নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা অামার তৃষ্ণার জল

কয়েস সামী

i m nothing in this huge world...

কয়েস সামী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবাক চোখে তাকিয়ে থেকে!

০১ লা মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৫৮

-তারপর? থামলে কেন?



রূপা গভীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে গল্পের পরের অংশ শুনার জন্য। এতোটা আগ্রহ নিয়ে সে আমার লেখা গল্প শুনছে- এটা আমার কাছে স্বপ্নের চাইতেও অবাস্তব কিছু। প্রচুর পড়াশুনা করা মেয়ে রূপা। বাংলা সাহিত্য থেকে শুরু করে বিদেশী সাহিত্যে তার অবাধ আনাগোনা। প্রতিদিন রাতের বেলা বই না পড়লে নাকি তার ঘুম আসে না ঠিকমতো। কিন্তু দুঃখ তো এটাই যে আমার মতো লেখকের কোন গুরুত্ব তার কাছে নাই।



সেই ছোট বেলা থেকেই লেখালেখির অভ্যাস আমার। লেখালেখি করে অনেক আনন্দ পাই। রূপার বই প্রীতিও আমাকে লেখালেখির চর্চা চালিয়ে যেতে উৎসাহ দেয়। কবিতা দিয়ে শুরু করেছিলাম। এখন টুকটাক গল্প লেখি। এইতো সেদিন একটা কবিতা লিখে রূপাকে পড়ে শুনালামঃ

আচ্ছা তুমিই বল

আমার কি যে হল

হয়ে গেল সব এলোমেলো

তোমাকে দেখার পর।

প্রতিটা দিন কেটে যায়

শুধুই তোমার ভাবনায়

কাছে পাওয়ার আশায়

তোমাকে দেখার পর।

তুমি কেন আসো না?

কিছুই ভালো লাগে না,

সময় কাটতে চায় না

তোমাকে দেখার পর।

এতো সুন্দর একটা কবিতা শুনে সে কী বলল জানেন? এটা নাকি একটা কাঁচা হাতের লেখা। ছন্দে ভুল আছে। এক কথায় এটা নাকি কবিতার ‘ক’ ও হয় নি। আরে বাবা! আমি তো রবীন্দ্র নাথ হয়ে যাই নি যে তাঁর মতো কবিতা লিখতে পারবো। তবে আমি দৃঢ় বিশ্বাস রাখি যে একদিন না একদিন আমি একজন বিখ্যাত লেখক হবোই হবো। তখন রূপা কেবল আমার লেখা বই পড়বে। বই পড়ে অবাক হয়ে বলবে, তুমি এইটা লিখলে কিভাবে!



রূপা যখন অবাক চোখে তাকায় তখন যে কী অদ্ভুত সুন্দর লাগে! খুব আদর জাগে মনে। ইচ্ছে করে সারাক্ষণ তার চোখে তাকিয়ে থাকি। তবে রূপাকে এমন অবাক করা খুব কঠিন। একবারই তাকে সেরকম সারপ্রাইজ দিতে পেরেছিলাম।



তখন কলেজে পড়ি। আমি বোটানিতে আর সে ইংরেজীতে। অনার্স পরীক্ষায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্স্ট হয়ে কলেজের সবার নজর কেড়ে নিয়েছে সে। অন্যদিকে আমি বোটানির মতো সহজ সাবজেক্টে ফেল করে নাম কামিয়েছি বেশ। পরীক্ষায় সদ্য ফেল করা আমি অসীম সাহসে যখন তার সামনে গিয়ে বললাম, আমি তোমায় বিয়ে করতে চাই, রূপা ভীষন অবাক হয়ে বলেছিল, তোমার মতো একটা গবেট এ কথা বলার সাহস পেলো কী করে। সেই একবারই তার অবাক চোখ দেখেছিলাম। এতোটা অবাক হওয়া চোখ কখনো দেখিনি আমি। অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাই স্যরি বলে কেটে পরেছিলাম। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে রূপার অবশেষে আমাকেই বিয়ে করতে হয়েছিল। অন্য একদিন সে গল্প করা যাবে। আজকের গল্প বলি।



গল্প পড়তে পড়তে আমি ইচ্ছে করেই থেমেছিলাম। রূপার অবাক হওয়া চোখ দেখার লোভ সামলাতে পারছিলাম না। রূপা সত্যি সত্যি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। আমি গোগ্রাসে তার চোখ গিলতে থাকলাম।

-আহ! পড় তো!

