![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাবুকে নিয়ে আর পারি না! বাইরে কোথাও বেড়াতে যেতে হলেই আগে তাকে বাথরুমে যেতে হবে।
তার চাচাও এমনটা ছিল। নিজের বিয়ের বরযাত্রী যাবে। গাড়ি বেশ কিছুদূর এগিয়ে গেছে। হঠাৎ তার মনে হল বাথরুম করা হয়নি। শুনে মেজাজ গরম হল। জিজ্ঞেস করলাম, ‘তোর কি বাথরুম পেয়েছে?’
‘জ্বি না ভাইয়া।’
‘তবে কেন বাথরুম করতে ফিরে যেতে হবে?’ আমার প্রশ্ন।
‘ভাইয়া, এটা আমার অভ্যাস।’
‘আজ থেকে তোর অভ্যাসটা পাল্টে ফ্যাল। তোর এ বিদঘুটে অভ্যাস জানতে পেলে, তোর বউ তো তোকে পাগল ভাববে।’ বুঝানোর চেষ্টা করলাম। তবু তার এক কথা, ফিরে যেতে হবে বাসায়। অগত্যা সেদিন বাসায় ফিরে যেতে হয়েছিল।
বাবুকে ডাকলাম। ‘বাবু, তাড়াতাড়ি করো। তোমার মা বাসায় পৌছার আগেই বেরুতে হবে।’
‘মা আসলে কি সমস্যা বাবা?’ বাথরুম থেকেই তার প্রশ্ন।
‘তোমাকে তবে আর প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যেতে দেবেন না, বাবা। তাড়াতাড়ি করো।’ ব্যাখ্যা করলাম তাকে।
‘কেন যেতে দেবেন না, বাবা?’
‘কারণ তোমার মা প্রধানমন্ত্রীর দলকে পছন্দ করেন না।’
‘কাকে পছন্দ করেন তবে?
‘উফ! বেশি কথা না বলে বের হও তাড়াতাড়ি।’
‘না। আগে আমাকে বলো, তারপর বেরুব।’
এই হচ্ছে আমাদের বাবু! কোন প্রশ্ন একবার মাথায় ঢুকলে সেটার উত্তর জানতেই হবে।
‘তোমার আম্মু খালেদা জিয়ার দলকে পছন্দ করেন। ওকে বাবা। আর কোনো প্রশ্ন না। যেতে চাইলে তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসো।’
‘আসছি বাবা।’
যা ভেবেছিলাম তাই হল। বের হওয়ার আগেই শীলা উপস্থিত। এখন সে তো আর তবে বাবুকে আমার সাথে যেতে দিবে না।
‘কই যাও?’ আমাকে আর বাবুকে তৈরী অবস্থায় দেখে তার প্রশ্ন।
‘হাসিনার জনসভায়। তোমাকে না আজ খুব সুন্দর লাগছে!’ শীলা যাতে মূল ব্যাপারটা ধরতে না পারে তাই কথা ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা।
‘আমাকে সুন্দর লাগছে, ভাল কথা। কিন্তু বাবুকে তুমি নিয়ে যেতে পারবে না। বাবু আমার সাথে যাবে।’
‘তোমার সাথে? কোথায়?’
‘আজ পল্টনে খালেদার জনসভা। ওখানে যাব।’
শীলা ছাত্রীকালে ছাত্রদল করত। দলীয় নেতানেত্রীদের সাথে এখনো ভালই যোগাযোগ আছে তার। ছাত্রদল বা বি এন পির সাথে সে নিজে যোগাযোগ রাখুক, তাই বলে বাবুকেও বিএনপির চ্যালা বানাবে, এ আমি হতে দেব না কিছুতেই।
‘না তুমি বাবুকে বিএনপির সমর্থক বানাতে পারবে না। ওকে আমি আওয়ামীলীগের জনসভায় নিয়ে যাব।’
‘ও! ওকে তুমি আওয়ামী লীগ বানাতে চাচ্ছ, না? আমি থাকতে এ আমি কিছুতেই হতে দিব না।’
‘কেন দিবা না? কেন? তুমি কি মনে কর তোমার বি এন পি ভাল? রাজাকারদের বাঁচাতে গিয়ে দেশে কি তান্ডব চালাচ্ছে তোমার বি এন পি। তুমি তোমার ছেলেকে রাজাকার বানাতে চাও?’
‘রাজাকার? আওয়ামী লীগ কি দুধে ধোঁওয়া তুলসী পাতা? তোমাদের দলে বুঝি কোন রাজাকার নাই?’
