নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

তৃতীয় নয়ন......

০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৮

তৃতীয় নয়ন.....

যে বা যারা আধ্যাত্মিকতাবাদে বিশ্বাসী এবং আধ্যাত্মিকতা চর্চা করেন তাদের সাথে আলাপ চারিতা করার একধরণের আকর্ষণ আছে... সেই আকর্ষনেই অনেকবার গিয়েছি লালনের আস্তানায়। চলতি বছরও গিয়েছিলাম। যারা জানেন না, তাদের জন্য বলছি- বছরে দুইবার লালন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। একবার দোল পূর্নিমার সময় দুই দিনের জন্য। আর ১ কার্তিক লালন সাঁইজির জন্মদিন উপলক্ষে তিন দিনের মেলা।

কালী নদীতীরের বিশাল মাঠের পশ্চিমে শতাধিক বাউলভক্ত-অনুসারী অস্থায়ী তাঁবু গেড়ে আস্তানা তৈরি করেন থাকার জন্য। আর পৃথক পৃথক আস্তানার মধ্যে অবস্থান নেওয়া বাউলেরা একতারা-দোতারাসহ নানা বাদ্যের তালে গেয়ে চলেছেন লালন শাহের গান। মাঠের দক্ষিণে তৈরি করা হয় মঞ্চ এবং উত্তরে বসে বিভিন্ন পণ্যের দোকান। এ ছাড়া লালন শাহের সমাধির পাশের ছাউনির নিচেও বসেছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-অনুসারীরা। এখানেও তাঁরা লালনের ‘অমর বাণী’ গেয়ে চলেছেন আপন মনে।

লালন আখড়াসংলগ্ন সাঁইজির অনেক ভক্তদের সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় আছে। এবার আলাউদ্দিন সাধুর আস্তানায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় ও বহিরাগত অসংখ্য ভক্ত-অনুসারীরাও যোগ দিয়েছেন। দুপুর গড়িয়ে বিকেলে যখন আমি আলাউদ্দীন সাধুর আখড়ায় পৌছি তখন তিনি চোখ বন্ধ করে দোতরায় সুর তুলে গাইছেন-
"কি খেলা দেখলাম গুরু বাঁকা নদীর পারে ভবে আসতে গুরু যেতেও গুরু...."

গান শেষে চোখ মেলে তাকিয়ে আমাকে ছাড়াও কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলেন- দুপুরের খাবার খেয়েছি কিনা? তাঁর আস্তানায়ই তার মেহমানদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা আছে....খুবই সাধারণ মানের খাবার। কিন্তু ভিন্ন স্বাদে অত্যন্ত সুস্বাদু!

লালন সাঁইজির অনুসারীদের পরস্পর পরস্পরকে গুরু/ গুরুজী/ সাঁইজী সম্বোধন করেন এবং কারোর বয়স জানতে চাওয়া লালন সাঁইজির ভক্ত-আশেকরা পছন্দ করেন না। তাই আমি বয়স জিজ্ঞেস করিনা। আলাউদ্দীন সাধুর বয়স আন্দাজ করা কঠিন- তবে আমার ধারণা ৫০ এর মধ্যে হবে। আমি আলাউদ্দিন সাধুকে জিজ্ঞেস করলাম, 'আপনাকে সবাই গুরুজী সম্বোধন করে কেনো'?

আপনারা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে অনেক কিছু জানেন। আমার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নাই। কয়েক দিন ইসকুলে গেছিলাম... ছারে খালি মারে...তাই স্কুল ছাড়ছি, আর কোনো দিন স্কুলে যাই নাই। কিছুই শিখতে পারিনি। যা-কিছু শিখেছি তা গুরু বিদ্যা। গুরু মানে হলো 'ফ্রেন্ড ফিলসফার এন্ড গাইড।' আর 'অথিক গুরু পথিক গুরু গুরু অগনন' যে বলা হয় তা মনে হয় ছোটো ছোটো ব্যাপারগুলো যাদের দেখে শিখেছি তাদের জন্য বলা.....

