নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতই ফালাসরে পাগল মরতে একদিন হইবই

তারা ভরা রাতের নিষাচর...

জুনজুন

নিতান্তই সরল দিন গুলো কেটে যায়..... শুধু বসে থাকা কিছু সপ্নকে মুঠো করে।

জুনজুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে ছবি কথা বলে..

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩১

আমাদের যাদের আয়লানের বয়সি একটি কিংবা দুটি ছেলে আছে তাদের কাছে এমন একটা করুন ছবি কেবল ছবি ই নয়.... বরং যেন আমার সন্তানেরও এমন করুন পরিনতির একটা হাহাকার। আজ এমন মর্মস্পর্শী ছবি দেখে বুক কেপে উঠেনি এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। এক কথায় আয়লানের উপুড় হয়ে সাগরতীরে পড়ে থাকার ছবি সারাবিশ্বকে শোকাহত করেছে।

মর্মস্পর্শী ওই ছবি দেখে কেঁদেছেন সারা বিশ্ববাসি....আয়লানের পিতা আবদুল্লাহ কুর্দির দু্ঃখে সমব্যথি আজ সমগ্র মানব সমাজ। সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের গৃহযুদ্ধ থেকে প্রাণ বাঁচাতে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ইউরোপ অভিমুখে রওনা দেন আবদুল্লাহ কুর্দি। উন্নত জীবনের আশায় দুই নৌকায় করে তুরস্কের বোদরাম উপদ্বীপ থেকে গ্রিসের এজিয়ান দ্বীপের উদ্দেশে রওনা হন তারা। গৃহযুদ্ধে উত্তাল মধ্যপ্রাচ্যের মানুষগুলোর কাছে শেষ পর্যন্ত সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ ধরা দিলো ‘বিভীষিকা’ হয়ে। উত্তাল ঢেউয়ের দোলায় মায়ের কোল থেকে শিশুটি ছিটকে পড়লো সমুদ্রে। ভাসিয়ে নিয়ে এলো তুরস্কের সমুদ্র সৈকতে। মাকে ভাসিয়ে নিয়ে ফেললো দূরের অন্য এক সৈকতে।
নিশ্চয় মৃত্যুর আগ মুহুর্তে আয়লানের মায়ের অক্ষমতার কান্নার লোনা জল মিশেছে ভূমধ্য সাগরের লোনা জলে...হাজার মানুষের চোখের লোনা জল একটা সগরের সম না হলেও জীবিত আবদুল্লাহ কুর্দির দুঃখ যে সাগরের চে্য়েও বেশি!যাদের জন্য সবকিছু, তাদের হারিয়ে নিঃস্ব আবদুল্লাহর এখন আর কিছুই প্রয়োজন নেই। পুরো বিশ্ব হাতের মুঠোয় এনে দিলেও প্রয়োজন নেই আর।এই মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য কে দায়ী প্রশ্ন করা হলে, নানা মুনির নানা মত পাওয়া যাবে। তবে এটা হলপ করে বলা যেতে পারে পস্চাত্য আর ইউরোপের স্টক এক্সচেন্জের অস্ত্র ব্যবসায়ি কোম্পানিগুলোর শেয়ার ব্যবসা আর উৎপাদন বন্ধ করা গেলে মধ্য প্রাচ্য সহ আনেক যুদ্ধের দামামা বন্ধ হয়ে যেত চিরতরে।তবে এসব গৃহযুদ্ধের মূল কারন রাষ্ট্র ক্ষমতার উচ্চস্তরে বসে থাকা মানুষের ক্ষমতালিপ্সা..আর ইন্ধনদাতা দেশগুলোর অমানবিকতা। তাই আজ মানবিকতার আবেদনে প্রি্য় কবি নজরুলের কবিতার সুরে বলি,
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহিয়ান্ ।
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,
সব দেশে সব কালে ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।
শিশু আয়লান আজ সারা বিশ্বের শিশুদের প্রতিনিধি.. তার মৃত্য আজ পৃথিবীর সমস্ত শিশুর শোকাবহ পরিনীতির কথাই স্মরন করি্য়ে দেয়। যে শিশুর জন্য এই বিশ্ব হবার কথা নিরাপদ আবাস তাকে দেশত্যাগের সময় ডুবে মরা কখনই কাম্য নয়। আজ থেকে বহু আগেই শিশু অধিকার নিয়ে লিখে যওয়া কবি সুকান্তের কবিতা বড় কানে বাজে...
"এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।"

শিশু আয়লানের কাছে আমাদের করজোরে ক্ষমা প্রার্থনা , এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে রাখতে ব্যর্থ হয়েছি আমরা বার বার।


