নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
দ্য এশিয়াটিক সোসাইটি......
দ্য এশিয়াটিক সোসাইটি (ইংরেজি: The Asiatic Society) কলকাতার একটি অগ্রণী গবেষণা সংস্থা। ১৭৮৪ সালের ১৫ জানুয়ারি ভারততত্ত্ববিদ স্যার উইলিয়াম জোনস বৃটিশ ভারতের তদানীন্তন রাজধানী কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতের তদানীন্তন গভর্নর-জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ছিলেন এই সংস্থার প্রধান পৃষ্ঠপোষক। ১৮০৮ সালে দক্ষিণ কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের একটি ভবনে সংস্থাটি স্থানান্তরিত হয়। উল্লেখ্য, কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটি সমজাতীয় সংস্থাগুলির মধ্যে প্রাচীনতম।
প্রতিষ্ঠার ইতিহাস:
এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার উইলিয়াম জোনস,
অষ্টাদশ শতাব্দীর অন্তিম ভাগে উইলিয়াম জোনস প্রাচ্য সম্বন্ধে গবেষণার উদ্দেশ্যে কলকাতা শহরে একটি উচ্চশিক্ষা সংস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগী হন। ১৭৮৪ খৃষ্টাব্দের ১৫ জানুয়ারি তাঁর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বিচারপতি জন হাইড, জন কার্নাক, হেনরি ভ্যান্সিট্রাট, জন শোর, চার্লস উইল্কিন্স, ফ্রান্সিস গ্ল্যাডউইন, জোনাথন ডানকান ছাড়াও তিরিশ জন ইউরোপীয় বিদগ্ধ ব্যক্তি কলকাতা শহরের পুরাতন সুপ্রিম কোর্ট ভবনের এক সভায় মিলিত হন। এই সভার সভাপতিত্ব করেন মুখ্য বিচারপতি স্যার রবার্ট চেম্বার্স। সভায় জোনসের পরিকল্পনা মতো 'দ্য এশিয়াটিক সোসাইটি' নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। এই প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মূল উদ্দেশ্য ছিল, এশিয়ার ভৌগোলিক সীমার মধ্যে মানুষ ও প্রকৃতি দ্বারা সৃষ্ট সমস্ত বিষয় সম্বন্ধে অনুসন্ধান ও অধ্যয়ন করা। সংস্থার প্রথম সভায় তৎকালীন গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস সভাপতিত্ব করেন এবং উইলিয়াম জোনস সহসভাপতির পদ অলঙ্কৃত করেন। ওয়ারেন হেস্টিংস এই সংস্থার উদ্দেশ্য সম্বন্ধে সহানুভূতিশীল হলেও তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হতে অস্বীকার করেন এবং তাঁর অনুরোধে জোনস ১৭৮৪ খৃষ্টাব্দের ৫ ফেব্রুয়ারি এই পদে অধিষ্ঠিত হন এবং আমৃত্যু এই পদে ছিলেন।
প্রথম দিকে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যকরী সমিতি ছিল না, শুধুমাত্র সভাপতি ও সম্পাদক নামক দুইটি পদ ছিল যারা সমস্ত বিষয় দেখাশোনা করতেন। জোনসের মৃত্যুর পর সভার কাজ অনিয়মিত হয়ে পড়ে এবং হেনরি ট্রেল সহ বেশ কয়েকজন কার্যনির্বাহী সদস্য পদত্যাগ করলে প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছরের জন্য গুরুত্বহীন হয়ে পড়লেও ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে আবার ঘুরে দাঁড়ায়। ১৮০৮ খৃষ্টাব্দে চিকিৎসাশাস্ত্র, ভৌতবিজ্ঞান প্রভৃতির উন্নতি সাধনের জন্য ফিজিক্যাল কমিটি এবং সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, শিল্পকলা প্রভৃতি বিষয়ের উন্নতি সাধনের জন্য লাইব্রেরি কমিটি গঠিত হয়।
নামকরণঃ.....
প্রতিষ্ঠাকালে এশিয়াটিক সোসাইটির ইংরেজি নামের বানানটি ছিল Asiatick Society। ১৮২৫ সালে নামটির আধুনিকীকরণ করে ইংরেজি k অক্ষরটি বাদ দেওয়া হয়। এই সময় এশিয়াটিক সোসাইটির প্রাতিষ্ঠানিক নামকরণ হয় "দ্য এশিয়াটিক সোসাইটি" ("The Asiatic Society")। ১৮৩২ সালে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় "দ্য এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল (The Asiatic Society of Bengal)। ১৯৩৬ সালে পুনরায় নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় দ্য রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বেঙ্গল (The Royal Asiatic Society of Bengal)। অবশেষে ১৯৫১ সালের ১ জুলাই এশিয়াটিক সোসাইটির বর্তমান নামটি প্রবর্তিত হয়।
কোলকাতার দ্য এশিয়াটিক সোসাইটির অনুকরণেই বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি ১৮৬০ সালের সোসাইটিজ রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টের অধীনে নিবন্ধিত একটি অরাজনৈতিক, বেসরকারি ও অলাভজনক সংস্থা। ১৯৫২ সালে এশিয়ার মানুষ ও প্রকৃতি বিষয়ে গবেষণার লক্ষ্যে বাংলাদেশে এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থাটির প্রেরণা ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো উভয়ই কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটির অনুসারী।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটির সক্রিয় সদস্য ছিলেন এমন কিছুসংখ্যক পন্ডিত ঢাকায় চলে আসেন। তাঁরাই কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটির আদলে ঢাকায় একটি বিদ্বৎসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠার ধারণা দেন। লক্ষণীয় যে, প্রাচ্য গবেষণার উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে কলকাতায় আদি এশিয়াটিক সোসাইটির আদলে মুম্বাই (১৮০৪), লন্ডন (১৮২৩), কলম্বো (১৮৪৫), হংকং (১৮৪৭), টোকিও (১৮৭২), মালয়েশিয়া (১৮৭৮) ও কোরিয়ায় (১৯০০) এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এগুলি অবশ্য একটির সঙ্গে অন্যটি সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল না, তবে এদের সবক’টির লক্ষ্য ছিল এশিয়ার মানুষ ও প্রকৃতি বিষয়ে অধ্যয়ন।
ঢাকাতে অনুরূপ এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৎকালীন শিক্ষক এবং ঢাকা জাদুঘরের কিউরেটর ডক্টর আহমদ হাসান দানী। দেশবিভাগ-পূর্ব সময়ে দানী রাজশাহীতে অবস্থিত আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার আঞ্চলিক অধীক্ষক ছিলেন। তাঁকে এশিয়াটিক সোসাইটি অব পাকিস্তানের উইলিয়ম জোনস বলা যেতে পারে। ডক্টর দানীর ভাবনা ঢাকার বিশিষ্ট পন্ডিতবর্গের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন লাভ করে এবং তাঁরা ১৯৫২ সালের ৩ জানুয়ারি এক সভায় মিলিত হয়ে এশিয়াটিক সোসাইটি অব পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে আরও ছিলেন ডক্টর এ.বি.এম হবিবুল্লাহ, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ডক্টর আই.এইচ জুবেরী, ডক্টর সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, ডক্টর ডব্লিউ.এইচ.এ সাদানি, ডক্টর আবদুল হালিম, ডক্টর সিরাজুল হক, আবদুল হামিদ, সৈয়দ মুহাম্মদ তৈফুর, খান বাহাদুর আবদুর রহমান, শেখ শরাফুদ্দীন ও জে.এস টার্নার। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর পাকিস্তান এশিয়াটিক সোসাইটির নতুন নামকরণ হয় বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি।
সোসাইটির সদস্যপদ জাতীয়তা, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে সকলের জন্য উন্মুক্ত। সদস্যগণ মাসিক সাধারণ সভায় সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন। সদস্যপদের জন্য আবেদনপত্র সোসাইটির দুজন সদস্যের দ্বারা প্রস্তাবিত ও সমর্থিত হতে হয়। অতঃপর আবেদনপত্রটি নিরীক্ষা কমিটি কর্তৃক সমীক্ষার পর এটিকে সোসাইটির কাউন্সিলে পেশ করা হয়। কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে পরবর্তী মাসিক সাধারণ সভায় আবেদনকারীকে সদস্য পদের জন্য নির্বাচন করা হয়। নির্বাচিত হওয়ার পরে আবেদনকারী ভর্তি ও সদস্য ফি প্রদান করে সোসাইটির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। সহযোগী সদস্য পদেও অনুরূপভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তবে এ ধরনের সদস্যগণ নির্বাচনে ভোট প্রদান ও অন্য কোনো সদস্যের আবেদনপত্রে প্রস্তাবক বা সমর্থক হওয়া ব্যতীত সোসাইটির সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। সোসাইটি অনারারি সদস্য এবং ফেলোও নির্বাচন করে। এ ধরনের পদের জন্য আবেদন করতে হয় না। এশিয়া বিষয়ক অধ্যয়নের উপর অনন্য অবদান রেখেছেন এমন সুপ্রতিষ্ঠিত পন্ডিতদের অনারারি সদস্যপদ এবং ফেলোশিপ প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাংগঠনিক বিন্যাসে কলকাতা এশিয়াটিক সোসাইটির কাঠামো অনুসৃত হয়েছে। সোসাইটি তার নিজস্ব নীতিমালার অধীনে দুবছরের জন্য নির্বাচিত ১৭ সদস্যের নির্বাহী কাউন্সিল দ্বারা পরিচালিত হয়। এই কাউন্সিলে থাকেন একজন প্রেসিডেন্ট, তিন জন ভাইস প্রেসিডেন্ট, একজন কোষাধ্যক্ষ, একজন সাধারণ সম্পাদক, একজন সম্পাদক এবং ১২ জন সদস্য (সদস্যদের মধ্যে ২ জন ফেলোদের মধ্য থেকে কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত)। কাউন্সিলের দায়িত্ব হলো সোসাইটির গঠনতন্ত্র সংরক্ষণ, কর্মপন্থা নির্ধারণ এবং সোসাইটির কার্যক্রম পরিচালনা। কাউন্সিলকে এর কার্যক্রম পরিচালনায় সোসাইটির সদস্যদের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। কাউন্সিল সাধারণত মাসে একবার সভায় মিলিত হয় এবং সেখানে সোসাইটি পরিচালনার সার্বিক উপস্থাপন ও অনুমোদন করা হয়। সাধারণ সম্পাদক সোসাইটির নির্বাহী প্রধান হিসেবে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা, সোসাইটির সকল রেকর্ড সংরক্ষণ এবং গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী সভা আহবান করে থাকেন এবং দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় সোসাইটির কার্যক্রমের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন।
কৃতজ্ঞতা: দ্য এশিয়াটিক সোসাইটি উইকিপিডিয়া।
১৩ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:০২
জুল ভার্ন বলেছেন: বাংলা একাডেমীর মতো সরকারী প্রতিষ্ঠান না হলেও সরকারের অনুদান পায়।
২| ১৩ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১৩
অধীতি বলেছেন: এদের বইগুলো অসাধারণ। বাংলাপিডিয়া আর ইতিহাস সংস্কৃতি নিয়ে সিরিজ বই।
১৩ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: ইতিহাস সংস্কৃতির উপর এদের চাইতে ভালো বই এদেশে আর কেউ প্রকাশ করতে পারেনি।
৩| ১৩ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:১৭
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
মানুষ ও প্রকৃতি নিয়ে ঘোষণা করে কি পেয়েছে সোসাইটি?
১৩ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:৫৯
জুল ভার্ন বলেছেন: এমন প্রশ্ন আপনিও করলেন!
৪| ১৩ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৩
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- নামটি বেশ পরিচিতো।
১৪ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:৪২
জুল ভার্ন বলেছেন: "দ্য এশিয়াটিক সোশাইটি" নামের মতো কাজেও অনেক ভালো।
৫| ১৩ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:৪৩
কামাল১৮ বলেছেন: আমি কয়েকদিন ঘুরাঘুরি করেছিলাম,পরে বুঝতে পারলাম আমার নাগড়ের বাইরে।পুরনো যাদুঘরের পাশে ছিলো অবস্থান।এখন কোথায় জানি না।ভালো লাইব্রেরি গুলিতে আমার যাতায়াত ছিল।
১৪ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:৫০
জুল ভার্ন বলেছেন: আসলে আমাদের বয়সী বা আমাদের চাইতে বয়স্ক মানুষের বই পড়ার প্রতি যে আগ্রহ ছিলো- বর্তমান প্রজন্মের তরুণ তরুণীদের মধ্যে তেমনটা নাই। আমরা বই পড়ার জন্য বিভিন্ন লাইব্রেরী ঘুরে বেড়াতাম...... এখন যা দেখা যায়না। বর্তমান এশিয়াটিক সোশাইটি নিমতলীতে চমতকার একটা স্থাপনায়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: এটা কি সরকারী প্রতিষ্ঠান? বাংলা একাডেমির মতো?