দোতারায় কয়েক বার টুংটাং ধ্বনি তুলে তিনি চোখ বন্ধ করে বললেন- " 'গুরু' শব্দটি 'গু' এবং 'রু' এই দুটি সংস্কৃত শব্দ দ্বারা গঠিত। 'গু' শব্দের অর্থ অন্ধকার এবং 'রু' শব্দের অর্থ যা অন্ধকারকে দূরীভূত করে। অর্থাৎ গুরু হলেন যিনি অন্ধকারকে দূর করেন। তবে আমি গুরু হতে পারিনি। আমি সাঁইজির নগন্য একজন ভক্ত। তিনি যদি কোনো দিন দয়া করে আমাকে জ্ঞান দান করেন তাহলে গুরু বলবেন।"

আমি জিজ্ঞেস করি- 'তাহলে গুরু আর শিক্ষকের অর্থ কি এক'?

"না!"

"গুরু হলেন তিনি, যিনি আমাদের তৃতীয় নয়ন অর্থাৎ "উপনয়ন" উন্মোচন করেন। আমরা রামকৃষ্ণ দেবের কথায় শুনেছিলাম, তিনি ততক্ষণ পর্যন্ত মাতৃদর্শন লাভ করেন নি, যতক্ষণ না তাঁর গুরু তোতাপুরি তার তৃতীয় নয়ন উন্মোচন করেছিলেন।"

পৃথিবীর বাকি জীবজগতের সাথে মানুষের পার্থক্যই ঠিক এই জায়গাটিতেই। মানুষই একমাত্র ষড়রীপুকে জয় করে "আমি"কে জানতে সক্ষম। আর "আমি"কে জানা মানেই সৃষ্টিকর্তাকে জানা। বাইরে কোথাও খোঁজা বৃথা।

গুরু আমাদের জীবাত্মার সাথে পরমাত্মার মিলনের পথটি দেখান। তিনি শুধু বয়ে যাওয়াটা শেখান। খাতটি শিষ্যকে নিজেকেই তৈরি করতে হয়। যে গুরু অহংবোধে শিষ্যের থেকে সাবমিশন চান, তাঁর গুরু হয়ে ওঠা হয় না। আবার যে শিষ্য সেই সারেন্ডারে দ্বিধাগ্রস্ত হন, সে আদর্শ শিষ্য হতে পারেন না।

এখন প্রশ্ন হলো, গুরুলাভ না করলেই বা ক্ষতি কি? অসংখ্য বিষয় আছে, ক্ষেত্র আছে, বই আছে নিজেকে উন্নত করার জন্য।

অবশ্যই আছে। একটি উদাহরণের সাহায্যে বলি-
আমি অনেক বই পড়ে (এখানে জানার মাধ্যম হিসাবে বইকে উদাহরণ হিসেবে নিলাম) অনেক কিছু জানলাম। জানার পরেই যে অনুভূতিটি আমার মধ্যে প্রাথমিকভাবে দেখা দিল, আমি যে জানি সেটা তো অপরকে জানাতে হবে। যথারীতি সেই পথেই এগোলাম। দেখলাম আমার পান্ডিত্যে পৃথিবীর নব্বই ভাগ মানুষ বাহ্ বাহ্ করলেন কিন্তু দশভাগ সে ভাবে তো প্রশংসা করলেন না। ঠিক এই জায়গাটা থেকে জন্ম নিল দুঃখ এবং সেই পথেই ক্রোধের সৃষ্টি। ষড়রীপুর একটি মোক্ষম রীপু এই ক্রোধ। সেই পথেই অহংবোধ হুঙ্কার ছাড়তে লাগলো (সশব্দে নাও হতে পারে)। আমার এই এতো জানা-বোঝার নিট রেজাল্ট হলো- BIG ZERO, তার কারণ অহংবোধ এসে আত্মদর্শনে বাধা সৃষ্টি করলো, এই আমিত্বকে অতিক্রম না করলে "আমি" কে দেখা যায় না!

