নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স হল এই পঁয়ত্রিশ। এরপরে কেউ তার জীবনকে খুব বেশি পরিবর্তন করতে পারে না। বা বলা যায় তার জীবনের ডিরেকশন সে বুঝে যায়। সবচেয়ে মোদ্দা কথা, ব্যক্তির গুরুত্বহীনতাও সে টের পায়। ফলে এক ধরনের ম্যাচুরিটি সে পায়। এসময় অনেক মানুষ ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়ে। বিশেষত যার পেটের ভাতের অভাব ঘুচেছে বা অন্তত পক্ষে জীবনে স্টাবিলিটি এসেছে। আগের জীবনের কৃত পাপের জন্য অনুতাপে এবং ক্ষমা প্রার্থনায় তার এক দীর্ঘমেয়াদি স্পিরিচুয়াল ভ্রমণ শুরু হয়। অন্য অনেকে হয়ে পড়ে ইনডিফারেন্ট।
অনেক মধ্যবিত্তদের কথা চিন্তা করলে দেখি, এ বয়সে এসে তারা বুঝে যায়, এই বস্তির মত শহরে একটি নিজস্ব বাড়ি/ফ্ল্যাট আর যানযটে ভরা রাস্তায় চলাচলের জন্য একটি গাড়ি- এর বাইরে নিজের জীবনকে দেয়ার মত তাদের কিছু নেই- এটা নির্মম জীবনের অংশ।
এক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া, আর্ট কালচারের মধ্যে থাকাটার একটা বেনিফিট আছে। জীবনের এই ফাঁদ তাকে আটকে ফেলতে পারে না। হিসাব কিতাবের বাইরে গিয়ে সে চিন্তা করতে পারে, এক্ট করতে পারে। সে নিজেকে মাঝে মাঝে কিছু উপহার দিতে পারে।
কিন্তু হতাশাজনক হলেও সত্য আর্ট কালচারে বাঙালির তেমন আগ্রহ নেই। মাস পিপলের মধ্যে এরকম কোনো অভ্যাস দেখাও যায় না। অনেকে মনে করে সে অনেক পড়ে, আসলে তা না। ত্রিশ পার হওয়া অনেক পড়ুয়াকে আমি পরীক্ষা করে দেখেছি, তাদের পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। তারা চাইলেও এখন একটা ইন্টারেস্টিং বই পড়ে ফেলতে পারছে না।
মাস লেভেলে আর্ট কালচারের এই নাজুক অবস্থার একটা কারন হতে পারে ভাষা। এদেশে শিক্ষা ব্যবস্থা এতই নাজুক যে দেশের সবচেয়ে ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়ার পরও, আবিস্কার করেছি- ইংরাজিতে আমার দক্ষতা কম শুধু নয়, আসলে খুব লো লেভেলের বাইরে ইংরাজিতে দক্ষই না। বারো বছর ইংরাজি ভাষা ছিল পাঠ্য, এর পর পাঁচ বছর মিডিয়াম অফ লার্নিং ছিল ইংরাজি, তারপরও এ দশা। তাহলে এ সতের বছর কি শিখলাম। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ভীষণ গলদ আছে।
এর চেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, বাংলায় দক্ষতা এর চেয়েও কম। আমিও ব্যতিক্রম নউ, আমার লেখায়ও বানান, শদ এবং বাক্যগত প্রচুর ভুল। আমরা যাদের শিক্ষিত স্বীকৃতি দেই তেমন অধিকাংশ শিক্ষিত মানুষ লেখা দূরে থাক, একটা কিছু বর্ণনা করতেও পারে না। বলতে পারে না। কাজের বাইরে মজার কিছু ঘটলে সেটা বোঝাতে হিমিশিম খায়। আর কাজের বাইর আধা পৃষ্ঠা লিখতে পারে এমন লোক কমই পাওয়া যাবে।
যে মানুষ ভাষায় সমৃদ্ধ না সে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে পেছানো। বর্তমান সময়ে আমাদের ক্রাইসিসের একটা অন্যতম কারণ হতে পারে আমাদের ভাষার সীমাবদ্ধতা। যার শব্দভান্ডার উন্নত নয়, ইমাজিনেশন বলতে কিছু নেই, যে জীবনযাপনের বাইরে, শব্দ সাজিয়ে দু'মিনিট নতুন কিছু বলতেও পারে না, তার ক্রাইসিসটা সমাজে এখন কিউমিলিটিভ আকারে হাজির হয়েছে।
আমাদের কলেজের এক স্যার বলেছিলেন, "এদেশে যদি সবাই পঞ্চাশ পাতা করে সৃজনশীল লেখা লিখতে পারত, তবে সব ধরনের হানাহানি বন্ধ হয়ে যেত।"- তিনি কী ভেবে বলেছিলেন জানি না, তবে কথাটা ফেলনা নয়।
বড় ব্যাপার হল, গড়পড়তা এদেশে শিক্ষাজীবন পঁচিশ বছরের। এর মধ্যেও আমরা কেন অন্তত একটা ভাষা ঠিকমত রপ্ত করতে পারি না? এমনকি মাতৃভাষাও না!
