![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাকে ছেড়ে যেতে পারবে এভাবে ? অশ্রুভেজা চোখে অনিকের প্রশ্ন ।
শেষবারের মতো অপরাধীর মত ওর চোখের দিকে তাকালো মেয়েটি ।
আমাকে মাফ করে দিও, অনিক । গলাটা এখনো কাপছে ফারিয়ার ।
৭ বছর কেটে গেলো ।।।
আম্মু আম্মু দেখোতো একটা পার্স পড়ে আছে ঐখানে । ৫ বছরের মেয়েটার ডাক শুনে তাকালো ফারিয়া ,দেখলো রাস্তায় একটা মানিব্যাগ পড়ে আছে । কি ভেবে যেনো গিয়ে উঠালো । পার্সটা খুলে খুবই অবাক হয়ে গেলো একটা ছবি দেখে । নাহ ভুল দেখছেনা সে ছবিটা তারই , ভার্সিটি থেকে স্টাডি ট্যুরে গিয়েই তুলেছিল ছবিটা । ঐ দিনগুলোর কথা মনে করে মুখটা মলিন হয়ে গেলো ওর ।
'আম্মু , চলতো পাপা গাড়িতে ওয়েট করছে ' । চিন্তায় ভাঙন পড়লো মেয়ের ডাক শুনে ।
ও হ্যা চলো অনেক দেরি হয়ে গেছে । এই বলে পার্সটা সাইডব্যাগে লুকিয়ে ফেলে গাড়ির দিকে চললো ফারিয়া ।
স্কুল গেটের বাইরেই গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলো আসিফ । ফারিয়ার হাজবেন্ড , পেশায় ব্যাংকার । অনেক ভালো ছেলে , ফারিয়াকে অনেক ভালোবাসে । ফারিয়াও ওকে কোনদিনই কস্ট দেয় না । ভালোও বাসতে পারে না , কারণ ভালোতো সে একজনকেই বেসেছিলো ।
পারিবারিক ব্যাস্ততায় সবকিছু স্বাভাবিক চলছিলো । কাল সকালে কক্সবাজার যাবে ওরা বেড়াতে । রাতে ব্যাগ গোছাচ্ছিলো ও । তখনই কুড়িয়ে পাওয়া পার্সটা চোখো পড়ে ওর । বুকের ভেতরে আবার ধক করে উঠে ।
কাপা হাতে পার্সটা নেয় । একটু নেড়েচেড়ে একটা ভিজিটিং কার্ড দেখে বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠে ওর ।
Dr. Anik Mahmud
MBBS, FCPS
Fellow in Medicine
কার্ডের শেষে একটা নম্বরও আছে ।
হঠাং কি যেন ভেবে বেডরুমের দিকে তাকালো ও । আসিফ ঘুমাচ্ছে মেয়েকে নিয়ে । ফোনটার দিকে তাকালো , ফোনটা নিয়ে কাপা কাপ হাতে নম্বর ডায়াল করলো ।
ওপাশ থেকে কলার টিউনে বেজে উঠলো তাহসানের প্রেমাতাল গানটি । ফারিয়ার সবচেয়ে প্রিয় গান এটি । রিং বেজে চলল কিন্তু কেউ উঠালো না কেউ। আবার রিং দিল । এবার ওপাশ থেকে কেউ ফোন ধরলো ।
''হ্যালো'', শুকনো গলায় বললো ফারিয়া ।
'কেমন আছো,ফারিয়া?
ওকে অবাক করে দিয়ে ওপাশ থেকে কেউ বলে উঠলো ।
তোমার গলাটা এখনো ভুলিনি আমি । প্রতি রাতেই তোমার একটা ফোনের অপেক্ষায় ছিলাম , অবশেষে তা পেলাম । আর কিছু চাই না আমার ।
তোমাকে না পাই অন্তত তোমার স্মৃতিগুলোকে হাতরেতো বেচে থাকতে পারবো । স্মৃতির পাতায় হয়ত তোমাকে নিয়ে হারিয়ে যাবো কোন এক গহীন অরণ্যে । যেখান থাকবেনা কোন বাধা । আটকাতে পারবেনা সমাজ আমাদের সেখানে ।সেখানে তুমি হবে আমার শুধুই আমার । এই বলে ডুকরে কেদে উঠলো অনিক ।
এতক্ষণ মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুধু কথাগুলা শুনলো ফারিয়া । আচল দিয়ে চোখ দুটি মুছলো । তারপর শুধু ঐ আগের কথাটাই বললো
আমাকে মাফ করে দিও, অনিক ।
এখনও গলাটা কাপছে ফারিয়ার ।
উতসর্গঃ অসমাপ্ত ভালোবাসা আমার
ফেইসবুকে আমি
©somewhere in net ltd.