![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতির কারণেই দেশে বেসরকারী খাতে বাজারজাতকৃত জন্মনিরোধক সামগ্রীর দাম বাড়ছে। সক্ষম দম্পতির প্রায় ৪৫ শতাংশ জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির বাইরে থাকলেও বাকি ৫৫ শতাংশের চাহিদাও মেটানো যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে দেশে পরিবার পরিকল্পনা ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে যে গতি সৃষ্টি হয়েছিল তা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে বাড়ছে দেশের জনসংখ্যা। বহু মানুষ জন্ম নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এর ফলে হাজার হাজার অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ হবে।
অপ্রত্যাশিতভাবে হাজার হাজার শিশু জন্ম নেবে। জনসংখ্যা সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠবে। সরকারীভাবে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে এসব সামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা থাকলেও তা দেশের সামগ্রিক চাহিদা মেটাতে পারছে না। এসব কারণে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম থেকে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর ছিটকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
২০০৪ সালের জরিপ অনুযায়ী, প্রতিবছর জন্ম নিরোধক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণকারীদের মোট চাহিদার ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ অপূর্ণ (আনমিট) থেকে যাচ্ছে। অথচ ২০০৭ সালেও এ হার ছিল ১১ শতাংশ। সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে পদ্ধতি গ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা বেড়েছে বলে ধারণা করা হয়। বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরকারের সরবরাহ বৃদ্ধি না পাওয়ায় বেসরকারী খাতের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হলেও সরবরাহে ঘাটতি থাকায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে দাম। সরকারীভাবে বিনামূল্যে বা অতিস্বল্পমূল্যে এসব সামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা থাকলেও শহর অঞ্চলে বসবাসরত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বড় অংশই এ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমদানি সংক্রানত্ম জটিলতার কারণে বিগত সরকারের আমলে একাধিক জন্মনিরোধক সামগ্রী বিতরণ বন্ধ থাকায় কনডম ও পিলের ওপর চাপ বেড়েছে। আর চাহিদার তুলনায় এ দু'টি পণ্যের সরকারী সরবরাহ কম থাকায় বেসরকারীভাবে বাজারজাতকৃত পণ্যের শরণাপন্ন হচ্ছে পদ্ধতি ব্যবহারকারীরা। কিন্তু বেসরকারী খাতেও সরবরাহ সীমিত হওয়ায় সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
সরকারী কর্মসূচীতে ঘন ঘন পরিবর্তন, জন্মনিরোধক পণ্য আমদানিতে স্থবিরতা, মাঠ পর্যায়ে সরবরাহে ঘাটতি এবং বেসরকারী খাতে মূল্যবৃদ্ধির কারণে গত চার দশকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে অর্জিত অভাবনীয় সাফল্য ঝুঁকির মুখে পড়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি না পাওয়ায় পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণকারীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। একই সঙ্গে গত কয়েক মাসে সরকারীভাবে প্রায় সব পদ্ধতির পণ্য সরবরাহ কমে যাওয়ায় কর্মসূচীর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। সরকারী উৎস থেকে যোগান না পাওয়ায় বাড়ছে বেসরকারীভাবে বাজারজাত পিল ও কনডমের চাহিদা। কিন্তু এ খাতেও সরবরাহ সীমিত থাকায় বাড়ছে অপূর্ণ চাহিদার হার। ইতোমধ্যেই ২০১০ সালের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার ৭২ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।
১৯৫৩ সালে এ দেশে সর্বপ্রথম জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু হয়। ওই বছর একদল নিবেদিতপ্রাণ সমাজসেবী পরিবার পরিকল্পনা সমিতি গড়ে তোলে। শুরুতে সমিতি জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণ এবং এ বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে। ষাটের দশকে এ কর্মকান্ডে যুক্ত হয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৬৫ সালে গড়ে তোলা হয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর।