আর্ট-কালচার সমাজে জাগরুক আত্মা হিসাবে জারি থাকে। ভাষা আর্ট কালচারের জননী। যে সমাজ আর্ট-কালচার প্রসিদ্ধ নয়, সে সমাজ হয় মৃত, না হয় স্থবীর। চারপাশে তাকালে তার কিছু আভাস পাই।
অতএব, আপনার শিশুকে ভাষা শিক্ষা দিন, আর্ট-কালচারের অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করুন।
(ফেসবুকে পুরনো লেখা, কিঞ্চিৎ পরিমার্জিত)
০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০১
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের সাথে একমত হয়েই বলছি- জীবন নিয়ে সন্তুষ্টি লাভ খুব কঠিন। বর্তমান সময়ে নিজের যা আছে তাই নিয়ে সন্তষ্ট থাকার ইচ্ছেটা চলেই গিয়েছে মানুষের। যার যত বেশি আছে তার তত বেশি চাহিদা। ‘যত পাই আরো চাই’- এর গন্ডি থেকে বের হয়ে আসতে পারছিনা কেউ। যার ফলাফল হলো মানসিক অশান্তি এবং অন্যকে দেখে ঈর্ষান্বিত হওয়া।
২| ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫
নতুন বলেছেন: আমি ২০০৬ এ আমার কলেজের টিচারকে বলেছিলাম ১৫ বছর পরে আমি নিজেকে একটা ৫ তারা হোটেলের জিএম হিসেবে দেখতে চাই।
এখন ১৮ বছর পরে বুঝতে পারছি ডিপাটমেন্টের দায়ীত্বে যাওয়াটাই আমার জন্য শেষ ধাপ হবে। তাই হয়তো আর একটা পদন্নতি আমি পেতে পারি। আমাদের জাতী, বর্ন, পরিস্থিতির জন্য ইন্ড্রাস্টিতে্ সেটাই সবোচ্র্চ হবে, সেটাই বাস্তবতা।
তাই বর্তমানে চাকুরীর পাশাপাশি কি ভাবে ব্যবসা দাড় করানো যায় সেটা নিয়ে কাজ করছি।
০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০৬
জুল ভার্ন বলেছেন: আমিও অনেক কিছু হতে চেয়েছিলাম। যৎসামান্য প্রাপ্তি ছাড়া যা কিছু পেয়েছি, তা আমি পেতে চাইনি। বর্তমান যুগ হচ্ছে প্রতিযোগিতার যুগ। সবকিছুতে প্রতিযোগিতা। আমাদের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের কারণেই আমাদের আয় রোজকাররের জন্য বিকল্প ভাবতে বাধ্য করে। "সার্ভাইভাল ফিটেস্ট" কোনো ভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নাই।
৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬
বিষাদ সময় বলেছেন: চমৎকার লেখা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো আমার ভিন্ন মত, ভিন্ন কথা, ভিন্ন দর্শন রয়েছে তবে মোটা দাগে লেখার সাথে একমত।
হয়তো পড়েছেন, যদি না পড়ে থাকেন মোতাহের হোসেন চৌধুরীর " সংস্কৃতি কথা" প্রবন্ধটি পড়ে দেখতে পারেন, মনে হয় ভাল লাগবে। ধন্যবাদ।
০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:২৪
জুল ভার্ন বলেছেন: ভিন্নমত না থাকলে জীবন পানসে হয়ে যেতো। ভিন্নমতই সঠিক পথ খুঁজে নিতে সহায়ক হয়।
জ্বি, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর 'সংস্কৃতি কথা' প্রবন্ধটি পড়েছি।
প্রগতিশীল চিন্তার লেখক কাজী আবদুল ওদুদ সাহেবও ‘সংস্কৃতির কথা’ নামক প্রবন্ধে বাঙালি সংস্কৃতির স্বরুপ সম্পর্কে চমৎকার মতামত অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করেছেন। ‘সংস্কৃতি’ আমাদের কাছে একটি পরিচিত বিষয় কিন্তু এর সংজ্ঞা প্রদান অত্যন্ত কঠিন। তাছাড়া সংস্কৃতির সুনিদিষ্ট কোন সংজ্ঞাও নেই। সাধারণভাবে মানুষের জীবন আচরণকে সংস্কৃতি বলা হয়। বিভিন্ন গবেষক ও পণ্ডিতেরা নানা ভাবে সংস্কৃতির সংজ্ঞা দিয়েছেন। তার মতে সুন্দরের সাধনাই হলো সংস্কৃতি।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:২২
নতুন বলেছেন: মিডলাইফ ক্রাইসিস।
৩৫ এর পরে মানুষ তার সাধ্য আর বাস্তবতার মাঝে ফারাকটুকু বুঝতে পারে তাই এমনটা হয় বলে মনে হয়।
তখন মনে হয় যে স্বপ্ন পুরুনের জন্য যথেস্ট সময় হয়তো নাই।
তবে নিজের যা কিছু আছে সেটা নিয়ে সন্তুস্ট থাকতে শিখে গেলে তখন মানুষ সুখী হয়ে উঠে।