![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার ফুফু একজন উকিল। তার নাম খ্যাতি খুলনা অঞ্চলে ভালোই প্রসারিত হয়েছে। তার সাথে সন্ধ্যায় অনেক কথা হলো। তার ভাষ্যমতে বুঝলাম সে বিবাহ বিচ্ছেদমূল্ক কেস গুলো সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। ক্লায়েন্ট রা বাসা পর্যন্ত এসে ধন্না দিচ্ছে। বিবিধ রকমের কমপ্লেইন নিয়ে তার সব ক্লায়েন্ট গুলো আসতেছে। মেয়ে এবং ছেলে উভয়পক্ষ থেকেই ইদানিং তার কাছে সমান ভাবে বিচ্ছেদ করার প্রয়োজনীয় আবেদন পড়তেছে। তো তার সাথে কথা বার্তার মাঝে আমি জিজ্ঞেস করলাম, এতো বিচ্ছেদের কারন কি?
সে বলল, এখন নারী পুরুষ কেউ কাউকেই সম্মান করে না। সবাই স্বাধীন থাকতে চায়।
আমি বললাম, এখানে আমার একটা ধারনা হচ্ছে, মেয়ে রা ইন্সিকিরিটি থেকে ভুগতেছে। সব মেয়েই চায় নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। সে নিরাপত্তা প্রয়োজনীয়তা মানসিক কিংবা সামাজিক দিক থেকেই আসে।
ফুফু বলল, নিরাপত্তা তো দিচ্ছে কারন অনেক ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার রাও আসতেছে যাদের বিয়ের বয়স ২০-২৫ বছরের ও বেশি। এখানে তো সমস্যা হওয়ার কথা না।
আমি বললাম, আমাদের মেয়ে রা এখন বেশি মাত্রায় বস্তুবাদী কারন পরিবার এবং সমাজ থেকেই তাঁরা অনেক কিছুর অভাব বোধ করে এবং সে তা অন্যে পরিবার থেকে আদায় করতে চায় এবং তার উপর নুন্যতম ছাড় দিতে সে অপারক। সে থেকে তার নিজের নিরাপত্তার সব রকম ব্যাবস্থা নিজের চোখে দেখতে চায় এবং তাদের মাঝে যখন বিয়ে সম্পন্ন হয় তখন তাঁরা এই সব ব্যাবস্থা নিজেই হিসাব করে নিতে চায়। এত সুবিধা স্বামী প্রদান করা সত্তেও স্ত্রী কেনো এমন অনিরাপত্তায় ভুগতেছে? কারন হিসেবে আমি বললাম, আমাদের মাঝে স্প্রিচুয়াল বিষয়াদী থেকে বিশ্বাস ঊঠে গেছে। একটা সম্পর্কের উপর যে প্রকৃতিগত উপকারীতা আসে সেটার উপর মানুষের কোন বিশ্বাস নেই। তাই মানুষ ধৈর্যশীল না। এবং মানুষ এখন অনেক উদার, অন্য একজন কে খুজে নেয়াটাও খুব কঠিন না। সুতরাং যেহেতু বস্তুগত সুবিধার মজুদ অনেক তাই প্রকৃতিগত সুবিধার উপর মানুষের দিন কে দিন আস্থা চলে যাচ্ছে। সবাই যা আশা করে তা এখনই চায়। তাই প্রকৃতিও তার নির্মমতাই দেখাচ্ছে। এখানে নারী পুরুষের দোষ কতটুকু।
ফুফু বলল, হা বুঝলাম।
আমি বললাম, আগের দিনের মানুষের মাঝেও এই সমস্যা ছিলো কিন্তু তাঁরা ব্যাক্তিগত চিন্তায় উন্নত ছিল প্রকৃতিগত ভাবেই এবং তাদের জন্যে বই এর শিক্ষাটা খুব প্রয়োজন হয় নি। আগের দিনের মানুষ চিন্তা করত অনেক কারন তাদের কাছে শিক্ষার অভাব ছিলো এবং জ্ঞানী লোকেরও অভাব ছিল। ব্যাক্তিগত উন্নয়নের নমুনা আমরা দেখি কৃষ্ণ'র কথায় যখন সে রাধের এক প্রশ্নের উত্তরে বলে, "তুমি যতদিন আমার কাছে রহস্যময়ী থাকবা ততদিনই আমি তোমাকে ভালোবাসবো"।
এখানে রহস্যময় বলতেই আমরা মানুষের ব্যাক্তিত্ব কিংবা ব্যাক্তিগত উন্নয়ন কেউ বুঝতে পারি। ব্যাক্তিত্বই মূল বিষয় কারন ব্যক্তিত্বের বহুমুখিতা না থাকলে একজন মানুষ আরেকজন মানুষের উপর আকর্ষন হারাবেই। তাই আমাদের উচিত ব্যাক্তিত্বের উন্নয়ন সাধন।
অঃটঃ আমার ফুফু আমার বিয়ের ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। সে চায় অতিসত্তর একটা কিছু করতে কিন্তু আমি পুরাই নারাজ। সন্ধ্যা থেকে ছবক দিচ্ছে। আমি শুধু না না না।
কারনঃ আমারা ব্যাক্তিত্ত্বর উন্নয়নের বদলে নিজেদের চালাকি টাকেই মূল হিসেবে ধরে নিয়েছি। আমাদের মানুষগুলো নিজেদের কমন সেন্স বৃদ্ধি করার ব্যাপারে খুবি আগ্রহী কিন্তু তাঁরা বস্তুবাদিত্ত্ব ছাড়তে নারাজ। কিন্তু আমি বস্তুবাদী এবং সমান ভাবে স্প্রিচুয়াল এ বিশ্বাসী। কারন জীবনের অনেক কিছুর উপরেই আমার হাত নেই। আমি চাই না বস্তুবাদের ভীড়ে নিজেকে দিধাদন্দে পতীত করতে।
©somewhere in net ltd.