেন, স্যার! বিয়েটা করে ফেলেন। ভার্সিটিতে আপনি ইতিহাস হয়ে থাকবেন। সবার অনুরোধে দীর্ঘ সময় পর প্রফেসর সাহেব অফিস রুমেই বিয়ে করলেন। আর শুরু হল, সে কি হাত তালি...। কি আনন্দ! সবার সবার মুখে মুখে টুনি ভাবি জিন্দাবাদ, টুনি ভাবি জিন্দাবাদ, স্লোগান শুরু হয়ে গেল।
এখন তিনি অধ্যাপক হয়েছেন। বিয়ের দশ বছর পেরিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে টুনি ভাবি ও প্রফেসর সাহেবের কোল আলোকিত করে এসেছে ফুটফুটে ছেলে সন্তান। সে এখন স্কুলে পড়ে।
বউ, বাচ্চা সব মিলিয়ে এখন বড়ই সুখে আছেন অধ্যাপক সাহেব।
©somewhere in net ltd.