নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতই ফালাসরে পাগল মরতে একদিন হইবই

তারা ভরা রাতের নিষাচর...

জুনজুন

নিতান্তই সরল দিন গুলো কেটে যায়..... শুধু বসে থাকা কিছু সপ্নকে মুঠো করে।

জুনজুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কান টানা টানি...

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৯

ছোট থাকতে আমরাই বোধহয় খুব আল্প কিছু ভাগ্যমানদের একজন যারা বিনে পয়সায় ভার্সিটি শিক্ষকের কাছে কিছুটা জ্ঞান অর্জন করেছি। বাবা ভার্সিটি শিক্ষক বিধায় আমাদের সামনে এই সু্যোগ উম্মুক্ত ছিল। তবে বাবা আমাদের পড়াশুনার ব্যপারে আগ্রহী হতেন খুব কমই। স্কুলের শিক্ষক মণ্ডলী কতৃক ব্যপক ভাবে লাল প্রাপ্ত হলে মা বাবাকে যখন এই বলে খোটা দিতেন--- “পরের ছেলে পেলে তো বেশ মানুষ করছ...... নিজের ছেলের ত গো মুর্খ হওয়া ছাড়া কপালে কোন গতি নেই তখন বাবা অগ্নি মূর্তি ধারন করে প্রথমেই কিছু উত্তম মধ্যম দিয়ে বই নিয়ে আসতে বলতেন। এরকমই একদিন বাবা আমাকে নিয়ে পড়াতে বসলেন। সুন্দরবন নিয়ে কি একটা হাবি যাবি ইংলিশ প্যারাগ্রাফ ছিল...... বাবা পড়াতে পড়াতে সুন্দরবন বানান করার সময় বললেন বই নিয়ে আয়। চশমা চোখে বাবা প্রথম ভুলটা ধরতে পারলেন যে সুন্দরবন বানানে প্রিন্টিং মিস্টেক আছে...... বাবা ঠিকও করে দি্লেন। তবে ছোটবেলা বাবার উপর তেমন আস্থা রাখতে না পেরে আমি দুটা বানানই মুখস্ত করলাম...... বলা ত যায় না স্যা্র উত্তম মধ্যম শুরু করলে আব্বার রেফারেন্স দিয়ে পার পাওয়ার সম্ভবনা খুবই কম। আর বইয়ে যে ভুল থাকতে পারে এটাও বিশ্বাস হচ্ছিল না। যা হোক পরদিন স্কুলে গিয়ে যথারীতি ক্লাস শুরু হল। স্যর হটাৎ মেয়েদের দিক থেকে প্রথম মেয়ে সহপাঠিনীকে সুন্দরবন বানান জিঞগাসিলেন...... যেহেতু প্রথম বেঞ্চের ছাত্রি তাই সে ফটাফট বইয়ে লেখা বানানটি ঝেড়ে দিলো। কিন্তু বিধিবাম স্যর বললেন “দাড়াই থাক......” বুঝলাম ডাল মে কুচ কালাহে—বাবা তাহলে ঠিকই বলেছিলেন। স্যর ছিলেন পুরাতন সোলেমান স্যার। আমরা তারে জমের মত ভয় করতাম। স্যারের শাস্তিও ছিল হরেক রকম। কখনো স্যর প্রশ্ন বলে পিঠে হাত বুলাতে থাকতেন যেন উত্তর মনে করার সময় দিচ্ছেন...... তবে স্যরের সেই মধুর আদরে(!) একটু ঘুম ঘুম ভাব আসতেই ঠাস করে কষে একটা চড়—মনে হত পিঠতা জ্বলে গেল। দ্বিতীয় পদ্ধতি সনাতন বেত আর তৃতীয় পদ্ধতি সহপাঠী দিয়ে কান টানা—বেশি লজ্জা দিতে চাইলে ছেলে কে মেয়ে দিয়ে বা মেয়েকে ছেলে দিয়ে।