![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঈদ বনাম ইদ
মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন খান
২৬/০৬/২০১৭
গতকাল সময় টেলিভিশনে ঈদ বনাম ইদ বিষয়ক একটি আলোচনা অনুষ্ঠান দেখছিলাম। তিনজন আলোচকের মধ্যে একজন ইদ এর পক্ষ নিয়ে অন্য দুজন ঈদ এর পক্ষে নিজ নিজ মতামত তুলে ধরছিলেন। উপস্থাপক ইদ নিয়ে বিতর্কের মাঝে বারবার সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ খুঁজতে চেষ্টায় ছিলেন। “ই” পক্ষের আলোচক ভাষাকে চলমান নদীর স্রোতের সাথে তুলনা করে ই কে গ্রহণ করার যুক্তি উপস্থাপন করছিলেন। “ঈ”পক্ষের আলোচকরা ঈদ শব্দটি বাংলা একাডেমীর অভিধানে প্রচলিত ভুল বলা হলে ও দুটিই লিখা যাবে বলা আছে তাই সেটি গ্রহণ করার পক্ষে মত ব্যক্ত করছিলেন। ভাসমান নদীর স্রোতধারা হিসেবে মেনে নিলে ঈদকে মানতে হয়। তিনজন আলোচকই ছিলেন সাহিত্যিক,গবেষক, শিক্ষক ও সম্পাদক পর্যায়ের জ্ঞানী ব্যক্তি। একজন আলোচক ঈদের শাব্দিক তুলনা করতে গিয়ে সে রকম আরেকটি শব্দ বাংলায় প্রচলিত আছে বলে জানান। শব্দটি হচ্ছে “ইদ্দত”। তিনি আরো বলেন, ইদ্দত নাকি ইদ শব্দের একবচন আর বহুবচন হলো ইদ্দত। দুটি শব্দই নাকি আরবী। আসলে সে তথ্যটি সঠিক নয়। আমি কিছুক্ষণ হাসব না কাঁদব ভেবে পাচ্ছিলাম না। শেষে কাঁদার সিদ্ধান্ত নিলাম। কেননা বাংলা এমন একটি ভাষা যার জন্য ভাষাভাষীরা অকাতরে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে কুণ্ঠিত হননি। অথচ আজ আমরা জ্ঞানপাপীরা সে ভাষা নিয়ে চিনিমিনি খেলছি। কিছুদিন আগে আমি “বাংলার বারোটা” শিরোনামে ফেসবুকে অসংখ্য বানান ভুলের উদাহরণ সহ একটি ছোট্ট লিখা লিখেছিলাম। ফেসবুকে আমার পরিচিত জনদের অনেকেই নাখোশ হয়ে আমাকে আনফ্রেন্ড করেছে। আলোচকদের আলোচনা শুনে মনে হয়নি তাদের কারো আরবী ভাষা সম্পর্কে তেমন জ্ঞান আছে। তারা অবশ্য একটি মুল্যবান মত দিয়েছেন, সেটি হচ্ছে বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষ এ অভিধান রচনায় কোন ভিন্ন ভাষায় বা আরবী ভাষায় অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে এক্ষেত্রে সম্পৃক্ত করেননি যার ফলে এ বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। কথাটি নিঃসন্দেহে সত্য।
ঈদ হচ্ছে একটি আরবী শব্দ যা লিখতে ع ي د এই তিনটি অক্ষর লাগে। পূর্ণরূপ عيد যার বহুবচনে أعياد লিখা হয়। আরবী আইন এর নীচে যের দেবার পর সেটির উচ্চারন ধ্বনি ঈ বা ই+ই এর মত হয়। একটু টেনে বলতে হয়। যেমন ই—দ। সেক্ষেত্রে ঈ এর ব্যবহার প্রচলিত ভুল হলে ও অধিক গ্রহণযোগ্য বলে মনে করি। মোট কথায় ইদ না লিখে ঈদ লিখা যুক্তিযুক্ত, কারণ শব্দটির উচ্চারন ও অর্থ কোনটি বিকৃত হবার আশঙ্কা থাকেনা,তাই এটিই শুদ্ধ। এ রকম আরেকটি শব্দ হচ্ছে ঈমান। অনেকেই ঈমান না লিখে ইমান লিখেন যা অর্থের বিকৃতি ঘটায়
যারা ব্যাকরণ রচনা বা ভাষার নীতিমালা নিয়ে গবেষণা করেন তাদের অবশ্যই যে ভাষা নিয়ে লিখছেন সে ভাষার পাণ্ডিত্য থাকা বাঞ্ছনীয়। আমি কোন ভাষার পণ্ডিত নই তবে আরবী ভাষা নিয়ে সামান্য লেখাপড়া করার সুবাদে এতটুকু বলতে পারি, আরবী এমন একটি ভাষা, যার উচ্চারনে সামান্য ব্যতিক্রম হলে সম্পূর্ণ অর্থ বিকৃত হয়ে যায়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, মত্বর( مطر বৃষ্টি )-মত্বার
( مطارবিমান বন্দর), লাহম ( لحم মাংস) –লাহাম ( لحام ওয়েল্ডিং বা জোড়া লাগানো), মা ( ما না)-মাআ ( مع সাথে বা হ্যাঁ),
কালব ( كلب কুকুর)-কালব ( قلب অন্তর) ইত্যাদি। বলা বাহুল্য, আরবী ভাষার সঠিক ব্যবহারে ব্যাকরণের তিনটি বিভাগ অধ্যয়ন করতে হয়। নাহু,ছরফ ও তাজবীদ। পবিত্র কোরআন শরীফের বিভিন্ন স্থানে এমন কিছু শব্দ আছে যে গুলোকে কুফরি কালাম বলা হয়। উচ্চারনে সামান্য ভুল একজন মুসলমানকে এক মুহূর্তে অমুসলিমে পরিণত করতে পারে। তাই এহেন স্পর্শকাতর একটি বিষয়ে কথা বলার আগে বা নীতি প্রণয়নের আগে সে বিষয়ে প্রচুর জ্ঞান আহরণ করা প্রয়োজন। আর আরবী ভাষার কোন শব্দ বাংলা ভাষায় গ্রহণের ক্ষেত্রে নীতি প্রণয়নকারীদের সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি দেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।
২| ২৮ শে জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৩
মক্ষীরাজা বলেছেন: ভাইয়ুমণিতা!!!!!!!!!
বাহ!!!!!!!!
মুগ্ধ মুগ্ধ মুগ্ধ!!!!!!!!
ঠিক পরীর দেশের রাজণ্যদের লেখা !!!!!!!!
উলে জাদুরে। উম্মা
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জুন, ২০১৭ রাত ১২:০৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
ব্লগে স্বাগতম।
ঈদের শুভেচ্ছা