শুরুর দিকে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীরা কার্যকর বন্ধ্যাকরণ ও জরায়ুর অভ্যন্তরে স্থাপনযোগ্য পদ্ধতির (আইইউডি) মাধ্যমে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতেন। স্থায়ী পদ্ধতির পরিবর্তে স্বল্পমেয়াদী পিল ও ইনজেকশন পদ্ধতির প্রচলনের পর নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকেই এগুলো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। দীর্ঘ আড়াই দশক ধারাবাহিকভাবে এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশের জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
বাজার থেকে সংগৃহীত তথ্যে দেখা গেছে, এসএমসির জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল (খাওয়ার বড়ি) নির্ধারিত মূল্যের তুলনায় এলাকাভেদে দেড় থেকে দিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে কম দামের পিল ফেমিপিল-র এসএমসি নির্ধারিত মূল্য ১৩.২১ টাকা। বর্তমানে এই পিলটি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। একইভাবে ফেমিকনের নির্ধারিত মূল্য ২০ টাকা। এটি এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত নরডেট-২৮ এর নির্ধারিত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৮.৮৫ টাকা। কিন্তু এই পিলটি এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যনত্ম দামে বিক্রি হচ্ছে। দু' বছর আগেও এসব পিলের দাম ছিল সর্বনিম্ন ৮ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা। এরও আগে ১৯৭৫ সালে বাজারজাত 'মায়া' ব্র্যান্ডের পিল প্রতি পাতা ৭০ পয়সায় বিক্রি হতো। ১৯৯০ সালে এর দাম ছিল ৬ টাকা।
অন্যদিকে কনডমের ক্ষেত্রে প্রায় সর্বত্রই নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হলেও গত দু' দশকে এর নির্ধারিত মূল্যই ব্যাপকহারে বেড়েছে। গত তিন দশকে সোস্যাল মার্কেটিং কোম্পানির (এসএমসি) বাজারজাতকৃত সবচেয়ে কম দামের কনডমের দাম প্রায় ২০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৭৬ সালে প্রতি পিস রাজা কনডমের দাম ছিল মাত্র ১৩ পয়সা। ১৯৮০ সালে এর দাম বেড়ে ১৫ পয়সায় উন্নীত হয়। ১৯৮৫ সালে এর দাম ২৫ পয়সায় পৌঁছে। ১৯৯০ সালে এর দাম ৫০ পয়সা নির্ধারণের দু'বছর পর আবারও ২৫ পয়সায় নামানো হয়। ১৯৯৭ সালে বেড়ে হয় এক টাকা। বর্তমানে 'রাজা' নামে কোন ব্র্যান্ড চালু না থাকলেও এর বিকল্প 'হিরো' কনডম বাজারজাত করা হচ্ছে। রাজা কনডম আলাদা করে একপিস বিক্রি হলেও বর্তমানে হিরো ৩টির প্যাকেট ছাড়া কেনা যায় না। আর খুচরা পর্যায়ে এ কনডমের প্রতি প্যাকেটের দাম ৮ টাকা। ফলে প্রতি পিসের দাম পড়ছে প্রায় ২ টাকা ৬৬ পয়সা। ১৯৯২ সালে প্রতি তিনটির প্যাকেট ৬ টাকা দরে বাজারে আসার পর সেনসেশন কনডমের দাম এখন ১২ টাকা। এছাড়া সেনসেশন সুপার ডটেড এবং ইউ এ্যান্ড মি নামে দুটি ব্র্যান্ড কনডম যথাক্রমে ১৬ ও ২০ টাকা দরে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৯৭৬ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত ১৪ বছরে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর দাম ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। প্রতি বছর গড়ে ১ শতাংশেরও কম মূল্যবৃদ্ধির কারণে পাইকারি ও খুচরা বিক্রিতে তা তেমন কোন প্রভাব ফেলেনি। বরং প্রতি বছরই চাহিদা ও বিক্রি বেড়েছে। কিন্তু ১৯৯০ সালের এপ্রিলে স্যোসাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) তাদের বাজারজাতকৃত পাঁচ ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর দাম ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করে। হঠাৎ করে মূল্যবৃদ্ধি ক্রেতাদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দু'বছরের মধ্যে সব সামগ্রীর বিক্রি ও ব্যবহার ব্যাপকহারে কমে গেলে ১৯৯২ সালে এসএমসি সকল সামগ্রীর দাম আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়। বাজার ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে দেশে সর্বজনীন কোন নীতি নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চাহিদা ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিবেচনা ছাড়াই মূল্য নির্ধারণ করা হয়। ১৯৯০ সালে হঠাৎ করে মূল্য বাড়ানো হলেও বর্তমানে তা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। একসঙ্গে সব পণ্যের দাম না বাড়িয়ে একেক সময় একেক ব্র্যান্ডের দাম বাড়ানো হয়। গত পাঁচ বছরে এসএমসির সব রকম সামগ্রীর দাম কমপক্ষে দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
