![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সেদিন দুপুরের ভোজনটা একটু অন্য রকম ছিল কারন সেদিন সবাই বাসায় ছিল, এই ব্যাস্ততার জীবনে কখনই আমাদের একসাথে খাওয়া হয়না। আজ অনেকদিন পরে সবাই একসাথে খাচ্ছি আর মা আজকে সবার পছন্দের খাবার বানিয়েছে।তেমনি এক অস্থির ভোজন করছিলাম সেদিন দুপুরে , তখনই ফোন আসল আব্বুর ফোনে । ফোনে কথা বলে তো আব্বুর চেহারার রঙই পাল্টে গেলো । নানুর শরীরের অবস্থা নাকি খুব সিরিয়াস , যেকোন সময় দম যায় যায় আর কি । আম্মু তো তখনই কান্নাকাটি শুরু করে দিলো ।সব কাজকর্ম বাদ দিয়ে পুরো পরিবার সমেত চললাম আমার নানুবাড়ি ।
নানুবাড়ি বলছি কারণ আমার নানা - নানী এখনও জীবিত আছে । তারা না থাকলে তখন মামা বাড়ি বলতাম । যাইহোক , নানুবাড়ি একটু গ্রামের দিকেতো । যেতে যেতে প্রায় রাত হয়ে গেলো । বাড়ি গিয়ে দেখলাম , কিসের কি ? সবাই সম্পূর্ণ সুস্থ সাবলীল । আসলে আমাদের সবাইকে বেড়াতে আনার জন্যই সব বড়মামার পরিকল্পনা ।কিছুটা বিরক্ত হলেও একটু খুশি খুশিও লাগছিলো । কতোদিন পর বেড়াতে আসলাম , অনেক মজা হবে কাজিনদের সাথে বিশেষ করে মামাত বোনগুলাতো আছেই ।
যাইহোক , বেশ একচোট খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়ে মামাতো ভাইয়ের সাথে ফিফা খেলতেছিলাম ল্যাপুতে । ঠিক তখনই ওর দিকে নজর পড়লো । আমার কাজিন । নাম রিমি , এবার জেএসসি পরিক্ষা দিছে । আগেতো অনেক পিচ্চিই ছিলো । এখন আবার হঠাত্ করে কেমন জানি বড়ো হয়ে গেল । অনেকদিন পর দেখলামতো তাই বুঝি এমন লাগতেছে । কমবয়সী মেয়ে দেখলে আমি সাধারণত তেমন কোন অনুভূতি পাই না , এদের অতটা ভালো লাগে না আমার তবে রিমি কে প্রথম দেখার পরই , কেমন জেনো একটা শিহরণ জেগে গেলো মনে। জীবনে কখন কাউকে ভাল লাগেনি বা কারো সাথে প্রেমও করি নি তবে ওকে দেখার পর কেন জানি মনে হল আমিও ভালবাসতে জানি।
মনে পরে অনেক ছোটোবেলায় ওর সাথে কত খেলেছি আর আজ কত বড় হয়ে গেছে............
আমি এইভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছি দেখে ও আমাকে বলে উঠল ,
-- ভাইয়া কি দেখো??????
আমি ভেবাচেগা খেয়ে বললাম, না তোকে দেখি যে পুচকি মেয়ে কত বড় হয়ে গেছে।
ওহ একটু মিষ্টি করে হাসল তারপর চলে গেল, আমি ভাবছিলাম আমার কাছে আরো কিছুক্ষন থাকবে কিন্তু না চলে গেল। আগে যখন আসতাম তখন সারাদিন আমাদের সাথেই থাকত কিন্ত এখন। আসলে মেয়ে বড় হয়ে গেছে তো তাই।
১৫,১৬ বছরের মেয়ের আলাদা একটা জগৎ থাকে, হঠাৎ করে সেখানে ঢোকা যায় না তবে তার আসে পাসে থাকা যায়।
রাত অনেক হয়েছে তাছাড়া গ্রামে তো ৮ টার পরই অনেক রাত আর এখন ১১ টা বাজে। সবাই শুয়ে পরল কিন্তু আমার ঘুম আসছে না, মানে আমি এতো তারাতারি কখনও ঘুমাই না। ঢাকাতে তো এই সময় আমরা ডিনারও করি না।
তবে যাই হোক গ্রামের শীতল হাওয়া সুন্দর এক শীতলতা দিয়ে যাচ্ছে আমার শরীরে। শহরে এই প্রাকৃতিক আবহাওয়াটাই আমরা সবাই মিস করি কারন ওইখানে এটা পাওয়া যায়না। তার উপর আবার রিমির কথা মনে পরছে, আমি বুঝতে পারছিনা আমি ওর কথাই কেন ভাবছি, আমি কি ওর প্রেমে পরে গেলাম নাকি????
.................................................................
