নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতই ফালাসরে পাগল মরতে একদিন হইবই

তারা ভরা রাতের নিষাচর...

জুনজুন

নিতান্তই সরল দিন গুলো কেটে যায়..... শুধু বসে থাকা কিছু সপ্নকে মুঠো করে।

জুনজুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেওয়ারিশ স্বপ্ন সুধা

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৩

খুব তাড়া ছিল তাই কুড়িল ফ্লাই ওভার পার হয়ে অন্য পাশ থেকে রিক্সা নিব, মাঝে দিয়ে রেল ক্রসিং গেছে। তাড়াহুড়ায় পার হচ্ছি...... দেখি সবাই কেমন অবাক হয়ে তাকায় আছে। কি ব্যপার নিচে তাকাতেই দেখি একজন মানুষের লাশ..... মাটিতে শোয়ানো আমার ঠিক দু তিন হাতের ভিতর। পরনে স্ট্রাইপ দেয়া পাঞ্জাবি এমন কি সেন্ডেল পর্যন্ত ঠিক আছে...... শুধু মাথা থেকে অর্ধেক চটের বস্তায় ঢাকা তাই চেহারা চিনার ঊপায় নেই।পাশে পুলিশও দাঁড়িয়ে, গোল হয়ে থাকা মানুষদের একজনকে বললাম, ভাই কি ভাবে হলো?
ভাই একটু আগে যে ট্রেন গেল লোক বোঝাই...... তাতেই এই এক্সিডেন্ট।
কোন পরিচয় পাওয়া গেল না, কৌতুহলে জিজ্ঞেস করি।
না ভাই...... পুলিশে দেখব।
মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়, আমাদের দেশে মানুষ যখন এক্সিডেন্ট করে প্রথমেই কিছু সুযোগ সন্ধানী মানুষ লোকটার প্রয়োজনিয় জিনিশগুলো হাপিশ করে দেয় সবার অলক্ষ্যে। এক ভুক্তভোগীর কাছে শুনেছিলাম তার পা ভেঙ্গে গেছে হাত বাসের বডিতে আটকে আছে...... উনি চিল্লাচ্ছেন ‘পানি’ ‘পানি’ করে আর পাশের এক লোক উনার হাতঘড়ি আর পকেটের মানি ব্যগ নেওয়ায় ব্যস্ত। বেচারা খুব আকুতি নিয়ে বলেছিল ভাই আমার সব নেন কিন্তু আমারে উদ্ধার করেন তবে পাষানের মন এতটুকু গলেনি।আল্লাহ সুবহানাহু তা’লা আমদের সুবুদ্ধি দান করুক। যে মানুষটা দূর্ঘটনার স্বীকার তার অনেক পরিচয় মুলক অনুষঙ্গ সাথেই থাকলেও এই বিশেষ ব্যক্তিশ্রেনির কারনে তিনি হয়ে যান বেওয়ারিশ। তার আত্নিয় স্বজন মর্গ আর মেডিকেলে খুজে ফেরে...... ভাগ্য ভাল থাকলে মিলে যায় লাশ না হয় শেষ সৎকারটুকুও মেলে না। আমরা যখন নাইজেরিয়া ছিলাম তখন বাবা বিভিন্ন কাজে দূর দুরান্তে যেতেন। মা চিন্তায় চিন্তায় ব্যকুল থাকতেন। একে ত বিদেশ বিভুই তার ঊপর সেদেশে মৃত ব্যক্তির সৎকারের জন্য আত্নিয় স্বজনের অপেক্ষা করা হত না। তখন ছিল আশির দশক আর দেশটি ছিল অনুন্নত...... আর এই বিংশ শতকে আমার দেশে এসব মেনে নেওয়া সত্যি কষ্টকর।
ঘটনাটা গত রোজার ঈদের আগের দিনের, বিশেষ কারনে অফিসে যেতে হয়েছিল। অফিসে ছিলাম পুরো তিনটা সাড়ে তিনটা অব্দি। সকালে যাবার সময় বাস একদম ফাকা......ঈদ উপলক্ষে বেশির ভাগ মানুষ বোধহয় ঢাকা ছেড়ে বাড়ি চলে গেছে। ফেরার সময় অফিস থেকে বেশ অলসভাবে বের হলাম, নিশ্চ্য় সকালের মতই বাস গাড়ি ফাকা থাকবে অন্য দিনের মত উঠা নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে না। কিন্তু বাস স্ট্যন্ডে এসে দেখি বিপরীত চিত্র। লোকে লোকারন্ন কিন্তু বাসের দেখা নেই। অবস্তা বারটাকে আরও তেরটা করার জন্য মহান বি আর টি সির বাস গুলো সার বেধে বন্ধ করে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে...... এই বিকালেই বলে ওদের ডিউটি শেষ। পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর থেকে সামনের দিকে হাঁটছে। মাঝে মাঝে যাও একদুইটা বাস আসছে ক্লোস ডোর ননস্টপ, তারপরও নারী পুরুষ বাচ্চা কাচ্চা সব হুমরি খেয়ে পড়তেছে। একজন পড়তে পড়তে আমার সামনেই বেচে গেলেন। সবার মতই রোজা মুখে হাটতে লাগলাম। কিছুক্ষন পর ভাগ্যে একটা বাস লেগেও গেল...... কুড়িল পর্যন্ত পাচ টাকার ভাড়া ত্রিশ টাকা... মওকার যুগে সবাই লাভ খুজে। মানুষকে যত জিম্মি ক্রা যায় ততই লাভ এদেশে।
ঈদের আগের দিন যে বেচারা লাশ হয়ে গেলেন তার পরিবারের কথা চিন্তা করে মনটাই খারাপ হয়ে যায়। একবার আমার খুব কাছের বড় ভাই এমন একটা ঘটনা বলেছিল...... ঈদের দিন সবাই আশা করে আছে বিশেষ করে তিন চার বছরের ছোট ছেলেটি যে বাবা আসবে। খেলনার আবদার ছিল অনেকদিনের। তবে বাবা এলেন ঠিকই তবে লাশ হয়ে এমন ঈদের দিনে, সবাইরে বুঝান গেলেও সেই বাচ্চারে বুঝাবে কে...... লাশের পাশে কানতে কানতে কেবল এক্টাই কথা বাবার সাথে তোমরা শুধু একবার কথা বলতে দাও। আমি শুধু আমার খেলনাটার কথা জিজ্ঞেস করব...... কি করুন আকুতি। এই ঈদেও যারা দির্ঘ জার্নি সবার জার্নি যেন নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হয় এই কামনা। প্রত্যেকেই আমদের যাত্রা পথে একটু সাবধানতা অবলম্বন করি, আমদের একটি হাসি মুখের আশায় আমদের সবার পরিবার পরিজনেরা।
সবাইকে অগ্রিম ঈদ শুভেচ্ছা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০০

মুহাম্মাদ আল আমিন উজানি বলেছেন: বাস্তব বলেছেন ভাই
মওকার যুগে সবাই লাভ খুজে

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১২

জুনজুন বলেছেন: ভাই পড়ার জন্য ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.