নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পোশাক কারখানার মেধা-শ্রমিক । মেহনতী মানুষের জয় হোক । পড়তে ভাল লাগে, মূলত এই জন্যেই ব্লগে আসা-যাওয়া করি ।

কালমানব

বস্ত্র কারখানার পেশাজীবি

কালমানব › বিস্তারিত পোস্টঃ

চূড়ান্ত প্যানাশিয়া; কোথায় পাবো?

৩০ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৭

প্রথমে আমার যেবার আমার চোখের অসুখ হল, কেমন একটা ঝাপসা দেখার অনুভূতি, দুরে-কাছে দেখাদেখি নিয়ে অদ্ভুত অবস্থা, সব মিলিয়ে বেশ একটা বিচ্ছিরি ব্যাপার । তার উপরে বাড়তি পাওনা ছিল মাথা ব্যথা । কেমন পিন পিন করে বেড়ে চলছিল । নিজকে প্রায়ই মনে হতো ইতিহাসের সেই অভিশপ্ত নিমরড, মহান প্রভুর আদেশে যার মাথায় মশা ঢুকে পড়েছিল । চোখের ডাক্তারের পরীক্ষা-নীরিক্ষা বেশ সদয় এবং নিরীহ গোছের । না আছে কোন সুঁই ফোটানো, ব্লাড টেস্ট- ফেস্ট কিছু নাই । ডাক্তার সাহেব একজন স্মার্ট,ফ্রেন্চ-কাট দাড়িতে সপ্রতিভ, সুদর্শন মানুষ এবং একই সাথে সুন্দর উচ্চারনে কথা বলেন । পরিস্কার চলতি বাংলায় বুঝিয়ে দিলেন আমার সমস্যা । তারপরে সেই থেকে চোখে চশমা উঠার পরে আজো অব্দি ঠিক-ঠাক সবকিছু । সুন্দর, সাস্টেইনেবল সমাধানের জন্য ধন্যবাদ, ডক্টর ।

আরো কয় বছর পরে আমার যেটা হয়, সেটা হল ঘুমের সমস্যা । ঘুম আসে না, ঘুম পাতলা সহজেই ভেঙ্গে যায়, মাঝরাতে ঘুম কেটে গেলে বাকী রাতে চোখের পাতা এক হয় না । এবারে অতটা সহজ হল না । ব্যাপক রক্ত-মূত্র-বিপি-এনজিওগ্রাম ইত্যকার টেস্ট করতে হল । করোনা কালীন বিধিনিষেধের আওতায় যথার্থ দুরত্ব বজায় রেখে একজন সহৃদয়া মহিলা ডাক্তার ব্লাড প্রেসার আর ঘুমের ওষুধ লিখে দিলেন । আর উপদেশ দিলেন যেন কিছুটা শরীর খাটাই মানে ব্যায়াম করি । আর, মুখে লাগাম দেই- মানে গো-মাংস এবং যাবতীয় সুস্বাদু এবং মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলি । এবংবিধ নির্দেশ ও ওষুধ-ব্যায়ামের ককটেলে কাজ হল । আবারো প্রায় আগের মতোই নি:শব্দে অথবা স্ত্রীর মতান্তরে সশব্দে ঘুমাতে পারছি, সেই থেকে । থ্যাংকস, ম্যাম, আমি আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ ।

অতি সম্প্রতি লক্ষ্য করছি কিছু একটা শরীরে কুট কুট করে চলছে । চামড়ার উপরে ? নাহ, শাদা সার্ট পড়া বাদ দিয়েছি যাতে করে উড়ুক্কু কালো পিপঁড়ে পোকা কামড়ে না দেয় । না, তাও হলো নাহ্ । এলার্জী হল কিনা? চিংড়ি বাদ, লইট্যা শুটকি বাদ; তারপরেও ব্যাপারটা রয়েই গেল । দু’চার ঘন্টা পরে পরে কেমন একটা খঁচখঁচে অনূভুতি, এরপরে মেজাজ খঁচে যায় ! লোকজনের সাথে যা-তা ব্যাভার করছি । ব্যাপারটা মোটেও ভাল যাচ্ছে না । মানুষজন, আত্মীয়-পরিজন অবাক হচ্ছে, ক্যাম্নে কি, কি হৈছে? খুউব খেয়াল করার পরে যেটা দেখলাম এটা তখনই হচ্ছে যখন টিভিতে খবর দেখছি, ফেসবুকে স্ক্রল করছি; স্টুডেন্ট প্রসেশন, গুলি আর মৃত্যুর মিছিল-রংপুরে কেউ একজন বুক পেতে দিলে গুলি করা হচ্ছে অথবা বনশ্রীতে প্রায় পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেন্জে কার্নিশে ঝুলন্ত কিশোরকে বারবার শুট করা হচ্ছে- তখনই এই চিড়বিড় আঁচড়ানো বোধ ফিরে ফিরে আসছে ।

এটা কি? নিজেকে প্রশ্ন করি ।

উত্তর আসে, এটা হয়তো তোমারই সেই ঘুমন্ত, অসার এবং ক্ষয়িঞ্চু বিবেক, যার কিছুটা এখনো অবশিষ্ট আছে । সেই মাঝে-মধ্যে আহত বোধ করে, আঘাত পেলে কাল-কেউটের মত ফোঁস করে উঠে ছোবল দিতে চায় ।
বিবেক, সে কি!
উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জিনিসটা তো কখনোই ব্যবহার করি নি, সেকেলে মুরুব্বী প্রজন্মের অচল মাল, চলে না বলে ফেলে দিয়েছিলাম । নাকি অব্যবহৃত অবস্থায় কোথাও রয়ে গেছে । অপ্রয়োজনীয় এপেন্ডিসাইটিসের মত সার্জিক্যাল অপারেশন করে এই বস্তুটিকে ফেলে দেওয়া যায় না ? এর কুট-কুটানী মাঝে-মধ্যে অসহ্য লাগছে ।

এমন কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অথবা ক্লিনিকের খবর জানা থাকলে দয়া করে আমাকে জানাবেন, উপকৃত হব ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৬

করুণাধারা বলেছেন: মনে হচ্ছে কোন জাদুর কাঠির স্পর্শে আমাদের বিবেক জেগে উঠেছে, তাই অন্যায় দেখলেই সমানে কুটকুট করে কামড়াচ্ছে, কালো কেউটের মতো ছোবল দিতে চাচ্ছে!!

থাক এই কুটকুটানি। অন্তত মানুষ বলে নিজেকে চেনা যাচ্ছে এখন।

৩০ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৯

কালমানব বলেছেন: তবে তাই হোক । ভয়ের ব্যাপার হোল, কোন একদিন এটা আমাকে টান মেরে রাস্তায় মিছিলে নিয়ে না যায় । দোয়া রাখবেন । মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.