মানুষ-জনের মধ্যে আধ্যাত্মবোধ জাগিয়ে তোলার কোনরকম মহৎ উদ্দেশ্যে এই লেখা নয়। সকাল থেকে আকাশ, বাতাস, বন্ধু-বান্ধবী সবাই আমার "গুরু" বলে ছেদো বিতর্ক যাঁরা শুরু করেছেন, তাঁদের সশ্রদ্ধভাবে আমার তরফ থেকে এইটুকু জানালাম।

পরিশেষে বলি, লোকজনের তৃতীয় নয়ন উন্মোচন হোক্ না হোক্, মানবিক দৃষ্টি যেন সদা জাগ্রত থাকে। তাহলেই তো লোকজনদের "মানুষ" বলে ডাকতে ভালো লাগবে।"

কিভাবে যে তিনদিন তিনটা রাত চলে গিয়েছে বুঝতে পারছিনা! ভেংগেছে লালন মেলা....আমিও ফিরে আসছি....আর হৃদয়ের গহীনে সুর বাজে....."কি খেলা দেখলাম গুরু বাঁকা নদীর পারে ভবে আসতে গুরু যেতেও গুরু...."

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: পোস্টে ভালো লাগা রইল।

০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৩১

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।

২| ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:২৯

নিলঞ্জনা বলেছেন: ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে।

০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪৫

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

বিষাদ সময় বলেছেন: গুরু শব্দের উৎপত্তি রহস্য জানা ছিল না, জেনে ভাল লাগলো। চমৎকার একটি লেখা, সবার জন্যই বোধ উদ্দীপক।

০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১৯

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।

৪| ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:২৮

আজব লিংকন বলেছেন: সাঁই কৃপাময়। সবার নিজস্ব ভাব, নিজস্ব উপলব্ধি। সাধুগুরুরা বলেন গুরু ছাড়া মুক্তির পথ নেই। গুরু নিয়ে লালন সাঁইজী অসংখ্য বাণী রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে একজন সম্যক কামেল গুরু খুঁজে পাওয়া খড়ের গাদায় সূঁচ খোঁজার মত কঠিন।

গুরুর মর্ম, গুরুত্ব বুঝতে ও বোঝাতে ফকির লালন সাঁইজীর অনেক বাণী রয়েছে। গুরুর মূল্য বুঝাতে ফকির লালন সাঁইজী বলেন,

“গুরু হয় জ্ঞানের দাতা, সে জানে মর্ম ব্যথা
গুরু বিনে আর কে জানে?
মুক্তি কিসে হবে গো জীবের ভক্তি বিহনে
ভক্তি হইলো অমূল্য ধন, গুরুর কাছে লও গা জেনে।।"

একজন গুরু এবং শিষ্যের মাঝে বোঝাপড়া সম্পর্ক এতটাই গভীর হবে যেন হাতে মুঠোয় ছায়া ধরা। ফকির লালন সাঁইজী তার নিজের গুরু সিরাজ সাঁই ও তার সম্পর্ক টেনে তার বাণীতে বলেন,

"গুরু-শিষ্য প্রেম করা যেমন মুঠার মধ্যে ছায়া ধরা
সিরাজ সাই কয় লালন তেড়া, এমনি প্রেম করা চাই।।
যে জন শিষ্য হয় গুরু-মনের খবর নেয়।
এক হাতে যদি বাজাতো তালি
তবে কেন দু’হাত লাগায়।।"

গুরু একজন শিক্ষক, একজন অভিভাবক, একজন পথ প্রদর্শক। গুরুর কাছে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে অর্পণ করতে হয় তবেই লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। গুরুর কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়া সম্পর্কে ফকির লালন সাঁইজী এক বাণীতে বলেন,