ক্ষমতালিপ্সায় অন্ধ মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের পাষান হৃদয় এতটুকু না টললেও তাদের পূর্বপুরুষদের মানবিকতার কাহিনী ছিল বিশ্বজোড়া। স্বয়ং নবী (সঃ) ও তার সাহাবা কেরাম (রাঃ) ছিলেন মানবতার বিমূর্ত প্রতীক।মহানবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনে শিশু কিশোরদের প্রতি ভালবাসার অনেক ইতিহাস রয়েছে , তন্মধ্যে হযরত যাদে বিন হারেছার ভালবাসার ইতিহাসই শীর্ষে। তিনি ছিলেন হযরত খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ (রাঃ)-এর ক্রীতদাস, অথচ রাসূল (সাঃ)-এর ভালবাসার বদৌলতে হয়েগেলেন হিব্বু রাসূল্লিাহ বা রাসূলুল্লাহর প্রীতিভাজন, পেয়ে গেলেন তাঁর সন্তানের মর্যাদা। এ যায়েদের পুত্র হযরত উসামার প্রতিও ছিল রাসূল (সাঃ)-এর গভীর ভালবাসা। শিশু হযরত উসামা একবার দরজার চৌকাঠে ধাক্কা লেগে তার কপাল থেকে রক্ত ঝড়তে লাগল। রাসূল (সাঃ) হযরত আয়েশাকে রক্ত মুছে দিতে বললেন, কিন্তু তাতেও তিনি স্বস্তি পেলেন না। তিনি নিজেই উঠে গিয়ে পবিত্র হাতে রক্ত মুছে ক্ষত স্থানে চুমু দিতে লাগলেন এবং মিষ্টি-মধুর কথা বলে তাকে শান্তনা দিতে লাগলেন।
রাসূল (সাঃ) যেমন নিজে শিশু কিশোরদের ভালবাসতেন তেমনি তাঁর পরিবারের সকল শিশুদের অত্যন্ত ভালবাসতেন। রাসূল (সাঃ)-এর শিশুপ্রীতি ফুটে উঠে নিুোক্ত হাদীসে “ একবার রাসূল (সাঃ)-এর নিকট এক শিশুকে আনা হলে তিনি তাকে চুম্বন করলেন এবং বললন: এরা মানুষকে ভীরু ও কৃপণ করে দেয়, অথচ এরা হলো আল্লাহর ফুল।” রাসূলের (সাঃ) আদর্শে সন্তান-সন্ততির প্রতি সদাচরণের মাধ্যমে যে পরিবার গড়ে ওঠে তার সীমা পৃথিবীতেই শেষ হয়ে যায় না, বরং আখেরাতের অসীমকাল পর্যন্ত তা বি¯তৃত। এ ব্যাপারে আল্লাহর ওয়াদা “যারা ঈমান গ্রহণ করেছে এবং তাদের সন্তানরা স্বঈমানে তাদের পদাঙ্ক অনসরণ করেছে আমি তাদের সে সব সন্তানকে তাদের সাথে (জান্নাতে) একত্রিত করে দেব। আর তাদের আমলে কোন প্রকার ঘাটতি ঘটাবো না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী। (সূরা তূর: ২১).... আল্লাহ সুবহানাহু'তালা এমন জান্নাতে আবদুল্লাহ কুর্দির পুরো পরিবারকে একত্রিত করুক সেই কামনা আর দো্য়া মহান আল্লার দরবারে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২

ইমু সোনা বলেছেন: ".হাজার মানুষের চোখের লোনা জল একটা সগরের সম না হলেও জীবিত আবদুল্লাহ কুর্দির দুঃখ যে সাগরের চে্য়েও বেশি!" আসলে যার যায় সেি বুঝে.... ভাল লাগল।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১৬

জুনজুন বলেছেন: ঠিক বলেছেন !!! আসলে যার যায় সেি বুঝে...

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: যে শিশুর জন্য এই বিশ্ব হবার কথা নিরাপদ আবাস তাকে দেশত্যাগের সময় ডুবে মরা কখনই কাম্য নয়। আজ থেকে বহু আগেই শিশু অধিকার নিয়ে লিখে যওয়া কবি সুকান্তের কবিতা বড় কানে বাজে...
"এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।"

ধ্বংস হোক আরবের লোভী ক্ষমতা পাগল অমানুষ শাসকেরা
ধ্বংস হোক বিশ্বের যুদ্ধবাজ নেতারা
জাতিসংঘের মতো অর্থব প্রতিষ্ঠানের কি কোন প্রয়োজন আছে আদৌ!!!!!

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪৩

জুনজুন বলেছেন: ধ্বংস হোক আরবের লোভী ক্ষমতা পাগল অমানুষ শাসকেরা
ধ্বংস হোক বিশ্বের যুদ্ধবাজ নেতারা
জাতিসংঘের মতো অর্থব প্রতিষ্ঠানের কি কোন প্রয়োজন আছে আদৌ!!!!! -- সহমত।।

৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৮

শামছুল ইসলাম বলেছেন: সময়োপযোগী লেখা!!!!
কিন্ত্ত তবুও বিবেক জাগছে না !!!!

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:২৪

জুনজুন বলেছেন: আসলে আমরা আমাদের বিবেক কে কারাবন্দি করে ফেলেছি....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.