নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাউসার ইকবাল

সাংবাদিক ও লেখক

কাউসার ইকবাল

সাংবাদিক ও লেখক

কাউসার ইকবাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

উত্তম ধার্মিক হতে মূলধর্মের অনুসারী হোন

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৩১

উত্তম ধার্মিক হতে মূলধর্মের অনুসারী হোন

কাউসার ইকবাল

পৃথিবীর সকল ধর্মের অনুসারীরাই নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ ধর্মের অনুসারী বলে ভাবে। সে কারণেই কেহ তার নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ততক্ষণ পর্যন্ত অন্য কোনো ধর্ম গ্রহণ করে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সেই ধর্ম তার কাছে এতদিনকার বিশ্বাসকৃত ধর্মের চয়ে উত্তম বলে মনে হয়। পক্ষান্তরে দেখা যায় যে, পৃথিবীর প্রত্যেক ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেই এমন লোক ভরপুর, যারা কিনা ধূমপান থেকে শুরু করে মাল্টিলেভেল মার্কেটিংয়ের নামে, কিংবা শেয়ার ব্যবসা বা বীমা ব্যবসার নামে অন্যের পুঁজি হাতিয়ে নিয়ে নিজেরা লাভবান হবার কূটকৌশল করে অন্যকে প্রতারণাসহ অনাচার, ব্যভিচার, জুলুম-নির্যাতন ইত্যাদি নানা ক্ষতিকর কাজে লিপ্ত। এরা কি উত্তম ধর্মানুসারী? যদি তারা উত্তম ধর্মানুসারী না হয়, তবে তারা যে ধর্ম বা ধর্মাচার পালন করছে, তাকেও উত্তম ধর্ম বলা যাবে না। মানুষের জন্য সর্বোত্তম ধর্ম হচ্ছে মূলধর্ম। এ প্রসঙ্গে আলোচনা করা যাক।

‘মানুষ হওয়াই মানুষের ধর্ম, অমানুষ হওয়া পশুর কর্ম’ এই মূলসূত্রের ওপর ভিত্তি করেই মূলধর্মের সৃষ্টি। মূলধর্ম কোন অমানুষ ও পাপীকে নিজ ধর্মের অনুসারী বলে স্বীকার করে না। যে কারণে কোন অমানুষ বা পাপীর নিজেকে মূলধর্মের অনুসারী বলে দাবি করার যোগ্যতা নেই। মূলধর্মের অনুসারীরা অমানুষ হওয়া থেকে রেহাই পেতে সকল ধরনের পাপ কাজ এড়িয়ে চলবে সবসময়। মূলধর্মের অনুসারীরা সৎ ও পরোপকারী হওয়ার পাশাপাশি অপরের ক্ষতি করা থেকে নিজেদেরকে যেকোনো মূল্যে বিরত রাখতে সচেষ্ট থাকবে। স্বার্থবাদিতা, হিংসা-হানাহানি, জুলুম, অন্যের সম্পদ জবরদখল, ব্যভিচার, নারী বা শিশু ধর্ষণ, পরকীয়া প্রেম, মানুষের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে নিজের সুখ-শান্তি-ভোগ-বিলাস নিশ্চিত করতে কখনোই সচেষ্ট হবে না মূলধর্মের অনুসারীরা। তারা এই জ্ঞান রাখবে যেÑ জনসেবার চেয়ে বাণিজ্যিক মনমানসিকতা নিয়ে রোগীদের ওপর জুলুম করে যে ডাক্তার, সে অমানুষের কাতারভুক্ত এবং নিজেকে ধার্মিক বলে দাবি করার যোগ্যতা তার নেই; যে রিকশাচালক বা টেক্সিচালক বা পরিবহন ব্যবসায়ী বা ঘরের মালিক মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে, সে অমানুষের কাতারভুক্ত এবং নিজেকে ধার্মিক বলে দাবি করার যোগ্যতা তার নেই; যে ছেলে বা পুরুষ একাধিক মেয়ে বা নারীর সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে কিংবা প্রতারণা করে, সে অমানুষের কাতারভুক্ত এবং নিজেকে ধার্মিক বলে দাবি করার যোগ্যতা তার নেই; যে পুরুষ বা নারী ব্যভিচারে লিপ্ত হচ্ছে, সে অমানুষের কাতারভুক্ত এবং নিজেকে ধার্মিক বলে দাবি করার যোগ্যতা তার নেই; যে পুলিশ বা বিচারক নিরপরাধ ব্যক্তিকে আসামি করে তাকে ভোগাচ্ছে, সে অমানুষের কাতারভুক্ত এবং নিজেকে ধার্মিক বলে দাবি করার যোগ্যতা তার নেই; যে রাজনীতিবিদ স্বীয় বা দলীয় স্বার্থে অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে, সে অমানুষের কাতারভুক্ত এবং নিজেকে ধার্মিক বলে দাবি করার যোগ্যতা তার নেই; যে ব্যক্তি বা শিক্ষক জ্ঞান প্রদান বিষয়েও অতি বাণিজ্য করে, সে অমানুষের কাতারভুক্ত এবং নিজেকে ধার্মিক বলে দাবি করার যোগ্যতা তার নেই। অর্থাৎ, কেবল পুণ্যবান ও যথার্থ মানুষই মূলধর্মের অনুসারী বলে বিবেচিত হবে।

মূলধর্মের অনুসারীরা স্রষ্টাকে শ্রদ্ধা জানাবে আকাশের দিকে তাকিয়ে হƒদয়ের গভীর থেকে। তারা বিশ্বাস করবে যে, স্রষ্টা তাদের আকাশের দিকে তাকিয়ে হƒদয়ের গভীর থেকে শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়টি বুঝতে পারবেন। যারা বলবে যে, স্রষ্টা তাদের শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়টি বুঝতে পারবেন না, তারাতো অজ্ঞতারই প্রকাশ ঘটাবে। স্রষ্টা বুঝবেন না বা বুঝতে পারেন নাÑ এমন কথা বলা অজ্ঞতার প্রকাশ ছাড়া আর কী? মূলধর্মের অনুসারীরা যেহেতু পাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করবে ও যথার্থ মানুষ হবে, সেহেতু তাদের কাউকে স্রষ্টা পরবর্তী জীবনে অন্যদের মতো যন্ত্রণাময় জীবনের অধিকারী করবেন না। কারণ, তিনি যথার্থ ন্যায়বিচারক। ভালো কাজের জন্য ভালো ফল দিতে তিনি কখনোই দ্বিধান্বিত হবেন না। মূলধর্মের অনুসারীরা পৃথিবীর প্রত্যেক স্থান, প্রতিটি দিন-রাত-মাসকে পবিত্র বলে মনে করবে এবং কোনো স্থান বা দিন বা রাতকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেবে না। তারা বুঝবে যে, মানুষের জন্য কোনো আইনের প্রয়োজন হয় নাÑ অমানুষের জন্যই আইনের প্রয়োজন হয়। তারা আইনের ওপর ভিত্তি না করে মনুষ্যত্ববোধের ওপর ভিত্তি করেই জীবনযাপন করবে। অতএব, মানুষের মধ্যে যারা উত্তম হতে চায় কেবল তারাই মূলধর্মের অনুসারী হবে, এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশই থাকতে পারে না। অধমদের উত্তম ধর্ম গ্রহণের যোগ্যতা কোথায়?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.