হিসাব করে দেখা গেছে, অতিদরিদ্র পরিবারের কোন পুরম্নষ নিজে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহার করতে চাইলে তাকে প্রতি মাসে ১৫ দিন হিসাবে এ খাতে কমপক্ষে ৬০ টাকা ব্যয় করতে হয়। সবচেয়ে কমদামের কনডমের প্রতি তিনটির প্যাকেটের দাম ১০ টাকা। অন্যদিকে নারীর ওপর দায় চাপিয়ে খাওয়ার বড়ি গ্রহণ করলে মাসে ব্যয় হবে কমপক্ষে ৪৫ টাকা। সাধারণভাবে একে নগণ্য অর্থ মনে হলেও দৈনিক এক ডলারের (বর্তমানে ৬৯ টাকা) কম উপার্জনকারী কোন ব্যক্তির পক্ষে এটুকু অর্থ ব্যয় করাই বড় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়_ সরকারী হিসাবে যারা মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশেরও বেশি।
সংশিস্নষ্ট সূত্রগুলোর মতে, দেশের সকল দরিদ্র পরিবারের কাছে জন্মনিরোধক সামগ্রীর সরকারী সেবা কার্যক্রম সহজলভ্য করতে পারলে এসব পরিবারকে এ খাতের বাড়তি ব্যয় করতে হতো না। কিন্তু সরকারী কার্যক্রম এখনও অপ্রতুল থাকায় বিশেষ করে শহরের দরিদ্রদের কাছে এ সেবা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
দেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারকারীরা তিনটি উৎস থেকে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করেন। এক্ষেত্রে এখনও সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে সরকার। বর্তমানে সরকারীভাবে প্রতি ডজন এক টাকা ২০ পয়সা দামে কনডম বিতরণ করা হয়। এছাড়া বিনামূল্যে পিল, ইনজেকশন এবং নরপ্লান্ট সরবরাহ করা হয়। সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতির জরায়ুর অভ্যনত্মরে স্থাপনযোগ্য আইইউডি এবং স্থায়ী পদ্ধতির নারী ও পুরম্নষের বন্ধ্যাকরণ করার ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারের বাইরে বেশকিছু বেসরকারী সংস্থা (এনজিও) স্বল্পমূল্যে বা বিনামূল্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সরবরাহ করে থাকে।
সামাজিক বাজারজাত প্রক্রিয়ায় স্যোশাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) মুনাফাবিহীনভাবে দেশের সর্বত্র ফেমিকন, নরডেট-২৮, মিনিকন ব্র্যান্ডের খাওয়ার বড়ি এবং হিরো, সেনশেনস ও ইউ এ্যান্ড মি নামের কনডম এবং সোমজ্যাক্ট ব্রান্ডের ক্লিনিক্যাল ইনজেকশন বাজারজাত করছে। এছাড়াও ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানি অর্গানন বাণিজ্যিকভাবে দু'টি ব্র্যান্ডের খাওয়ার বড়ি বাজারজাত করে।
আইসিডিডিআরবির গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে খাওয়ার বড়ি ব্যবহারকারীদের ৪০ শতাংশই বাণিজ্যিক উৎস থেকে এগুলো সংগ্রহ করে। বসত্মিবাসীদের ৩৬ শতাংশ এবং বসত্মির বাইরের ৪৫ শতাংশ গ্রহীতা ফার্মেসি বা দোকান থেকে পিল কেনে। ৮০ শতাংশ পিল ব্যবহারকারীই এর জন্য মূল্য পরিশোধ করে। অন্যদিকে কনডম ব্যবহারকারীদের মধ্যেও ৪০ শতাংশ ফার্মেসি ও দোকান থেকে সংগ্রহ করে। এ পদ্ধতি ব্যবহারকারীদের অর্ধেক ঘরে বসে তা পেতে আগ্রহী। মোট ব্যবহারকারীর ৮৮ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করে। বসত্মি এলাকার বাইরের ৯৮ শতাংশ কনডম ব্যবহারকারীর কাছেই এর উৎস ও ব্র্যান্ড গুরুত্ব পায়।
বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ১৯৬০ এর দশকে সর্বপ্রথম জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর ওপর মূল্য আরোপ করা হয়। সে সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ডিপো- মালিক এবং পার্টটাইম এজেন্টরা টোকেন মূল্যে কনডম বিক্রি করতেন। এরপর পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএ) তাদের বিতরণকৃত সব রকম জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর ওপর মূল্য আরোপ করে। সে সময় অপচয় কমানোকেই মূল্য আরোপের কারণ হিসেবে দেখানো হয়। বলা হয়, বিনামূল্যে বিতরণ করায় বিপুলসংখ্যক কনডম অযথা নষ্ট করে ফেলা হয়। সামান্য হলেও মূল্য দিয়ে সংগ্রহ করলে এগুলোর ব্যবহার যথাযথ হবে।
