![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জানার চেষ্টা করে চলছি
এলাকায় এক বড় ভাই ছিল, বয়সে আমাদের বড়। পড়াশোনা তেমন একটা করে নাই। অবশ্য তাঁর যে পড়াশোনা খুব বেশি দূর আগাবে না তা আমি ছোটবেলাতে বুঝতে পেরে ছিলাম। কারন ভাই আমার স্যার এর সামনে খুব একটা সোজা হয়ে বসতেন না। প্রায় দেখতাম সোফার হাতলে ভাই আমার পা দুখানা তুলে আধ শোয়া হয়ে পড়াশোনা করার নিদারুণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন! তো এক পর্যায়ে এসে চেষ্টা থামালেন, গেলেন বাবার দোকান দেখাশোনা করেতে। সেখানেও তাঁর খুব একটা মন বসতো না। খুব ক্রিকেট পাগল ছিলেন। বোলিং খুব একটা খারাপ করতেন না। তবে ব্যাটিং ছিল যেন তেন। ব্যাটিং করতে গেলে পা দুখানা তাঁর ভারী হয়ে আসতো, জায়গা থেকে সরা বন্ধ হয়ে যেত। তবে বল মিস করার পর একটা ছায়া শট খেলত। খুবই ভাবের সাথে, পা বাড়িয়ে প্রোফেসনাল প্লেয়ার এর মত! নন স্ট্রাইকিং এ দাড়িয়ে ভাবতাম আহারে শট খানা যদি আসল সময় খেলত! বলিউড এর সালমান খান সাহেব এর শক্ত মৃত( Die Hard) ফ্যান এর লিস্ট করা হয় তবে প্রথম ১০ জনের মধ্যে না থাকলেও ৫০ এর মধ্যে থেকে তিনি থাকবেনই। খান সাহেব যা করতো কোন কিছু বাদ পড়তো না। ব্রেসলেট থেকে শুরু করে শার্ট, জিন্স, জুতা, কি নেই তাঁর সংগ্রহে! এমনকি চুল ব্যাক ব্রাশ করতে যে অবস্থা দাঁড়াল তাতে তাঁর কপাল ২ ইঞ্চি না বেড়ে কোন উপায় ছিল না! কিন্তু শুধু কি কাপড় চোপড় থাকলে হবে, সেসব গায়ে দিয়ে খান সাহেব লাগা লাগবে না! খান সাহেব এর তো সেই শরীর!! ভাই শুরু করলেন জিম এ যাওয়া। শরীর এর কোন পরিবর্তন আসুক আর নাই আসুক কেনা শুরু করলেন নিজের চেয়ে দুই সাইজ ছোট কাপড় চোপড়। বডি যে বানাচ্ছে সেটা দেখানোর ও তো একটা ব্যাপার আছে। একদিন এসে বলল, জিম এ গিয়ে খান এর মত বডি হতে তো অনেক সময় লেগে যাবে তাঁর চেয়ে বরং নিজেরা একটা খুলে নিলে কেমন হয়? সকলে সমস্বরে সমর্থন জানালো। শুরু হল নিজেদের জিম। ভাই আমাদের ওস্তাদ (instructor) আমরা তাঁর সাগরেদ। সাবেক পড়ার ঘর হল আমাদের জিম। পুরু দমে শুরু হল ব্যায়াম। আমরা কোন মতে কিছুক্ষণ কসরত করার চেষ্টা করতে থাকি। তাও টেনেটুনে এক ঘণ্টা। কিন্তু ভাই বলে, “হবে না, তোদের দিয়ে কিছু হবে না, কম করে হলেও তিনটা ঘণ্টাতো চাই” ! ভাই কে দেখতাম দোকানে যাওয়ার আগে এক পর্ব করে যেত আর রাতে এসে আর এক পর্ব। তাঁর ধ্যান গ্যান হয়ে পরল জিম। কি রোদ কি বৃষ্টি, কি গরম কি শীত, ভাই আমার শরীর বানানোর সাধনায় লিপ্ত। কোন হলুদ কিংবা বিয়ের দাওয়াত থাকলে তো কথাই নেই, দোকানদারি ছেড়ে চুড়ে সন্ধায় এসে পড়তো। আর শুরু করতো শরীর ফোলানোর কসরত। আমরা তৈরি হয়ে বসে আছি, ভাই জিম এ কসরত এ ব্যস্ত। জিজ্ঞেস করতাম, ভাই এখন না করলে কি হয়? ভাই এর কথা হল জিম করে গেলে শরীর অন্তত ২ ঘণ্টা সুন্দর দেখাবে! অকাট্য যুক্তি! কসরত শেষ করে খান সাহেব এর ব্রেসলেট লাগিয়ে আর চাপা শার্ট হাকিয়ে কোন মতে যেত বিয়ে বাড়ি। এইবার শুরু হতো ভাইয়ার দম আটকে রাখার কসরত, তাতে যে বুক (chest) টা কম করে হলেও ২ ইঞ্চি বেশি ফুলে থাকে! সব সময় না, শুধু কোন তরুণী সামনে আসলে তখন আর আমরা যারা তাঁর সাগরেদ ছিলাম তাদের সামনে। আমরা সবাই ভাইয়ের কসরত দেখে আড়ালে বেশ হাসাহাসি করতাম। মজা হতো কোন মেয়ে যদি একটু বেশি সময় সামনে থাকতো তখন, ভাইকে দেখতাম বুক ফুলিয়ে রাখার কি কসরতই না করতে হতো। আর বিয়েতে বর কনের সাথে তোলা ভাইয়ার ছবি গুলু দেখে বেচারা বরের জন্য মায়া লাগতো। দেখতাম ছবিতে ভাইয়া এমন পোজ দিয়েছে যে, বেশিরভাগ সময়ই বর বেচারাকে ভাইয়ার কসরত করা ফোলানো হাতের পেছনে থাকত!
২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন:
দম বন্ধ হয়ে হেঁচকি উঠে নাই উনার কখনও !!
মজার পোস্ট ।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১০
জনাব বলেছেন: হেচকি কি আর বডির টেলা সামলাতে পারে!!
ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:০৯
তাশমিন নূর বলেছেন: হাহাহা। মজা পেলাম। আপনার ভাইয়ার কথা পড়ে আমার এক কাজিনের কথা মনে পড়ে গেল। তার একবার ভুঁড়ি বেড়ে যাচ্ছেতাই চেহারা হয়ে গেল। কিন্তু ভুঁড়ি কমানোর কোন চেষ্টা করে না। সেজেগুজে কোথাও যাওয়ার সময় যদি বলতাম- এত সেজে আর কী হবে, ভুঁড়ি তো সব বিনাশ করে দিল। সে বলত, আরে, রাস্তায় বের হলেই তো পেট ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলব।