নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
নিজেকে বদলে ফেলাই বড়ো বিপ্লব.......
সবকিছু মোটামুটি স্মুথলি চললেই ভুলে যাই আমরা কতখানি অপ্রস্তুত। পরিচিত সমস্যা আর পরিচিত সমাধান নিয়ে নিশ্চিন্তির ঢেঁকুর। তখন মনে থাকেনা একটা অতি সূক্ষ্ম সুতোর উপর ঝুলছে আমাদের সুখ ও শান্তি। সামান্যতম আঘাতেই সবকিছু তছনছ হয়ে যেতে পারে। ভেঙে পড়তে পারে সব ব্যবস্থা-বিধান। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা এত সব সিস্টেম কলাপ্সড হতে খুব বেশিক্ষণ সময় লাগে না। কীট-পতঙ্গের মত মরতে থাকে মানুষ। নিশ্চিতভাবে জানেনা সাধারন মানুষের জীবিকার ন্যূনতম শর্ত কিংবা বঞ্চনার ইতিবৃত্ত। কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে একটু একটু করে। যে হারে মানুষের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বেড়েছে, জীবনযাত্রার মান সম্পর্কে সচেতনতা বেড়েছে, চাহিদা বেড়েছে; তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কৃষিকে লাভজনক করা যায়নি। গ্রামভিত্তিক উৎপাদন ও বিপণনকে মসৃণ গতিশীল ও লাভজনক করার দিশা নেই দেশের অর্থনীতিতে! টেলিভিশন কিম্বা মঞ্চের বক্তৃতা থেকে স্বনির্ভরতা আসেনা। ধারাবাহিক আর দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ছাড়া শুধুমাত্র ব্যক্তিগত মোটিভেশন থেকে স্বনির্ভরতা অর্জিত হয় না।
৫৫ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশের রাজধানীই প্রাণকেন্দ্র। জীবিকার তাগিদে এখানে লক্ষ কোটি মানুষের ভিড়। গ্রাম চিরকাল উপেক্ষিত। কৃষি উপেক্ষিত। জনসংখ্যা বৃদ্ধি অনিয়ন্ত্রিত। কৃষিজমি থেকে সকলের জীবিকার সঙ্কুলান অসম্ভব। কৃষিকার্যকে মোটামুটি লাভজনক করা গেলে মাসে ৮/১০ হাজার টাকা উপার্জনের জন্য এত মানুষকে ঢাকামুখি হতে হতো না। কৃষি সংলগ্ন কুটিরশিল্প গুলো মরে গেছে অথবা মৃতপ্রায়। গ্রামীণ হস্তশিল্প ধুঁকছে। বড় বড় কারখানা বড় বড় কর্পোরেট সংস্থা প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরকে কব্জায় রেখে মানুষের শ্রমশক্তিকে নিংড়ে নিচ্ছে।
চাহিদা যোগানের সহজ অংকে মানুষের শ্রমকে সুলভে কেনার সুযোগ নিয়েছে পুঁজিপতিরা। কৃষি শিক্ষা স্বাস্থ্য প্রভৃতি মানুষের জীবনের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি সরকারের বাজেটে তলানিতে স্থান পায়। বাজেটের সিংহভাগ জুড়ে থাকে প্রতিরক্ষা। আমজনতার সমর্থনহীন সরকারের জন্য সামরিক শক্তি প্রদর্শন খুব জরুরী হয়ে পড়ে। সরকারি কোষাগারের টাকা অন্য খাত ঘুরে গিয়ে দলীয় ফান্ডে জমা হয়। রাজনৈতিক দল কোটি কোটি টাকা খরচ করে উন্নয়নের ঢাক বাজায়, ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক প্রচার চালায়। সাধারন মানুষ ক্ষমতাসীন দলের গিনিপিগ হয়। নিজের প্রকৃত দাবি, বেঁচে থাকার অধিকার সম্বন্ধে তার চেতনা জন্মায় না। দলীয় মিটিং মিছিলে অংশ নিয়ে তেহারী-বিরিয়ানী এবং ৫০০/১০০০ টাকা তাৎক্ষণিক প্রাপ্তির আশায় ভুলে যায় বঞ্চনার দীর্ঘ ইতিবৃত্ত। সুক্ষ্ম থেকে সুক্ষ্মতম আইন তৈরি হয়, আইনকে নিয়ে চুলচেরা কাটাছেঁড়া হয়, আর স্থূল থেকে স্থূলতম আইনভঙ্গের ঘটনা ঘটে চোখের সামনেই। আইনকে ইমপ্লিমেন্ট করার কাঠামো নেই, সদিচ্ছা নেই। "আইন আইনের পথে চলে"- সেই পথের অভিমুখ শাসকের রক্তচক্ষুতে নির্ধারিত হয়।
