নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাউসার ইকবাল

সাংবাদিক ও লেখক

কাউসার ইকবাল

সাংবাদিক ও লেখক

কাউসার ইকবাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাস্তিকরা নরকে গেলে আস্তিকদের কি ক্ষতি?

০২ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৭

নাস্তিকরা নরকে গেলে আস্তিকদের কি ক্ষতি?

কাউসার ইকবাল



বাংলাদেশে ধর্ম নিয়ে যেমন, তেমনি রাজনীতি নিয়েও নৈরাজ্য ও রাষ্ট্রে বিবাদের যে ধারা অব্যাহত আছে, তাকে ‘মেধাগত অধম নাবালগ’দের কর্মকাণ্ড বা ‘মহিষ ও গণ্ডারের লড়াই’ হিসেবে অভিহিত করা যায়। ধর্ম নিয়ে যারা রাজনীতি করে, কিংবা যারা নিজেদের প্রগতিবাদী বলে ভাবে, উভয়েই কার্যত একই দোষে দুষ্ট। তবুও ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি সঙ্গত নয় এ কারণেই যে, মানুষের আত্মিক উন্নয়নই ধর্মের প্রধান লক্ষ্য।

ধর্ম সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠা করেছেন স্রষ্টা কিংবা স্রষ্টা কর্তৃক প্রেরিত দাবিদার নবী বা রাসুলরা মানুষকে পরবর্তী জীবনে বেহেস্তপ্রাপ্তি বা নরকের আগুনে পোড়ার ভয় দেখিয়ে। তবে গভীরভাবে চিন্তা বা অনুধাবনের চেষ্টা করলে বোঝা যায় যে, মূলত মানুষের পার্থিব জীবনের সুখ-শান্তি নিশ্চিত করার জন্যই ‘ঈমান’ নামক বটিকা খাইয়ে মানুষকে যথার্থ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। আর এই কৌশলেই বিভিন্ন ধর্মের প্রবর্তন। লক্ষণীয় যে, ধর্মপ্রবর্তক হিসেবে মানুষ যাদের শ্রদ্ধা করে, তারা কখনোই ধর্মকে বাণিজ্যিক বিষয় হিসেবে ব্যবহার করেননি। কিংবা মানুষকে জোরপূর্বক তাদের তত্ত্ব গ্রহণে বাধ্য করেননি। কিন্তু এদের মধ্যে হযরত মোহাম্মদ (সা.)’র অনুসারী বলে দাবিদার কিছু মুসলমান নিজেদের ধর্মবাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায় কিনা, এই আশঙ্কায় বা ধর্মবাণিজ্যের সুবিধার্থে জোরপূর্বক ইসলামি তত্ত্ব অনুসরণে অন্যকে বাধ্য করতে চায় এবং এ নিয়ে রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে মানুষের জানমালের ক্ষতিতেও লিপ্ত হয়ে আছে, যা ধর্মপ্রবর্তকদের উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে করার কোন কারণ নেই। আর যারা ইসলাম ধর্মতত্ত্ব অনুসরণ করে না বা ইসলামের বিধিবিধান সম্পূর্ণরূপে অনুসরণ করতে রাজি নয়, তারা তাদের অবাধ্যতার জন্য যদি নরকেও যায়, তাতে অন্যদের ক্ষতির কি আছে? আর পুরুষরা তাদের চরিত্র ও চোখ সংযত রাখতে না পারলে তার দায় নারীকেই কেন নিতে হবে? নারী যাতে কর্মক্ষেত্রে বা পথ চলতে পুরুষের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে চেষ্টাই তো করতে হবে যথার্থ মেধাসম্পন্ন পুরুষদের। নারীদের সতীত্বের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনে পুরুষের লিঙ্গ কর্তন বা চক্ষু উৎপাটনের শাস্তির বিধান করা যেতে পারে। কিন্তু পুরুষেরা নিজেদের চরিত্র সংযত রাখতে অক্ষম হওয়ার শাস্তি নারীকেই ভোগ করতে হবে এক পোশাকের ওপর আরেক পোশাক পরে, এমন বিধান বর্তমান যুগের প্রেক্ষাপটে নারীর ওপর জুলুম করার শামিল।

ধর্মগ্রন্থসমূহে মানুষের জন্য যেসব আদেশ-উপদেশ লিপিবদ্ধ আছে, তাতেও বলা যায় মানুষ আজো ‘মেধাগত নাবালগ’। নাবালগদের যেমন জ্ঞান দিতে হয় কোন বিষয়ে কি করা উচিত আর কি করা অনুচিত, ধর্মগ্রন্থসমূহেও একইভাবে মানুষকে জ্ঞান দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে এই যে, মোহাম্মদ (সা.)’র অনুসারী বলে নিজের পরিচয় দানকারী আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি, ইসলামপন্থি অন্য দলগুলোর নেতা-কর্মী-সমর্থকদের অনেকেই দেশের সাধারণ মানুষের শান্তি কি করে হারাম করা যায়, সেই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত আছে বছরের পর বছর ধরে। আর বিশ্ব প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ফিলিস্তিনসহ অনেক রাষ্ট্রেই মোহাম্মদ (সা.)’র অনুসারী বলে দাবিদারেরা সেসব এলাকার লোকদের শান্তি হারাম করে চলেছে।

