![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক.
রাজশাহী আসার পরই প্রথমে মেসে উঠি । আমাদের মেসের নাম, স্বৈরতান্ত্রিক নিবাস।
আসলে এটাকে মেস বলাটাও ভুল হবে। পুরনো ধাচের একটা তিনতলা বাড়ি। ৮কাঠা জমির উপর নির্মিত বাড়িটির সামনে পিছনে বাগান, আর চারদিকে প্লাস্টার বিহীন ৫ফুটি দেয়াল দিয়ে ঘেরা। বাড়ির নিচতলাটা আমরা ভাড়া নিয়েছি।
আমরা বলতে আমরা ৭জন, এই ৭জনই আমরা মেসমেম্বার। আর উপরের দুটো তালা এখনো বুড়ো বাড়িওয়ালার কব্জায়।
আমাদের তথাকথিত মেস এর নামকরণটাও কিন্তু আমরাই করি। এই মেসে মুলত ২টা শ্রেণী রয়েছে। প্রথমটা হচ্ছে প্রজা শ্রেণী(ফার্স্ট ইয়ারের ৪জন; এদের বেশিরভাগ সময় গতর খাটাতে হয়), আরেকটা হচ্ছে শোষক শ্রেণী(স্বৈরাচারী ৩জন সিনিয়র বড় ভাই)
তো আমাদের মেসের শ্রদ্ধেয় বড় ভাই নাঈমঊদ্দীন ভাই। ভাই এর আরেকটা নাম আছে তমাল। ভারি জ্ঞানী মানুষ তিনি। বলতে গেলে মহাজ্ঞানী।
তার গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। তার একটা বিশেষ গুন তিনি হাড় কিপটে, একদম হাড়ে হাড়েই কিপটে।
তার এ বিশেষ গুনটার কারণে তার সাথে খেতে যাওয়াটা নিরাপদ না; বলাতো যায় না কখন আবার বলে বসে বিলটা দিয়ে দাওতো। তবে তার সাথে বাইরে যেয়ে নিয়মিত শিক্ষা পাচ্ছে প্রজা শ্রেণীর বাকি তিনজন(জয়,সোহান ও নয়ন)।
দুই.
চৈত্রের দ্বিতীয় দিন।
রোদের উত্তাপে ফসলের মাঠগুলো ফেটে বিভিন্ন দেশের মানচিত্রে রুপ নিয়েছ। রাজশাহী সিটির মাঠঘাট গরমে হাসফাস করছে, সেই সাথে মানুষগুলাও। সবাই এখন শুধু বৃস্টির অপেক্ষায়। মেসের সবাই তো মহাবিপদে পড়লাম, কি করা যায়
এখন। মেসমেম্বারদের বোর্ডমিটিং বসলো। সেখানে আমাদের তমাল ভাই একটি বুদ্ধি বের করলেন। বর্ষাবরণের ব্যাবস্থা করতে হবে, তাইলেই বৃস্টি আসবে। “বৃস্টির প্রধান নিদর্শন ছাতা কিনতে হবে সবার বুঝলে, জয়” গম্ভীর কন্ঠে বললেন তমাল ভাই।
আমাদের বুঝতে আর কস্ট হল না যে আমাদের দেয়া চাদা থেকেই নিজের ছাতাটা কেনার ধান্ধায় আছেন তমাল ভাই।
শত আপত্তি স্বত্তেও চাদা নিয়ে ২ দিন পর ছাতা নিয়ে মেসে হাজির হলেন তমাল ভাই। ছাতাগুলা নিয়ে একদম তার ট্রাঙ্ক এর ভিতর নিয়ে ঢুকালেন, কাউকে দেখালেনও না।
তিন.
একএক করে বর্ষাকালেরও ২৪টি দিন পার হয়ে গেল। তার মধ্যে আকাশ থেকে একফোটা জলও পড়লো না।২৮দিনের মাথায় হঠাত রাতের বেলা তমাল ভাইয়ের চিতকার শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেল। উঠে দেখি বৃস্টি হচ্ছে, কঠিন বৃস্টি!
বর্ষাকালের প্রথম বৃষ্টি, বরন করতে হবে তাকে। লোডশেডিং চলছিল তখন, অন্ধকারের ভিতরই তমাল ভাই ট্রাংক খুলে আমাদের হাতে হাতে ছাতা তুলে দিতে লাগলেন।
তড়িঘড়ি করে ছাদে চলে আসলাম আমরা। ছাতা উচিয়ে খোলা আকাশের নিচে যেতেই ঝমঝম করে বৃষ্টির ফোটা পড়তে লাগলো গায়ে । ঘটনা কি দেখার জন্য ছাতার দিকে তাকাতেই দেখি ছাতার গায়ে ইয়া বড় বড় ফুটো!!!
অন্যদের দিকে তাকিয়ে দেখি তাদেরও কাকভেজা অবস্থা, আর তমাল ভাইয়ের মুখে মিটিমিটি হাসি।
তিনি বললেন , ‘বর্ষাকে বরণ করতে হলে ভিজতে হয়, বর্ষাকে বরণ করবে অথচ ভিজবে না তা কি হয়!!! তাছাড়া অল্পদামে ছাতার মেকানিকদের কাছা ছেড়া ছাতাগুলা পেয়ে গেলাম তাই রেখে দিলাম। এখন আর কথা না বলে এবার বৃষ্টিতে ভিজ আর সবাই একসঙ্গে বলো, “জয় বর্ষাকালের জয়”
হ্যা বর্ষাকালের জয় ঠিকি হয়েছে, কারণ তমাল ভাই নিউমোনিয়ার এটাকে এখনো বিছানায় পড়ে আছে!!!!
২| ০৯ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:০২
সেকেলে ভূত বলেছেন: হুম, সব টাকা শেষ
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২১
সাইলেন্ট পেইন বলেছেন: হায় হায়। বেচারার অনেক টাকা লোকসান হবে নিশ্চই।