সকালে ঘুম ভাঙল এক সুন্দর কন্ঠের ছোঁয়া পেয়ে, প্রথমে একটু রাগ হয়েছিল কারন কেউ এতো সকালে আমার ঘুম ভাঙালে অনেক রাগ লাগে, তবে রিমিকে দেখার পর আর রাগ করতে পারলাম না।
-- কি ভাইয়া এতো বেলা করে কেউ ঘুমায়, বাইরে আসো আর দেখো কত সুন্দর প্রকৃতি। ঢাকাতে কিন্তু এইগুলো পাবে না, তারাতারি বাইরে এসো।
-- ওর সাথে যাওয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না তাই তারাতারি করে রেডি হয়ে বাইরে গেলাম, আহ কি সুন্দর বাতাস, কি সুন্দর প্রকৃতি। ঢাকা শহরে আসলেই এগুলো দুর্লভ।
রিমি হঠাৎ আমার পাসে এসে দাড়াল, ভেজা শীতল চুলে কি সুন্দর দেখাচ্ছে ওকে। এখন ইচ্ছে হচ্ছে আমার হিমু হয়ে গিয়ে ২-৪০০ কবিতা লিখে ফেলি ওকে নিয়ে।
আমি যে হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি সেটা ও আবার দেখে ফেলল, আমি তারাতারি চোখ সরিয়ে ফেললাম। মেয়েরা নাকি চোখের ভাষা তারাতারি বুঝে কিন্তু স্বীকার করে না। টেরা চোখে আবার তাকিয়ে দেখলাম ও মিটি মিটি হাসছে, তবে কাহিনী কিছুই বুঝতে পারলাম না। হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম মাত্র ৭ টা বাজে ওর সাথে হাটতে হাটতে সামনের বাগানের দিকে গেলাম সাথে আমাদের সাথে ইভানও আছে মানে বড় মামার ছেলে।
কথা বলতে ইচ্ছে করছে ওর সাথে কিন্তু কি দিয়ে শুরু করব বুঝতে পারছি না, ছোটবেলায় কত মিসুক ছিলাম আমরা কিন্তু আজ কত দুরত্ত দুইজনের মাঝে। বড় হওয়ার এটাই সবচেয়ে বড় প্রবলেম।
-- তুই কিসে পরিস রে
-- হেহেহে, জানো না মনে হয় যে আমি এইবার নিউ নাইন।
-- ওহ সরি, ভুলে গেছিলাম।
(নিজেকে অনেক বড় গাধা মনে হচ্ছে, মেয়েদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তাও ঠিক মত জানি না, জানবোই বা কিভাবে আমি সারাটা জীবনই থেকে গেছি মেয়ে শূন্য হয়ে, বয়েজ স্কুল/ বয়েজ কলেজে পরা লেখা করেছি তাই জীবনে কখনও মেয়ে বন্ধু পাই নি আবার আমার কোন ছোট বোনও নেই যে তার সাথে কথা বলব)
-- ভাইয়া দেখো এই জায়গাটার কথা মনে আছে তোমার ???
রিমির কথায় তাকালাম বাগানের ডান দিকটাতে। বললাম,
-- না তো মনে নাই
-- আরে এইখানে আমরা ছোটবেলায় বিয়ে বিয়ে খেলাটা খেলতাম, তুমি হতে বর হতে আর আমি বৌ। হিহিহি
কথাটা বলেই হিহিহি করে হেসে উঠল, কি অদ্ভুত সেই হাসি, আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিলাম ওর মুখের দিকে, মনে হয় এই হাসির দিকেই হাজার হাজার বছর তাকিয়ে থাকি। মেয়েরা আসলেই মায়াবতীর জাত এরা সবই পারে।
গ্রামটা এই প্রথম অদ্ভুত লাগছে আমার কাছে আমি ছোট বেলায় অনেকবার এসেছিলাম এইখানে তবে চার বছরে এই প্রথম আসলাম। কালকে থেকে এই পর্যন্ত মনে হয় ৩, ৪ বার প্রেমে পরেছি।
বাগানের ওই দিকটাতে আবার তাকালাম, মনে মনে হাসলাম। ছোটবেলার সেই বর-বৌ খেলার কথা মনে পরে গেল। সেদিন বুঝতে পারি নি যে এই মিথ্যে খেলা যার সাথে খেলেছি তাকেই একদিন সত্যিকারের বৌ বানাতে ইচ্ছে করবে, সত্যি আমি ওকে ভালবেসে ফেলেছি এখন।
রিমি বলে উঠল,
চল ভাইয়া বাসায় চল, খেতে ডাকবে আবার। তারপর দুইজনে চলে গেলাম বাসার দিকে।
গ্রামে ৪ দিন ছিলাম আমরা কিন্তু তবুও ওকে বলতে পারি নি, আসলে আমি এইসব বেপারে অনেক ভীতু তাই।
আজ আমরা ঢাকা ফিরছি আর রিমিও আমাদের সঙ্গে যাচ্ছে , ওর পরিক্ষা শেষ তাই কয়দিনের জন্য আমাদের সাথে ঢাকা যাচ্ছে । আমি মনে মনে যে কি পরিমাণ খুশি হয়েছিলাম টা তোমাদের বলে বোঝাতে পারবো না।
আমিতো আবার আরেকটাবার তার প্রেমে পরতে চাই....।
কাহিনী কিন্তু এইখানেই শেষ না, তবে ঢাকার কাহিনী না হয় আরেকদিন বলবো। কারণ গল্পের মধ্যে ইন্টারয়েল থাকা ভাল
২| ২৬ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:০৬
আজিজার বলেছেন: ২য় পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
৩| ১৪ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:১১
সেকেলে ভূত বলেছেন: শীঘ্রই পাবেন
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:১৩
কামরুল_নুমান বলেছেন: পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।