"যন্ত্রেতে যন্ত্রী যেমন
যেমত বাজায় বাজে তেমন
তেমনি যন্ত্র আমার মন
বোল তোমার হাতে।।

তোমার দয়া বিনে গুরু, সাধন করব কি মতে।
গুরু দোহাই তোমার, মনকে আমার লও গো সুপথে।।"

ঈশ্বরের সাধনা এবং ইবাদতের মাঝে এতটাই বিলীন হওয়া যেখানে তৃষ্ণা ক্ষুধা কোন খেয়াল থাকে না।। তাইতো ফকির লালন সাঁইজী এক বাণীতে বলেন,

"গুরুর নাম সুধা সিন্ধু
পান করো তাহাতে বিন্দু।
সখা হবে দীন বন্ধু
তৃষ্ণা ক্ষুধা রবে না রে।।

যারে ভাবলে পাপীর পাপ হরে
দিবানিশি ডাক মন তারে।।"

এই রকম গুরু শিষ্য ভাবধারার অসংখ্য বাণী রয়েছে ফকির লালন সাঁইজীর।।

গুরু নিয়ে আপনার লেখা পড়ে আমারও কিছু ভাব থেকে মনোভাব প্রকাশ করলাম।। শেষ করতে যাচ্ছিলাম কিন্তু একটা বিষয় আবার চলে আসলো। যা না বললেই নয়।।

ফকির লালন সাঁইজীর জন্মের তারিখ কিংবা সাল অজ্ঞাত। কেউ জানে না কবে কোথায় তার জন্ম।। কিন্তু একটা কুচক্রী-মহল অত্যন্ত সুকৌশলে দীর্ঘদিন যাবত তার মৃত্যু দিবসকেই তার জন্ম দিবস হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। যা প্রকৃত লালন ভাবধারার গুরু-ভক্ত, শীর্ষদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর ও পীড়াদায়ক।।

পহেলা কার্তিক লালন সাইজের তিরোধান তথা মৃত্যু দিবস।। সে দিন ফকির লালন সাঁইজীর গুরু শিষ্যরা তাদের গুরু লালন সাঁইজীর স্মরণে তার আঁখড়া বাড়িতে সাধুসংঘে মিলিত হন। নিজেদের মাঝে ভাবভক্তি আদান প্রদান করেন। নিজেদের নির্দিষ্ট কিছু রীতিনীতি, আচার আদর্শ পালন করেন।।
কিন্তু, দেখতে দেখতে একটা রাজনৈতিক কিংবা ফায়দাবাজ সুবিধাবাদী মহল এটাকে কেন্দ্র করে লালন মেলা নামের ব্যবসা খুলে বসলো।। যার সাথে লালন সাঁইজীর সাধুগুরু, ভক্ত-শিষ্যদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।। লালন কেন্দ্রিক ব্যবসা সে এক অন্য অধ্যায়।। আজকের মত সে অধ্যায় না হয় বন্ধই থাকুক।।