দীর্ঘ এক দশক মূল্যব্যবস্থা অব্যাহত থাকার পর ১৯৭০ এর দশকে জন্মনিয়ন্ত্রণ বিষয়ে সরকারের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। সে সময় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শক্তিশালী করতে সারাদেশে ব্যাপকহারে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সাধারণ মানুষকে জন্ম নিয়ন্ত্রণে উৎসাহিত করতে সরকারী সেবার আওতায় জন্ম নিরোধের সকল সামগ্রীর ওপর আরোপিত মূল্য প্রত্যাহার করা হয়।
১৯৯০ সালের জুলাই মাস থেকে সরকারী মাধ্যমে সরবরাহকৃত কনডমের ওপর প্রতি ডজনে ১ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়। তবে মূল্য আরোপের কারণে বিতরণ কমে যাওয়ায় ওই বছরের নবেম্বরেই তা ৫০ পয়সা করা হয়। পরে ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে প্রতি ডজন কনডমের দাম ১ টাকা ২০ পয়সায় পুনর্নিধারণ করা হয়। তবে কনডম ছাড়া অন্য কোন পদ্ধতির সরকারী সরবরাহে এখনও কোন মূল্য আরোপ করা হয়নি। অন্যদিকে এনজিও মাধ্যমে বিতরণকৃত প্রতি পাতা খাওয়ার বড়ি অথবা প্রতি ডজন কনডমের দাম ক্ষেত্রবিশেষে ১ টাকা থেকে ১ টাকা ২০ পয়সা। ইনজেকশনের দাম প্রতিবারের জন্য ২ থেকে ৫ টাকার মধ্যে। তবে যেসব ক্রেতা এটুকু মূল্য পরিশোধেও অক্ষম রা এ কার্যক্রম থেকে যাতে বঞ্চিত না হন সে জন্যও এনজিওদের বিনামূল্যে সরবরাহ ব্যবস্থাও রয়েছে।
এছাড়া স্যোশাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) ১৯৭৪ সাল থেকে ভর্তুকি মূল্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বাজারজাত করছে। একইসঙ্গে এসএমসি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম প্রসারিত করতে ব্যাপক সচেতনতামূলক কমসূচী গ্রহণ করছে। ২০০৪ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই সময় পর্যন্ত ৩০ বছরে সম্পূর্ণ অলাভজনক দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিচালিত এ প্রতিষ্ঠানটি ২শ' ৮০ কোটি কনডম, ২৫ কোটি পাতা খাওয়ার বড়ি এবং ১২ লাখ ৩৩ হাজার ইনজেকশন বাজারজাত করেছে।
২০০৪ সালের জরিপ অনুযায়ী, পদ্ধতি ব্যবহারকারীদের ৩১ শতাংশ এসএমসির পণ্য ব্যবহার করে। খাওয়ার বড়ি ব্যবহারকারীদের ৪০ শতাংশ এবং কনডম ব্যবহারকারীদের ৭০ শতাংশই এসএমসির পণ্য ব্যবহার করে। ইনজেকশনের ক্ষেত্রে এ হার ৭ শতাংশ। ফলে এসএমসির জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এসব পদ্ধতি ব্যবহারকারী বিপুল সংখ্যক মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, অতীতে বিভিন্ন সময়ে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হলেও সরকারের জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় সামগ্রিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। ১৯৯৯ সালে এসএমসির কর্মচারীরা ধর্মঘটে যাওয়ায় বাণিজ্যিক বিপণন প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে সময় সরকারের পণ্য সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় দেশে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর কোন সঙ্কট দেখা দেয়নি। কিন্তু বর্তমানে সরকারের সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় বাজারে জন্মনিরোধক পণ্যের বড় রকমের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এনজিও বা এসএমসির পক্ষে বর্ধিত চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে খুচরা পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দামে এসব সামগ্রী বিক্রি করছে। এতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি এ খাতে অর্থ ব্যয়ে অনাগ্রহী সব শ্রেণীর মানুষই জন্মনিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতির বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে এ কার্যক্রমে অর্জিত সাফল্যের ধারাবাহিকতা হুমকির মুখে পড়েছে।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:২৩
জারনো বলেছেন: তাতে সমস্যা নাই হয়তো। তবে কোন কিছুর দাম বাড়লে আমরা সেই দ্রব্য ব্যবহারে সংযমী হই কিন্তু এটা ব্যবহারে সংযমী হলে খবর আছে !
২| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১০:৫৫
কক বলেছেন: স্প্যামিং করার জন্য এর চাইাইতে উত্তমপোস্ট আর কি হতে পারে?