১৮ কোটি মানুষকে ন্যূনতম জৈবিক ও আইনি পরিষেবা দেওয়ার জন্য যে সিস্টেম গড়ে তোলা দরকার, তা করা হয়নি। বিচারব্যবস্থার গতি দেখলে অ্যামিবাও লজ্জা পাবে। ম্যাক্সিমাম আইনভঙ্গ কিংবা অপরাধ আইনের দরবার পর্যন্ত পৌঁছায় না। যে কটা পৌঁছায় সেগুলোর সদ্গতি ঘটেনা। লক্ষ-কোটি মামলার ফাইলে ধুলো জমে, ল্যাপটপের মেমোরিতে সেঁধিয়ে থাকে আইনের পরিভাষা। তাই মজুদদার বেআইনি মুনাফা করে, চোখ রাঙায়, মাফিয়ারাজ চেপে বসে, সিন্ডিকেট সমান্তরাল প্রশাসন চালায়, পুলিশের সামনে নিজ নিজ দলের লোকেরা মারামারি করে- মামলা গ্রেপ্তার হয় প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা, চোর গুন্ডার পাশে দাঁড়ায় মন্ত্রী! বিশৃংখল বেপরোয়া জনতার মধ্যে প্রশাসন উপর উপর চিরুনি চালিয়ে "শেপ" আনার ভান করে! দীর্ঘদিন তেল না পড়া উস্কোখুস্কো চুলের মতো চিরুনি সরিয়ে নিলেই সেই চিরন্তন বিশৃঙ্খলা ফিরে আসে। সময় সুযোগ বুঝে অত্যাচারিতই হয়ে ওঠে চরম অত্যাচারী। জঙ্গলকে লুন্ঠন করে গড়ে ওঠে শিল্পকারখানা, কৃষিজমিতে বসতবাড়ি। নদীর জমি দখল করে তৈরি হয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বিচারের বাণী সরবে, প্রকাশ্যে কাঁদে।
যা-নাকি চতুর্থ স্তম্ভ, সেই মিডিয়াকে "ম্যানেজ" করার জন্য শাসকের নির্দিষ্ট ফান্ড থাকে। যত বড় ব্র্যান্ডের মিডিয়া হাউজ, তত বেশি দামে বিক্রি হয়। সাংবাদিকদের মুখে মানবতা নিরপেক্ষতা প্রভৃতি সস্তার মাস্ক ঝুলিয়ে সন্দেহের ভাইরাস প্রতিহত করার অপচেষ্টা চলে। লালসার লালারসে সিক্ত হয় মুখোশ। লোভ জর্জর মুখমন্ডলে প্রকট হয়ে ওঠে পক্ষপাত ,পেইড নিউজের রমরমা।
আগেকার দিনে রাজারা যেমন মোসাহেব পুষতেন এখন তেমনি শাসকেরা মিডিয়া পোষে, কবি সাহিত্যিক, শিল্পী তথা বুদ্ধিজীবী পোষে। লেঠেল বাহিনীর কাজ করে আইটি সেল। কণামাত্র চক্ষুলজ্জা, অনুমাত্র এথিকস মানলে মিডিয়া ব্যবসায় প্রবেশ নিষেধ। সরকারি বিজ্ঞাপনের লোভ, শাসকের ছায়াসঙ্গী হবার লোভ, টিআরপির আদিম বর্বর লালসার জন্য মিডিয়া করতে পারেনা এমন কাজ নেই।
শিল্পী সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীদের একটা বিরাট অংশ সমাজ বিচ্ছিন্ন, আত্মমগ্ন অথবা আত্মকেন্দ্রিক। মজ্জাগত তাঁবেদারীতে আসক্ত কেউ কেউ। সমাজ আদর্শহীন, দিশাহীন। অনুসরণ করার মত কোন "আইডল" নেই। ন্যায়-নীতি মূল্যবোধের পুরাতন সব আইডিওলজি সব বিসর্জিত। শিক্ষক সমাজের একটি "কনসিডারবেল" অংশ চাটুকারিতা আর পদলেহণে ব্যস্ত। যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবেদের টাকা -আনা -পাই এর চুলচেরা হিসেব করে জীবন চলতো এখন তারাই কোটি কোটি টাকার হিসাব নিয়ে ব্যস্ত। সাধারণ ছাত্রসমাজের মানবিকতার আবেদন তাদের কাছে পৌঁছায় না। তথাকথিত মানবিক আবেগ সমূহও বিক্রয়যোগ্য। এইসব উপাদান যথাযথ পরিমাণে ব্যবহার করতে শিখলে একটা "সেনসেটিভ ইমেজ" গড়ে তোলা যায়। যা বিক্রি হয়না, তা-ই মূল্যহীন। স্বার্থপরতা সংকীর্ণতার গন্ডিতে আবদ্ধ শিক্ষকদের দৃষ্টিতে শিক্ষাও আজ বিক্রয়যোগ্য পণ্য। আধুনিক যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তে সময় পিছিয়ে চলে মধ্যযুগের অভিমুখে। শিক্ষা প্রশাসনের পারম্পর্যহীন, পাঁচমিশালী "G.O "আর সার্কুলারের দাপটে চূড়ান্ত গোঁজামিল সিলেবাস, মূল্যায়ন, শ্রেণি শিক্ষণ.... সবে মিলে বিদ্যালয়ে শিক্ষাব্যবস্থা লাটে উঠেছে। উচ্চশিক্ষার তৈল-পিচ্ছিল দুনিয়ায় ইগোজর্জর মানুষের নৈমত্তিক ওঠানামার গ্রাফ। মান-যশ-খ্যাতি- প্রতিষ্ঠার জন্য দৈনন্দিন খেয়োখেয়ি, "ভদ্রবেশী বর্বরের" অক্লান্ত দাপাদাপি!
