![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হয় আমেরিকা যাওয়ার মতো লোভনীয় অফার, নয়তো নীরা।
পরীক্ষায় ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে এরকম সমস্যায় পড়ব ভাবিনি কখনো।
সরকারের আদেশে আমাকে আমেরিকায় যেতে হবে। আমেরিকার প্রেসিডেন্টের মেয়ে যে স্কুলে পড়ে সে স্কুলের জন্য সবচাইতে ভাল একজন শিক্ষক চেয়েছে আমেরিকা। আমেরিকার রিকোয়েস্ট বলে কথা। কিছুতেই অমান্য করা যাবে না। তাই সরকার আমাকেই সিলেক্ট করেছে, আমেরিকা গিয়ে এক বছরের একটি কোর্স করানোর জন্য।
দীর্ঘদিন চেষ্টার পর মাত্র প্রেম শুরু করলাম নীরার সাথে। এমন অবস্থায় দূর পরবাসে একা একা চলে যেতে কি ইচ্ছে করে, আপনারাই বলেন? এখন কোথায় তার পাশে থাকব, তার সাথে ঘুরব ফিরব, এক বছরের মধ্যে বিয়ে করে ফেলারও পরিকল্পনা। তা না, সরকারের কথায় নাকি চলে যেতে হবে কোথাকার কোন আমেরিকা নামের দেশে!
বুঝতেই পারছেন, আমেরিকার চাইতে এই মুহুর্তে নীরাই আমাকে বেশী টানছে। কি যে করি! নীরাকে জিজ্ঞেস করলেই একটা বুদ্ধি পাওয়া যেত। তার অনেক বুদ্ধি। কিন্তু ব্যাপারটা কিছুতেই তাকে জানানো যাবে না। তবে সে নিজেই আমাকে জোর করে আমেরকিা পাঠাবে। এর চেয়ে নিজে নিজেই একট বুদ্ধি বের করা যাক।
অনেক ভেবে চিমেত্ম একটা বুদ্ধি পাওয়া গেল। এলাকার এক ডাক্তারের কাছে গেলাম। তাকে রিকোয়েস্ট করলাম এক মাস বেড রেস্টের কথা বলে একটা মেডিকেল সার্টিফিকেট দিতে। বিনিময়ে তাকে পাঁচ হাজার টাকা অফার করলাম।
ডাক্তার বেশ বয়স্ক। ষাটের কম হবে না বয়েস। তিনি জানতে চাইলেন, কেন আমাকে স্বয়ং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট শিক্ষক হিসেবে চাইলেন।
আসল ঘটনা জানালাম তাকে। প্রেসিডেন্টের মেয়ের খায়েশ হয়েছে বাংলা ভাষা শিখে নাকি কসিব হাবিজাবি বাংলা সিরিয়্যাল দেখবে।
বল কি, বল কি? অনেক দিন হয় ডাক্তারী নিয়ে এতটা ব্যসত্ম আছি যে বাইরের পৃথিবীর কোন খবর রাখতে পারি না। আজ থেকে দশ বছর আগেও তো আমাদের দেশেই কেউ বাংলা নাটক দেখতো না। সবার ঘরে ঘরে চলত হিন্দী সিরিয়্যাল, হিন্দী কার্টুন।
না ডাক্তার সাহেব। ব্লগারস চ্যানেল নামে কি একটা চ্যানেল হইসে। ঐ চ্যানেলে এমন সব নাটক সিনেমা বানায় যে এইগুলা এখন ইন্ডিয়াতে তো চলেই, ইউরোপ আমেরকিাতেও নাকি লোকে দেখতেসে।
কি চ্যানেল বললা? ব্লগারস চ্যানেল। ওকে দেখুমনে।
তা দেখেন। কিন্তু আমার সার্টিফিকেট?
