পাবনা কত দূর!!

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৬

আজ সাতসকালে কেন জানি আমার কুরআন তেলাওয়াত বা ওয়াজ-গজল এই টাইপের কিছু একটা শুনার খুব ইচ্ছে হইলো। বোধহয় শয়তান আমার আশপাশ ছাইড়া একটু পান-সিগারেট খেতে গেছিল। ভাবলাম এই সুযোগে আমি একটু ওয়াজ শুনি, ওয়াজ শুনার জন্য ইউটিউবে না গিয়ে একটা ইসলামী গ্রুপে হান্দাইলাম; গুরুপের নাম "পীর মুরিদী বর্জন করি কোরআন সুন্নাহে জীবন গড়ি"। নামটাকে মনে মনে হাজারে-বিজারে লাইক দিলাম।
-তো প্রথমে দেখলাম এক বান্দা চরমোনাই পীরের ওয়াজ শেয়ার করছে; আর ক্যাপশনে বেজায় গালাগালি দিয়া আজকের দিনটা শুরু করছে। আমি বাবা আজকে আর এসব গালাগালিতে নেই, শয়তান পাশ থেকে একটু দূরে গেছে; হেতি আসতে আসতে দেখি কিছু একটা করা যায় কিনা।
-আরেকজন দেখলাম পোস্ট মারছে; জাকির নায়েক একটা খৃস্টান, ইহুদীদের দালাল, আপনারা রাজি থাকলে ১ চাপুন না থাকলে ২ চাপুন, অহ তুক্কো!! **রাজি থাকলে হ্যা বলুন না থাকলে না বলুন। আমার আবার খুব দরদ লাগলো পোস্টদাতার প্রতি, বেচারা গরীব মানুষ, সকালের নাস্তা-টাস্তা করতে পারেনাই বোধহয় ; ধর্ম বেইচ্চা লাইক-কমেন্ট পেলে এগুলো দিয়ে কিছু নাস্তা-টাস্তা করবে, এই আরকি!!
- আরেক বান্দা ভিডিও আপলোড মারছে; ক্যাপশন লেখা, "বাংলাদেশের মসজিদগুলো কি ওলিপুরীর বাপ-দাদার সম্পত্তি নাকি"??
-ভাবলাম ওয়াজ শুনার আগে কমেন্টে একটু চোখ বুলিয়ে নেই; দেখলাম কমেন্টে কেউ বলছে ওলীপরী একটা মাদারচো'*.., ওলীপরী ভন্ড!! ওলীপুরী কাফের!! ইত্যাদি ইত্যাদি।
- আবার কয়েকজন বলছে, ওলীপরীর মতো আলেম এই বাংলার জমীনে নেই, যারা ওনাকে গালাগালি করতেছে তারা কাফের।
-মনে মনে চিন্তা করলাম; ওয়াজটা একটু শুনে দেখি কে কার বাপ-দাদার মসজিদ দখল করতেছে।
- তো ওলীপুরী হুজুরের বক্তব্য হুবহু; " আহলে সুন্নাতু ওয়াল জামাত পরিষদের মাধ্যমে ইমাম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার, লা মাহজাবীদের গালে চপেটাঘাত করার জন্য, লা মাহযাবীদের কান মলা দেবার জন্য।
যেসব মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন, মুসল্লি এবং মসজিদের কর্তৃপক্ষ সব্বাই হানিফী মাজহাবের অনুসারী, তাদের মসজিদের ইমামকে জানিয়ে দেওয়া দরকার; যেসব ফেৎনাবাজ মুসল্লি নামাজের সময় উচ্চস্বরে আমিন আমিন বলে। ইমাম যেনো নামাজ শেষ করেই জিজ্ঞেস করেন; আমিন কে বলছে? যে দাঁড়াবে, সাথে সাথে তাকে বলবেন; আমিন আমিন বলা কোন হাদিসে পাইছত?? যদি না দেখাতে পারে, ফেৎনাবাজগুলারে কান মলা দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দিবেন!!
-টিক এই ওয়াজটার সাথে এড করা আরেকজন বক্তা ওলিপুরীকে লক্ষ করে বলছে; "মসজিদ থেকে বের করে দেওয়া হারাম, তাছাড়া উচ্চস্বরে আমিন বলা তিন মাজহাবেই আছে, হাদিসে আছে। ইত্যাদি ইত্যাদি।
-এই ভিডিওতে জাকির নায়েকের ও বক্তব্য এড করা; সেও এ বিষয়ে সুন্দর করে বিভিন্ন রেফারেন্স দিয়ে ভিন্নভাবে বক্তব্য দিচ্ছে; আমি মনযোগ দিয়ে শুনছি আর শুনছি, শুনতে শুনতে
হটাৎ কি জানি কি আমার হয়ে গেলো, চিল্লানি মাইরা কইলাম; একটা একটা ফেৎনাবাজ মোল্লা ধর, ধইরা ধইরা বস্তায় ভর!!
- ম্যাচের কয়েকজন ভাই-ব্রাদার ধর-ধর বইলা আমার রুমের চারদিকে খুজাখুজি করে আমারে জিজ্ঞাসাইতাসে; কই কই??
- আমি উল্টা তাদেরকে শুধাইলাম; মোল্লারা আপনাগরে কি অচ্ছে?? আপনারা মোল্লাগরে বস্তাবন্দী করার জন্য এক্কেরে রেডি হয়ে বইসা আছেন কেন??
- আমার উল্টা-পাল্টা কথা শুনে একজন আরেকজনকে ফিসফিস করে বলতেছে; হেতেরে মনেলয় সাতসকালে ভূতে-চুতে ধরছে। চল মাজার গেইটে গিয়া দেখি মোল্লা পাওন যায় কিনা।
- তারা যাবার সাথে সাথে আমি তাড়াহুড়া করে বস্তা খুজা শুরু করলাম, কারণ; শাহজালাল সাবের মাজার গেইট আমার ম্যাচের পাশেই, তারা এক্ষনি আহসান হাবিব পিয়ার মার্কা ভুত তাড়ানোর মোল্লা নিয়ে এসে পড়বে; আমার বাবা তাত্তারি বস্তা রেডি করতে হপে।

০ টি +০/-০