নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের সঙ্গ করিলে মানুষ তখন মানুষ হয়, জন্মদরা জংযাতনা থাকে না তার কোন ভয়। ওস্তাদ আব্দুল করীমে কয় নয়ন রাখ মাসুকপূর।ই-মেইল: [email protected]

কালনী নদী

সিলেট থেকে দিরাইর একটি বহমান নদী, আব্দুল করিমের কালনী।

কালনী নদী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিদ্ধান্তহীনতা! নাকি কাপুরুষতা? Yes! No? or Maybe.

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:৩৯

প্রথমেই একটা ভিডিও দিচ্ছি আশা করি সবাই মনোযোগ দিয়ে দেখবেন, তারপর ঘটনাটা পড়বেন।





রাজধানীর উত্তরার একটি বাসায় গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি গ্যাস লিকেজ থেকে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনায় আগুনে পুড়ে ইতিমধ্যেই মারা গেছেন সুমাইয়া আক্তারের স্বামী মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা শাহীন শাহ নেওয়াজ এবং তাদের দু সন্তান, পনের বছরের শার্লিন আর ১৬ মাস বয়সী জায়ান।
সুমাইয়ার খালাতো ভাই খিরকিল নওয়াজ বিবিসি- কে জানান, তারই আপন বড় ভাই নওশাদ জামান তাদের বোনের কথাগুলো রেকর্ড করেছেন। পরে টিউন করেছেন ফেসবুকে।
সুমাইয়া এখন ঢাকার একটি হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। আর তুলনামূলক কম দগ্ধ হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পর এখন স্বজনের বাসায় রয়েছেন শাহীন ও সুমাইয়ার আরেক সন্তান জারিফ।
স্বজনদের সাথে আলাপকালে সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘চিৎকার দিয়ে নামতেছি- আগুন লাগছে সাহায্য করেন। বাঁচান বাঁচান। গায়ে তো আগুন। তিন আর চার নম্বর ফ্লোর থেকে দরজা খুলছে। আমাদের দেখে দরজা বন্ধ করে দিছে। স্পষ্ট মনে আছে। সাত তলা থেকে নামছি। তিন তলার লোকেরা একটা তোষক দিয়ে যদি জড়ায়া ধরতো। একটা তোষক না হয় পুড়তো। আমার বাচ্চাগুলো তো বাঁচতো।’
ফেসবুকে পাওয়া অডিওতে সুমাইয়া বলেন, বাসার চুলায় গ্যাসের পাওয়ার কম ছিল। বাসায় ওঠলাম সিলিন্ডার গ্যাস ছিলনা। তিনদিন কিনে খেয়েছি খাবার। তারপর মিস্ত্রি এসে রাইজার বাড়িয়ে পাওয়ার ঠিক করে দিছে। তারপরও গ্যাস লিক করত। গ্যাসের গন্ধ পাইছি। জানালা খোলা রাখতাম।
তিনি বলেন, গ্যাসের গন্ধ পেয়ে রাতেও তার স্বামী মোমবাতি জ্বালিয়ে চেক করেছেন। পরে বলল, মনে হয় ওপরে ছাদ থেকে আসতেছে। ‘চুলা অল্প জ্বালিয়ে চায়ের পানি দিছি। ওর আব্বু বলল ঘরে গ্যাসের গন্ধ আসছে, ফ্যানটা ছেড়ে দেই। ফ্যান ছেড়ে জানালা খুলে দেয়ার জন্যে।’
সুমাইয়া বলেন, ‘জায়ান ওর বাবার কোলে। ফ্যানটা ছেড়ে দেওয়ার পরে দাউ দাউ করে আগুন। সেকেন্ডের মধ্যে, এত আগুন। আসলে ডাইনিং রুমটাই গ্যাস ভরা ছিল। শার্লিনের রুম ছিল রান্না ঘরের পাশেই। একটা জানালা সম্ভবত বন্ধ ছিল।’
এরপর আরও করুন ঘটনার বর্ণনা দেন সুমাইয়া। তিনি বলেন, ‘আমি আর শার্লিনের আব্বু নামছি। আগুন জ্বলতেছে গায়ে। চিৎকার দিয়ে নামতেছি- আগুন লাগছে সাহায্য করেন। বাঁচান বাঁচান। তিন আর চার নম্বর ফ্লোর থেকে দরজা খুলছে। আমাদের দেখে দরজা বন্ধ করে দিছে। একটা তোষক দিয়ে যদি জড়ায়া ধরতো। একটা তোষক না হয় পুড়তো। আমার বাচ্চাগুলো তো বাঁচতো। কত মানুষ সব তাকায়া আছে। কেউ আগায় না।’
‘পরে নীচে নেমে, কাপড় তো পুড়ে গেল। নীচে ছিল ছালার চট। টাইনা গায়ে দিছি। কত মানুষ, সবাই তাকায়া আছে, কেউ আগায় না’, বলেন সুমাইয়া।
তিনি বলেন, ‘বলছিলাম আমি মহিলা একটা চাদর দেন। কেউ দেয়না। বিল্ডিং এর মহিলারা কেউ দেয়না… আল্লাহ মাফ করুক সবাইকে। পরে নীচে নেমে চিৎকার দিয়ে দারোয়ানকে বললাম আমার দু ছেলে ওপরে আটকা পড়ছে, আপনারা তাড়াতাড়ি যান। তারা যেতে যেতে শার্লিন পুড়ে গেছে।’
সুমাইয়া বলেন, ‘শার্লিন পুড়েছে বেশি, গায়ে পা থকথক হয়ে গেছে। শার্লিন বলে, আমি তো বাঁচব না আমাকে মাফ করে দিও আম্মু। আমি বলি বাবা তুই বাঁচিস, আমি মইরা যাই। মানুষ এরকম হয়। একি খারাপ না? কেউ কাউরে একটু সাহায্য করে না। এটা কি কথা?’


লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয়- ইরফান কাজি।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৩:৫৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



ঢাকার মানুষ আর মানুষ নেই

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ ভোর ৪:২৪

কালনী নদী বলেছেন: আসলে ব্যাপারটা শুধু ঢাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই তা এখন দেশ ছাড়িয়ে পুরো এশিয়াতে ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা একই সম্প্রদায় এমনকি পাশাপাশি বাস করা সত্বেও একে অন্যের প্রতি উদাসীন।
আর গভীরে গেলে, লেখাপড়া অর্থ উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম, ছেলেমেয়েদের নিয়ে পিতামাথার উচ্ছাকাঙ্খা, প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ব্যবসায়িক মনোভাব। একজন শিক্ষার্তির কাছে প্রশ্ন করলে সে ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার বা ব্যবসায়ি হবার আশা রাখেন কিন্তু মানুষের মত মানুষ হতে চাইলেই বিপত্তি। সেবা ধর্ম এখন শুধু পুস্তক!
পুঁজিবাদ নয়, মানসিক বিকাশের মাধ্যমে আত্নিক জাগরনের ফলই হচ্ছে একটি শিক্ষিত জাতি আর সে লক্ষে দেশের নাগরিকদের মানবিক বিকাশে এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে জনসচেতনতার বিকল্প নেই।
আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ ভোর ৬:২১

বিষন্ন পথিক বলেছেন: ভার্চুয়াল জগতে (ইন্টারনেট) কাপাইতে ওস্তাদ আমরা, রানা প্লাজায় অসম্ভব মানবতা দেখেছি আমরা কিন্তু আইসোলেটেড ঘটনায় কেউ কিছু করেনা

৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:০৬

শাহাদাত হোসেন বলেছেন: এসবের জন্য আমাদের আইন দায়ী।

৪| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৫৭

প্রামানিক বলেছেন: কি মর্মান্তিক ঘটনা। শুনলে গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায়। শহরের মানুষগুলিই এরকম, কেউ কারো নয়, মানুষ মরে অথচ সাহায্যে এগিয়ে না এসে তাকিয়ে দেখে। ভয়াবহ শহুরে জীবন।

০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৫২

কালনী নদী বলেছেন: প্রামনিক ভাইয়া,
আপনার নামটার সাথে আপনিও মানুষ হিসেবে চমৎকার আর এইসব কিছু ভালোমানুষের জন্যই পৃথিবীটা আজও ধ্বংস হয়নি। আর আমরাও আপনাদের কাছ থেকে ফুলের সৌরভের মতন যে ভালোবাসা পাই তা মানবিক স্নেহে পরিপূর্ন!

৫| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:০১

সোজোন বাদিয়া বলেছেন: শহরের মানুষ মানে আমাদের জাতির শিক্ষিত এবং সচেতন অংশ। আমার মনে হয়, যেকোনা কারণেই হোক জাতিটার মানসিকতাতেই ধ্বস নেমেছে। ধন্যবাদ কালিনী ভাই এমন একটি হৃদয়বিদারক এবং লজ্জাষ্কর সত্য ঘটনা তুলে ধরার জন্য।

০৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৫৬

কালনী নদী বলেছেন: আপনার প্রত্যেকটা কবিতা, যা হৃদয় ক্ষত কে করে উপশম আর দেয় অনাবিল আনন্দ। পাশে থাকার আন্তরিকতা রইলো বন্ধু!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.