![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হঠাৎ করে আমাদের মুখের একদিকে কানের পাশে বৈদ্যুতিক শকের মতো তীব্র ব্যথা হয়, আবার চলেও যায়। একে বলা হয় ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া।
রোগের ধরন : আমাদের শরীরে ট্রাইজেমিনাল নার্ভ নামের একটি স্নায়ু আছে যা সাধারণত মুখ থেকে মস্তিষ্কে অনুভূতি সরবারহ করে। এই নার্ভে কোনো সমস্যা হলে হঠাৎ করে মুখের একদিকে কানের পাশে বৈদ্যুতিক শকের মতো তীব্র ব্যথা হয় আবার চলেও যায়। পুরুষদের তুলনায় নারীদের এই রোগ বেশি হয়।
কারণ : আমাদের মস্তিষ্কের নিচের অংশে শিরা বা ধমনীর সঙ্গে লেগে যদি ট্রাইজেমিনাল নার্ভ চাপ খায় তাহলে এই রোগ হতে পারে। এ ছাড়া বার্ধক্য, মাল্টিপল স্কেলেরোসিস, মস্তিষ্কে টিউমার বা অন্যান্য সমস্যার কারণেও এই রোগ হতে পারে। তা ছাড়া ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়ার রোগীদের যে যে সময়ে হঠাৎ তীব্র ব্যথা শুরু হয়ে যেতে পারে- শেভ করার সময়, মুখে হাত বুলালে, খাওয়ার সময়, পানি পান করার সময়, দাঁত ব্রাশ করার সময়, কথা বলার সময়, মুখ ধোয়ার সময়, হাসি দিলে, মেকআপ নেওয়ার সময়, তীব্র বাতাস মুখে লাগলে।
লক্ষণ : ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়ার রোগীদের এক বা কখনো একাধিক লক্ষণ দেখা দিতে পারে- বৈদ্যুতিক শকের মতো তীব্র ব্যথা।
ব্যথা কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়, সাধারণত দুই মিনিটের কম।
বারবার ব্যথা হয়, ব্যথা কয়েক দিন থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত থাকতে পারে।
দুটি এপিসোডের মাঝখানে সাধারণত ব্যথা থাকে না।
ট্রাইজেমিনাল নার্ভ যেসব জায়গায় অনুভূতি সরবারহ করে যেমন গাল, চিবুক, মাড়ি, দাঁত, ঠোঁট এবং মাঝেমধ্যে চোখ ও কপালে ব্যথা হয়।
ব্যথা মুখের যেকোনো একদিকে হয় (যেদিকের নার্ভ আক্রান্ত হয় সেদিকে)।
দিনে দিনে ব্যথার তীব্রতা ও ব্যাপকতা বাড়তে থাকে।
রোগ নির্ণয় : ব্যথার ধরন, কোথায় ব্যথা হয় এবং কী করলে ব্যথা বেড়ে যায়- এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর থেকে এবং সঙ্গে সঙ্গে কিছু নিউরোলজিক্যাল পরীক্ষা করলে রোগ নির্ণয় করে ফেলা যায়। রোগের কারণ নির্ধারণের জন্য কখনো কখনো এমআরআই, ইএমজি, এনসিএস ইত্যাদি করা লাগতে পারে।
চিকিৎসা : একজন ফিজিওথেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে থেকে এই রোগের চিকিৎসা করাতে হবে। চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে :
(ক) ওষুধ : ব্যথানাশক ওষুধ এসিটামিনোফেন, এনএসএআইডস,
অ্যান্টিকনভালসেন্ট কারবামাজেপিন, অঙ্কারবাজেপিন, গাবাপেনটিন, মাসল রিলাক্সেন্ট ব্যাকলোফেন।
(খ) রিহ্যাবিলিটেশন : ফিজিওথেরাপি- ইলেকট্রিক্যাল ইস্টিম্যুলেশন, আইস ম্যাসেজ, হট প্যাকস, বায়োফিডব্যাক; স্পিচ থেরাপি- কথা বলতে বা খাবার গিলতে যাদের সমস্যা হয়; কগনেটিভ বিহেভিয়েরাল থেরাপি; অ্যাডাপটিভ ইক্যুইপমেন্ট- টেলিফোন এয়ারসেট; ব্যায়াম- লো ইনটেনসিটি অ্যারোবিক এক্সারসাইজ; রিলাক্সেশন টেকনিকস- মেডিটেশন, নামাজ, প্রার্থনা।
(গ) শল্য চিকিৎসা : সাধারণত অন্যান্য চিকিৎসা কাজ না করলে শুধু তখনই শল্য চিকিৎসা করা হয়ে থাকে, মাইক্রোভাস্কুলার ডিকমপ্রেশন, গামা নাইফ রেডিওসার্জারি।
ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া নিয়ে জীবন চালানো বেশ কষ্টকর। এই রোগ পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে, কাজের সফলতা ও জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দেয়। এ জন্য একটি কার্যকরী সাপোর্ট গ্রুপের সদস্য হওয়া জরুরি যারা এই রোগের চিকিৎসা সম্বন্ধে তথ্য দেবে এবং তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে। আমাদের দেশে এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব। একজন ফিজিওথেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে থেকে চিকিৎসা নিলে রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং রোগী ভালো থাকবে।
@ডা. মোহাম্মদ ইসরাত হাসান
(সংগৃহীত)
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১৩
ধমনী বলেছেন: আপনি কি ফিজিওথেরাপিস্ট?