না বাবা। আমি বলি কি, তুমি আমেরিকা যাও। আমি মিথ্যা কোন সার্টিফিকেট তোমাকে দিতে পারব না। বলা যায় না। তুমি ব্লগারস চ্যানেলের কেউ হতে পার। পরে আমাকে ফাঁসাবে।
অগত্যা ভোল পাল্টাতেই হল। পকেটে রাখা খেলনা পিসত্মলটা ডাক্তারের কপালে ঠেকালাম। কাজ হল। একটা সার্টিফিকেট পেয়ে গেলাম। বাসায় ফিরে সার্টিফিকেট স্ক্যান করে মেইল করলাম ভার্সিটিতে। আহ! কি শামিত্ম। কি শামিত্ম! নীরার সাথে সময় কাটানো ঠেকায় কে আর।
কিন্তু না, পরদিন থেকেই ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লাম। ডাক্তার ডেকে আনা হল। প্রেসক্রিপশন- এক সপ্তাহের বেড রেস্ট। কি আর করা। নীরাকে অসুস্থতার কথা জানালাম। বল্লাম ঠিক এক সপ্তাহ পর দেখা করব।
দুদিন পর ফেসবুকে একটা মেসেজ পেলাম। নীরার।
প্রিয় রাকিব,
তোমাকে একটা তথ্য দেয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি। যেহেতু আমরা একে অপরকে ভালবাসি এবং বিয়ে করব, তথ্যটা তোমার জানা প্রয়োজন। আমি একজন ব্লগার। পুষ্পকুমারী ছদ্মনামে ব্লগিং করি। তুমি খুব ভালভাবে জানো ২০১৩ সালে শাহবাগ আন্দোলনে বিজয়ের পর আমরা সবাই রক্ত শপথ নিয়েছিলাম এ বলে যে আমাদের এই দুখিনি দেশটাকে সারা পৃথিবীতে সব দিক থেকে একটা উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। আমরা আমাদের পথে এগিয়ে চলেছি। আমাদের ব্লগস্ফিয়ারের মেধাবী সব ব্লগাররা যার যার দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে আমাদের স্বপ্ন বাসত্মবায়নের। আমরা স্বপ্ন দেখি একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের। সেই লক্ষ্যে আমাদের অকুতোভয় সাংবাদিক ব্লগার যারা আছেন তারা যেখানে যেখানে দুর্নীতির আভাস পাচ্ছেন সেখানেই ছুটে যাচ্ছেন। তুলে ধরছেন, প্রমান করে দিচ্ছেন তা জনতার সামনে। একদল ব্লগার পুলিশে ঢুকেছেন। তারা চুরি-ডাকাতি খুন-রাহাজানি এসব ঠেকাতে তাদের সর্বোচ্চ করছেন। খেয়াল করলে দেখবে পত্রিকায় খুন-খারাবীর ঘটনার খবর খুব কম আসে এখন। ড. ইমরানের মতো একদল ব্লগার ডাক্তার কাজ করছেন নিজেদের আরো দক্ষ ডাক্তারে পরিণত করার জন্য। আমরা স্বপ্ন দেখি এমন দিন খুব বেশি দুরে না যেদিন বাইরের লোকজন বাংলাদেশে আসবে চিকিৎসা নিতে। ইভ টিজিং এর বিরূদ্ধে আমরা ফেসবুক ভিত্তিক একটা পেজ খুলেছি, যেখানে আক্রামত্মরা তুলে ধরছেন চিহ্নিত ইভটিজারদের ছবি ও ঠিকানা। এইসব বখাটেদের সামাজিকভাবে বয়কট করা হচ্ছে। আমরা বিশ্ব^াস করি সেদিন আর বেশী দূরে না যেদিন এই পেজটি বন্ধ করে দিতে পারব। তুমি জানো, আমাদের একটা টিভি চ্যানেল আছে। নাম ব্লগারস চ্যানেল। হাসান মাহবুব, নুশেরা, বাপী হাসান, নয়ন, ম্যাক্স, ফ্রাস্টেটেড, বাতিঘর, শায়মা, সোনাবীজদের মতো সব মেধাবী লিখিয়েরা এখানে এক সাথে নাটক সিনেমা বানায়। সেগুলা এতোটাই জনপ্রিয় এখন যে অন্যান্য দেশের লোকজনও ধীরে ধীরে বাংলা নাটক দেখা শুরু করেছে। এভাবে আমরা আমাদের ভাষাটাকে একটা গ্লোবাল ভাষায় পরিণত করার পরিকল্পনা করেছি। শুনে খুশী হবে, আমাদের বাংলা ভাষাটা একসময় ইংরেজীর জায়গা দখল করে নেবে। এ কাজে অনেকদূর এগিয়েও গিয়েছি আমরা। তুমি শুনে অবাক হবে, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের মেয়ে বাংলা নাটক দেখার জন্য বাংলা ভাষা শিখতে চাচ্ছে। তারা আমাদের দেশ থেকে একজন শিক্ষক চেয়েছে। আমাদের ভার্সিটি থেকে গতকাল আমাকে মেইল করে বলেছে, যাকে সিলেক্ট করা হয়েছিল সে অসুস্থ থাকায় সুযোগটা তারা আমাকে দিতে চাচ্ছে।
ব্যাপারটা তোমাকে প্লেনে উঠার আগে জানাইনি। তবে তুমি আমাকে যেতে দিতে না। বাংলা ভাষা বিশ্বময় ছড়িয়ে দেয়ার কাজে আমি তোমার সাহায্য চাইছি। মাত্র একটা বছর তুমি অপেক্ষা কর, প্লিজ। ভেবে নিয়ো আমাদের এ অপেক্ষাটাও আমাদের বিপ্লবেরই একটা অংশ।