বিস্তারিত জানতে
Click This Link
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:০৭
জারনো বলেছেন: আমার পোস্টের সাথে আপনার তিলামিঞার বিশ্বকাপের ভবিষ্যত বানীর সম্পর্ক কী? ওনারও কী জন্মনিয়ন্ত্রণ সমস্যা?
৩| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১১:০৬
ম.শরীফ বলেছেন: গ্রাম গঞ্জে এখন আর জন্মনিয়ন্ত্রনের জন্য কোন পদক্ষেপ দেখা যায় না। কোন টিভি চ্যানেল সচেতনতামূল কোন বিজ্ঞাপন ধারাবাহিক ভাবে এখন আর প্রচার করে না
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:১২
জারনো বলেছেন: এই জন্যই দেশে জনসংখ্যা বাড়ছে আশংকাজনক হারে। এদিকে সরকারের নজর দেওয়া উচিত। তা না হলে সংকটে পড়বে দেশ
৪| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১১:০৭
মুহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলেছেন: এটা নিয়ে মনে হয় সরকারের কেও ভাবে না।যারা বস্তিবাসী,গরীব তারা কিভাবে পয়সা দিয়ে জন্ম নিয়ন্ত্রন সামগ্রী কিনবে বা ব্যবহার করবে,এই জন্যই তো দেশে জনসংখ্যা বাড়ছে।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:১৫
জারনো বলেছেন: সরকারের পাশাপাশি আমাদেরও সচেতন হতে হবে। শুধু সরকাররে দিকে তাকিয়ে থাকলে এই সমস্যার সমাধান হবে না। তবে সরকারকে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী সহজলভ্য করতে হবে।
৫| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:২৩
আকাশের তারাগুলি বলেছেন: সরকারকেই এক্ষেত্রে কিছু একটা করতেই হবে। যত দ্রুত সম্ভব।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:৩৮
জারনো বলেছেন: অনেক দেরী হেয়ে গেছে আর বিলম্ব করার কোন সুযোগ নাই।
৬| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১:১৩
মুভি পাগল বলেছেন: যেন কাশফুলের নরম ছোঁয়া
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১:৩৩
জারনো বলেছেন: হায় হায় কইলেন কী? আমিতো টাস্কি খাইলাম। কোথায় পেলেন কাশফুলের নরম ছোঁয়া?
আমিতো দেখছি গোলাপে কাঁটা !
৭| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪৪
সাইফ হিমু বেস্ট বলেছেন: মুভি পাগল বলেছেন: যেন কাশফুলের নরম ছোঁয়া
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৫৫
জারনো বলেছেন: আর আপনি কি বল্লেন বুঝলাম না!
৮| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৩২
িপ্রয়পম বলেছেন: আমার হাতে ক্ষমতা থাকলে আপনাকে পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব করে দিতাম। ধন্যবাদ।
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৫৭
জারনো বলেছেন: দুঃখিত আপনারে হাতে সেই ক্ষমতা নাই বলে! ক্ষমতা থাকলে ওটুকু বাকী রাখতেন না। আর একটু আগে বাড়ুন। তবে ম------------------বার খুব খায়েশ আছিলো ! ধন্যবাদ আপনাকেও
৯| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:৪৮
বিপ্লব কান্তি বলেছেন: অনেক দেরী হেয়ে গেছে আর বিলম্ব করার কোন সুযোগ নাই।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:৫৬
জারনো বলেছেন: এর পর দেরী করলে লেট হয়ে যাবে কিন্তু মনে রাইখেন !
১০| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:০৩
মুক্ত মণ বলেছেন: সচিব বা মন্ত্রী হওয়া (৯৯% ক্ষেত্রে) একটি ব্যাবসা। এরা হল বর্তমানের রাজাকার। দেশকে নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবনা নেই। একটি বিপ্লব দরকার, সচিবালয়ের ছাদ থেকে এইসব পেটমোটা তেলতেলে জড়পদার্থগুলোকে ছুড়ে ফেলে দেয়া উচিৎ। অনেক ভালো সৎ মেধাবী মানুষ বাইরে আছে যাদের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ক্ষমতা দিয়ে সত্যিকারের কাজ শুরু করা সম্ভব। জিয়া+মুজিব তৈলচক্র নিপাত যাক। বাংলাদেশ মুক্তি পাক।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:৫৮
জারনো বলেছেন: অপদার্থ জড়পদার্থ এদের দিয়ে জ্বালানি কাষ্ঠ বানান, আর উনুনে ঢোকান পুঁড়ে যদি খাটি হয় !
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ১০:৫৪
এক রাশ তরঙ্গ বলেছেন: সব কিছুরই দাম বেড়ে যাচ্ছে, এই সেক্টর আর বাদ থাকবে কেন?