নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাউসার ইকবাল

সাংবাদিক ও লেখক

কাউসার ইকবাল

সাংবাদিক ও লেখক

কাউসার ইকবাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি কেন মিথ্যে বলব?

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৩০

আমি কেন মিথ্যে বলব?

কাউসার ইকবাল



ছোটবেলা থেকেই আমি সত্য ধারণ ও লালনের প্রতিজ্ঞা নিয়ে বড় হচ্ছি। কারণ, আমার বিবেচনায় সত্যই ধর্ম।

আমার মা শাহানারা বেগম কুসুমের ইচ্ছা, অনুপ্রেরণা, বিশ্বাস মোতাবেক ৭ বছর বয়স হতেই আমি নামাজ পড়া শুরু করেছি। সম্ভবত ১০ বছর বয়স হতেই টানা চব্বিশ বছর একটি রোজাও ভঙ্গ হয়নি। নামাজ-রোজার পাশাপাশি কোরআনের বাংলা অর্থ পড়তে গিয়ে একটি আয়াত পাই যাতে মদ্যপায়ীদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ‘তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত নামাজে দাঁড়িও না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা নামাজে আল্লাহর উদ্দেশে কি বলছ, তা তোমরা বুঝতে পারছ।’ বাক্যটির শানে নুজুল বা সারমর্ম হিসেবে যা বুঝেছি তা হলো, নামাজে আল্লাহর উদ্দেশে কি বলছি, তা বুঝতে হবে। এতে ঘটল বিপত্তি। নামাজে আল্লাহর উদ্দেশে কি বলছি, তার অর্থ জেনে দেখলাম, নামাজের শুরু থেকেই আমাকে অনেক মিথ্যাচার করতে হচ্ছে। প্রথমে ‘আল্ল¬াহু আকবর’ (আল্ল¬াহ সর্বশক্তিমান) বলে নামাজ শুরু করতে হচ্ছে। এরপর ‘আলহামদুলিল্ল¬াহি রাব্বিল আলামিন’ (সমস্ত প্রশংসা আল্ল¬াহতায়ালার জন্য) পড়তে হচ্ছে। কিন্তু ভেবে দেখলাম, আল্লাহ সর্বশক্তিমানÑ এ কথাতো যুক্তির আলোকে সত্য নয়। আল্লাহর চেয়ে খ্রিস্টানদের বিশ্বাসকৃত ঈশ্বরই পৃথিবীতে শক্তিমান। এমনকি ইহুদিদের বিশ্বাসকৃত খোদা ও হিন্দুদের বিশ্বাসকৃত ভগবান শ্রীকৃষ্ণও অনেক শক্তিমান। সা¤প্রতিককালেই ফিলিস্তিনে আল্লাহ ইহুদিদের খোদার কাছে, পাকিস্তানে হিন্দুদের ভগবানের কাছে ও ইরাকে খ্রিস্টানদের ঈশ্বরের কাছে পরাজিত হয়েছেন। তাহলে আল্লাহ সর্বশক্তিমান কিভাবে? আবার সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যÑ এ কথাওতো আল্লাহ প্রমাণ করতে সক্ষম হননি ১৪৩৫ বছরেও। কেননা, বিশ্বের বড় জোর ২৫ শতাংশ মানুষ নিরাকার আল্ল¬াহর প্রশংসা করছে। বাকি ৭৫ শতাংশ মানুষ আকারসম্পন্ন শ্রী কৃষ্ণ, যিশু, গৌতম বুদ্ধসহ অন্য অনেকের প্রশংসায় লিপ্ত। অর্থাৎ, নামাজে দাঁড়িয়ে আমাকে কেবল মিথ্যাচারই করতে হচ্ছে। একজন সত্যপ্রেমী হিসেবে যা করা আমার উচিত নয়। আল্লাহ নিজের সম্বন্ধে যা দাবি করেছেন, তা