মানুষেরা একটা কথা উপলদ্ধি করার চেষ্টা করলে বুঝতে পারবে যে, মানুষের জন্য কার্যত কোন আইনের প্রয়োজন হয় না; কেবল যে ‘অমানুষ’ হতে পারে, তাকে ‘অমানুষ’ হওয়া থেকে বিরত রাখার কৌশল হিসেবেই আইন তৈরি করা হয়। এভাবেই বিভিন্ন রাষ্ট্রে বিভিন্ন সময়ে আইন তৈরি হয়েছে ‘অমনুষ্যত্ব’ প্রতিরোধের চেষ্টা হিসেবে। একই কথা ধর্মীয় ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মানুষের জন্য কোন ধর্মীয় বিধিবিধান বা ধর্মাচারের আবশ্যকতা নেই; কেবল যে ‘অমানুষ’ বা ‘অধার্মিক’ হতে পারে মানুষের ওপর অন্যায় বা জুলুম করার অপরাধে, এমন ‘অমনুষ্যত্ব’ প্রতিরোধের কৌশল হিসেবেই নাবালগদের যেমন লোভ বা ভয় দেখিয়ে শান্তিপূর্ণ রাখতে হয়, ঠিক সেভাবেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধর্মীয় বিধিবিধান জারি হয়েছে। অর্থাৎ, ‘অমনুষ্যত্ব’ প্রতিরোধের কৌশল হিসেবেই বিভিন্ন বিধিবিধান এসেছে মানুষের জন্য। মানুষ নিজেই উপলদ্ধি করতে চাইলে বুঝতে শিখবে যে, ‘আত্মিক উন্নতি, তথা যথার্থ মানুষ হওয়াই প্রকৃত ধার্মিকতা’ এবং ‘পৃথিবীতে শান্তির সঙ্গে বসবাস করাটাই মানুষের জন্য প্রকৃত ধর্মশিক্ষা’। আর এই উপলদ্ধিটা মানুষের মধ্যে জাগতে শুরু করেছে বলেই ধর্মনিরপেক্ষরা পৃথিবীতে যতটা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে, ধর্ম নিয়ে যারা রাজনীতি বা বাণিজ্য করছে, তারা ততটা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে না। বরং তাদের ধর্মবিষয়ক রাজনীতি বা বাণিজ্য কারো দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করলে তার বা তাদের ওপর চড়াও হয়ে মানুষ হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে নির্দয়ভাবে; যদিও ধর্ম তা অনুমোদন করে না। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি বা বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ‘অমনুষ্যত্ব’ জাহির পুরোপুরি ইসলামবিরোধী কাজ। যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছেন, তারা যেমন বাংলাদেশে একই দলভুক্ত নয়, তেমনি বিপরীতভাবে এ কথাও বলা যায় যে, খোদ আরব এলাকাতে মদিনাভিত্তিক একই ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় আরব এলাকার বাইরে ইসলামকে কেন্দ্র করে রাজনীতি করাটা কেবল ব্যক্তিগত স্বার্থকেন্দ্রিক বলেই বিবেচিত হবে। আর ইসলামকে কেন্দ্র করে যারা বাংলাদেশে রাজনীতি করেন, তারা ব্যক্তিগত স্বার্থকেন্দ্রিক রাজনীতি করেন বলেই একই দলভুক্ত হয়ে রাজনীতি করছেন না, এটাও বাস্তবতা। ধর্মীয় স্বার্থভিত্তিক রাজনীতি করে থাকলে ইসলাম ধর্মভিত্তিক কেবল একটি রাজনৈতিক দলই থাকত বাংলাদেশে। এ কথাও তরুণ প্রজন্মকে বুঝতে হবে। অতএব, ব্যক্তিগত স্বার্থকেন্দ্রিক রাজনীতির উত্তরসূরি হয়ে অবিবেচকের মতো মানুষের রক্ত ঝরানোর খেলাটা বন্ধ করে দেয়া উচিত নিজের বিবেককে জাগ্রত করেই। তরুণ প্রজন্মের বোঝা উচিত যে, বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা, তাও আবার দেশের মানুষের শান্তি নষ্ট করে, এটা ইসলাম ধর্ম অনুমোদন করে না। মেধাগত সাবালগ হওয়ার চেষ্টা করে এ বিষয়টি মানুষকে বুঝতে হবে। নিজেদের মেধাগত সাবালগ করে তোলাটা সময়ের দাবি। তরুণদের মেধাগত সাবালগত্বের ওপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশের মানুষের শান্তি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৫:১৮

কষ্টবিলাসী বলেছেন: এ তো অনেক জ্ঞানী!!

২| ০২ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৫:২৫

ডার্ক ম্যান বলেছেন: নাস্তিকরা নরকে গেলে আস্তিকের কোন ক্ষতি নাই।তবে নাস্তিকরা যখন ধর্ম নিয়ে কটু কথা বলে তখন খারাপ লাগে।

৩| ০২ রা মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫১

দালাল০০৭০০৭ বলেছেন: no চিন্তা man তুমি নরকে জাও। ত মার জন্য সেতাই অপেক্ষা করছে।

৪| ০২ রা মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২২

কাফের বলেছেন: সাংবাদিক, লেখক, দার্শনিক ও মূলধর্ম প্রবর্তক!!! হাছানি?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.