(২০২২ সালে ফেসবুক পোস্ট)
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৫
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ জটিল ভাই।
২| ৩০ শে আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বাংলাদেশের মত উর্বর, নদীমাত্রিক পাললিক ভুমি পৃথিবীতে কম আছে। তাই কৃষি হতে পারতো আমাদের অর্থনীতির একটা ভিত্তি। কিন্তু এই দেশে চাষারা সবচেয়ে অবহেলিত। রাষ্ট্রীয় কোন পৃষ্ঠপোষকতা তারা কখনই পায়নি। শেরে বাংলা সম্ভবত কৃষকদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছেন। আর কেউ করেনি। গ্রাম ভিত্তিক অর্থনীতি এই দেশে ভালো কাজ করতো। সেই রকম কোন পরিকল্পনা নেই বলেই আমাদের অর্থনীতির কেন্দ্র হল মুলত ঢাকা আর চট্টগ্রাম শহর। সারা দেশের মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে এই দুটি শহরে। কারণ অন্য কোথাও আয়ের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। গার্মেন্টসগুলি ৬৪ টা জেলা শহরে দিলেও কর্মীরা গ্রামের বাড়িতে থেকে চাকরী করতে পারতো। ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার বা চট্টগ্রামে গার্মেন্টস কর্মীদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হতো না। যা বেতন পায় অর্ধেকের বেশী যায় বাড়ি ভাড়াতে।
আমি নিজের চোখে দেখেছি পোলট্রি এবং ডেইরি ফার্মের ব্যবসা দেশ বিদেশের কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলি কব্জা করে নিয়েছে। প্রান্তিক খামারির অবস্থা খুবই খারাপ। চীন,ভারতে এবং থাইল্যান্ডের কয়েকটা প্রতিষ্ঠান পুরো মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করছে।
কৃষি ধ্বংস হয়েছে কিন্তু দেশে শিল্প, কল-কারখানা আরও কমেছে। অথচ জনবহুল এই দেশে কল, করখানা ছাড়া চাকরী বাড়বে না। দেশের ব্যাংক, বীমা এবং অন্যায্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলি টিকে আছে মুলত গার্মেন্টসের উপরে। সেটার অবস্থাও ভালো না। বড় বড় গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা এখন ব্যাংক লুটপাটে ব্যস্ত, কারণ হাসিনা সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছে। অনেক বড় গ্রুপের মালিকেরা দেখে যে ব্যবসার চেয়ে অনেক বেশী আয় হয় ব্যাংক লুট করে কিংবা ভুমি দস্যুতা করে। তাই গত ১৫ বছরে শিল্প গ্রুপের আকার বাড়েনি। বরং কমেছে। ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় বিনিয়োগ না করে এগুলি করছে বা বিদেশে টাকা পাচার করে দিচ্ছে।
দেশের ৫% লোক খুব ভালো ছিল গত ১৫ বছরে। এই দেশে সরকারি বা সামরিক চাকরী না থাকলে কিংবা কেউ বড় ব্যবসায়ী না হলে তার জীবন কঠিন হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬
জুল ভার্ন বলেছেন: সাচু, আপনার অসাধারণ সুন্দর মন্তব্যের জবাব এখন সেল ফোন থেকে লিখতে পারছি না।
৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:২৮
কামাল১৮ বলেছেন: নিজেকে বদলানো খুব কঠিন কাজ কিন্তু অসম্ভব না।এই জন্য নিজের ভিতরে দ্বন্দ্ব থাকতে হবে।প্রতিটা বিষয়ে প্রশ্ন করতে হবে নিজেকে নিজে।কেন!কেন!!কেন!!!
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬
জুল ভার্ন বলেছেন: জ্বি কামাল ভাই, আত্মশুদ্ধির জন্য সবার আগে আত্ম-জিজ্ঞাসার বেশি দরকার।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৪:২৪
জটিল ভাই বলেছেন:
অসাধারণ পোস্ট। কিন্তু যতোই আত্মশুদ্ধিন চেষ্টা করছি, ততোই ব্যার্থ হচ্ছি