০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ ভোর ৫:৫৬

জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের লালন ফকির সম্পর্কে এমন অসংখ্য লেখা পড়েছি... লালনের জন্মস্থান, জন্ম সাল নিয়ে বিভ্রান্তি আছে, তবে তা জন্ম তারিখ নিয়ে নয়। বিভিন্ন সূত্রে ১৭৭৪ খ্রষ্টাব্দের ১৭ অক্টোবর/ ১ কার্তিক হিসেবেই স্বীকৃত। লালনের জজন্মস্থান, জন্ম সাল-তারিখ লালন নিজে কখনো তা প্রকাশ করেননি। কিছু সূত্রে পাওয়া যায় লালন ১৭৭৪ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশের) ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার হারিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কোনো কোনো লালন গবেষক মনে করেন, লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ভাড়ারা গ্রামে জন্মেছিলেন। এই মতের সাথেও অনেকে দ্বিমত পোষণ করেন। বাংলা ১৩৪৮ সালের আষাঢ় মাসে প্রকাশিত মাসিক মোহম্মদী পত্রিকায় এক প্রবন্ধে লালনের জন্ম যশোর জেলার ফুলবাড়ি গ্রামে বলে উল্লেখ করা হয়। লালনের জীবন সম্পর্কে সবচেয়ে অবিকৃত তথ্যসুত্র তার নিজের রচিত অসংখ্য গান। কিন্তু লালনের কোন গানে তার জীবন সম্পর্কে কোন তথ্য রেখে যাননি, তবে কয়েকটি গানে তিনি নিজেকে "লালন ফকির" হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পনেরো দিন পর কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত হিতকরী পত্রিকার সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়, “ইহার জীবনী লিখিবার কোন উপকরণ পাওয়া কঠিন। নিজে কিছু বলিতেন না। শিষ্যরা তাহার নিষেধক্রমে বা অজ্ঞতাবশতঃ কিছুই বলিতে পারে না।" হিতকরী পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নিবন্ধে বলা হয়েছে, লালন তরুন বয়সে একবার তীর্থভ্রমণে বের হয়ে পথিমধ্যে গুটিবসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। তখন তার সাথীরা তাকে মৃত ভেবে পরিত্যাগ করে চলে যায়। কালিগঙ্গা নদীতে ভেসে আসা মুমূর্ষু লালনকে উদ্ধার করেন মলম শাহ। মলম শাহ ও তার স্ত্রী মতিজান তাকে বাড়িতে নিয়ে সেবা-শুশ্রষা দিয়ে সুস্থ করে তোলেন। এরপর লালন তার কাছে দীক্ষিত হন এবং কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়াতে স্ত্রী ও শিষ্যসহ বসবাস শুরু করেন।

বিভ্রান্তি এড়াতেই লালন ভক্ত শিষ্যরা তার বয়স নিয়ে এমনকি তার ভক্ত শিষ্যরাও বয়স নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বিব্রতবোধ করেন।

৫| ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫

নতুন বলেছেন: আমার মনে হয় আমরা অতিপ্রাকৃতিক ভাবনা পছন্দ করি বলেই আমাদের মাঝে অনেক গুরু, পীর, আধ্যাতিক গুরুর দেখা পাই।

লালন ফকির নিজের জীবনের ঘটনায় সমাজের জাতপাত, ধর্মের বিভেদের শিকলে বাধা ভাঙতে চেয়েছিলেন।

তিনি তার দর্শন প্রচার করেছেন।

কিন্তু সকল মাজারই ধান্দাবাজেরা দখল নিয়ে সেটাকে আয়ের উতস বানিয়ে ফেলে, তারাই অনেক অলৌকিক কাহিনি ছড়াতে থাকে মাজারের ব্যবসা জমাতে।

০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪১

জুল ভার্ন বলেছেন: সত্যি বলতে, মাজার ব্যাবসায় এখন আর সৈয়দ ওয়ালীউল্লার লালসালুর 'মজিদ মিয়া'র মধ্যেই সীমাবদ্ধ নাই। এই ভণ্ডামির ব্যবসায় এখন সমাজ-রাষ্ট্রের উচ্চস্থানীয় (বিচারপতি, মন্ত্রী, এমপি এবং অনেক ক্ষেত্রে পদাধিকারবলে ডিসি) ব্যক্তিরাও জড়িয়ে পড়েছে। দেশের সবগুলো মাজার ব্যবসায়ী প্রধান স্থানীয় এমপি সাহেব! চলমান উদাহরণ- সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি। সে যাইহোক, লালনের মাজারের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে সেখানে শুধু তার আশেকে ভক্ত-শিষ্যরাই। আমাদের মতো সাধারণ লালন ভক্তরা তার মাজারও দর্শন করে না বললেই চলে। সর্বপরি, লালনের মাজারে মানত/ দান-খয়রাতের ব্যবস্থা নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.