ইতি
তোমার নীরা।
বি.দ্র: গল্পের শিরোনামে ফ্যান্টাসী কথাটা উল্লেখ করেছি। তবু বিশ্বাস করি, আমরা ব্লগাররা যে গণজাগরনের সৃষ্টি করেছি সেই গণজাগরন দিয়েই একসময় আমার এই গল্পটা সত্যি ঘটনায় পরিণত করতে পারব। জয়তু সহব্লগারবৃন্দ।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৮
কয়েস সামী বলেছেন: অবশ্যই হবে অাপু। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২
"চিত্ত যেথা ভয় শূণ্য, উচ্চ সেথা শির" বলেছেন: গল্পটা জটিল। খুব সুন্দর আপনার লেখনী শক্তি। আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। এও সম্ভব কয়েক লাইন লিখে একজন মানুষকে আবেগ পরিপূর্ণ করা যায়। ধন্যবাদ। ব্লগারদের শক্তি হোক দ্বিমুখী যেন তারা নিজের ভুলগুলোও ধরতে পারে
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫০
কয়েস সামী বলেছেন: আসলেই কি এরকম হয়েছে লেখাটা? আমার কাছে এমন মনে হয় না কেন? বারবার মনে হচ্ছে আরেকটু ভাল হলে ভাল ছিল। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫০
ধাতবগোলক বলেছেন: ভাষাটা খুব সাবলীল লাগলো,চমৎকার আইডিয়া।তবে অবাস্তব নয়,আমরাই বাস্তব করতে পারি
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫০
কয়েস সামী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এমন একটা কমেন্টের জন্য।
৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৫
ইখতামিন বলেছেন: ৪র্থ ভালো লাগা. ++++++++++
এত-তো সুন্দর গল্প!
আমি জানি, এই গল্প একদিন সত্যি হবেই.
জয়তু প্রজন্ম চত্বর...
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫১
কয়েস সামী বলেছেন: ভাইয়া, অাপনি আমার ব্লগে!
৫| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:১০
ইখতামিন বলেছেন:
ছি. ছি. কী যে বলেন না ভাই.
খুব শরম পাইতেছি. :!>
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২২
কয়েস সামী বলেছেন: লজ্জা না পাইয়া মাঝে মাঝে আইসেন! ভাল থাইকেন।
৬| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৮
জাকারিয়া মুবিন বলেছেন: চমৎকার কল্পনা।
বাস্তবে পরিনত হোক এই প্রত্যাশায়.......
৭| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৮
জাকারিয়া মুবিন বলেছেন: চমৎকার কল্পনা।
বাস্তবে পরিনত হোক এই প্রত্যাশায়.......
অনুসারিত।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩২
কয়েস সামী বলেছেন: মাঝে মাঝে আইসা অনুপ্রেরণা দিয়েন। আরো আসবে এমন লেখা। জয়তু গণজাগরন।
৮| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৬
একুশে২১ বলেছেন: আমরা পারব ইনশাল্লাহ। খুব সুন্দর হয়েছে। পড়ার সময় মনে হচ্ছিল যেন স্বপ্ন দেখছি।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৪
কয়েস সামী বলেছেন: আমরা স্বপ্ন দেখেই যাব যদ্দিন না আমার বাংলাকে এমন একটি ভাষায় পরিণত করতে পারব। বাংলা হবে সব জাতির কমন ভাষা।
৯| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:১৭
মাক্স বলেছেন: নীরার চিঠি শুরু হওয়াতেই ভাবসিলাম এমন একটা অঘটন ঘটবে।
গল্প ভালো সাজিয়েছেন+++++
০৫ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:০৪
কয়েস সামী বলেছেন: অাপনার নামের বানানটা বোধহয় ভুল লিখসি!
১০| ০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৩২
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: ব্লগার হিসেবে গর্বিত।
জয় বাংলা, জয় জনতা।
০৫ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:০৪
কয়েস সামী বলেছেন: অামিও গর্বিত বোধ করি। সবসময়।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১৯
আরজু পনি বলেছেন:
আহা! গল্পের ভাবনাটা যেন কোনভাবে সত্যি হয়।
ভালো লাগা রইল।।