‘রাজাকার থাক বা না থাক আমরা দেশে আমরা কোন অরাজকতা করি না। যত্তসব অরাজকদের দল।’
‘কী? আমরা অরাজকতা করি? অরাজকতা! এতোই যখন দেশপ্রেম তোমাদের নেত্রী সংলাপে বসেন না কেন? খালেদার সাথে আলোচনায় বসেন না কেন? তবেই তো আর কোন সহিংসতা হয় না দেশে।’
‘আলোচনা? তোমার নেত্রী কি আলোচনায় আসবেন মনে কর? উনি নিজেই আলোচনায় বসতে চান না। ভয় উনার, আলোচনায় বসলে তো সরকার উৎখাতের আন্দোলন করা যাবে না।’
‘জ্বি না স্যার। ভয় তোমার নেত্রী করছেন। ভাবছেন আলোচনায় বসলেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে হবে। বাবু আমার সাথে পল্টনে যাবে। তোমার সাথে না। কখ্খনো না।’
‘না, আমি কারু সাথে যাব না।’ হঠাৎ বাবুর কথায় আমাদের তর্ক থামাতে হল। দুজন একসাথে বাবুর দিকে তাকালাম। সে এতোক্ষণ মনোযোগ দিয়ে আমাদের কথা শুনছিল, এটা খেয়ালই করিনি আমরা।
জিজ্ঞেস করলাম, ‘কেন যাবে না বাবু। আওয়ামী লীগের জনসভায় চলো। দেখবে কত্তো মানুষ।’
‘না বাবা, খালেদার সভায় চলো। ওখানে অরো বেশি মানুষ হবে।’ আমার কথা কেড়ে নিল শীলা।
‘না, আমি কোথাও যাব না।’ বাবুর এক কথা।
আমরা অবাক হলাম।
‘কেন যাবে না বাবা?’ এবার দুজনই একসাথে প্রশ্নটা করলাম।
অনেকটা সময় নিচ্ছে দেখে বুঝলাম বেশ কঠিন কথা শুনাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সে।
‘বাবা, তুমি কোন দল সাপোর্ট কর?’ আমাকে প্রশ্ন করল সে।
বললাম, ‘কেন বাবা, আওয়ামী লীগ। এটা ছাড়া তো আর কাউকে সাপোর্ট করা যায় না এ দেশে।’ শেষের কথাটা আমি বাবুর মাকে শুনানোর জন্যই বললাম।
‘মা, তুমি?' বাবু শীলার দিকে তাকালো।
‘ অবশ্যই বি এন পি, বাবা। কেন হঠাৎ এ প্রশ্ন বাবু?’
বাবু আমাদের দিকে একে একে তাকাল। তারপর শুরু করল, ‘তোমরা দুজন দুটো দলকে সাপোর্ট কর। তবু তোমরা এক সাথে থাক?’
‘হ্যা বাবা। দশ বছর ধরে আমরা এক সাথে আছি?’ বাবুকে জানালাম।
‘কিন্তু খালেদা - হাসিনা কেন একসাথে মাত্র একটা বার আলোচনায় বসেন না?
বাবুর প্রশ্নের উত্তর আমাদের কারুর জানা না থাকায় চুপ করে থাকলাম।
বাবু কিছুক্ষণ পর আবার বলল, ‘যেদিন উনারা আলোচনায় বসবেন কেবল সেদিন আমি তাদের আলোচনা দেখতে যাব।’
২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৫২
কয়েস সামী বলেছেন: তাও ঠিক। আলোচনা করেই বা কি হবে?
২| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৩১
ইনকগনিটো বলেছেন: কোন সফল আলোচনা এখন পর্যন্ত কেউ দেখছে?
২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৫৬
কয়েস সামী বলেছেন: না। তবু আমরা বারবার আশায় বুক বাঁধি।আশা নিয়েই বেঁচে থাকি।
৩| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:২৫
মামুন রশিদ বলেছেন: যেদিন উনারা আলোচনায় বসবেন কেবল সেদিন আমি তাদের আলোচনা দেখতে যাব।
আর আলোচনা হইছে
২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৫১
কয়েস সামী বলেছেন: হ আলোচনা যে হইব না এইটা বুঝবার পারসি আগেই। তবু, মনে আমার বড়ই হাউস!
৪| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:১০
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: ভালো লাগলো ছোট্ট প্রতিবাদ
২৩ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:১৩
কয়েস সামী বলেছেন: আমি আনন্দিত!
৫| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৪২
মাক্স বলেছেন: প্রতিবাদ ভাল্লাগসে!!
২৩ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৫
কয়েস সামী বলেছেন: কমেন্ট ভাল্লাগসে!
৬| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৪১
শ্রাবণ জল বলেছেন: ছোট্ট প্রতিবাদ ভাল লাগল।
২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:২৩
কয়েস সামী বলেছেন: তোমাকে দেখেও ভাল লাগছে!
৭| ২৪ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৩৮
আরজু পনি বলেছেন:
গল্পচ্ছলে কতো সুন্দর করে প্রতবিাদ জানালেন!
ভালো লাগলো সামী।।
২৪ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৭:৩১
কয়েস সামী বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ ।
৮| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০৯
অপ্রচলিত বলেছেন: আরেহ!! আলোচনা নিয়ে ভালই আলোচনা জমছে দেখি!
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৮
জাকারিয়া মুবিন বলেছেন:
কোন দলই ভালনা। আলোচনায় বসে কি হবে!!