তবে সেদিন বোধহয় স্যারের মন ভালই ছিল তাই পাশের মেয়েরেই ধরলেন...... কিন্তু ছাপার ভুল তাই পাশের জনও ধরা খেল শুধু তাই নয় মেয়েদের সকলেই ধরা খেতে লাগল একে একে। আমি বুঝে গেলাম বাবা তাহলে ঠিকই বলেছিলেন-তাই বানানটা বার বার মনে মনে আওড়াতে লাগলাম যাতে ভুলে না যাই। আমার ঠিক পাশেই বসছিল আমাদের ফার্স্ট বয় জয়- সব মেয়েদের ছেড়ে ছেলেদের প্রায় অর্ধেক ঘুরে যখন জয়ের কাছে আসল তখন আমার উত্তেজনা চরমে...... জয় না পারলেই আমার সুযোগ। একসাথে ক্লাসের সকল মেয়ে আর কিছু ছেলে যার মধ্যে কিনা আমাদের ফার্স্ট বয়ও আছে কান টানার এমন ব্যপক সুযোগ কি আর রোজ রোজ আসে! তবে আমার ধারনা ছিল জয় পারবে--- কিন্তু বেচারাও একি ভুল করল। আর পায় কে স্যর কিছু বলার আগেই আমি লাফ দিয়ে বাবার শিখানো বানানখানি ঝেড়ে দিলাম। স্যার বল্লেন ‘টান’ আর যায় কোথায় শুরু হোল কান টানা...... ক্লাসের সকল মেয়ে আর কিছু ছেলের কান টানতে গিয়ে বুঝলাম যত দশাসই পোলাপাইন হোক না কেন সবার কানই কিন্তু বেশ তুলতুলে। তবে সুখের পরে দুঃখ আসে, মাত্র সাতদিনের মাথায় সেই পুরাতন সোলেমান স্যার এলেন অংক ক্লাস নিতে...... যদিও তিনি আমাদের অংক ক্লাস নেন না, সেদিন অংক আপা অনুপস্থিত থাকার সুবাদে এলেন আরকি। স্যর এসেই পনেরর নামতা ধরতে লাগলেন... হটাৎ আমাকে ধরলেন ছয় পনের কত? আমি বলে ফেললাম আশি। আর যায় কই স্যর ওপার থেকে এক মেয়ে সহপাঠিনীকে ধরতেই সে বলে দিল। সুতরাং কান মলা... তবে সম্মিলিত মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে সেদিনের কানমলার প্রতিশোধ হিসাবে একটু জোরেই দিছিল মনে হয়। আমি অনুভব করলাম আমার কর্ণযুগল শুধু রক্তবর্নই ধারন করে নাই তাঁর সাথে যে ব্যপক তাপ উৎপাদন করছিল তা দিয়ে মোটামুটি একটা ডিম সিদ্ধ করা যাইত। সেদিন বুঝলাম কান টানার যোগ্যতা অর্জন করা যত সহজ কান তথা মান রক্ষা করা তত সহজ নয়।তবে কানের সাথে যে মানের একটা সম্পর্ক আছে তা বলাই বাহুল্য। সে জন্যই শিশুকালে আমরা পড়ছি যে “এক কান কাটা যায় হাঁটের পাশ দিয়ে আর দুই কান কাটা যায় হাঁটের মাঝ দিয়ে”। যদিও এখন প্লাস্টিক সার্জারির যুগ কান কাটলেও বা কি... আবার জুড়ে দেয়া যায়। তাইত কানকাটাগণ গাড়ি বহর নিয়ে হাঁটের নয় একবারে মাঝরাস্তার মাঝ দিয়ে দাপিয়ে বেড়ান।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০১

শামছুল ইসলাম বলেছেন: বেশ মজা পেলাম।
+++ পোষ্ট ।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪১

জুনজুন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.