প্রমাণে তিনি ব্যর্থ হলে আমাকে কেন তা সত্য বলে বিশ্বাস করতে হবে? আবার দিনের শুরুতে ফজর নামাজের আজান দেয়ার সময় মুয়াজ্জিন বলছে, আস সালাতু খাইরুম মিনান নউম (ঘুম হতে নামাজ উত্তম)। কিন্তু ঘুমের চেয়ে উত্তম বাস্তবে কিছুই নেই। যেহেতু আল্ল¬াহর দাবিকৃত প্রমাণসাপেক্ষ কথাগুলোই মিথ্যে বলে প্রমাণিত, সেহেতু অপ্রমাণসাপেক্ষ কথাগুলোও সত্য বলে গ্রহণ করার কোন যুক্তি নেই। একইভাবে, আল্লাহর ইচ্ছাতেই মানুষের জন্ম ও মৃত্যু, এ কথাও বাস্তবতার আলোকে মিথ্যে। কেননা, মানুষের জন্ম হয় মানুষের ইচ্ছেতেই। মানুষ ইচ্ছে না করলে জন্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, এমনকি ভ্র“ণ হত্যা করেও জন্মদানের প্রক্রিয়া ঠেকিয়ে দেয়। আবার মানুষের মৃত্যুর জন্যও মানুষই দায়ী। আল্লাহর ইচ্ছায় ও ক্ষমতায় মানুষের মৃত্যু হলে তো আদালতের কোন খুনিকেই দন্ড প্রদান করা ঠিক নয়। আদালত খুনিকে শাস্তি দেয় খুনের জন্য সেই মানুষটিকেই দায়ী করা হয় বলে। আল্লাহকে কোনভাবেই আদালত দায়ী করছে না। এমনকি মুসলিমরাও ইহুদি-খ্রিস্টানদের আক্রমণে নিহতদের মৃত্যুর জন্য আল্লাহকে দোষী করছে না। অতএব, আল্লাহই মৃত্যুদাতা, এ কথাও সকল ক্ষেত্রেই সত্য বলে প্রমাণিত নয়। আর যা প্রমাণিত সত্য নয়, তাকে ধারণ করা মিথ্যাকে ধারণ করার শামিল। মিথ্যা কখনোই ধর্ম হতে পারে না। এমনটাই আমার প্রজ্ঞার রায়। আমি বিশ্বাস করি, মিথ্যে বর্জন ও সত্য গ্রহণই যথার্থ ধর্ম। মানুষকে যেকোন মূল্যে সত্যকেই আঁকড়ে ধরে থাকতে হবে। কারণ, সত্যই হচ্ছে ধর্মের মূল। মূল কেটে দিলে যেমন গাছ বাঁচে না, তেমনি সত্য কেটে গেলে ধর্মও বাঁচে না। কারণ, ধর্মের ভিত্তিই হচ্ছে সত্য।



যেহেতু স্রষ্টা সম্বন্ধে আমাদের কোন স্পষ্ট ধারণা নেই, সেহেতু মানুষের জন্য উত্তম এটাই যে, স্রষ্টার কোন রূপ কল্পনা না করে স্রেফ সত্য পথে জীবনকে পরিচালিত করা। আর এ বিশ্বাসই অন্তরে ধারণ করা যে, স্রষ্টা সত্যের সঙ্গে ও সত্যপ্রেমীদের পাশেই আছেন ও থাকবেন। মিথ্যের সঙ্গে স্রষ্টার কোন সম্পর্ক থাকতে পারে না। আর সত্য পথে চলার জন্য স্রষ্টা কিছুতেই কাউকে দোষী করতে পারেন না। যেহেতু সত্যই হচ্ছে ধর্মের মূল, সেহেতু সত্যপ্রেমীরাই স্রষ্টার দৃষ্টিতে মূলধর্মী বা সত্যধর্মী বলে বিবেচিত হবে। আর নিজেকে সত্যধর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই প্রত্যেকের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৩৬

কাউসার ইকবাল বলেছেন: সত্য জানা দ‌রকার

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.