বাধ্য হয়ে গল্পের আরো কিছুটা অংশ পড়লাম।

রূপা শব্দ করে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। অনেকবার দেখেছি বই পড়তে পড়তে সে যখন চরম উত্তেজনায় থাকে তখন এমন করে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেয়। আজ আমার গল্প শুনে তবে রূপা এতোটাই উত্তেজিত হয়ে পড়েছে!



-আবার থামলে কেন? তাড়াতাড়ি বল তারপর কী হলো?

রূপার তাড়া খেয়ে আবার পড়া শুরু করলাম। এক টানে গল্পটা শেষ করে তারপর থামলাম। রূপার দিকে তাকালাম। বিষ্ময়ভরা চোখ দুটি থেকে কী যে এক গভীর মায়া বের হয়ে আসছে! কিছুটা কি শ্রদ্ধাবোধ দেখা যাচ্ছে সে চোখে? লেখক হিসেবে তবে সে আমাকে স্বীকার করে নিচ্ছে?

-অ’সাম!

-আমি ইংরেজী বুঝি না, বাংলায় বলো।

-চমৎকার গল্প। এই গল্প তুমি লিখলা কিভাবে? কিভাবে লিখলা তুমি এই গল্প?



আমি চুপ মেরে থাকলাম। তার অবাক হওয়া চোখের লোভে পড়ে বলতে পারলাম না, গল্পটা আমার লেখা না। নেট থেকে নেয়া। অথচ গল্পটা বলা শুরু করার আগে ঠিক করেছিলাম গল্প শেষে তারপর তাকে ব্যাপারটা জানাবো।

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:০৪

টুম্পা মনি বলেছেন: অসম্ভব ভালো লাগল। মায়াময় গল্প।

০২ রা মার্চ, ২০১৪ সকাল ৭:৩১

কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ টুম্পা মনি।

২| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:০৮

বেলা শেষে বলেছেন: অবাক চোখে তাকিয়ে থেকে!

আমি চুপ মেরে থাকলাম। তার অবাক হওয়া চোখের লোভে পড়ে বলতে পারলাম না, গল্পটা আমার লেখা না। নেট থেকে নেয়া। অথচ গল্পটা বলা শুরু করার আগে ঠিক করেছিলাম গল্প শেষে তারপর তাকে ব্যাপারটা জানাবো।
Beautiful, i like it , i feel it .....

০২ রা মার্চ, ২০১৪ সকাল ৭:৩২

কয়েস সামী বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। পাশে থাকুন।

৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:২৩

পাপতাড়ুয়া বলেছেন: 'যা আছে তাতেই আমি, ভালোবাসলে এই আমাকেই বাসতে হবে, আমাকে আমার মত মেনে নিয়ে'--- এই রকম একটা কথা শুনি প্রায়ই।

এই আক্ষেপ মনে পড়ে গেলো আপনার গল্পটা পড়ে, কয়েস সামী।

আছেন কেমন?

০২ রা মার্চ, ২০১৪ সকাল ৭:৩২

কয়েস সামী বলেছেন: অনেক দিন পর! ভাল্লাগছে দেখে। ভাল আছি। আপনার মন্তব্যে ভাল লাগা।

৪| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৩০

সুমন কর বলেছেন: প্রথমে উপস্থাপন এবং শেষের ধাক্কাটা ভালই লাগল।

০২ রা মার্চ, ২০১৪ সকাল ৭:৩৩

কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ সুমন। ভাল থাকুন।

৫| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১:১০

বৃতি বলেছেন: ভালো লাগলো ।

০২ রা মার্চ, ২০১৪ সকাল ৭:৩৩

কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাল লাগা জানানোর জন্য।

৬| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১:২৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: চমৎকার মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন এ গল্পটিতেও।

আমারও একটা গল্প আছে। আমি কবি। একটা মেয়েকে রোজ কবিতা শোনাই। তার মন ভরে না- কী যে ছাই লিখি! একদিন তাকে অনেকগুলো কবিতা দিলাম- কবিতার পুরোটা খাতা। মেয়েটি তা থেকে একটি কবিতা পড়ে অভিভূত হয়েছিল। কিন্তু এজন্য আমি সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম, কারণ, ঐ কবিতাটি আমি লিখি নি।

আপনার গল্পটাতে রূপার প্রকৃত সাহিত্যনিষ্ঠা চমৎকার ভাবে ফুটে উঠেছে। সে সত্যিই উচ্চমার্গীয় সাহিত্য বোঝে, তাই শেষোক্ত (ক্লাসিক) গল্পটি পাঠে সে বিস্ময়াভিভূত হয়ে পড়ে- এটা তুমি কীভাবে লিখলে- আর রুপার এই বিস্ময়ই লেখকের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ সৃষ্টি করে- হায়, রুপার মন ভরে এমন গল্পটি সে নিজে লিখতে পারে নি। গল্পে আরও একটা নৈপুণ্য লক্ষণীয়। শেষোক্ত

৭| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১:৩৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ভুলবশত কমেন্ট শেষ করার আগেই বাটনে চাপ লাগে ;) বাকিটুকু নিচে ;)

***

গল্পে আরও একটা নৈপুণ্য লক্ষণীয়। শেষোক্ত গল্পটি শুনেও রুপা (সেটি লেখকের লেখা গল্প ভেবে) বলতে পারতো- এটি কাঁচা হাতের লেখা। এ থেকে লেখকের শান্তি লাভ হতো এই ভেবে যে, লেখকের প্রতি হয়তো রুপার কোনো কারণে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে, সেজন্য তার লেখাকে রুপা মূল্যায়ন করতে চায় না। --- রুপার এরূপ মূল্যায়ন না দেখানোর উদ্দেশ্য হলো সাহিত্য-বোদ্ধাগণ সাধারণ সাহিত্য থেকে অনায়াসেই প্রকৃত সাহিত্যকে চিহ্নিত করতে সক্ষম।

আপনার নৈপুণ্যে মুগ্ধ হচ্ছি।

শুভেচ্ছা।

০২ রা মার্চ, ২০১৪ সকাল ৭:৩৫

কয়েস সামী বলেছেন: আপনার মন্তব্য খুব ভয়ে ভয়ে এবং খুব আগ্রহে পড়ি। এতো চমৎকার করে মন্তব্য লিখেন! পাঠক হিসেবেও আপনার প্রশংসা না করে পারি না। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৮| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৪৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: বেশি ভালো লাগে নাই।

০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:২৪

কয়েস সামী বলেছেন: আপনার যে অল্প একটু ভাল্লাগসে এইটাই আমার কাছে অনেক বস!

৯| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:০৫

দুষ্টু ছোড়া বলেছেন: আপনার স্বরচিত কবিতাটার বিষয়ে রুপার সাথে আমি একমত। =p~
ওটা বাদ দিলে বাকিটা চমৎকার হয়েছে।

০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:২৪

কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ।

১০| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:০১

মামুন রশিদ বলেছেন: গল্প পড়ে শোনানোর গল্প । শেষটা খুব একটা জমেনি ।

০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:২৫

কয়েস সামী বলেছেন: অপেক্ষা করছিলাম আপনি কী বলেন। ওকে পরের গল্প জমজমাট হবে বস!

১১| ০২ রা মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:২৬

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

প্লাস রইল ভাই। +++

০৩ রা মার্চ, ২০১৪ সকাল ৮:৩৫

কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইজান।

১২| ০৩ রা মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

আরিফ রুবেল বলেছেন: কপি পেস্ট মাইরা বউরে ইমপ্রেস করার মধ্যে পাপ নাই, প্রেম ভালোবাসায় সব জায়েজ বাহে ;)

১৩| ১৪ ই মার্চ, ২০১৪ ভোর ৪:১৯

শান্তির দেবদূত বলেছেন: হা হা হা বেশ লেগেছে। মাঝে যে একটা বিষয় ঝুলিয়ে রেখেছেন সেটা জানার জন্যে তো আগ্রহে পেটে ফেটে মরে যাওয়ার দশা! তাড়াতাড়ি বলেন রুপার সাথে লেখকের বিয়ের কাহিনী। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.